আসসালামু আলাইকুম।

সবাই কেমন আছেন?

আজকে আবার হাজির হয়েছি আলো সম্পর্কে পোস্টের দ্বিতীয় পর্ব তথা শেষ নিয়ে। প্রথম পর্বের পোস্টে দেখে একজন কমেন্টে বলেছে নাকি যে এটা কপি পোস্ট। আমি এত কষ্ট করে পোস্ট লেখার পরেও সে বলছে যে এটা কপি পোস্ট।এতো বই ঘাটাঘাটি করে নিজে জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে পোস্ট টা তৈরী করলাম কিন্তু তিনি বলছেন যে এটা কপি পোস্ট। কমেন্টটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। যাইহোক আসুন পোস্টের বিষয়ে ফিরে আসি।

এখানে ক্লিক করে পূর্বের পোস্টটি দেখে নিন।

আলো সম্পর্কে পোস্টের দ্বিতীয় পর্ব (শেষ ভাগ):-

★প্রথম পর্বে যেখান থেকে বাদ দিয়েছিলাম সেখান থেকে আজকে শুরু করছি।

বিস্তারিত পোস্টঃ

ফাইবার অপটিক কেবলে কি আলোর বেগে তথ্য প্রবাহিত হয়?

নেটওয়ার্কিং কোম্পানিগুলো ফাইবার অপটিক কেবলের মধ্যদিয়ে আলোর বেগে তথ্য প্রবাহিত হওয়ার কথা বললেও বাস্তবে তেমনটি হয় না। এসব কেবলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় আলোর বেগ ৪০% এর মত ধীর হয়ে যায়, যেটিকে আলোর ধীর গতিতে চলার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়।

আপেক্ষিক তত্ত্বের বিদঘুটে ফলাফলঃ

আপেক্ষিক তত্ত্ব সময়ের আপেক্ষিকতা, ভরের আপেক্ষিকতা, দৈর্ঘ্যের আপেক্ষিকতার মত আপাতদৃষ্টে অসম্ভব কিছু ফলাফল নিয়ে এসেছিল। যেমন, আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্র পৃথিবীর সাপেক্ষে সেকেন্ডে ৭.৬৬ কিলোমিটার বেগে ছুটছে তাই প্রতি ৬ মাসে মহাকাশচারীদের ঘড়ি ০.০০৭ সেকেন্ড পিছিয়ে পড়ে।

আলের বেগের কাছাকাছি বেগে ছুটতে পারে এমন কণিকার ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও মজার। মিউওন কণিকা খুবই অস্থিতিশীল। সূর্য খেকে পৃথিবীতে আসতে আসতে এসব কণিকা ভেঙে যাওয়ার কথা। কিন্তু সূর্য খেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় মিউওন কণিকা পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন এর কোন জবাব খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

এ ধাঁধার জবাব পাওয়া যায় আপেক্ষিক তত্ত্বের মাধ্যমে। মিউওন যেহেতু প্রায় আলোর বেগে চলে তাই এসব কণিকার সময় বা নিজস্ব ঘড়িও ধীর হয়ে যায়। তাই সূর্য থেকে আসা মিউওন কণিকা আমাদের ঘড়ির সাপেক্ষে ধারণার চেয়ে দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়।

আলোর বেগকে অতিক্রম করাঃ

এখন পর্যন্ত কোন কিছুকেই আলোর বেগের চেয়ে বেশি বেগে ছুটতে দেখা যায়নি। কিন্তু অন্তত তাত্ত্বিকভাবে আলোর বেগকে অতিক্রম করা অসম্ভব মনে করা হচ্ছে না। আর এ মহাবিশ্ব নিজেই আলোর বেগের চেয়ে দ্রুতবেগে প্রসারিত হচ্ছে।

আপেক্ষিক তত্ত্বই যেখানে আলোর বেগের চেয়ে দ্রুতবেগে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়।

আলোর বেগকে অতিক্রম করা সম্ভব নয় এমন তত্ত্ব দিলেও আইনস্টাইন নিজেই এর একটি সমাধান বের করেছেন। ১৯৩৫ সালে আরেক বিজ্ঞানী নাথান রোজেন এর সাথে কাজ করে সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব ব্যবহার করে স্থান-কাল (space-time) সেতুর ধারণা নিয়ে আসেন। যেটি ওয়ার্মহোল (wormhole) নামে পরিচিত। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে আমরা এর উল্লেখ হরহামেশা লক্ষ্য করি। এগুলো অনেকটা দু’প্রান্ত বিশিষ্ট সুড়ঙ্গের মত করে স্থান-কালের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে, যাকে কসমিক শর্টকাটও বলা যায়। কাজেই আলোর বেগে না ছুটেও মহাবিশ্বের একস্থান থেকে ওয়ার্মহোলের মাধ্যমে বহুদূরের অন্য কোথাও আলোর চেয়ে দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে। যেটি কোনভাবেই আপেক্ষিক তত্ত্বের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। গাণিতিকভাবে ওয়ার্মহোলের অস্তিত্ব প্রমাণ করা গেলেও বাস্তবে এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।


ওয়ার্মহোলর অস্তিত্বই যদি না থাকে? 

 বিজ্ঞানীরা বলছেন ওয়ার্মহোলের অস্তিত্ব না থাকলেও সমস্যা নেই। একদিন স্থান-কালকে নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি মানুষের হাতে চলে আসতে পারে। তাত্ত্বিক বিবেচনায় সেটি করা অসম্ভব নয়। কিন্তু এটি করতে যে শক্তি প্রয়োজন হবে তা অবিশ্বাস্য। পুরো বৃহস্পতি গ্রহের ভরকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে এ প্রক্রিয়াটি শুরু করা যেতে পারে আর তা চালিয়ে যেতে নিরবচ্ছিন্নভাবে শক্তির যোগান দিয়ে যেতে হবে। তাই আপাতত আলোর বেগকে ধোঁকা দিতে পারার কোন আশা দেখছেন না বিজ্ঞানীরা। 
→তো আজ এই পর্যন্তই। আপনারা সাবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর ট্রিকবিডির সাথেই থাকবেন। এই পোস্টা আপনাদের কেমন লাগল? জানাতে ভুলবেন না।
ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Reply