মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয় হল ঘুম.. আমরা আমাদের জীবণের এক-তৃতীয়াংশ ঘুমিয়েই কাটাই..সারাদিন কাজের শেষে আমাদের সবারই ইচ্ছা একটু আরাম করে ঘুমিয়ে নিতে.. কারণ ঘুমানোর মাধ্যমেই আমরা কাজ করার জন্য শক্তি পাই..আমরা সবাই চাই দ্রুত ঘুমিয়ে যেতে.. কিন্তু বর্তমানে ঘুম আমাদের জন্য মারাত্বক সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে.. প্রায় বেশিরভাগ মানুষই নিন্দ্রাহীন হয়ে যাচ্ছে.. বিশেষ করে শহর অন্ঞ্চলের লোকজনের মাঝে নিন্দ্রাহীনতার লক্ষণ দেখা যায় বেশি.. আর আমাদের আধুনিক জেনারেশনের ছেলে/মেয়েদের ঘুম তো আসেই না.. আজকে এই ঘুম নিয়েই একটি পোস্ট করতে ইচ্ছে হলো তাই বসে পড়লাম.. একটু বকবক করবো আরকি.. প্রথমেই বলে নিই ঘুম না আসার কিছু কারণ বলে নিই..
নিন্দ্রাহীনতার কারণঃ
ঘুম না আসার বা দেরিতে আসার অনেক কারণ রয়েছে.. পরিশ্রম না করা, বেশি চিন্তা করা, ঘুমানোর অনিয়ম, শরীরের যত্ন না নেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি.. আমরা যারা পরিশ্রম না করে সারাদিন শুয়ে বসায় কাটায় তাদের দেহ বলতে গেলে সতেজই থাকে.. আমাদের দেহ যখন ক্লান্ত থাকে তখনই কিন্তু বিশ্রাম নিতে ইচ্ছা করে.. কিন্তু যারা পরিশ্রম করেনা তাদের দেহের কোষগুলো সতেজ থাকায় সহজে ঘুম আসতে চায় না.. অনেকে খুব বেশি চিন্তা-ভাবনা করে.. ঘুমানোর সময় শুয়ে থেকে এটা-ওটা ভাবতে থাকে.. এসব ভাবার সময় আমাদের শরীর বিশ্রামে থাকলেও ব্রেন কাজ করতে থাকে তাই দেরিতে ঘুম আসে.. অনেকে ঘুমে অনিয়ম করে আজ 10 টায় ঘুমালো তো কাল 11 টায়, আরেকদিন 12 টায় এরকম করে.. এটা ঘুম না আসার অন্যতম কারণ.. আমাদের শরীর, জামা-কাপড়, বিছানা ইত্যাদি যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন না থাকে তাহলে ঘুমানোর সময় অস্বস্তি হয়.. এটাও দেরিতে ঘুম আসার একটি কারণ.. ঘুমানোর আগে ফোন, কম্পিউটার/ল্যাপটপ ব্যবহার করলে এতক্ষণ যা করছিলো বা এরপরে কি করবে সেটাই মাথায় ঘুরঘুর করে.. এটাও ঘুম না আসার একটি কারণ.. এরকম আরো অনেক কারণ রয়েছে ঘুম না আসার..
এবার রাতে ভালো ঘুম হওয়ার বা জলদি ঘুমানোর উপায়গুলো জানা যাক..
রাতে ভালো ঘুম হওয়ার উপায়ঃ
? ঘুমানোর বিছানাটি আরামদায়ক হতে হবে.. ঘুম বেশি নরম বা খুব বেশি শক্ত হওয়া যাবে না এবং বিছানাটি অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে..
? ঘুমানোর একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নিতে হবে.. প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে হবে এবং একই সময়ে উঠতে হবে.. কখনোই ঘুমে অনিয়ম করা যাবে না..
? অতিরিক্ত রাত জাগা যাবে না.. সকালে দেরিতে ওঠার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে.. (ঘুমানোর জন্য আদর্শ সময় রাত ১০ টা থেকে ভোর ৬ টা)
? দিনের বেলা না ঘুমানোই ভালো.. বয়স্ক হলে ব্যাপারটা আলাদা..
? শোবার ঘরে পড়ালেখা, খাওয়া, টিভি দেখা ইত্যাদি পরিহার করা.. শোবার ঘরটি ঘুমানোর জন্যই বরাদ্দ রাখাই ভালো..
? শোবার ঘরের তাপমাত্রা বেশি বা খুব কম না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা.. ঠান্ডা লাগলে পাতলা কাঁথা/কম্বল ব্যবহার করতা পারেন..
? ঘুমানোর পূর্বে চা, কফি, সিগারেট ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা..
? পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং সম্ভব হলে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করতে হবে..
? ঘুমানোর পূর্বে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া..
? ঘুমানোর আগে ১০-১৫ বই পড়া..
? ঘুমানোর আগে ফোন, কম্পিউটার/ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহার না করা সবচেয়ে ভালো
? ঘুমাতে যাওয়ার সময় মাথা থেকে সকল চিন্তা-ভাবনা দূর করে দেওয়া..
? ঘুমানোর সময় হালকা সুরের মিষ্টি গান শুনতে পারেন.. কারণ গান শোনার সময় আমাদের মনোযোগ একদিকে চলে যায় ফলে মাথা থেকে সকল চিন্তা-ভাবনা দূর হয়ে যায়..
এতক্ষণ বকবক করে জ্ঞান দিলাম রাগ করেননি নিশ্চয়ই.. রাগ করলে কিছু করার নাই.. শেষ একটা কথা বলি “অপর্যাপ্ত ঘুম এবং অতিরিক্ত ঘুম দুটোই মারাত্মক ক্ষতিকর.. এখন এ পর্যন্তই.. সবাই ভালো থাকবেন..
যেকোন প্রয়োজনে ফেসবুকে আমিঃ
আর মোশাররফ করিম ঘুম থেকে ওঠছে?