এক অতিশয় বৃদ্ধ নাম তার আবু আফরাক ইহুদি ধর্মের অনুসারী , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় হিজরত করেন তখনই তার বয়স ১২০ বছর দাড়ি চুল সব পেকে সাদা ধবধবে হয়ে গেছে সেই কবেই।

বুড়োও জানে তার একটা কবরে চলে গেছে বহু আগে যে কোনদিন যেকোনো সময় তার পরপারে ডাক চলে আসতে পারে। ইহুদি গোষ্ঠীর রক্তের সাথে মিশে আছে ইসলামের প্রতি বৈরিতা সুযোগ পেলেই ইসলামকে বধ করবে এমন এক অবস্থা।

শুধু কি ইসলাম এবং মুসলমান? আল্লাহর কত নবীর রক্ত যে রঞ্জিত হয়েছে এই বর্বর গোষ্ঠীর হাতে তার সঠিক হিসাব আল্লাহই ভালো জানেন।

বৃদ্ধ আবু আফাকের কেন ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছেছে?

কিন্তু সে ইসলাম গ্রহণ তো করবে দূরের কথা রাসুল সাঃ এর মদিনায় আগমন এবং মদিনাকে ইসলামী রাষ্ট্রের রূপান্তরিতকরণে তার ভেতরটা দগ্ধ হয়ে গেছে।

সেজন্য ভয়াবহ অগ্নিকুণ্ডে প্রতিমুহূর্তে প্রচলিত হচ্ছে কিভাবে ইসলামের জ্বলন্ত দীপশিখা কে নিজের মুখের ফুৎকারে নেভাতে পারবে, এটা ভেবেই তার দিন কাটে।

বার্ধক্য তার দেহের বল কেড়ে নিয়েছে তরবারি নিয়ে লড়াই করার সামর্থ্য এখন আর নেই হ্যাঁ ইহুদিরা লড়াই করেছেই বা কবে ওদের অভ্যাস হলো আগুন জ্বালিয়ে দেয়া জনগণকে উত্তেজিত করে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে শুকৌশলে ওরা কেটে পড়ে।

এরপর গ্যালারিতে বসে মজা করে এবং খেলা দেখে আর হাততালি বাহবা দিয়ে স্টেডিয়াম জমিয়ে রাখে প্রচারের কাজটাও ভালই সারতে পারে ওরা রাখে থার্ড পার্টির ভূমিকা।

সবকিছুর আড়ালে থেকে যারা শুধুই কল কাটি নেড়ে যায় অবিরাম।

ইহুদি আবু আফাকের ভাষণ দেয়ার যোগ্যতা ছিল তার কাব্য প্রতিভা ছিল জাহিলি যুগে কাব্য সাহিত্যে বামদের দখল ছিল বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ইসলামের বিপক্ষে সে তার এই যোগ্যতাকেই কাজে লাগালো।

ইহুদি আবু, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিপক্ষে দ্রোহের আগুন উসকে দিল লোকজনকে ইসলাম ধ্বংস করার জন্য নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হত্যা করার জন্য সাধ্যমত প্ররোচিত করতে লাগলো।

যদিও তারা মুসলিমদের সাথে জিম্মা চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল কিন্তু বর্বর ইহুদী গোষ্ঠী এসব চুক্তি চুক্তির থোরাই কেয়ার করতো এক্ষেত্রে তার মুক্ত চিন্তার আহ্বানকে অনেকেই পছন্দ করলো অল্পদিনে সে তার সমমনা এক ঝাঁক ফ্যান পেয়ে গেল।

ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ মূলক যে কাব্যই তার ভেতর থেকে উদ্ধৃত হতো তাতে বিরুদ্ধবাদীদের লাইক রিএক্টেভ ভরে যেত বদর যুদ্ধে মুসলিমদের অভাবিত ও অপ্রত্যাশিত সাফল্য দেখে ইহুদি আবু আফাকের বিদ্বেষ ও জালা আরো বেড়ে গেল।

যখন সে জানতে পারলো ইসলামের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে হারিস ইবনে সুয়াইদ ইবনে সামিককে হত্যা করেছেন তখন সে খুললাম খোলাই তার বেইমানি ওনিফা কে প্রকাশ করে ফেলল সকলের সামনে দাঁড়িয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে অপমানমূলক ও উচ্চারণ অযোগ্য জঘন্য শব্দ কবিতা বৃদ্ধি করতে লাগলো।


বেঁচে আছি আমি বহুদিন তবু দেখি নাই কভু এমন সমাবেশ অথবা জনগোষ্ঠী যারা সমবেত টেইলার বংশধরদের চেয়েও বেশি বিশ্বস্ত তাদের উদ্যোগ ও জোটের প্রতি ভূপতিত করেছিল যারা পর্বতসমূহ ও কভু করেনি বশ্যতার কারো। এক আরোহী এসে বিভক্ত করেছে তাদের দুই ভাগে সমস্ত প্রকার জিনিসকে হালাল-হারাম বলে। মাননী হার তোমরা দুব্বার যশ ও রাজশ শক্তির কাছে করনি শির নত তোমরা সম্রাট দুবরার কাছে।

আল্লাহর রাসূলের সাহাবী সেলিম ইবনে উমাইর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু যখন আবু আফাকের এহেন আস পর্দার কথা জানতে পারেন। তখন তিনি বলেন আমি মানত করে নিজের উপর অপরিহার্য করে নিলাম।
আমি এই জাহান্নামের কুকুর কে নিজহাত হত্যা করব যদি হত্যা করতে না পারি তাহলে তার সামনে আঘাতে প্রতিঘাতে নিজের শাহাদাতের সুখা পান করব।

সানিম ইবনে উমাইর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ছিলেন অনেক বড় বুজুর্গ, নিজ গোত্রে তিনি বাক্কা নামে পরিচিত ছিলেন বাক্কা শব্দের অর্থ আল্লাহর ভয়ে যার চোখ থেকে সর্বদা অশ্রু ঝরে।

বুজুর্গ হওয়া সত্বেও আল্লাহর রাসূলের ডাকে তার সঙ্গে জিহাদের ময়দানে তিনি শরীক থাকতেন সর্বাগ্রে তাঁর নফল ইবাদত বন্দেগীর ব্যস্ততা কখনই তাকে দিনের পথে জীবন উৎসর্গ করা মহান খেদমত থেকে দূরে সরিয়ে রাখে নি।

সালিম ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ছিলেন বদরী সাহাবী, যাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ দুনিয়াতেই ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন সালি ম ইবনে লাইলাতুল আকাবায় অংশগ্রহণকারীদের ও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

তাবুক ছাড়া বদর পরবর্তী প্রায় সবগুলো যুদ্ধেই তিনি বীরত্বের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি ছিলেন সেই মহান ৭ সাহাবীর অন্যতম যাদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনের সূরা তাওবার ৯২ নম্বর আয়াতটি নাযিল হয়েছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাবুক যুদ্ধে বের হওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন তখন তারা সাতজন সাহাবী এসে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাছে আবেদন জানান হে আল্লাহর রাসূল আমাদের জন্য বাহনের ব্যবস্থা করে দিন।

তারা দরিদ্র ছিলেন তাই নিজেদের পক্ষে বাহনের ব্যবস্থা করা সম্ভবপর ছিল না কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে জিহাদ থেকে পিছিয়ে থাকবেন এটাও কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না।

সিরত পাঠকারীদের অজানা নয় তাবুকের যুদ্ধের সময় মুসলমানদের অবস্থা কি করুন ছিল কুরআন মাজিদের যুদ্ধকে গাজোয়াতুল উসরা তথা কঠিন যোদ্ধা বলে ও অভিহিত করা হয়েছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছেও তখন এই পরিমাণ সামর্থ্য ছিল না অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যথিত হৃদয়ে উত্তর দিলেন আমার কাছে তো এই পরিমাণ সামর্থ্য নেই যা দিয়ে তোমাদের জন্য বাহনের ব্যবস্থা করব বাধ্য হয়ে তারা তখন ফিরে গেলেন।

কুরআন মাজীদে বর্ণিত হয়েছে ফেরার সময় তাদের অবস্থা ছিল আল্লাহর পথে খরচ করতে না পারে দুঃখে তাদের অন্তর বিকৃত হয়ে দুচোখ থেকে অশ্রুত ধারা প্রবাহিত হচ্ছিল।

সালিম ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর যুগে ইন্তেকাল করেন।

সালিম ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এরপর থেকে প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে লাগলেন তিনি অপেক্ষায় ছিলেন কোন সুযোগ পাওয়া মাত্রই এই নরাধম রসূল দ্রোহী ইহুদি আফাকের ভোগলীলা সাঙ্গ করবেন।

এক রাতের কথা গ্রীষ্মের তাপদাহে সকলের অবস্থা কাহিল আফাকের জন্য অবস্থা আরো সুখ কঠিন গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে ঘরে আর থাকতে না পেরে বোনো আমর ইবনে আউফ গোত্রের প্রাঙ্গণে এসেই শুয়ে পড়ল।

সালিম ইবনে ওমেন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তো বহুদিন ধরে পায়চারি করছেন সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন তার ইহুদি আফাক সর্বদাই তার সম্মাননা ফ্যানদের দারা পরিবেষ্টিত থাকতো।

গোত্রী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সর্বদা তার নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত ছিল কারণ তারা জানত তারা দশ জন মিলে ইসলামের বিরুদ্ধে যা না করতে পারবে এক আফাক তার জবান এবং কলম দিয়ে তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি করতে পারবে।

সালিম ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এজন্য অনেকদিন খুঁজে ফিরেও গেরিলা এটাক করার মুক্ষম কোন সুযোগ পাচ্ছিলেন না গ্রীষ্মের তাপ দেহ সেদিন তার জন্য সুযোগ বের করে দিল।

মধ্যরাত বুড়ো আবু আফাক গভীর ঘুমে বিভোর নিরাপত্তা রক্ষীরা ও যে যার মত ঘুমাচ্ছে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির বাইরে রাত দুপুরে গেরিলা অ্যাটাক হতে পারে এটা তারা খুনাখোর ভাবেনি।

তাছাড়া তারা মুসলিমদেরকে শান্তি গামী হিসেবেই জানে মুসলিমদের সঙ্গে তাদের জিম্মা চুক্তি ও করা আছে সব মিলিয়ে নিঃসংকচে তারা ঘুমাচ্ছে।

এই সুযোগে সালিম ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু পা টিপে টিপে বুড়ো আফাকের সজ্জার কাছে এসে পৌঁছলেন, টার্গেট রেঞ্জের মধ্যে আসা মাত্রই অযথা কালক্ষেপণ না করে রসূল দ্রোহী আবু আফাকের কলিজা বরাবর তরবারির ফালাটা ঢুকিয়ে দিলেন।

আবু আফাক আক্রান্ত শক্তিতে চিৎকার করে উঠল কিছু বুঝে ওঠার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো আবু আফাকের চিৎকার শুনে নিরাপত্তা কর্মীরা তড়িঘড়ি করে ছুটে এল কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।

তারা চারিদিকে মশাল জ্বালিয়ে আক্রমণকারীকে খুঁজতে লাগলো কিন্তু কোথাও কারো দেখা পেল না অতঃপর তারা আবু আফাককে কবরস্থ করল।

পরবর্তী দিনগুলোতেও তাদের অনুসন্ধান জারি থাকলো পরিশেষে নিরাশ হয়ে তারা জানালো যদি কোন ভাবে জানতে পারতাম কে এই মহান কবিকে হত্যা করেছে, তাহলে আমরা হত্যাকারীকে কোন কথা ছাড়াই হত্যা করে ফেলতাম।

আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবার কোন ট্রাইব্যুনালে বসান নি সালিম ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর থেকে কোন জবাবদিহিতা ও তলব করেননি হয়তো তার নিরাপত্তার জন্য।

ইহুদিরা হত্যাকারী কে চিহ্নিত করতে পারলে এই কোবির বদলে সালিম রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কেউ হত্যা করে ফেলবে। এই আশঙ্কায় হয়তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনসম্মুখে এই অপারেশনের মহানায়কের নাম প্রকাশ করেননি।

কোন কোন বর্ণনা থেকে জানা যায় এই গুপ্ত হত্যা পরিচালনার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

Contract Facebook: https://www.facebook.com/imran.sameya

আমি আবারও কথা দিচ্ছি ইনশাল্লাহ কিছুদিনের মধ্যে আরেকটি পোস্ট নিয়ে হাজির হবো সে পর্যন্ত trickbd এর সঙ্গেই থাকবেন। ❤️

Leave a Reply