আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।
নামাজ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ১২টি প্রশ্ন এবং উত্তর
নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। কাফির এবং মুসলমানের মাঝে পার্থক্য হল নামাজ। মুমিন জীবনের দৈনন্দিন আমলগুলোর মধ্যে সালাত অন্যতম। নামাজের রয়েছে সুনির্দিষ্ট কিছু হুকুম- আহকাম। আজকে আমি নামাজ সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে করা গুরুত্বপূর্ণ ১২টি প্রশ্ন ও সেই প্রশ্নের উত্তর আপনাদের নিকট তুলে ধরবো।
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছে “প্রসিদ্ধ ও বড় বড় ফিকহি বোর্ড”। উত্তরের পাশেই তার নাম উল্লেখ করা রয়েছে।
০১। প্রশ্নঃ ফরয নামাযে প্রথম দু রাকাআতে ফাতিহার সাথে সূরা মিলানো হয়, শেষ দু রাক’আতে মিলানো হয় না কেন তার কারণ কি?
উত্তরঃ নবী করীম সা. এবং সাহাবা কেরাম এ রকম পড়েছেন। তাই এ রকম পড়া হয়।
-ফাতাওয়া দারুল উলুমঃ ২/১৭৫।
০২/প্রশ্নঃ যদি কোন ব্যক্তি নামাযের তাকবীরে আল্লাহ শব্দের হামযা টেনে পড়ে অথবা আকবার শব্দের হামযা টেনে পড়ে তার নামায দুরুস্ত হবে কি না?
উত্তরঃ তার নামায ফাসেদ হয়ে যাবে।
-দুররে মুখতার- ১/৪৪৮।০৭।
০৩। প্রশ্নঃ নামাযের মধ্যে আমীন আওয়ায দিয়ে পড়া ভাল না কি আস্তে পড়া ভাল।
উত্তরঃ হানাফী মাযহাব মুতাবেক আমীন আস্তে পড়া ভাল এবং সুন্নত।
-ফাতাওয়া দারুল উলূম- ২/১৭৭। ১৬৮।
০৪। প্রশ্নঃ এক চাটাইয়ের উপর যদি কোন পুরুষ এবং মহিলা এক বরাবর দাঁড়িয়ে নামায পড়ে তাহলে তাদের নামায দুরুস্ত হবে কি না?
উত্তরঃ যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ আলাদা আলাদা নামায পড়ে তাহলে নামায সহীহ হয়ে যাবে।
কিন্তু বেগানা মহিলার বরাবর দাঁড়ায়ে নামায পড়া মাকরূহ। আর যদি ঐ বেগানা মহিলার নামায এবং পুরুষের নামায এক নামায হয় এবং একই তাহরীমার সাথে আদায় করে যেমন উভয় জন মাগরিবের নামায পড়ছে তাহলে নামায ফাসেদ হয়ে যাবে।
-ফাতাওয়া দারুল উলুমঃ ২/ ১৮১-১৮২। ১৬৯।
০৫। প্রশ্নঃ কোন ব্যক্তি যদি একা মাগরিব বা ইশা বা ফজরের নামায পড়ে তাহলে সে কেরাত কি জোরে পড়বে না কি আস্তে পড়বে?
উত্তরঃ তার জন্য এখতেয়ার রয়েছে মনে চাইলে জোরেও পড়তে পারবে এবং আস্তেও পড়তে পারবে। তবে নুন্যতম স্বরে জোরে পড়া চাই।।
-দুররে মুখতার- ০১/৪৯৮। ১৭০।
০৬। প্রশ্নঃ নামাযের মধ্যে হাত নাভির উপরে বাঁধবে না কি নাভির নিচে বাঁধবে?
উত্তরঃ পুরুষের জন্য নাভির উপরে বাঁধা ও নিচে বাঁধা উভয়টিই হাদীসে রয়েছে।
কিন্তু হানাফী মাযহাবে নাভির নিচে হাত বাঁধাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কারণ, আবু দাউদ শরীফে হযরত আলী রাঃ হতে বর্ণিত রয়েছে এটাকে সুন্নত আখ্যা দেয়া হয়েছে।
০৭। প্রশ্নঃ ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর পর যে দোয়া করেন তাতে মুক্তাদীগণ শরীক হওয়া জরুরী কি না?
উত্তরঃ মুক্তাদীগণ এতে শরীক হওয়া মুস্তাহাব, জরুরী নয়।
০৮। প্রশ্নঃ যদি কোন ব্যক্তি ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুলী না উঠাতে পারে – তাহলে বাম হাতের শাহাদাত আঙ্গুলী দ্বারা তাশাহহুদের সময় ইশারা করা জায়েয আছে কি না?
উত্তরঃ যদি ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুলী না থাকে অথবা আছে কিন্তু উঠাতে পারে না তাহলে ইশারাও করবেনা তবুও বাম হাতের আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করবে না। কারণ, তার হকুম নেই।
-ফাতাওয়া দারুল উলুমঃ ২/১৯২।
০৯। প্রশ্নঃ ইমাম সাহেব রুকু অথবা সেজদা হতে তাসবীহ পড়ে মাথা উঠিয়ে ফেলছেন। কিন্তু মুক্তাদী এখনও তাসবীহ তিনবার পুরা করতে পারেনি। এখন মুক্তাদী কি করবে?
উত্তরঃ ইমাম সাহেবের জন্য উচিত যেন রুকু এবং সেজদার তাসবীহ ধীরস্থির ভাবে পড়ে। যাতে মুক্তাদী অন্তত তিন বার পাঠ করতে পারে
আর যদি কোন মুক্তাদী তিন বার পাঠ করতে পারেনি কিন্তু ইমাম সাহেব মাথা উঠিয়ে ফেলছেন তাহলে মুক্তাদীও মাথা উঠিয়ে ফেলবেন। যেহেতু ইমাম সাহেবের অনুকরণ করা ওয়াজিব।
-রদুল মুহতার : ১/৪৬৩। ৮০।
১০। প্রশ্নঃ যদি কোন ব্যক্তি প্রথম রাক’আতের চেয়ে দ্বিতীয় রাকআতে লম্বা ক্বেরাআত পড়ে তাহলে নামায জায়েয হবে কি না?
উত্তরঃ প্রথম রাক’আতের চেয়ে দ্বিতীয় রাক’আতে যদি কেরাআত বেশী পড়ে যে বেশির পরিমাণটা তিন আয়াত বা তার চেয়ে বেশী হয় তা হলে নামায মাকরূহে তানযীহ হবে। আর যদি তিন আয়াতের কম হয় তাহলে মাকরূহ
-দুররে মুখতার ১ম খন্ড ।
১১। প্রশ্নঃ যদি কোন ব্যক্তি নামাযের মধ্যে উল্টা তারতীবে সূরা পড়ে যেমন- প্রথম রাকআতে লিইলাফি সূরা দ্বিতীয় রাকআতে আলামতারা সূরা পড়ল তাহলে নামায হবে কি না?
উত্তরঃ ফরয কিংবা ওয়াজিব নামাযে যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে এ রকম করে তাহলে নামায মাকরূহে তাহরীমী হবে। আর যদি ভুলে হয়ে যায় তাহলে মাকরূহ হবে না।
-রদুল মুহতার ৪১/৫১০। ১৮৯
প্রশ্নঃ নফল নামাযে যদি কেউ উল্টা তারতীবে সূরা পড়ে যেমন প্রথম রাকআতে কুলহুয়াল্লাহ সূরা আর দ্বিতীয় রাকআতে তাব্বাত ইয়াদা সূরা পড়ল তার নামায জায়েয হবে কি না?
উত্তরঃ নফল নামাযে চাই ইচ্ছা করে এ রকম করুক অথবা ভুলে এ রকম হয়ে যাক নামায জায়েয হবে এবং মাকরূহ ও হবে না।
-ফাতাওয়া দারুল উলুম ঃ ২/২১৮ ১৯০।
উত্তরগুলো সম্পাদন করেছেনঃ মাওলানা নোমান আহমদ।
বইয়ের নামঃ সাড়ে পাঁচশত মাসায়েল
দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।
10 thoughts on "নামাজ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ১২টি প্রশ্ন এবং উত্তর। না দেখলে দেখলে মিস করবেন"