আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ !
সুপ্রিয় পাঠক , কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালোই আছেন ।
আমি রিফাত । আজ আল হাদিস থেকে একটি ঘটনা ও এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা তুলে ধরতে চাই । আশা করি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ পড়বেন ।
হযরত ইবনু ওমর (রাঃ) বলেছেন,
হযরত মুসা (আঃ) এর সাথে শয়তান সাক্ষাৎ করেছিল এবং বলেছিল , ” হে মুছা! আল্লাহ্‌ তায়ালা আপনাকে তাঁর রাসূল হিসাবে মনোনীত করেছেন এবং আপনার সঙ্গে তিনি কথা বলেছনে।  তা, আমি তো আল্লাহর এক সৃষ্টি। আমি একটা গুনাহ করে ফেলেছি। এখন তাওবা করতে চাইছি। আপনি আল্লাহর দরবারে আমার জন্য সুপারিশ করুন। যাতে তিনি আমার তওবা কবুল করেন। “
হযরত মুছা (আঃ) আল্লাহর উদ্দেশে দোয়া করেন।  আল্লাহ্‌ বলেন, ” ওহে মুছা! আমি তোমার ডাকে সাড়া দিয়েছি। সুতরাং হযরত মুছা (আঃ) ইবলীসের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এবং তাকে বলেন, ” আমাকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তুই যদি আদমের কবরে সাজদা করিস, তবে তোর তওবা কবুল করা হবে। ”
শয়তান তখন অহংকারে উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকে, আমি বেঁচে থাকাকালে সাজদা করিনি। মারা যাওয়ার পর তাঁকে কিভাবে সাজদা করতে পারি!
এরপর ইবলীস বলে, ” হে মূসা! আপনি যেহেতু আমার জন্য সুপারিশ করেছেন, সেহেতু আমার উপর আপনার হক এসে গেছে। তাই বলছি আপনি তিনটি ক্ষেত্রে আমার কথা স্মরণ করবেন। অর্থাৎ আমার বিষয়ে হুঁশিয়ার থাকবেন। ধ্বংসের সেই ক্ষেত্রে বা পরিস্থিতি তিনটি হল এইঃ
(১) যখন রাগ হবে, মনে করবে এটা আমার প্রভাবে হয়েছে, যা আপনার অন্তরে পড়েছে। আমার চোখ সেই সময় আপনার চোখে বসানো থাকে এবং আমি সেই সময় আপনার রক্তের মধ্যে দৌড়াদৌড়ী করতে থাকি।
(২) যখন দু’দল সৈন্য পরষ্পর যুদ্ধ করতে থাকে, সেই সময় আমিই মুজাহিদের কাছে আসি এবং তাঁকে বিবি-বাচ্চার কথা মনে  করিয়ে দিতে থাকি, যতক্ষণ না সে পিছনে ফিরে পালায়।
(৩) না-মাহরম (যার সঙ্গে বিয়ে অবৈধ নয় এমন) মহিলার সঙ্গে থেকেও বাঁচবেন। কেননা সেই সময় আমি পরস্পরের দূত হিসাবে কাজ করি।
প্রিয় পাঠক , আশা করি এ ঘটনা থেকে শিক্ষনীয় বিষয়টি আপনারা বুঝতে পেরেছেন । নিচে সেসবগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

শিক্ষাঃ
রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন । কারণ সামান্য কারণের রাগই অনেক বড় ধ্বংস বয়ে আনতে পারে । রাগের তীব্রতা বাড়ে শয়তানের কারণে আর এ অবস্থায় একমাত্র ইমানই পারে- হতে চলা বিপদ থেকে রক্ষা করতে । তাই ইমান রাখুন এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করুন । রাগ নিয়ন্ত্রণ করা শিখুন ।
আমরা রাগের বশে অনেক কিছু করে ফেলি বা বলে ফেলি । পরবর্তীতে এই কথা আর কাজের জন্যই আফসোস করি । কেন আফসোস করি জানেন কি ? কারণ কথা বা কাজটি আমরা করিনি । রাগের বশে করেছি । শয়তানের প্রতারনায় করেছি । যখন এই বশ কেটে যায় তখনই বুঝতে পারি যে কতবড় ভুল আমার করেছি ! কি ঠিক বলেছি তো ?
বুঝতে না পারলে একটি গল্প দিয়ে উদাহরণ দেওয়ার চেষ্টা করি ।

” এক লোক তার Brand New গাড়ি পরিষ্কার করছিলেন। এই সময় তার ছয় বছরের মেয়ে পাথর হাতে গাড়িটির কাছে যায় এবং গাড়ির একপাশে পাথর দিয়ে আঁচড়িয়ে কিছু লেখে। লোকটি যখন দেখতে পায় তার মেয়ে গাড়ির গায়ে আঁচড় কাট ছে তখন সে রাগে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে এবং মেয়েটির হাতে আঘাত করে। পরে মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন যে তার মেয়ের হাতে একধিক ফ্র্যাকচার হয়েছে।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মেয়েটি যখন প্রচণ্ড ব্যথায় তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে, “বাবা, আমার হাত কবে ঠিক হবে?”,
তখন লোকটি নির্বাক হয়ে পড়ে। সে তার গাড়িটির কাছে ফিরে যায় এবং রাগে গাড়িটিকে অসংখ্যবার লাথি মারে। সে তার মেয়েকে কতটা নিষ্ঠুরভাবে আঘাত করেছে তা ভেবে সে অত্যন্ত কষ্ট পায় এবং গাড়িটির সামনেই মাটিতে বসে পড়ে।
এসময় তার চোখ যায় গাড়িটির যেখানে তার মেয়ে পাথর দিয়ে আঁচড় কেটেছিল সেখানে। সেখানে লেখা ছিল, “বাবা, আমি তোমাকে ভালবাসি”।


এটি দেখে বাবা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না । লোকটি খুব বেশি আত্মগ্লানি ও এতো পরিমাণ অনুতপ্ত হলো যে সে নিজের তার গলায় ফাসির দড়ি পরে নিল । আর একটি কাগজের টুকরো তে লিখে গেলেন ,
” রাগকে নিয়ন্ত্রন করতে শিখুন , যাতে রাগ আপনাকে নিয়ন্ত্রণ না করে । যখনই রাগ আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করবে তখন থেকেই আপনার জীবনে ধ্বংসের পর্যায় শুরু হয়ে যাবে । আজ আমার জীবনের ইতি টানতে হচ্ছে আমার রাগের কারনে । অনুতপ্তময় জীবনের থেকে মৃত্যুই অনেক ভালো । ”         
গল্পটি অনেকেরই জানা থাকতে পারে ।

 

 

 

 

হিংসা এবং অহংকার থেকে নিজেকে দূরে রাখুন । কেউই পারফেক্ট নয় । কারণ মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয় । তাই অহংকার করাও উচিত নয় ।
আমরা সবাই জানি যে জিহাদের ময়দান থেকে পালায়ন করা কবিরা গুনাহ ।
নিজেকে পাপ কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করুন । পাপ হতেই পারে কিন্তু পাপ হলে অবশ্যই তাওবা করুন ।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পাপ কাজ থেকে দূরে রাখুন , রাগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা দান করুক । আমিন

 

11 thoughts on "যখন আমাদের রাগ হয় তখন শয়তান আমাদের রক্তের ভেতর দিয়ে চলাচল করে । হযরত মুসা (আঃ) এর সাথে ইবলিশের সাক্ষাতের ঘটনা ! ঘটনাটি আপনার জীবন বদলে দিবে ।"

  1. Darkweb Contributor says:
    kahini gulo valoi laglo
  2. Adib Contributor says:
    what a comeback!
  3. JoEℹ DeNLY☝ Author says:
    আমার,এরকম পোষ্ট অনেক দরকার ছিলো
  4. JoEℹ DeNLY☝ Author says:
    Thanks,to Share This Post
    1. Rifat Author Post Creator says:
      Thanks bro ?
  5. Shakil Contributor says:
    ভালো
  6. jbriyad Contributor says:
    ❤️❤️❤️
  7. ik Sakib Contributor says:
    সুন্দর পোস্ট
    1. Rifat Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ

Leave a Reply