Ronald Opus – The most weird or bizarre suicidal case ever.
আসসালামু আলাইকুম।
অন্যান্য সকল ধর্মাবলম্বী ভাইদের জানাই অনেক-অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
রোনাল্ড অপাস – ইতিহাসের সবথেকে অদ্ভুৎ আত্মহত্যার শিকার ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। আত্মহত্যা নাকি হত্যা? তদন্ত বিভাগকে দারুণ এক রহস্যের সম্মুখীন হতে হয় তার লাশটি পাওয়ার পরে। তবে অনেক নিরীক্ষা ও বিশ্লেষণের পরে এর সমাপ্তি ঘটেছিলো। এরপূর্বে অবশ্য ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য ও ঘটনার দারুণ মারপ্যাঁচের জন্য বিশ্ব ক্রাইম ইতিহাসে এক অদ্ভুৎ কেস হিসেবে জায়গা করে নেয় ‘রোনাল্ড অপাসের আত্মহত্যা’।
রোনাল্ড অপাসকে নিয়ে প্রচলিত ঘটনাকে অনেকে অতি উচ্চ মস্তিষ্কসম্পন্ন কোনো ব্যক্তির বানানো একটি কাল্পনিক মার্ডার কেস হিসেবে বিবেচনা করে, আবার অনেকেই সত্যি ঘটনা হিসেবে মেনে নেয়। সত্যি কোনো ঘটনা হোক অথবা কাল্পনিক, টুইস্টে ভরপুর এ কেসটি দারুণ অদ্ভুৎ ও কৌতুহল জাগানিয়া।
ইন্টারনেটের আলোকে কেসটির বর্ণনাঃ
২৩শে মার্চ, ১৯৯৪। রোনাল্ড অপাস (Ronald Opus) নামক এক আমেরিকান ভদ্রলোক তার জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা থেকে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। আত্মহত্যার পদ্ধতি অবলম্বনে তিনি সবথেকে সহজ পদ্ধতিটাই বেছে নিলেন- তিনি যে দালানে বাস করতেন সে দালানের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়া। তো তিনি আত্মহত্যার পূর্বে একটি সুইসাইড নোট লিখে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলেন, অর্থাৎ দশ তলাবিশিষ্ট দালানের ছাদ থেকে লাফ দিলেন।
সুইসাইড নোটে স্বাভাবিক কথাই লেখা ছিলো; তিনি এই পৃথিবীতে সুন্দর জীবন যাপনের আশা হারিয়ে ফেলেছেন, এমন জাতীয় কিছু লেখা ছিলো। এপর্যন্ত সবই স্বাভাবিক।
মূল ঘটনা শুরু হয় যখন একজন মেডিকেল ডাক্তার রোনাল্ড অপাসের ডেডবডি পোস্টমর্টেম করে মাথার খুলিতে শটগানের একটি বুলেট পান। তখন ঘোষণা আসে যে রোনাল্ড অপাস ভূমিতে পতিত হবার পূর্বেই উক্ত শটগানের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন। এরপরেই শুরু হয় তদন্ত।
তদন্তে বেরিয়ে আসে, তিনি যে বুলেটের আঘাতে মৃত্যুবরণ করেন সে বুলেটটি তার খুলিতে প্রবেশ করে যখন তিনি নয়তলার একটি ফ্ল্যাটের জানালার পাশ দিয়ে পতিত হচ্ছিলেন। উক্ত ফ্ল্যাটে এক বৃদ্ধ দম্পতি বসবাস করতো। ঘটনাকালীন সময়ে সেই দম্পতি ঝগড়ারত অবস্থায় ছিলো এবং সে অবস্থাতেই বৃদ্ধ লোকটি একটি শটগান নিয়ে তার স্ত্রীকে শাসাচ্ছিলেন।
একসময় অতি উত্তেজনার বশে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বৃদ্ধ লোকটি শটগানের ট্রিগারে চাপ দিলেন। ফলাফলে শটগান হতে বেরোনো বুলেট বৃদ্ধাকে মিস করে জানালা দিয়ে বেরিয়ে যায় এবং অনাকাঙ্খিত একটি কাকতালীয় ঘটনার জন্ম নেয়।
আইনমতে রোনাল্ড অপাসকে হত্যার দায়ে বৃদ্ধ লোকটিকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু উক্ত বৃদ্ধ দম্পতি তখন জানান যে, তারা কেউই জানতো না যে শটগানটি লোড করা ছিলো। এসব বিষয় তাদের পারিবারিক জীবনে অহরহ ঘটতো– তারা ঝগড়া করছে, বৃদ্ধ শটগান হাতে বৃদ্ধাকে শাসাচ্ছে এবং অতি উত্তেজনার কারণে বৃদ্ধ শটগানের ট্রিগার টিপে দিচ্ছে; তাদের উভয়ের জানামতে শটগান আনলোডেড থাকতো। ঘটনার দিন শটগান হতে বুলেট বেরোতে দেখে তারা উভয়েই থ-মেরে গিয়েছিলো। তারা উভয়েই সাক্ষ্য দেয় যে, বৃদ্ধ লোকটির কোনোই ইচ্ছে ছিলো না তার স্ত্রীকে খুন করার।
এবার নতুন রহস্যোদঘাটনে তদন্ত শুরু হলো– শটগান লোডেড হলো কিভাবে? এতে কিছু সাক্ষী বেরিয়ে আসে, তারা উক্ত ঘটনার ছয় সপ্তাহ পূর্বে বৃদ্ধ দম্পতির ছেলেকে দেখেছে শটগানটি লোড করে রাখতে। তদন্তের মাধ্যমে আরো বেরোলো যে, ছেলেটি তার পরিবার হতে যে আর্থিক সহায়তা পেতো, তা বন্ধ করে দেয়ার পেছনে বৃদ্ধার অর্থাৎ মায়ের হাত ছিলো। এজন্য ছেলেটি চাইতো তার মা মারা যাক। এক্ষেত্রে ছেলেটি তার পিতা-মাতার ঝগড়া ও মায়ের দিকে তার বাবার শটগান তুলে শাসানোর বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলো।
তো, সে এই সুযোগটিকে কাজে লাগানোর জন্যই শটগানটি লোড করে রাখে। যদি তার বাবার হাতে মায়ের খুন হতো, তাহলে বাবা জেলে যেতো এবং উত্তরাধিকারী ক্ষমতাবলে অর্থনৈতিক দিকে থেকে তার আর অভাব থাকতো না। এ তথ্য বেরোনোর পরেই উক্ত ছেলের খোঁজ লাগানো শুরু হয় রোনাল্ড অপাসের খুনের দায়ে।
কি ভাবলেন? উক্ত ছেলেকে রোনাল্ড অপাসের খুনের দায়ে গ্রেফতার করলেই কেস খতম? না, তা নয়! আসল টুইস্ট তো এখনো বাকিই রয়ে গেছে!
উক্ত বৃদ্ধ দম্পতির ছেলেকে খোঁজাখুঁজির তদন্তে একসময় মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মতো তথ্য উঠে আসে। সেই ছেলেটি আর অন্য কেউ নয়, রোনাল্ড অপাস নিজেই! এই রোনাল্ড অপাসই তার মায়ের মৃত্যুর অপেক্ষা করতে-করতে একপর্যায়ে হতাশ হয়ে পড়ে, যা তাকে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করে। ফলে সে আত্মহত্যার নিয়তে দালানের ছাদ হতে লাফ দেয়ার সময় নিজের দ্বারা লোড করা শটগানের বুলেটের আঘাতেই মৃত্যুবরণ করেন।
সবশেষে, রোনাল্ড অপাসের এই অদ্ভুৎ কেসটাকে একটা আত্মহত্যার কেস হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সমাপ্তি টানা হয়।
যেমনটা পূর্বে বলেছিলাম, কেসটা আদৌ সত্যি কোনো কাহিনী কিনা তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা ও চুলচেরা বিশ্লেষণ আছে। অধিকাংশ উৎস মতেই এ ঘটনাটি পুরোপুরি বানোয়াট। তবে সত্যি কি মিথ্যে সেটা বিশ্লেশণ করতে আর না যাই। এটুকু শুধু জানিয়ে রাখি, ঘটনাটি প্রথম ব্যাপকভাবে ছড়ায় ১৯৯৪ সালের আগস্টে ইন্টারনেটের বদৌলতে।
স্বাভাবিকতই, অদ্ভুৎ এ কাহিনী অবলম্বনে মিডিয়া জগতে বেশ কিছু চলচ্চিত্র ও অনুষ্ঠান নির্মিত হয়; যার মধ্যে হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা টম ক্রুজ অভিনীত ১৯৯৯ সালের পল টমাস অ্যান্ডারসনের মুভি Magnolia সবথেকে বেশি পরিচিত। যদিও মুভি তৈরীর স্বার্থে কাহিনী কিছুটা পরিবর্তন করে নেয়া হয়েছে যাতে দর্শকদের নিকট উপভোগ্য হয়।
রোনাল্ড অপাসের অদ্ভুৎ আত্মহত্যা সম্বন্ধে আরো কিছু জানার থাকলে গুগল মামার কাছ থেকে জেনে নিন, এবিষয়ে ভুড়ি-ভুড়ি আর্টিকেল পাবেন। তবে এ লেখাটির ক্ষেত্রে আমি যে ওয়েবসাইটের সাহায্য নিয়েছি তার লিংক আমি আপনাদের সুবিধার্থে দিয়ে দিচ্ছি–
পোস্টটি ভালো না লাগলে দুঃখিত। কোনো ভুল পেলে দয়া করে জানাবেন, আমি অতি শীঘ্র তা সংশোধন করতে চেষ্টা করব; শুধু-শুধু কমেন্টে নিন্দনীয় ভাষা ব্যবহার করে নিজের বংশ সম্বন্ধে অন্যদেরকে খারাপ কিছু ভাবনার সুযোগ দিবেন না।
ধন্যবাদ।।।
তবুও শতাংশ অপূর্ণই থেকে যায় এবং ক্লোজ করে দেওয়া হয় ফিকশনাল কোন মার্ডার কেস বলে। মিশন সফল? কোন মিশন? বাস্তবিক? না সেটা ভার্চুয়াল?
তবুও আমার মনেহয় আপনি কাহিনীটা সম্পূর্ণভাবে বুঝতে সক্ষম হননি।