আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

কাকড়া খাওয়া কি হারাম নাকি হালাল কাঁকড়া খেলে কি হয়

প্রিয় পাঠক আমাদের দেশে অনেকেই কাঁকড়া চাষ করেন। কাঁকড়ার চাষ করে বিদেশ রপ্তানিও করেন। আবার অনেক কাঁকড়া খেতে বেশি পছন্দ করেন বা অনেকে সাগর পাড়ে বেড়াতে গেলে কাঁকড়া খেতে থাকেন।

এখন যে প্রশ্নটি হলো সেটা হলো কাঁকড়া খাওয়া কি হারাম নাকি হালাল অথবা নাকি মাকরূহ? এ বিষয়ে পবিত্র কোরআন এবং তথা ইসলাম কি বলে? এবং কাঁকড়ার খাওয়াতে কোনো উপকারিতা বা অপকারিতা রয়েছে কিনা? এই বিষয়ে বিস্তারিত আপনাদের ধারণা দিতেই আমাদের আজকের এই আর্টিকেল।

তো প্রথমে শেষ প্রশ্নটা দিয়েই শুরু করতে চাইঃ সেটা হলো কাঁকড়া খাওয়া কতটুকু উপকার বা অপকার?

দেখুন কাঁকড়া বহুল প্রচলিত একটা সুস্বাদু খাবার। এটা চিংড়ি মাছের মতোই মজাদার! কারণ এরা একই প্রজাতির। এটার মাংস অনেক সুস্বাদু। একবার খেলে বারবার খেতে মন চায়। শুধু যে সুস্বাদু তা নয় এর আছে অনেক পুষ্টিগুন।

কাঁকড়াতে আছে মাংসের সমান প্রচুর প্রোটিন। কাঁকড়াতে কানেক্টিভ টিস্যু থাকে না তাই সব রয়সের সবার খুব সহজেই হজম হয়। কাঁকড়ায় আছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড। সামুদ্রিক মাছে যে সেলেনিয়াম থাকে তার থেকে বেশি পরিমাণ সেলেনিয়াম থাকে কাঁকড়াতে।

যেমনঃ সব সামুদ্রিক মাছেই সেলেনিয়াম থাকে, কিন্তু কাঁকড়ায় সেলেনিয়াম থাকে পরিমানে আরো বেশি বেশি। সেলেনিয়াম আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও থাইরয়েড হরমোন ঠিক রাখে।কাঁকড়ায় কড লিভার তেলের ৩ গুন এবং গরুর মাংসের ১২ গুন বেশি সেলেনিয়াম থাকে।

সেই সেলেনিয়াম আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও থাইরয়েড হরমোন ঠিক রাখে। কাঁকড়া ফ্রাই বা নারিকেল দুধ দিয়ে খেতেও অনেক সুস্বাদু হয় কাঁকড়া। কাঁকড়ার মাংসে গরু ও মুরগীর তুলনায় ৫৭ গুন বেশি কপার ও ফসফরাস পাওয়া যায়। ক্যালসিয়ামের পর দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রয়োজনীয় মিনারেল হলো ফসফরাস।

হাড় ও দাঁতের প্রধান মিনারেল হলো ফসফরাস। আর কপার শরীরে আয়রনের মেটাবলিজম, সংরক্ষণ ও শোষণে ভূমিকা পালন করে। যেহেতু বেশির ভাগ ভিটামিন পানিতে দ্রবীভূত থাকে, তাই শরীরে এগুলো মজুদ থাকেনা। খাবারের মাধ্যমে এসবের চাহিদা পূরণ করতে হয়।

কাঁকড়ার মাংসে থাকে প্রচুর রিবোফ্লাভিন। রিবোফ্লাভিন ত্বক, চোখ ও স্নায়ুর সুরক্ষা করে। এছাড়াও আমাদের শরীরের মধ্যে স্টেরয়েড উৎপাদন ও লোহিত রক্তকনিকা তৈরির রিবোফ্লাভিন বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন তাদের বাড়তি রিবোফ্লাভিনের উৎস হতে পারে এই কাঁকড়ার মাংস।

কিন্তু এখন কাঁকড়ার এতো এতো উপকারিতা দেখে বা বড় চিংড়ি বা কাঁকড়া দেখে লোভ সামলাতে না পারলে আপনার বিপদ হতে পারে। তাই পরামর্শ হলোঃ কাঁকড়া নিয়মিত না খাওয়াই শরীরের জন্য মঙ্গল। কারণ এতে মার্কারি বিষক্রিয়া আশঙ্কা থেকে যায়।

বিশেষত, যাঁদের অ্যালার্জির ধাত রয়েছে এ ধরনের শেলফিশ এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। নাহলে চুলকানি, ফোলা,আমবাতের মতো সমস্যায় ভুগতে হবে। এমনকি পেটেব্যথাও হতে পারে। যাদের হার্টের সমস্যা উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের জন্য এই সুস্বাদু খাবারটি এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আর অ্যানাফাইল্যাটিক শক হলে তো কথাই নেই। দ্রুত চিকিৎসা না করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

অতএব কাঁকড়া শরীরের জন্য উপকার যখন পরিমিত খাওয়া হবে। কিন্তু অতিরিক্ত বা নিয়মিত খাওয়া যাবেনা। এইবার আসি কাঁকড়ার হালাল, হারাম বা মাকরূহ প্রসঙ্গেঃ প্রথমত আমরা কিছু মতামত তুলে ধরবো, তারপর কোরআন হাদিসের আলোকে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

কারণ এই মাসয়ালা নিয়ে আলেমদের মধ্যে দ্বিমত আছে। যেমন প্রথম মতঃ হানাফি মাযহাব মতে নদীনালার শুধু মাছই খাওয়া জায়েজ। অন্য কোন প্রাণী খাওয়া জায়েজ নয়।সেই হিসেবে কাঁকড়া যেহেতু মাছের মাঝে গণ্য নয়, তাই হানাফি মাযহাব অনুসারে তা খাওয়া বৈধ নয়। (ফাতওয়া কাসিমীয়া ২৪/১২২)

দ্বিতীয় মতঃ কাঁকড়া খাওয়া যাবে। সামুদ্রিক প্রাণী যা পানিতে থাকে তা কাঁকড়া হোক বা অন্য প্রাণী হোক তা খাওয়া হালাল (আল মুকনে ২৭/২৮২ মাসআলা নং ৪৬২৬)

হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেন → সমুদ্রের পানি পবিত্র এবং তার মৃত প্রাণী হালাল (আবু দাউদ, বুলূগুল মারাম,পবিত্রতা অধ্যায় ১,হাদিস ৮৩)

তৃতীয় মতঃ কাঁকড়া খাওয়া জায়েজ। যদি কারো খেতে রুচি হয়, তিনি খেতে পারবেন। যেহেতু নবী (সাঃ) হাদিসের মধ্যে বলেছেন → সমুদ্রের অথবা নবীর মধ্যে, যেই মৃত প্রাণী আছে, সেগুলো সবটাই হালাল । এর মধ্যে কাঁকড়া অন্তর্ভুক্ত হবে এবং কাঁকড়া খাওয়াও হালাল হবে ( আবু দাউদ হাদিস নাম্বার ৮৩)

নবী করীম (সাঃ) এর হাদিস দ্বারা এটি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে , কাঁকড়া খাওয়া জায়েজ রয়েছে। তবে আলেমদের মধ্যে এই মাসয়ালা নিয়ে একটু বিতর্ক আছে। তাই কেউ কেউ বলে থাকেন, এটি মূলত রুচির বিষয়।

যদি কেউ খেতে চান,খেতে পারেন। আপনি যদি কাউকে জোর করে খাওয়াতে চান, তাহলে তার হয়তো সমস্যা তৈরি হতে পারে। অর্থাৎ আমরা বুঝতে পারলাম হানাফি মাযহাব মতে কাঁকড়া খাওয়া মাকরূহ আর অন্যান্য মতে ইহা খাওয়া জায়েজ আছে।

এখন আসুন দেখি পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা কি বলেছেনঃ মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন → তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও সমুদ্রের খাদ্য হালাল করা হয়েছে তোমাদের উপকারার্থে। (সূরা মায়েদাহ ৯৬)

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন → আপনি বলে দিনঃ যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে,তন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য পাই না কোন ভক্ষণকারী জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে, কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস এটা অপবিত্র এবং অবৈধ। (সূরা আনআম ৫)

রাসূল (সাঃ) এর সাহাবী শুরাইহ বলেন → পানিতে বসবাসকারী সমস্ত প্রাণী খাওয়া বৈধ। (বুখারী ৫/২০৯১)

রাসূল (সাঃ) আর বলেন → নদী বা সাগরের পানি পবিত্র এবং পানিতে বসবাসকারী মৃতপ্রাণী খাওয়া বৈধ। (তিরমিজি ৬৯,আবূ দাউদ ৮৩,হাদিসটি আলবানী (রহ.) ইরওয়াতে সহীহ বলেছেন ১/২১)

রাসূল (সাঃ) আরো বলেছেন → পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা যা হালাল করেছেন তা হালাল আর যা হারাম করেছেন তা হারাম আর যে বিষয়ে নীরবতা অবলম্বন করেছেন তা মাফ করা হয়েছে। সুতরাং তোমরা আল্লাহ পক্ষ থেকে মাফকৃত বস্তু গ্রহন কর। কেননা আল্লাহ কোন বিষয়ে ভুলেন না। অতঃপর রাসূল (সাঃ) এই আয়াত তেলাওয়াত করেন। আর তোমরা রব কিছুই ভুলেন না ( সূরা মারইয়ম ৬৪)

তাছাড়া ইসলামের একটি অন্যতম মূলনীতি হল,দুনিয়াবী সকল বস্তুই বৈধ যতক্ষণ না ইসলামে সে ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া যায়। সুতরাং আজকের আলোচনা হতে এ কথা প্রতিয়মান হলো যে,কাঁকড়া খাওয়া বৈধ হওয়ার মধ্যে কোন বাধা নেই। মাকরূহ বলারও কোন প্রমান নেই।

তবে কারও যদি রুচি না হয় তবে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু এটাকে হারাম বা মাকরূহ বলার কোন যৌক্তিকতা নেই। আর যে জিনিস হালাল তার চাষ, ব্যবসা বা রপ্তানি করতে কোন অসুবিধা নাই ইনশাআল্লাহ। তবে আমার মত হলোঃ যে বিষয় নিয়ে মত পার্থক্য আছে সে বিষয়ে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। যেহেতু কাঁকড়া না খেলে অন্তত আমাদের মুসলিম ভাইদের মধ্যে বিভাজন এড়িয়ে চলা যাবে।

তবে আরেকটি কথাঃ বিভাজন থাকবেই, তার মানে এই না যে আপনি কাঁকড়া পছন্দ করলে তা খাবেন না। আপনি ইসলামের মূল নীতির আলোকে আছেন কিনা,অথবা কোরআন ও সুন্নাহ যে বিষয়ে শিথিলতা দেখিয়েছে বা অনুমোদন দিয়েছে তা করতে আপনার কোনো বাধা নেই। আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে সব ব্যাপারে ধৈর্য ধারন করার শক্তি দান করুন, আমিন।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা লাইক কমেন্ট শেয়ার করে ইসলামি দাওয়াতে আপনিও অংশগ্রহণ করুন।প্রিয় বন্ধুরা জানার স্বার্থে দাওয়াতি কাজের স্বার্থে আর্টিকেলটি অবশ্যই শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন।হতে পারে আপনার একটি শেয়ার বহু মানুষ উপকৃত হবে ইনশাআল্লাহ।

21 thoughts on "কাকড়া খাওয়া কি হারাম নাকি হালাল কাঁকড়া খেলে কি হয়। সবাই জেনে নিন"

    1. MD Shakib Hasan Author Post Creator says:
      Thanks ?
    2. Akondo Subscriber says:
      সাপ, ব্যাঙ, কচ্ছপ,জোক, কুচে, গুইসাপ কাঁকড়া, ঝিনুক, শামুক অক্টোপাস কুমির জলহস্তী হাঙর এগুলো খাওয়া অনেক সওয়াব, এগুলো খেয়ে আমাকে জানিয়েন
    1. MD Shakib Hasan Author Post Creator says:
      Thanks ?
  1. Cyber mad Contributor says:
    কুচে খাওয়া কি?হালাল না
    হারাম?
    1. MD Shakib Hasan Author Post Creator says:
      হালাল
  2. Md Hridoy Author says:
    Vai, somudrer sob pronir modde to sap (snake) o ache.
    Bepar ta bujlam na.
    1. MD Shakib Hasan Author Post Creator says:
      ভাই সাপ দিয়ে বিভিন্ন রোগের ওষুধ বানানো হয়। সাপ এমনি রান্না করে খাওয়া হয়না
  3. ♚ ?? ?????? ♚ Author says:
    Haram….ki na kew nishit noi….s,o na khaoyai better bole mone kori
    1. MD Shakib Hasan Author Post Creator says:
      হুম।
  4. MD Sagor Contributor says:
    vai,apnar sathe kotha ache. Fb link dile valo hoy.
  5. MD Sagor Contributor says:
    apne nayeem,imtiaz k chinen?
    1. MD Shakib Hasan Author Post Creator says:
      Hmmm
  6. tanvirtheboss Subscriber says:
    বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে আমরা তখনো বসে,
    বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি ফিকাহ ও হাদীস চষে।
    (কাজী নজরুল ইসলাম)
    1. MD Sagor Contributor says:
      Hlw apni ki bujate chan.
      Bissoy ta clear koren.
    2. tanvirtheboss Subscriber says:
      mathai ghilu thakle nijei bujhe jaiba ki bujhate chaisi
  7. MD Sagor Contributor says:
    Vai, imtiaz ar nayeem er fb link ta deya jabe? Please bro….
  8. মাশাআল্লাহ
    ভাই ভালো লিখছেন
  9. Akondo Subscriber says:
    সাপ, ব্যাঙ, কচ্ছপ,জোক, কুচে, গুইসাপ কাঁকড়া, ঝিনুক, শামুক অক্টোপাস কুমির জলহস্তী হাঙর এগুলো খাওয়া অনেক সওয়াব, এগুলো খেয়ে আমাকে জানিয়েন

Leave a Reply