আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

অন্যের ঘরে প্রবেশের ইসলামী নিয়ম কানুন

ইসলাম প্রত্যেকের স্বাধীনতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। সেই সাথে দিয়েছেন গোপনীয়তা রক্ষার স্বাধীনতা। তাই বিনা অনুমতিতে কারো ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রে ইসলাম বেশ কিছু বিধি-বিধান প্রদান করেছেন। এই বিধি-বিধানের মধ্যে সন্তান যেমন পিতা-মাতার ঘরে প্রবেশের পূর্বে অনুমতি নিতে হবে তেমনি পিতা-মাতার ঘরে প্রবেশের পূর্বে সন্তানের অনুমতি নিতে হবে। এটা ইসলামের অন্যতম একটি সৌন্দর্য।

অন্যের ঘরে প্রবেশের অনুমতি এবং সালাম বিনিময়ের পাশাপাশি আরও বেশ কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে। একজন মুসলমান হিসাবে যা প্রত্যেকের জানা উচিত। আজকের এই লেখায় এমন কিছু বিধি-নিষেধ তুলে ধরা হবে। যা প্রত্যেক মুসলমানের অনুসরণ করা উচিত।

ঘরে প্রবেশের নিয়ম দরজায় কড়া নাড়া অথবা কলিং বেল বাজানো
সাধারণত কারো ঘরে প্রবেশের পূর্বে অবশ্যই সালাম দিয়ে নেয়া। আর যদি দরজায় কড়া নাড়তে কিংবা কলিং বেল বাজাতে হয় তবে তা অবশ্যই খুব কম শব্দে বাজাতে হবে। তা না হলে তা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর ধারাবাহিক ভাবে উচ্চ শব্দে কলিং বেল বাজানো যাবে না।

আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ- নবী (সাঃ)-এর দরজাসমূহ (অনুমতি চেয়ে) নখ দ্বারা খটখট করা হতো।

আদাবুল মুফরাদ : ইমাম বোখারী রহ.

দরজায় কড়া নাড়ার পর কখনোই দরজার সম্মুখে দাঁড়ানো যাবে না। কেননা এতে করে পর্দার বিধান ভঙ্গ হতে পারে। তাই দরজায় কড়া নাড়া পর অবশ্যই নিরাপদ পাশে অবস্থান করতে হবে, যেখান থেকে পর্দার বিধান ভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা নাই।

৩ বারের বেশী ডাকার পরেও যদি কোন উত্তর না পাওয়া যায় তবে সেখান থেকে চলে আসতে হবে। তবে এজন্য মনে কোন কষ্ট রাখা যাবে না। কেননা এমনও হতে পারে বাড়ির মালিক নামায, ওযু, গোসল কিংবা অন্য কোন কাজে ব্যস্ত আছে।

ভিতর থেকে আসা প্রশ্নের উত্তর দেয়া
সাধারণত অধিকাংশ সময় ঘরে প্রবেশ করার সময় ভিতর থেকে ‘কে’ অথবা “আপনি কে” জাতীয় প্রশ্ন আসে। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই পরিচিত নাম এবং পরিচয় প্রদান করা জরুরি। অনেক সময় অনেকে শুধু নাম বলে থেমে যায়। এমনটা করা যাবে না বরং পূর্ণ পরিচয় প্রদান করতে হবে, যাতে করে উনি আপনাকে চিনতে পারে।

অনুমতি প্রার্থনা করা ঘরে প্রবেশের পূর্বে অবশ্যই ঘরের মালিকের নিকট থেকে অনুমতি নেয়া জরুরি। অনুমতি না দিলে ঘরে প্রবেশ করা যাবে না। অনেক সময় অনুমতি না দেয়ার অর্থ এই মুহূর্তে ঘরে প্রবেশ করার মত পরিস্থিতি নেই। আর অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত ঘরে চোখ রাখা যাবে না।

অনুমতি না দিলে কখনোই ঘরে প্রবেশ করা যাবে না। এটা সুন্নতের খেলাপ। তাই প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত এই আমলটি অনুসরণ করা।

অভ্যর্থনা তথা সালাম প্রদান
অনুমতি নেয়ার পূর্বে যেমন সালাম দেয়া জরুরি তেমনি দেখা হওয়ার পরও সালাম প্রদান করা জরুরি।

নাফে (র) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, কেউ বসতি হীন ঘরে প্রবেশ করলে যেনও বলে, “আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহীন” (আমাদের উপর এবং আল্লাহর সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক)।

-(ইবনে আবু শায়বাহ)

এছাড়া আল্লাহ তায়লা পবিত্র কুরআনে বলেন,

হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।

(সূরা নূর : ২৭)

তাই ঘরে প্রবেশের পর সালাম প্রদান করা জরুরি অন্যথায় ইসলামের অন্যতম একটি আমল থেকে বঞ্চিত হতে হবে। এছাড়া কুশলাদি বিনিময় করাও জরুরি।

উপস্থিতি জানান দেয়া কাউকে বিস্মিত করার জন্য হঠাৎ করে কারও বাসায় উপস্থিত হওয়া যাবেনা। এতে করে মানুষ বিব্রত হতে পারে। আর এটা রাসূল সাঃ নিজেও পছন্দ করতেন না। তাই যখন কারও বাসায় যাবে সম্ভব হলে অবশ্যই পূর্বে জানিয়ে দেয়া জরুরি।

অনেক সময় পূর্বে জানিয়ে না গেলে, দেখা যাবে বাহিরে তার জরুরি কোন কাজ থাকবে তাই সে বাসায় অনুপস্থিত থাকবে। অথবা অন্যকোন সমস্যা থাকতে পারে। আর বর্তমান সময় যেহেতু মোবাইল ফোনের যুগ তাই এই আমলটি করা এখন আরও বেশী সহজ হয়ে গিয়েছে।

সন্তান বা পিতা-মাতার ঘরে প্রবেশের বিধান অনেকে মনে করে পিতা মাতার ঘরে সন্তানের প্রবেশের ক্ষেত্রে কোন বাধা বা অনুমতি নেয়া জরুরি নয়। এরকম ধারণা করা ভুল। কেননা এ ব্যাপারে স্বয়ং রাসূল সা: তাগাদা দিয়েছেন।

আলকামা (র) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ (রাঃ)-র নিকট এসে জিজ্ঞেস করলো, আমি কি আমার মায়ের নিকট (প্রবেশ করতেও) অনুমতি চাইবো? তিনি বলেন, প্রতিটি মুহূর্তে তুমি তাকে দেখতে পছন্দ করবে না।

-আদাবুল মুফরাদ:ইমাম বুখারী রহ.

এই হাদিসটি ছাড়া আরও অসংখ্য হাদিস রয়েছে এ ব্যাপারে। যেখানে পিতা-মাতার ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতি প্রার্থনার কথা এসেছে। এছাড়া আবার অনেকে আছে সন্তানের ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতিকে জরুরি মনে করে না। অথচ সন্তান বালেগ হলে তার ঘরে প্রবেশের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করা জরুরি। এটা ইসলামের অন্যতম একটি মৌলিক সৌন্দর্য। যেখানে প্রত্যেকের গোপনীয়তা ও স্বাধীনতা রক্ষার ক্ষেত্রে ইসলাম মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ</b

তার কোন সন্তান বালেগ হলেই তিনি তাঁকে পৃথক (বিছানা) করে দিতেন। সে অনুমতি ব্যতীত তার নিকট প্রবেশ করতে পারতো না।

-আদাবুল মুফরাদ:ইমাম বুখারী রহ.

এখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ইসলামের অন্যতম একটি বিধান হল সন্তানের ঘরে প্রবেশের পূর্বে অনুমতি প্রার্থনা।

ঘরে প্রবেশের নিয়ম

ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রথমে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। যদি ভুলে বাম পা আগে চলে যায় তবে পুনরায় ডান পা দিয়ে আবার প্রবেশ করতে হবে। স্বয়ং রাসূল সাঃ এই নিয়ম অনুসরণ করতেন।

ঘরে প্রবেশের পর দরজা খুব জোরে বা শব্দ করে বন্ধ করা যাবে না। খুব শান্ত ভাবে হাত দিয়ে দরজা বন্ধ করতে হবে। কেননা এটাও ইসলামের একটি অন্যতম বিধান।

শেষ কথা

উপরে ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রে মৌলিক বিধান গুলো আলোচনা করা হয়েছে। যদি কোন নিয়ম বাদ পরে যায়, তাহলে আপনারা কমেন্ট করে তা জানাতে পারেন। বলে রাখা ভাল কারো ঘরে আগুন লাগলে কিংবা কোন বিপদে পরলে অনুমতি নেয়া জরুরি নয়। এছাড়া বিপণী বিতানে প্রবেশের পূর্বেও অনুমতি নেয়া জরুরি নয়।

দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।

3 thoughts on "অন্যের ঘরে প্রবেশের ইসলামী নিয়ম কানুন। ভালো করে জেনে নিন"

  1. Md Khalid Author says:
    amader protteker uchit, nijo nijo life a islamer dewa nirdeshona mene chola, taolei amra shanti nissit korte parbp. inshaAllah.
  2. Md Khalid Author says:
    thank for your post about a law of islamic complete life.
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      ?

Leave a Reply