আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

যে সব গুনাহ তাওবা করার পরও মাফ হবেনা

আপনি কি কাউকে গালি দিয়েছেন..? আপনি কি কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন…? কারো মাল অন্যায় ভাবে ভোগ করেছেন…? কাউকে মেরেছেন বা কাউকে হত্যা করেছেন…? কাউকে যেকোনো উপায়ে অপমান কিংবা মানহানি করেছেন…? কারো উপর কোনো জুলুম করেছেন…? কাউকে ওজনে কম দিয়েছেন…? বা কাউকে যেকোনো ভাবে ঠকিয়েছেন…? বান্দার কোনো হক নষ্ট করেছেন…? স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন..?

যদি আলোচ্য বিষয়ের এইসব বিষয় করে থাকেন তাহলে আজই তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন। পাওনাদারের পাওনা বুঝিয়ে দিন।অন্যথায় তওবা করার পরও আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবেনা। আপনার এতো কষ্টের অর্জিত নেক আমল কিয়ামতের দিন তাকে দিয়ে দিতে হবে এবং তার গুনাহ আপনার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। পরিণামে আপনাকে জাহান্নামের অধিবাসী হতে হবে।

হযরত আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন → তোমরা কি বলতে পারো অভাবী লোক কে…? তারা বললেন আমাদের মাঝে যার দিরহাম (টাকা পয়সা) ও ধন সম্পদ নেই সে তো অভাবী লোক। তখন তিনি বললেন → আমার উম্মতের মধ্যে সে প্রকৃত অভাবী লোক যে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন সালাত,সাওম ও যাকাত প্রভৃতি পাহাড় সমপরিমাণ নেকি নিয়ে আসবে।

কিন্তু দুনিয়াতে সে কাউকে গালি দিয়েছে বা কাউকে অপবাদ দিয়েছে। কারো সম্পদ ভোগ করেছে। কাউকে হত্যা করেছে ও আরেক জনেকে প্রহার করেছে এ সমস্ত কারণে তার সকল আমল ঐ সকল ব্যক্তির দিয়ে দেওয়া হবে। আর ঐ ব্যক্তির যতগুলো পাপ রয়েছে তা তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ এরপর ঐ ব্যক্তিকে তার নেক আমল থেকে তাদের দিয়ে দেয়া হবে আর যদি পাওনাদারের হক তার নেক আমল থেকে পূরণ করা না যায় সে ঋণের পরিবর্তে তাদের পাপের একাংশ তার প্রতি নিক্ষেপ করা হবে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে [ সহীহ মুসলিম (হাদিস একাডেমি) হাদিস নাম্বার ৬৪৭৩,২৫৮১ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৩৪৩ ইসলামিক সেন্টার ৬৩৯৩)]

রাসূল (সাঃ) বলেন → কেউ যদি তার কোনো ভাইয়ের সম্মানহীন কিংবা কোনো জিনিসের ক্ষতি করে থাকে তবে আজই(দুনিয়াতেই) তার কাছে থেকে তা বৈধ করে নেওয়া উচিত। (অর্থাৎ ক্ষমা চেয়ে নেওয়া ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।) এবং সেই ভয়াবহ দিন আসার আগেই এটা করা উচিত যেদিন টাকাকড়ি দিয়ে কোনো প্রতিকার করা যাবে না!

বরং তার কাছে কোনো নেক আমল থাকলে তার জুলুমের পরিমাণ হিসেবে মজলুমকে ওই নেক আমল দিয়ে দেওয়া হবে এবং তার কোনো অসৎ কাজ না থাকলেও ওই মজলুমের অসৎ কাজ তার ওপর বর্তানো হবে।

রাসূল (সাঃ) আরো বলেছেন → ব্যক্তির ঋণ পরিশোধের গড়িমসি করা জুলুম। ইরওয়া (২৬৩২) বুখারী ২২৮৮, ২৪০০মুসলিম ১৫৬৪,১৩০৮, নাসায়ী ৪৬৮৮,৪৬৯১,আবু দাউদ ৩৩৪৫,ইবনে মাজাহ ২৪৫৩, আহমাদ ৭২৯২ আবূ দাঊদ ২০২১৫,সহীহ হিব্বান ২৭৭৪,মুজামুল কাবীর লিত্বত্বাবারানী ৪৭২)

জুলুম একটি ভয়াবহ অপরাধ। এই অপরাধে দুনিয়ার শাস্তির পাশাপাশি পরকালে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন → জালিমরা শিগগিরই জানবে কোথায় তারা প্রত্যাবর্তন করবে। (সূরা শুআরা আয়াত ২২৭)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন → আর তোমরা জালিমদের প্রতি ঝুঁকে পড়বে না ঝুঁকে পড়লে জাহান্নামের আগুন তোমাদের স্পর্শ করবে (সূরা হুদ আয়াত ১১৩)

তাই সবলদের উচিত দুর্বলদের সঙ্গে ভাই ভাই হয়ে মিলেমিশে থাকা। মহানবী (সাঃ) বলেছেন → মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করবেনা কিংবা তাকে জালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে আল্লাহ তার অভাব পূরণ করে দেবেন।

যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের বিপদ দূর করবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন রাখবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন ( বুখারী শরিফ ২২৬৫)

জুলুমের ভয়াবহতা সম্পর্কে মহানবী (সাঃ) বলেন → নিশ্চয়ই জুলুম কিয়ামতের দিন ভীষণ অন্ধকারে পরিণত হবে। (সহিহ আল জামি (বাইনাস সাহিহাইন) হাদিস ১৩৮৭)

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত মহানবী (সাঃ) মুআজ (রা.) কে ইয়েমেনে পাঠালেন এবং তাকে বললেন মজলুমের অভিশাপাকে ভয় করো। কেননা তার অভিশাপ ও আল্লাহর মধ্যে কোনো আড়াল থাকেনা। অর্থাৎ খুব দ্রুত তার বদদোয়া আল্লাহ কবুল করে নেন (বুখারী হাদিস ২২৭১)

হযরত আবুজর গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত নবী করীম (সাঃ) তাঁর মহান প্রতিপালকের পক্ষ থেকে বর্ণনা করেন। আল্লাহ বলেন → হে আমার বান্দারা! আমি আমার জন্য জুলুম হারাম করেছি আর তা (জুলুম) তোমাদের পরস্পরের মধ্যেও হারাম করেছি। অতএব তোমরা একে অপরের ওপর জুলুম করোনা। ( সহিহ মুসলিম হাদিস নাম্বার ৬৭৩৭)

আশা করি সবাই সবকিছু বুঝতে পেরেছেন। কোথাও সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা ফেসবুকে জানাতে পারেন ফেসবুকে আমি

Leave a Reply