রাতের কালো আকাশের দিকে তাকালে আমাদের মনে নানা প্রশ্ন বাসা বুনে । জানতে চাই, কি আছে ঐ কালো শুন্যের মাঝে ? সেখানে কি আমাদের পৃথিবীর মতো কোন গ্রহ আছে ? সেখানে কি আমাদের মতো মানুষ আছে ? এমন নানা প্রশ্ন মনের মাঝে জাগে । আজকের পোস্টে সেই মহাশূন্য সম্পর্কে ১০টি অবাক করা তথ্য জানব, যেগুলো আপনি হয়ত আগে জানতেন না ।
১। মহাশূন্য আমাদের থেকে মাত্র ১ঘন্টা দূরে
টিভিতে মহাশূন্যের কোন ভিডিও ফুটেজ বা ইন্টারনেট থেকে কোন স্থির চিত্র দেখলে আমাদের মনে হয় মহাশূন্য আমাদের থেকে অনেক দূরে । কিন্তু সত্য বলতে, মহাশূন্য আমাদের থেকে মাত্র ১০০ কি.মি. দূরে । যদি মহাশূন্যে যাওয়ার জন্য কোন সলিড রাস্তা থাকত তাহলে সেখানে পৌঁছাতে মাত্র ১ ঘন্টা সময় লাগত । দ্যাটস কুল…!
২। নিরব মহাশূন্য
মহাশূন্য সত্যিকার অর্থে একটি নিরব জায়গা । আপনি সেখানে কোন বিন্দুমাত্র শব্দও শুনতে পারবেন না । কারণ হলো, শব্দ তরঙ্গ স্তানান্তরিত হওয়ার জন্য কোন মাধ্যম দরকার । কিন্তু মহাশূন্যে কোন বায়ুমন্ডল নেই । যার দরুণ, শব্দ তরঙ্গ স্তানান্তরিত হতে পারে না, এবং কোন শব্দ শুনাও যায় না । আপনি বলতে পারেন তাহলে মহাকাশচারীরা কিভাবে কথা বলে ? উত্তর হলো, তারা রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে যোগাযোগ করে । রেদিও ওয়েভ মহাশূন্যে ট্রাভেল করতে পারে ।
৩। অমর পায়ের ছাপ
ছবিতে যে পায়ের ছাপটি দেখতে পাচ্ছেন এটা কোন সাধারণ পায়ের ছাপ নয় । অ্যাপোলোতে করে চাঁদে যাওয়ার মহাকাশচারীর পায়ের ছাপ এটি । অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে এই ছাপটি ১০০ মিলিয়ন বছর পর্যন্ত এভাবেই থাকবে !! অবাক হচ্ছেন ? ওয়েট, এটা সম্ভব কারণ চাঁদে কোন বায়ুমন্ডল নেই, কোন বৃষ্টি নেই, নেই কোন বাতাস যা ঐ পায়ের ছাপটিকে নষ্ট করতে পারে । সো, চাঁদে মানুষের এই পায়ের ছাপটি অক্ষত অবস্থায় থাকবে লক্ষ লক্ষ বছর ।
৪। মহাশূন্যে আপনি কাঁদতে পারবেন না
ওয়েট, মহাশূন্যে আপনি কাঁদতে পারবেন । কিন্তু পৃথিবীতে কাঁদলে যেমন ইফেক্ট হয়, ঐখানে কাঁদলে তেমন ইফেক্ট পাবেন না । কারণ হলো, আপনার চোখের পানির ফোটাগুলো তো নিচেই পরবে না । সেগুলো আপনার মুখের মাঝেই আটকে থাকবে । হা হা হা ।
৫। মহাশূন্যে বম্ব ফেলা
১৯৬২ সালে ইউনাইটেড স্টেটস একটি ইতিহাস তৈরি করে । তারা পরীক্ষণের জন্য মহাশূন্যে একটি একটি হাইড্রোজেন বম্ব ফাটায় । যা জাপানের হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত বম্বের চেয়ে ১০০গুণ শক্তিশালী ছিল । অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, এত শক্তিশালী বম্ব নিক্ষেপ করার পরও পৃথিবী তা বিন্দুমাত্র টের পায় নি ।
৬। সবচেয়ে ঠান্ডা তারা
রিসেন্টলি নাসা এমন এক তারা আবিষ্কার করেছে যার তাপমাত্রা অতিমাত্রায় কম । তারা এই তারাটির নাম দিয়েছে “Brown Dwarf” । এবং এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কম তাপমাত্রার তারা এটি । এর তাপমাত্রা ৯ডিগ্রী ফারেনহাইট থেকে মাইনাস ৫৪ ডিগ্রী পর্যন্ত । পৃথিবী থেকে এর দুরত্ব ৭.২ আলোকবর্ষ ।
৭। মহাশূন্যে অ্যালকোহল
কেমন হয় যদি হঠাত করে অ্যালকোহল বৃষ্টি শুরু হয়ে যায় ? পার্টি হয়ে যাবে, তাই তো ? হ্যাঁ, মহাশূন্য আমাদেরকে পার্টির সুযোগ করে দিতে পারে কিন্তু বৃষ্টির না । আমাদের গ্যালাক্সির সেন্টারে প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল আবিষ্কৃত হয়েছে । যার পরিমাণ, ১০ বিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন লিটার । ওকে, নেক্সট টাইম পার্টিতে গেলে এই কথাটি মনে করবেন, আর পৃথিবী থেকে মাত্র ২৬০০০ আলোকবর্ষ দূরে যাওয়ার কথা ভাববেন ।
৮। মহাশূন্যে আবর্জনা
আপনি কি মনে করেন শুধুমাত্র পৃথিবীতেই ময়লা আবর্জনা রয়েছে ? ওয়েল, আবার চিন্তা করেন কারণ ৫ লাখেরও বেশি স্পেস আবর্জনা পৃথিবীর কক্ষপথে প্রতিনিয়ত ঘুরছে । এখন আপনি ভাবতে পারেন, এগুলা কি কোন ক্ষতি করবে না ? হ্যাঁ, এগুলো ক্ষতি করতে পারে । কারণ এগুল ১৭,৫০০ মাইল পার ঘন্টা গতিতে ঘুরছে । দূর্ঘটনাবশত এগুলো স্যাটেলাইটগুলোর বড় ধরণের ক্ষতি করে দিতে পারে ।
৯। মহাশূন্যে জলাধার
পৃথিবী থেকে ১০ বিলয়ন আলোকবর্ষ দূরে পানির বাস্পের আধার পাওয়া গেছে । যেখানে এমন পরিমাণে পানি আছে যা পৃথিবীর টোটাল পানির চেয়ে ১৪০ ট্রিলিয়ন গুণ বেশি । এটি মহাশূন্যের একটি অন্যতম বড় জলাধার । যা সত্যিই অবাক করা বিষয় ।
১০। একাধিক সানসেট এবং সানরাইজ
প্রতিদিন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নভোচারীরা, 15 টি সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় দেখতে পারে । আপনি যদি সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত পছন্দ করেন তবে মহাকাশের নভোচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন !!
এই ছিল আপনাদের জন্য কিছু জানানোর চেস্টা । আগামি পোস্টে আবার দেখা হবে । ভালো থাকুন, অনেক ভালো ।
আল্লাহ হাফেজ
Source:- armaghplanet.com, theplanet.org, wikipedia.org, theplanet.org, factslides.com, wikimedia.org, mashable.com, factslides.com, nasa.gov
5 thoughts on "মহাশূন্য সম্পর্কে ১০টি অবাক করা তথ্য !!"