১৮২০ সাল । নানটকেট থেকে এসেক্স নামক জাহাজ প্রশান্ত মহাসাগরে যাত্রা করে । উদ্দেশ্য হলো তিমির তেল । শিল্প-বিপ্লবের সময় । মাটির নিচের খনিজ তেল সম্পর্কে মানুষের ধারণা ছিল । তাই ভরসা করতে হত তিমির তেলের উপর । বড় বড় জাহাজে করে পর্যাপ্ত খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে মানুষ তিমির তেলের জন্য সমুদ্রে পাড়ি দিত । একেকটা যাত্রা সম্পন্ন করতে এক বছর বা তার বেশী সময় লেগে যেত । জাহজ ভর্তি করে তিমির তেল নিয়ে আসত তারপর তা বিক্রি দুয়েক বছর বছর চলে যেত । তারপর তারা আবার সমুদ্রে ছুটে যেত ।

এসেক্স যাত্রা শুরু করে ১৮২০ সালের উইন্টারে । ক্যাপ্টেন, ক্রু সহ ২০ জন যাত্রী । “ ওয়েন চেজ “ ছিল ক্যাপ্টেন পোলার্ডের ফার্স্ট মেট । জাহাজের সবচেয়ে সাহসী একজন । ক্যাপ্টেনের আদেশে সবগুলো পাল তুলা হলো । । যদিও তাতে ওয়েন চেজের মত ছিলো না । কিন্তু ক্যাপ্টেনের আদেশ তো মানতেই হবে । এসেক্স প্রচণ্ড গতিতে চলছে । ক্যাপ্টেনের ভূল আদেশে জাহাজ ভয়ানক এক ঝড়ের কবলে পড়ে । ভয়ানক অবস্থায় ওয়েন চেজের উৎসাহ আর সঠিক নির্দেশনায় তারা বেঁচে যায় । ক্যাপ্টেন ও ওয়েন চেজের মধ্যে অনেকক্ষণ তর্ক হলো যে তারা বাড়িতে ফিরে যাবে কিনা । শেষপর্যন্ত তারা বাড়িতে ফিরেনি । আরও অনেকদূর যাওয়ার পর কিছু তিমির দেখা পেল । সেখান থেকে একটা তিমি শিকার করতে পারলো । এবং সেখান থেকে তেল সংগ্রহ করল । তারপর দীর্ঘদিন সমুদ্রে কেটে গেল আর কোন তিমির দেখা পেলো না । তারা খুবই হতাশ হয়ে পড়ছিল । এদিকে তাদের খাবারও ক্রমশ ফুরিয়ে যাচ্ছিল । তারপর ইকুয়েডরের এটকেমস দ্বীপের এক ক্যাপ্টেনের সাথে তাদের দেখা হয় । তিনি তাদের বলেন, নিরক্ষরেখা বরাবর এক হাজার লিগ যেতে পারলে শুধু তিমিই আর তিমিই দেখা যাবে । ইচ্ছা করলে আপনারা এক দিনেই জাহাজ তেল দিয়ে ভরে ফেলতে পারবেন । কিন্তু সেখানে একটা দানব রয়েছে । বিশালাকার তিমি ।

 

কিন্তু তারা তাই করলো । বাড়ি থেকে হাজার মাইল দূরে সেই গন্তব্যে পৌঁছালো । সেখানে শুধু তিমি আর তিমি । তারা খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল । কিন্তু তাদের এই খুশি পূর্ণতা পায় নি । ভুলক্রমে তারা বড় তিমিটির উপর আঘাত করে ফেলে । দানবাকার তিমিটা তাদের জাহাজটা পুরোপুরি ভেঙ্গে দিল । তাদের সম্বল ছিলো অল্প কিছু খাবার আর অল্প পানি, তিনটি ছোট নৌকা । অবশেষে তিমিটা নৌকাগুলোকেও ভেঙ্গে ফেলল । একটু দূরেই একটা ডাঙ্গার দেখা মিলল । তারা সেখানে পাখির ডিম, ছোট মাছ, মাটি চোষা পানি পেল ।  তাদের সবারই মৃত্যু নিশ্চিত ছিল । কিন্তু ওয়েন চেজের সাহসিকতায় ছোট নৌকাগুলো মেরামত করে তারা আবার বাড়ির দিকে রওনা দিল । সবাই খাবারের অভাবে দূর্বল হয়ে পড়ছিল । তাদের মধ্যে একজন খাবারের অভাবে মারা যায় । বাকিজন ঐ মৃত মানুষের মাংস খেয়ে জীবনধারণ করে । বেঁচে থাকার জন্য তারা ভয়ানক লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে । এভাবে ৮৭ দিন কাটল । তারা একেবারে নিঃশেষ হয়ে গেছিলো । এমন অবস্থায় অন্য এক জাহাজ তাদের উদ্ধার করে ।

 

মুভিটির মজার একটা সীন ছিল, শেষদিকে বড় তিমিটি আবার আসলো কিন্তু সেসময় তিমিটি তাদেরকে কিছুই করে নি । শুধু তার চোখের কাছে যে বল্লমের আঘাত লেগেছে সেটাই দেখাতে এসেছিল । এবং তাদেরকে বুঝিয়েছে যে এই আঘাততার জন্যই সে এত কিছু করেছে ।

 

এই ছিলো মুভির কাহিনীসংক্ষেপ । থমাস নিকারসনের বর্ণানাতে পুরো মুভি তৈরি করা হয়েছে । এক রুমাঞ্চকর সমুদ্রযাত্রা । জীবন বাজি রেখে সমুদ্রে পাড়ি দেওয়া ।  বেঁচে থাকার জন্য ভয়ানক লড়াই । এই কাহিনী পরবর্তীতে “মবি-ডিক” নামক উপন্যাসে রচিত হয় । যা সকলের কাছে প্রচুর সারা ফেলেছিল । মুভির সিনেমেটগ্রাফি ছিলো অসাধারণ । অনায়াসেই আপনার সময় কেটে যাবে ।

 

চার্লস ল্যাভিট, রিক জাফফা ও আমান্ডা সিল্ভারের স্টরিতে ছবিটি ২০১৫ সালে পরিচালনা করেছেন রন হওয়ার্ড । মুভিতে অভিনয় করেছে থরের চরিত্রে অভিনয় করা ক্রিস হ্যামসওয়ার্থ (ওয়েন চেজ) । অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে ক্রিস হ্যামসওয়ার্থকে ছবিটিতে অভিনয় করার জন্য শরীরের ওজন ৩০ কেজি কমাতে হয়েছিল ।  যুবক থমাস নিকারসনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম হল্যান্ড । যিনি স্পাইডার চরিত্রে অভিনয় করে থাকেন । ক্যাপ্টেন পোলার্ডের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বেঞ্জামিন ওয়াকার ।

 

যদিও মুভিটি বক্স অফিসে তেমন সাড়া ফেলতে পারে নি । কিন্তু মুভিটি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে । মজার ব্যাপার হচ্ছে মুভিটি সত্য কাহিনী অবলম্বনে তৈরি করা হয়েছে । আইএমডিবিতে মুভিটির টাইপ দেওয়া হয়েছে অ্যাকশান ও অ্যাডভেঞ্চার ।

 

মুভি ডাউনলোড লিঙ্ক ঃ- https://www.moviesweb.info/in-the-heart-of-the-sea-2015-download/  । 720p ব্লুরে ফরম্যাটে ডাউনলোড করবেন তাহলে পুরো মজাটাই নিতে পারবেন । নিচের লিঙ্ক থেকে বাংলা সাবটাইটেল ডাউনলোড করে মুভিটি দেখে ফেলবেন নিশ্চয় । কথা দিলাম মুভিটা অবশ্যই ভালো লাগবে ।

 

কিছু স্ক্রীনশট

মুভিটা আমার কাছে সেইরকম ভালো লেগেছে । এত ভালো লেগেছে কখন যে রিভিউ লিখে ফেললাম বুঝতেই পারি নি । তাই ট্রিকবিডিতেও পাবলিশ করে দিলাম ।

7 thoughts on "ইন দ্যা হার্ট অফ দ্যা সী । মুভি রিভিউ !!"

  1. Nisho Contributor says:
    Kono adults scene ache ki??
    I mean family r karo sathe dekha jabe??
    1. Rejaul Islam Contributor says:
      Nah temon kono edult scene nai..bt first scene e ekta scene ache ..i think famillyr sathe dekhte parben..
  2. Rejaul Islam Contributor says:
    Nice review . aro agei dekhecilam ..Asolei movie ta valo legechilo jokhon dekhechilam..
  3. ibrahim_khalil Contributor says:
    bharat movie er review den to
    1. bappi banik Author says:
      bharat movi ajke up daya hoise site dekhun.. southmovi.tk

      gd review mr

  4. হুম,,,, খুব ভাল লিখছেন।।।।

Leave a Reply