মানুষের মৌলিক চাহিদার মাঝে অন্যতম একটি হল খাদ্য। বাঁচার প্রয়োজনে আমাদের প্রতিদিনই খাদ্য গ্রহন করতে হয়। শুনে অবাক হবেন, প্রতিদিন গ্রহন করা এসব খাদ্যের মাঝেই দশটি খাবার রয়েছে যা আপনার শরীরে ক্যান্সারের মত ভয়াবহ রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী হতে পারে। মিলিয়ে দেখুন তো এই দশটি খাবারের কোন কোন খাবার রয়েছে কিনা আপনার খাদ্যতালিকায়? আজই বাদ দিয়ে দিন সেগুলো। নিজের শরীরের সুস্থতা রক্ষার দায়িত্ব নিজেকেই তো নিতে হবে।

১। উচ্চ প্রক্রিয়াজাত ময়দাঃ বেশি প্রক্রিয়াজাত করার কারনে যে ময়দার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় তাই শুধু নয় বরং ক্ষতিকর ও হয়ে দাঁড়ায়। ময়দাকে ক্লোরিন গ্যাস দ্বারা শোধন করা হয়। এই ক্লোরিন গ্যাস মানব দেহের জন্য খুব বেশি ক্ষতিকর, যা উচ্চরক্তচাপের সৃষ্টি করে। এমনকি এই প্রক্রিয়াজাত ময়দা ক্যান্সারের হারও বৃদ্ধি করে!

২। মাইক্রোওয়েভে ভাজা ভুট্টাঃ পপকর্ন খেতে কে না ভালোবাসে! মুভি দেখা বা আড্ডায় বসে মজাদার পপকর্ন খেতে প্রায় সবাই ই পছন্দ করে। আর এই পপকর্ন বানানো মানে ভুট্টা ভাঁজার কাজটা মাইক্রোওয়েভে ভাঁজাটা একটু বেশিই সহজ বলা চলে। কিন্তু মাইক্রোওয়েভে ভাজা ভুট্টা বা পপকর্নে রয়েছে, Perfluortanoic Acid (PFOA). এই রাসায়নিক পদার্থ টেফলনেও পাওয়া গিয়েছে। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে এই উপাদানটি দেহের সাথে মিশে ক্যান্সার সৃষ্টি করে।

৩। কৃত্রিম চিনিঃ ডায়বেটিস হলে বা ডায়েটের জন্য আমরা অনেকেই বেছে নেই কৃত্রিম চিনি। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এই চিনি মানব দেহের টক্সিন ভেঙে ফেলে যাকে DKP বলে। এই ভাঙনে যে রাসায়নিক পরিবর্তন হয় তা ক্যান্সার এবং ব্রেন টিউমারের জন্য দায়ী।

৪। অ্যালকোহলঃ ডায়বেটিস সহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের জন্য দায়ী হল অ্যালকোহল। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে অ্যালকোহল গ্রহন করা নারীদের স্তন ক্যান্সের ঝুঁকি, সাধারন নারী থেকে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি হয়। তামাকের পর ক্যান্সারের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হল অ্যালকোহল। এই অ্যালকোহল মুখ, লিভার, কোলন, রেকটাম এবং নারীদের স্তন ক্যান্সারের জন্য দায়ী।

৫। শোধিত চিনি এবং সোডাঃ বাজার থেকে কেনা এনার্জি ড্রিক্স এবং ড্রাই ফ্রুটসে থাকে প্রচুর পরিমাণে সোডা এবং রিফাইনড সুগার। এই উপাদানগুলো ক্যান্সার জীবাণু বৃদ্ধির জন্য দায়ী। আর তাই এই ধরনের খাবারগুলোকে এড়িয়ে চলাই ভালো।

৬। প্রক্রিয়াজাত মাংসঃ অনেকেই সময় বাচাতে বাজার থেকে প্রক্রিয়াজাত মাংস কিনে থাকেন। বেশিরভাগ সময় হট ডগ, সসেজ ইত্যাদি তৈরি করার জন্য এ মাংস ব্যাবহার করা হয়। জানেন কি, এসব মাংসে থাকে অতিরিক্ত পরিমানে লবণ আর রাসায়নিক পদার্থ। গবেষণায় দেখা গেছে এসব প্রক্রিয়াজাত মাংস গ্রহণকারী ব্যাক্তি, সাধারণ মানুষ থেকে ৪৩ শতাংশ বেশি ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকে।

৭। ভাপানো, সল্টেড এবং পিকেল্ড খাবারঃ এই ধরনের খাবার যেমন মটর দানা ভাজা, সল্টেড বিস্কুট, বার্গার, হটডগ ইত্যাদি খেতে সুস্বাদু হলেও স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। নিয়মিত এসব খাবার গ্রহন আপনার পাকস্থলি ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।

৮। চিপসঃ বাচ্চাকে প্রায় প্রতিদিন ই আদর করে চিপস কিনে দেন? হুম, খেতে খুব মজার হলেও এই স্বল্পমেয়াদী স্বাদের খাবারটি কিন্তু আপনার সন্তানের শরীরে ক্যান্সারের সৃষ্টি করতে পারে। চিপসে রয়েছে অতিরিক্ত মাত্রায় ফ্যাট ও ক্যালরি। এছাড়াও রয়েছে অতিরিক্ত মাত্রায় সোডিয়াম যা ক্যান্সার সৃষ্টি করা ব্যাতীত ও হৃদরোগের সৃষ্টি করে।

৯। ফার্মে চাষ করা মাছঃ ফার্মে চাষ করা মাছগুলো দেখতে বড়সড় হলেও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। কেননা, এই মাছগুলোকে তাড়াতাড়ি বড় করার জন্য নানা ধরণের রাসায়নিক দ্রব্য, এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়। তাই সাধারণ মাছের তুলনায় এই মাছ দেখতে বেশি আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে এসব মাছে PCB এবং মার্কারির মাত্রাও অত্যাধিক যা ক্যান্সার সৃষ্টি করে থাকে।

১০। ডায়েট ফুড বা লো ফ্যাট জাতীয় খাবারঃ স্লিম হবার জন্য বা মেদ কমানোর জন্য ডায়েট এর বিকল্প নেই। আর এই ডায়েটের জন্য আমরা বেছে নেই লো ফ্যাট জাতীয় খাবার। তবে দুঃখের বিষয় হল, সবকিছু মিলিয়ে এসব খাবার কিন্তু আমাদের দেহের জন্য ভালো নয়। এসব খাবারে ব্যবহার করা হয় কৃত্রিম চিনি এবং রঙ। সাধারন খাবারের তুলনায় স্বাদ কমাতে এসব খাবারকে বারবার রিফাইন বা প্রক্রিয়াজাত করা হয়। ফলে, খাবারে সোডিয়াম এবং ক্যালরীর মাত্রা বেড়ে যায়। এক সময় এই খাবারগুলো ই ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে দেখলেন তো, আমাদের গ্রহন করা এ খাবারগুলো কতটা বিপদজনক! এই খাবারগুলো কে এড়িয়ে চলুন। নিজে সুস্থ থাকুন। প্রিয়জনকে ও সুস্থ রাখুন।

এরকম আরো টিপস ট্রিকস পেতে TrickMax.com ভিজিট করুন

2 thoughts on "যে দশটি খাবারের কারণে হতে পারে মরণ ব্যাধি ক্যান্সার (অবশ্যয় জেনে রাখুন)"

  1. Mohammad Obidul Haquk Author says:
    ধন্যবাদ ভাই
    1. Kazi Abdul Wakil Contributor Post Creator says:
      আপনাকেও ধন্যবাদ @Obidul Haquk

Leave a Reply