আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন পৃথিবীর শেষ নবী ও রাসুল।পৃথিবীতে প্রায় 1 লক্ষ 24 হাজার পয়গম্বর মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন বলে আমরা জানি।

প্রত্যেক নবী রাসুলের কিছু-না-কিছু মোজেজা ছিল।অন্যান্য নবীগণের সে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যতম। তিনি নবীগণের সরদার। তিনি যে বিষয়ে জানতেন অন্যান্য পয়গম্বর বা বা নবী রাসুল জানতেন না অনেক কিছু।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভবিষ্যৎ বাণী নিয়ে আলোচনা করব। এই ভবিষ্যদ্বাণী কোন নবী রাসূলগণ এখনো পর্যন্ত করতে পারেননি।একমাত্র আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রেরিত শেষ নবী এবং রাসূল। তিনি এই ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হয়েছেন।

আজকে আমরা মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করবো আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভবিষ্যৎ বাণী।আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামতের পূর্বের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। অনেক কাফের-মুশরিক এমনকি ভালো মানুষ আল্লাহর প্রিয় বান্দারাও আমাদের নবীকে প্রশ্ন করেছিল।

কিয়ামত কবে হবে? একই প্রশ্ন হযরত জিবরাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লামও আমাদের নবীকে প্রশ্ন করেছিলেন।হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জবাব দিয়েছিল কেয়ামত কবে হবে একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই ভাল জানেন?

তবে আমাদের প্রিয় নবী হযরত বলেছেন কেয়ামতের পূর্বে অবশ্যই এই আলামত গুলো দেখা যাবে। এ আলামত গুলো দেখলে তোমরা নিশ্চিত হওয়া কিয়ামত খুবই নিকটবর্তী। এবং আলামত গুলো প্রকাশ পেলে তারপর কিয়ামত সংগঠন হবে ইনশাআল্লাহ।

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভবিষ্যৎবাণী?

আমরা যে ভবিষ্যৎ বাণী গুলো নিয়ে আলোচনা করবো এগুলো কোরআন এবং হাদিস থেকে পাওয়া। কোন আলামত আমরা বানিয়ে বা মিথ্যা বলে আপনাদের কাছে প্রচার করব না ইনশাআল্লাহ। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত হলো শেষ নবীর আগমন এবং মৃত্যু।

তার পরবর্তী আলামত হলো চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়া। যে কথা কুরআনেও আমরা স্পষ্ট জানতে পারি। তার পরবর্তী আলামত পৃথিবীতে ভন্ড নবী দাবিদার বের হবে। শেষ জামানায় নিজের ঈমানকে টিকিয়ে রাখা অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে। কেয়ামতের পূর্বে সুদ ঘুষ ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।

কেয়ামতের পূর্বে মানুষের এলেম সম্পর্কে অনেক জায়গায় ভুল ধারণা থাকবে। তারা ভুলকে ভুল না বলে সঠিক হিসেবে চালায় যাবে। কিয়ামতের পূর্বে ভূমিকম্প সংঘটিত হবে। মানুষের ধন সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ফকির মিসকিন খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হবে।

এমনকি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন শেষ জামানায় নারীরা ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে। ভালো মানুষেরা শেষ জামানায় প্রতারিত হবে। এমনকি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সময়কে উঠিয়ে নিবেন অর্থাৎ সময় দ্রুত চলে যাবে।

নারীরা পর্দা করবে কিন্তু তাদের উলঙ্গ মনে হবে।ঠিকই তারা গায়ে জামা-কাপড় ব্যবহার করবে কিন্তু স্পষ্ট বুঝা যাবে সে উলঙ্গ।এই কারণেই পুরুষেরা তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গুনাহের সাথে লিপিবদ্ধ হবে। শেষ জামানায় মানুষের ঈমান টিকিয়ে রাখা খুবই কষ্টকর হবে।

মানুষেরা ঘরবাড়ি বিল্ডিং এমনকি মসজিদ নিয়ে প্রতিযোগিতা করবে। পৃথিবীতে এমন কিছু দেখা যাবে যা কেউ এর আগে দেখেনি বা কল্পনাও করেনি। মানুষ নিজের পরিবারের সে আত্মীয়-স্বজনদের বা বন্ধু-বান্ধবীদের বেশি আপন ভাবতে শুরু করবে। তাছাড়া নারীদের বিভিন্ন ধরনের অহংকার সৃষ্টি হবে সেই কামনায়।

বেশিরভাগ লোকই নামাজ পড়বে তবে আল্লাহর জন্য নয় বরং লোক দেখানোর জন্য। বিনা কারণে মানুষ মানুষকে হত্যা করবে। কেউ যদি জিজ্ঞেস করে কেন কে মারলে তাহলে সে কোন জবাব দিতে পারবে না। কেয়ামতের পূর্বে হালাল জিনিসকে হারাম এবং হারাম জিনিসকে হালাল মনে করবে অনেকেই।

শেষ জামানায় এমন ঘটনা ঘটবে যেগুলো কেউ কখনো করেনি। মানুষের পাপ এর পরিমান প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। বাজার ঘাটে নারীদের যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে। মানুষেরা পুরুষ এর মত থাকতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করবে। পুরুষেরা নারীদের মত থাকতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করবে। এমনকি পুরুষেরা চুলে কালো রং দিতে পছন্দ করবে।

পুরুষেরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে না এবং অন্যদের দোষারোপ করতে থাকবে। মানুষ আল্লাহর ভয় এবং পাপ কাজ কোনটা তার প্রতি কোনো গুরুত্ব থাকবে না। এমনকি অনেকেই পরকালের কথা চিন্তাও করবে না। মানুষ সতীর্থ হারা হয়ে পড়বে।

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সে যুগে বিভিন্ন রকম মহামারী ও আজাব পৃথিবীতে পাঠাবে। এলেম দ্বীনদার লোকেরা মৃত্যুবরণ করবে। সঠিক দ্বীনদার লোকেরা পাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে যাবে। এমন এমন যানবাহন তৈরি করা হবে যেখানে মানুষ পায়ে হেঁটে বাজার ঘাটে অথবা কোন স্থানে যেতে হবেনা।

যেখানে যেতে কয়েকদিন লেগে যেত সেখানে মুহূর্তের ভিতর মানুষ যেতে পারবে। মানুষের স্বভাব চরিত্র পাল্টিয়ে ভুলভ্রান্তি দিকে চলে যাবে কিন্তু বুঝতে পারবে না। মানুষের লোভ-লালসা ও অহংকারী বৃদ্ধি পাবে তবে মানুষ বুঝতে পারবে না।

মানুষের ভুল কাজকর্মগুলো অনেকেই ঠিক মনে করে কাজকর্ম চালিয়ে যাবে। এভাবে যেতে যেতে এক সময় আল্লাহর দ্বীনকে উঠিয়ে নিবেন পৃথিবী থেকে। পৃথিবীর সৌন্দর্য প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ঠিক শুক্রবারে। এবং একথা স্পষ্ট বলেছেন পৃথিবী ধ্বংস হবে ঠিক শুক্রবারে।

পৃথিবী কেয়ামতের পূর্বে সূর্য পূর্ব থেকে পশ্চিমে উদিত হবে। তাছাড়া আরও ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর ফিতনা পৃথিবীতে দেখা যাবে যা মানুষ কল্পনাও করেনি। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় কিছু না হল পৃথিবীতে দাজ্জালের আগমন ঘটবে। সে নিজেকে নবী এবং পরবর্তীতে খোদা দাবি করবে।

দাজ্জাল সাধারন কোন মানুষ নয় অবশ্যই সে মানুষ তবে তার ভেতরে নানা ধরনের অলৌকিক ক্ষমতা থাকবে যা সাধারণ মানুষের নেই বা থাকবে না।তার পূর্বে অর্থাৎ দাজ্জালের আগমনের পূর্বে খলীফাতুল্লাহ আল মাহাদী আলাই সাল্লাম এর আগমন ঘটবে। তিনি আসার পূর্বে পৃথিবীর অবস্থা খুবই খারাপ থাকবে।

মুসলমানদের হাতে পৃথিবীর কোন ক্ষমতা থাকবে না। মাহাদী আলাই সাল্লাম আগমন করার পর প্রচুর পরিমাণে ব্যাপক পরিমাণে যুদ্ধ সংঘটিত। আলহামদুলিল্লাহ সে যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয়ী হবে।দাজ্জালের আগমনের পর ঈসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমন ঘটবে।তিনি এসে দাজ্জালকে হত্যা করবে এবং মুসলমানদের চূড়ান্ত বিজয় আবার হবে।

আজ থেকে জানা যায় ঈসা আলাইহিস সাল্লাম হয়তো 40 বছর পৃথিবী রাজত্ব করবেন। তারপর তিনি সাধারণ মৃত্যুবরণ করবেন। আর পৃথিবীতে আবার সুখ আসবে ফিরে।এ আলামত গুলো প্রকাশ সহ আরো অন্যান্য আলামত প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না।

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা স্পষ্ট করে বলেছেন যে আলামত প্রকাশ নাহলে কখনোই কিয়ামত সংঘটিত হবে না। যদি পৃথিবীর হায়াত মাত্র 10 দিন থাকে তাহলে, আল্লাহ তা’আলা এই ঘটনাগুলো নয় দিনের ভিতরে ঢুকিয়ে দিবেন। তার আগ পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না।

এই কথা থেকে আমরা স্পষ্ট প্রমাণ পায় অবশ্য কিয়ামতের পূর্বে এই ঘটনাগুলো ঘটেবে। তার আগ পর্যন্ত মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কিয়ামত সংঘটিত করবেন না। এতক্ষণ আমরা যে ভবিষ্যৎ বাণী গুলো সম্পর্কে জানলাম এগুলো সবই হাদিস এবং কুরআন থেকে পাওয়া।

আর্টিকেল এর শেষ কথা

বন্ধুরা আমরা আজকে এয়ারটিকেল থেকে জানতে পারলাম নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর করে যাওয়া ভবিষ্যৎ বাণী গুলো (কিয়ামত সম্পর্কিত)। যে তথ্যগুলো আমরা উপস্থাপন করেছি অবশ্য সেগুলো কোরআন এবং হাদীস থেকে পাওয়া।

এই আর্টিকেলে কোথাও ভুল ত্রুটি হলে দয়াকরে কমেন্টে জানিয়ে দিবেন। আমরা অবশ্যই সংশোধনঃ হয়ে আর্টিকেলটি আপডেট করবো আবার ইনশাল্লাহ।আর্টিকেল সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থাকলে এটাও কমেন্ট করবেন আশা করি।আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

বরাবরের মতো আজকের এই আর্টিকেলটি এখানেই শেষ করবো তার আগে সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন।আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক দিয়ে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

Leave a Reply