আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ।
সুপ্রিয় পাঠক ,
হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে, বণী ইসরাঈলের এক মহিলা একবার হযরত মূসার (আঃ) কাছে এল।
সে বললােঃ ” হে আলাহর রাসুল !!! আমি একটি ভীষণ পাপের কাজ করেছি। পরে তওবাও করেছি | আপনি দোয়া করুন যেন আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করেন।
মূসা (আঃ) বললেনঃ ” তুমি কী গুনাহ করেছাে? ”

সে বললােঃ ” আমি ব্যভিচার করেছিলাম।
অতঃপর একটি অবৈধ সন্তান প্রসব করি এবং
তাকে হত্যা করে ফেলি।”

মূসা (আঃ) বললেনঃ “হে মহাপতাকিনী। এক্ষুনি বেরিয়ে যাও। আমার আশংকা, আকাশ থেকে এক্ষুনি আগুন নামবে এবং তাতে আমরা সবাই ভস্মীভূত হবাে।”
মহিলাটি ভগ্ন হৃদয়ে বেরিয়ে গেল।
অল্পক্ষণ পরেই জিবরীল (আঃ) এলেন। তিনি
বললেনঃ “হে মূসা! আল্লাহ আপনাকে জিজ্ঞাসা
করাছেন কী কারণে এই তওবাকারিণীকে তাড়িয়ে দিলেন? তার চেয়েও কি কোন অধম মানুষকে আপনি দেখেন নি?”

মূসা বললেনঃ “হে জিবরীল! এর চেয়ে পাপিষ্ঠ কে আছে?”

জিবরীল (আঃ) বললেনঃ “ইচ্ছাকৃতভাবে নামায
তরককারী।”


সুপ্রিয় পাঠক , ইচ্ছাকৃত ভাবে সালাত তরক করা কত বড় অপরাধ আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।
আজান হবে , আমাকে মসজিদে যেতে হবে , এই রকম একটি মন হতে হবে । সত্যি কারের মুসলমান কখনোই আজান শুনে বসে থাকতে পারে না । কোনো কাজ করতে পারে না । আজান হলে মনের মধ্যে অস্থিরতা চলে আসে ।
আমার সহিহ শুদ্ধ ভাবে সালাত আদায় না করলেও মহা বিপদের সম্মুখীন হতে হয় । এজন্য একটি ঘটনা বর্ণনা করছি । আশা করি বুঝতে পারবেন । ঘটনাটি অনেকেই শুনেছেন বা জানেন ।
ঘটনাটি হলোঃ
এক ব্যক্তি তার বােনের দাফন কাফন সম্পন্ন করে বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখলাে তার মানিব্যাগটি নেই। পরে তার মনে হলাে, ওটা কবরের ভেতর পরে গেছে। | তাই সে ফিরে গিয়ে কবর খুড়লাে।
দেখলাে, কবর জুড়ে দাউ দাউ করে আগুন জলছে। সে পুণরায় মাটি চাপা দিয়ে কাদতে কাদতে বাড়ী গেল। তার মায়ের কাছে সমস্ত ঘটনা জানালে তিনি বললেন, মেয়েটি নামাযের ব্যাপারে খামখেয়ালী করতাে এবং সময় গড়িয়ে গেলে নামায পড়তাে।
বিনা ওজরে নামায কাযা করলে যদি এরুপ পরিণতি হতে পারে তাহলে বেনামাযীর পরিণাম কত ভয়াবহ হতে পারে !! তা ভাবতেও গা শিউরে উঠে।

 

 

শুধু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নামায পড়াই যথেষ্ঠ নয়। নামাযকে শুষ্ঠুভাবে ও বিশুদ্ধভাবে পড়াও জরুরী। নচেত অশুদ্ধ নামায পড়া নামায না পড়ারই সমতুল্য !
বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে যে, একদিন এক ব্যক্তি মসজিদে নববীতে প্রবেশ করলাে। রাসুল (সাঃ) তখন মসজিদেই বসে ছিলেন। লােকটি নামায পড়লাে। অতঃপর
রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে সালাম করলাে। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেনঃ “তুমি ফিরে যাও এবং নামায পড়। কারণ তুমি নামায পড়নি।”
সে চলে গেল এবং আগের মত আবার নামায পড়ে রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে সালাম করলাে। তিনি সালামের জবাব দিয়ে আবার বললেনঃ ” তুমি ফিরে যাও এবং নামায পড়। কেননা তুমি নামায পড়নি।”
[ সহিহ শুদ্ধ ভাবে, ইখলাসের সাথে সালাত আদায় না করা , সালাত তরক করার শামিল । ]

এরুপ তিনবার নামায পড়ার পর লােকটি বললােঃ

” হে আল্লাহর রাসুল। আমি এর চেয়ে ভালাে ভাবে নামায পড়তে পারি না। আমাকে শিখিয়ে দিন। ”
তিনি বললেনঃ “প্রথমে নামাযে দাঁড়িয়ে তাকবীর
বল। অতঃপর যতটুকু পার কুরআন পাঠ কর।
অতঃপর রুকু কর এবং রুকুতে গিয়ে স্থির হও।
অতঃপর উঠে সােজা হয়ে দাড়াও। তারপর সিজদা দাও এবং সিজদায় গিয়ে স্থির হও। তারপর স্থির হয়ে বস। অতঃপর আবার সিজদা দাও এবং সিজদায় স্থির হও। এভাবে নামায় শেষ কর।”

কত মানুষ আছেন যারা সালাত আদায় করে ঠিক-ই কিন্তু আসলেই কি তারা সালাতের সঠিক সময় , সঠিক নিয়মে , সহিহ শুদ্ধ ভাবে ইখলাসের সাথে সালাত আদায় করে ?? নামাজ কখন কেমন করে হয়ে যায় বোঝায় যায় না ।তারা কি শাস্তি হতে রেহাই পাবে ? কখনো না । তারাও সেরূপ শাস্তি পাবে , যে নামাজ ই আদায় করেনি । এজন্য অবশ্যই সতর্ক হতে হবে ।

আল্লাহ তাআলা সবাইকে সহিহ শুদ্ধ ভাবে , সুন্দর করে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুক । আমিন

 

4 thoughts on "সালাত তরক করার পরিণাম । দেখে নিন যেভাবে সালাত আদায় করলেও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে ।"

  1. Adib☠️☠️? Contributor says:
    তুফান পোস্ট।
  2. Md Rumon Mahmud Author says:
    মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর পোস্ট ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য
    1. Rifat Author Post Creator says:
      অসংখ্য ধন্যবাদ ?
  3. Shakil Contributor says:
    ভালো

Leave a Reply