আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

পড়াশুনা করার নেশা

আজ আমি আপনার সাথে দুজন জমজ ভাইয়ের গল্প শেয়ার করব। যার মধ্যে একজনের নাম পড়াকু আরেক জনের নাম লড়াকু। পড়াকু আর লড়াকু দুজনেই একই স্কুলে পড়ে। তারা একটি মিডিল ক্লাস ফ্যামিলি থেকে বিলং করে এবং তাদের মা বাবার মেন্টালিটি কিছুটা এরকম। লেখাপড়া করে যে সে হয় নবাব খেলাধুলা করে যে সে হয় খারাপ। ছোটবেলা থেকেই তাদের মা-বাবা সারাক্ষণ পড়াকু আর লড়াকুকে এই কথাটা বারবার বলে এসেছে।

তো মা বাবার মুখ থেকে বার বার শুনতে শুনতে পড়াকু এই কথাটাকে সত্যি বলে মেনে নেয় আর সেই মতো খেলাধুলা সব বাদ দিয়ে সারা দিন শুধু লেখাপড়া করতে শুরু করে দেয় মানে লেখাপড়া করার পর পড়াকুর কাছে নেশার মতো হয়ে দাঁড়ায়। অন্য দিকে লড়াকুকে যখনই তার মা-বাবা এই কথাটা বলতো যে লেখাপড়া করে যে সেই হয় নবাব খেলাধুলা করে যে সে হয় খারাপ। লড়াকু তার মা-বাবাকে প্রশ্ন করত কেন তাহলে শচীনের সবাই এত ভক্ত কেন। তখন মা-বাবার কাছে লড়াকুকে দেওয়ার মতো কোন উত্তর থাকতো না। ফলে লড়াকু মা বাবার এ ডায়লগটাকে কোনদিনই সিরিয়াসলি নিতো না।

লড়াকুও পরতো কিন্তু শুধু যাতে পরীক্ষায় ফেল না করে যায় সেই জন্য যেটুকু করা দরকার সেটুকু। মানে স্কুলে লড়াকু একটা পিরিয়ড যদি ক্লাস করত আর একটা পিরিয়ড ক্লাস দিয়ে বাইরে বেরিয়ে খেলাধুলা করে বেড়াতো। খেলার জন্য কাউকে না পেলে গাছপালা ফড়িং এসব নিয়েই মেতে থাকতো। অন্যদিকে পড়াকু সেইজে ঘন্টা পড়ার পর ক্লাসে বসতো আর সে স্কুল ছুটি হওয়ার পর সেখান থেকে বের হতো। ফলে স্বাভাবিক পড়াকু সবসময় পরীক্ষার ফাস্ট হতো এবং মা-বাবার কাছে পড়াকু সবসময় প্রশংসা পেত আর লড়াকু সবসময় বকার, পিটুনী খেতে।

লড়াকুর মা লড়াকুকে যখনি বলতো তোর পাড়াগুলো একটু মুখস্ত করতে কি হয় তখন লড়াকু মাকে বলতো মুখস্ত করে কি করবো সব গুগল এই রয়েছে একটা সার্চ করলেই তো দরকার জেনে নেওয়া যায়। ফালতু ফালতু মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে বোঝা বাড়িয়ে কি লাভ তখন লড়াকুর মা লড়াকুকে বলতো শোনো গুগোল এ থাকলে কিন্তু তুমি চাকরি পাবে না। লড়াকু বলতো সোনা ওরম চাকরির আমার দরকার নেই। আমি মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই রোবট হয়ে না। টাকা কামানোর জন্য কি চাকরি করা ছাড়া আর উপায় নেই নাকি। মাকে ডেঙ্গানোর জন্য লড়াই আবার মার কাছে পিটুনি খেতে হতো।

এভাবে কোনরকমে টেনেটুনে হায়ার সেকেন্ডারি পাস করার পর লড়াকু পড়ালেখা ছেড়ে দিলাম। ক্লাস টুয়েলভ এর পর থেকে লড়াকুর মধ্যে ফটোগ্রাফির নেশা দেখা দিতে শুরু হলো। অন্যদিকে পড়াকু নিজের লেখা পড়ার নেশা ফুল দমে চালিয়ে যেতে লাগল। আস্তে আস্তে পড়াকু বিভিন্ন ডিগ্রীর কালেক্ট করে ফেললো। কিন্তু সমস্যাটা হলো সারাদিন শুধু বইয়ে মুখ গুজে পড়ে থাকার ফলে পড়াকুর ব্যবহারিক বুদ্ধি হয়ে গেছিল জিরো আর পার্সোনালিটি ডেভেলাপমেন্ট বলতেও কিছুই হয়েছিল না পড়াকুর।

অচেনা কোন লোকের সাথে ঠিকভাবে কথা বলতে পারতোনা পড়াকু। ফলে ডিগ্রী প্রচুর থাকলেও পড়াকুকে বেকার হয়ে ঘরে বসে থাকতে হলো এরপর শেষ পর্যন্ত এত লেখাপড়া করে এত ডিগ্রী নিয়ে পড়াকে পিয়নের চাকরিতে ঢুকতে হলো। যে পিয়নের চাকরির জন্য নূন্যতম যোগ্যতা ছিল মাধ্যমিক পাস। মানে মাধ্যমিকের পর থেকে আট দশ বছর ধরে পড়াকু সারাদিন পাগলের মত পড়ে গেল তারা কিছুই সারা জীবনে কাজে লাগবে না।

পড়াকুর মানে নিজের লাইফের বেস্ট আট থেকে দশ বছর যে সময় হেলথ এনার্জি একদম ফুল থাকে সেই পুরোটা সময় পড়াকু নিজের সো কল্ড ভালো নেশা লেখাপড়ার পিছনে সম্পূর্ণ নষ্ট করে ফেলল। অন্যদিকে ক্লাস টুয়েলভ এর পর থেকে লড়াকু যখন পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে ফটোগ্রাফির নেশায় বুঁদ হয়ে গেল। তখন মা বাবার লড়াকুকে নিয়ে আরো চিন্তা বেড়ে গেল প্রতিমুহূর্তে লড়াকুকে মা-বাবার কাছে কথা শুনতে হতো। এরকম সময় একদিন পড়াকুর ভাই লড়াকুকে ডেকে জিজ্ঞেস করল। ভাই তুই ফটোগ্রাফি করে কি করবি। তো লড়াকু বলল সেটা জানিনা কিন্তু নিজের কিছু একটা করবো কোন স্টার্টআপ মেবি।

তো পড়াকু বললো আরে নিজের কিছু করতে গেলে শুরুতে অনেক টাকা লাগে তোকে অত টাকা কে দেবে।লড়াকু বললো কেন ছোট করে শুরু করব আস্তে আস্তে সেখান থেকেই টাকা জমিয়ে জমিয়ে বড় করব। তো পড়াকু বললো হুহ এই রকম মনে হয়। পড়াকুর মাথাটা ভিষন ভাবে ছোটবেলা থেকেই গেঁথে গিয়েছিল যে জীবনে বড় কিছু করতে গেলে তার একটাই রাস্তা লেখাপড়া করা। এছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই আর নিজের এই বিষয়গুলোর প্রতি নেশাগ্রস্ত ছিল যে কারণে সারাদিন শুধু বইয়ে মুখ গুজে পড়ে থাকতো।

কখনো নিজের বিশ্বাসগুলো উপর পড়াকু কোশ্চেন মার্ক লাগাতো না। কিন্তু লড়াকুর মানুষিকতা ছিল অন্যরকম। লড়াকু মনে করত এই পৃথিবীতে যে কোন জায়গায় পৌঁছানোর একটা না অসংখ্য রাস্তা থাকে। তাই লাইফে বড় কিছু করারও শুধু একটাই রাস্তা লেখাপড়া করা এটা ভুল ধারণা। আরো অসংখ্য রাস্তা আছে টাকা রোজগার করে বড় কিছু করার। তো পড়াকু নিজস্ব সো কোল্ড ভালো নেশা পড়াশোনা চালিয়ে গিয়ে লাখ লাখ টাকা এই পড়াশোনার পিছনে খরচ করে শেষ অবধি ১০ -১৫ হাজার টাকার ফিস্ক বেতনের একটা চাকরি জোগাড় করতে সক্ষম হলো।

অন্যদিকে লড়াকু সবার বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও নিজের উপর বিশ্বাস রেখে নিজের সো কোল্ড বাজে নেশা ফটোগ্রাফি নেশা চালিয়ে গিয়ে স্টক ফটোগ্রাফির উপর ইমেজে স্মার্ট নামে নিজের একটা কোম্পানি শুরু করলো। যেহেতু ছোটবেলা থেকে লড়াকুর বেশিরভাগ সময়টা ক্লাস রুমের বাইরে কেটেছিল ভিতরে না তাই লড়াকুর ব্যবহারিক বুদ্ধি হয়ে উঠেছিল অসাধারণ। পড়াকু যখন রোবটের মত শুধু এবং শুধু ইনফর্মেশন নিজের মাথায় ফিট করছিল।

লড়াকু তখন লাইফকে জান ছিল আর সেই ব্যবহারিক বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে লড়াকু নিজের স্টক ফটোগ্রাফটিকে কোম্পানিকে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির লেভেলে নিয়ে চলে গেল। ফলে টুয়েল্ভ পাস লড়াকুর মান্থলি ইনকাম দাঁড়ালো চার-পাঁচটা বেকার ডিগ্রী পাস করা পড়াকুর থেকে 10 গুণ বেশি। এবার মা-বাবা পড়াকুকে বকাবকি করতে শুরু করলো। লড়াকুকে দেখে পড়াকুকে কিছু শিখতে বলতে শুরু করল। মানে এখন মা-বাবার কাছে লড়াকু খুব ভালো হয়ে গেল আর পড়াকু হয়ে গেল বোকা।

না তখন পড়াকুকে বলতে শুরু করল শোনো এই দশ পনেরো হাজার টাকার চাকরি দিয়ে কিন্তু সংসার চলবেনা লড়াকুর মত বুদ্ধি খাটিয়ে কিছু একটা করো। তো পড়াকু আর লড়াকু স্টরি আমাদের এটা শেখায় যে জরুরি না আমরা যেটাকে ভালো জিনিস বলে ভাবি সেটা আসলেই ভালো বা যে জিনিসটাকে আমরা খারাপ বলে ভাবি এটা আসলেই খারাপ। আসল জিনিসটা হলো সমস্ত বিশ্বাস বা ধারণাকে সঠিক বলে মেনে নেওয়ার আগে তার পিছনে একটা কোশ্চেন মার্ক লাগানো প্রশ্ন করে দেখা ধারণাটা কি আসলেই সত্যি নাকি ডাহা মিথ্যা।

যখন আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন → Education is not the learning of facts.But the training of the mind to think অর্থাৎ শিক্ষা মানে শুধু কিছু তথ্য সংগ্রহ করা নয় শিক্ষা মানে কিভাবে চিন্তা ভাবনা করতে হয় তার প্রশিক্ষণ।

এই জিনিসগুলো আমি সন্দীপ স্যারের অ্যাডিকশন টু এডুকেশন ভিডিওটা থেকে শিখেছি। যারা হিন্দি ভালো বোঝেন না তাদের জন্য এবং ভিডিওটি মূল কথাগুলো অল্প সময়ের মধ্যে আর একটু ইন্টারেস্টিং ভাবে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে আমি এই সামারি আর্টিকেল বানিয়েছি।

আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল প্রয়োজন হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ফেসবুকে আমি

ভালো লাগলে আমার সাইটের পোস্ট গুলি দেখে আসতে পারেন এখানে আমি প্রতিদিন নতুন নতুন আপডেট দিয়ে থাকি আজকের আপডেট
link:

ওয়েবসাইট এর জন্য এসইও (SEO) কি? অফ পেজ এবং অন পেজ এসইও (SEO) কাকে বলে

One thought on "পড়াশুনা করার নেশা – Sandeep Maheshwari Motivational Video Summary in BANGLA"

Leave a Reply