আমরা সবাই হাই তুলি, আর এটাও জানি ঘুম পেলে বা ক্লান্ত লাগলে সাধারণত আমাদের হাই তুলতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু হাই তোলা হচ্ছে এমন একটা ব্যাপার যা নিয়ে বিজ্ঞানীরা আসলে খুব বেশি জানেন না এখনো। কিছু কিছু জিনিস অবশ্য জানা যায়, এবং এগুলো দারুণ চমকপ্রদ। খুব সাধারণ এই কাজটির পেছনে লুকিয়ে আছে বেশ বড় কিছু চমক। আসুন, দেখে নেই হাই তোলার ব্যাপারে এমন কিছু তথ্য যা হয়তো আপনি আগে কখনোই শোনেন নি।

১) অনেক থিওরি আছে, কিন্তু প্রমাণ কম

শুধুমাত্র ক্লান্ত লাগলেই আমরা হাই তুলি, এমনটা নয়। অনেকে বলেন অক্সিজেনের অভাব হলে হাই তুলি আমরা, সেটা পুরোপুরি সত্যি বলে ধরা না গেলেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না বটে। যথেষ্ট গভীর নিঃশ্বাস না নিলে সেটার প্রতিক্রিয়া হিসেবে হাই তুলি আমরা, সেটা ধরা যেতে পারে। কিন্তু এটাকে হাই তোলার মূল কারণ বলে মনে করা যায় না।

আবার দেখা যায়, বিরক্তি এবং বোরডমের কারণেও হাই তুলি আমরা। একটি গবেষণাতেই দেখা যায়, যেসব ছাত্রকে কিছু রঙ্গিন প্যাটার্ন দেখানো হয়েছিলো তারা বেশি হাই তোলে। সেই তুলনায় যারা রক মিউজিক ভিডিও দেখছিলো তারা হাই কম তোলে।

হাই তোলা নিয়ে সবচাইতে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এটা আমাদের মস্তিষ্ক ঠাণ্ডা করতে সাহায্য করে। এই কারণে শীতকালে মানুষ বেশি হাই তোলে, কারণ বাইরের ঠাণ্ডা হাওয়া শরীরে প্রবেশ করে ও মাথা ঠাণ্ডা করে। কিন্তু গরমকালে বাইরের বাতাসই বেশি গরম থাকে ফলে এ সময়ে হাই তুলে বেশি একটা লাভ হয় না।

২) হাই তোলার কাজটা আসলেই ছোঁয়াচে

এটা আসলেই সত্যি, অন্যকে হাই তুলতে দেখলে আমাদেরও হাই আসে। এমনকি এটা অন্যান্য প্রাণীর মধ্যেও হয়। মানুষের হাই তোলা দেখলে তার পোষা কুকুরটাও হাই তুলতে পারে। হাই তোলা নিয়ে কোনো লেখা বা কথাবার্তা শুনলেও হাই পায়। তবে এটা খুব একটা অস্বাভাবিক নয় বলে জানা যায়। শেষ কবে আপনি পেট ফাটিয়ে হেসেছেন চিন্তা করুন। দেখবেন মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। হাই তোলাও তেমনই একটা প্রতিক্রিয়া। বেস্ট ফ্রেন্ড এবং পরিবারের সদস্যদের মাঝে হাই তোলাটা আরও বেশি ছোঁয়াচে।

৩) হাই তোলাটা হতে পারে রোগের লক্ষণ

হ্যাঁ, হাই তোলার নিরীহ এই প্রতিক্রিয়াই হতে পারে গোপন কোনো রোগের লক্ষণ। ঘুমের অভাবের চাইতেও গুরুতর কোনো সমস্যা থাকতে পারে আপনার। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ভ্যাগাস নার্ভের কারণে অতিরিক্ত হাই তোলা দেখা যায় এবং এটি হতে পারে হৃদরোগের লক্ষণ। মস্তিষ্কের কিছু সমস্যারও লক্ষণ হতে পারে অতিরিক্ত হাই তোলা।

৪) জন্মের আগেও আমরা হাই তুলি

ভ্রূণ অবস্থায় তো একটা মানুষের ঘুমের অভাব হয় না অথবা সে বোরও হয় না। তা সত্ত্বেও দেখা যায় ভ্রূণ অবস্থায় মানুষ হাই তুলছে। হয়তোবা ব্রেইন ডেভেলপমেন্টের সাথে এর কোনো সম্পর্ক আছে এবং হাই তোলা অর্থ হতে পারে ব্রেইন ডেভেলপমেন্টের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক।

৫) গড়ে ৬ সেকেন্ড হাই তুলি আমরা

এই তথ্যের পেছনে শক্ত গবেষণা নেই বটে। কিন্তু সাধারণত দেখা যায় গড়ে ৬ সেকেন্ড সময়েই শেষ হয় হাই তোলা। এই ৬ সেকেন্ডে হার্ট রেট বেশ বেড়ে যায়। ২০১২ সালের এক গবেষণা হাই তোলার আগে, হাই তোলার সময়ে এবং হাই তোলার পরে শরীরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে এবং দেখা যায় এই সময়ে কিছু পরিবর্তন আসে, সাধারণভাবে গভীর নিঃশ্বাস না নিলে তা দেখা যায় না।

.
.

সবার প্রথমে এই পোস্টটি এখানে শেয়ার হয়ে ছিল
.
.
নতুন নতুন টিপস পেতে সময় পেলে ঘুরে আসবেন
.
.

LikeSmsBD.Ga

.
.
.

Leave a Reply