অনেক দিন পর একটা পোষ্ট করলাম আশা করি সবার উপকারে আসবে
আমাদের দেশে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত কালবৈশাখী হয়ে থাকে। এ সময়ই বেশি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। তাই এ সময়টা চলতে হয় সাবধানতার সঙ্গে। দূরের পথে বের হলে জেনে নিতে হবে আকাশের খবর, মানে আবহাওয়ার খবর। মেঘের আনাগোনা দেখেও ধারণা করতে পারেন বজ্রপাত হতে পারে কি না।
পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর আকাশে মেঘের গর্জন শুরু হলে সাধারণত বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। পূর্ব, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে বজ্রপাতের আশঙ্কা কম থাকে। মার্চ থেকে এপ্রিলে কালবৈশাখী দুপুরের পর হয়ে থাকে। এর পর মে মাসের শেষ পর্যন্ত সকালেও হতে পারে।
কালবৈশাখী শুরু হলে সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে। নিরাপদ আশ্রয় বলতে পাকা ঘরকে বোঝানো হয়। অর্ধশেড, পুরোনো জীর্ণ বাড়িতে আশ্রয় না নেওয়াই ভালো। বাড়িতে অবস্থান করলে জানালা, সিঙ্ক, টয়লেট, বাথটাব, ইলেকট্রনিকস থেকে দূরে থাকা ভালো। বাসা, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হলে বিদ্যুতের সব সুইচ বন্ধ রাখুন। অনেক সময় এসবে বজ্রপাত হয়ে তা থেকে বিদ্যুৎ আপনার শরীরে আসতে পারে।
গাছের নিচে, টেলিফোনের খুঁটির পাশে বা বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের খাম্বা বা উঁচু কোনো দালানের পাশে দাঁড়ানো মোটেই নিরাপদ নয়। টেলিফোনের লাইনে বজ্রপাত হলে সে সময় আপনি কথা বলতে থাকলে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই এ সময় ফোনে কথা না বলাই ভালো। তবে মোবাইলে কথা বললে সমস্যা নেই। বজ্রপাতের সময় গোসল না করাই ভালো। এ সময় গাড়িতে থাকলে সমস্যা নেই। তবে গাড়ি থামিয়ে দরজা বন্ধ করে বসে থাকুন।
অনেক সময় আছে যখন নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে না, তখন নিজেকে যতটা সম্ভব গুটিয়ে নিন। মাথার চুল যদি একদিকে লম্বা হয়ে থাকে, তাহলে বজ্র পড়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ, বজ্রপাত সব সময় উঁচুতে আঘাত করে। আপনার পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে বসুন। দুই পা যতটা সম্ভব কাছাকাছি আনুন। দুই হাত রাখুন হাঁটুর ওপর। এবার মাথা নিচু করুন যতটা সম্ভব। তবে কোনোভাবেই হাত বা হাঁটু মাটিতে লাগাবেন না। এটা করলে আপনি সহজেই বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়বেন।
অনেকে মনে করেন, বজ্রপাতের সময় শুয়ে পড়তে হয়। এটা খুবই মারাত্মক ভুল ধারণা। এতে বজ্রপাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা শতভাগ। যদি নদীতে নৌকায় থাকেন, তাহলে একইভাবে নিজেকে গুটিয়ে রাখুন। সম্ভব হলে ছইয়ের নিচে অবস্থান নিতে পারেন। বনের মধ্যে থাকলে বড় গাছের নিচে না অবস্থান করে ছোট গাছপালার নিচে নিজেকে গুটিয়ে রাখুন।
কেউ বজ্রপাতে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁকে যতটা সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে। বজ্রপাতে আক্রান্তের পর তাঁকে ধরলে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, এ সময় তাঁর শরীরে বিদ্যুৎ থাকে না। যদি শ্বাস না নেয়, তাহলে চিত করে শোয়ানোর পর মুখ হাঁ করান। এবার আপনি বুক ফুলিয়ে বাতাস নিন। তাঁর মুখের সঙ্গে মুখ লাগান। তাঁর নাকে চাপ দিয়ে বন্ধ করে আপনি বাতাস দিন। যদি নাড়ির স্পন্দন না থাকে, তাহলে বুকে চাপ দিতে থাকুন এবং মুখে মুখে লাগিয়ে বাতাস দিন।
লেখক : মেডিকেল অফিসার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ
3 thoughts on "বজ্রপাতের সময় কী করবেন (দয়া করে পোষ্টটি পরেন)"