আপনার কি মনে হয়? অ্যাপেল আপনার পকেট ফ্রেন্ডলি বাজেটের জন্য একসাথে চারটি ভার্সনের আইফোন বাজারে নিয়ে আসে? আপনার উত্তর যদি হ্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি পুরাই বোকার স্বর্গে বাস করছেন।

কারণ মানুষের পকেট হাতিয়ে নেয়ার এই পদ্ধতির পিছনে রয়েছে একটি ট্রিকস, আর সেটি হলো আপনি কোন iphone টি কিনবেন সেটি তারা আগে থেকেই জানেন।

এমনকি BALENCIAGA ব্রান্ড দেড় লক্ষ টাকা দামের ফাটা জুতা থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা দামের shoelace earring বিক্রি করে থাকেন। এটাকে একরকম লুটপাট ই বলা চলে, আর এই লুটপাটের সমস্ত ক্রেডিট শুধুমাত্র BALENCIAGA কে দেওয়া ভুল হয়ে যাবে।

আসলে এই লুট এর মিশনে পৃথিবীর বড় বড় কোম্পানিও পিছিয়ে নেই যেমন পেপসি, এই কোম্পানি আপনাকে আপনার পছন্দের হিরো হিরোইন কে দিয়ে এডভেটাইজমেন্ট করে আপনার পকেট হাতিয়ে নিচ্ছে, জানতে চাচ্ছেন কিভাবে?
তো চলুন দেখে নেয়া যাক।

পেপসি


বর্তমান সময়ের সবচাইতে জনপ্রিয় কোলড্রিংকস গুলোর মধ্যে অন্যতম যা প্রায় প্রতিদিন অগণিত মানুষের তৃষ্ণার্ত হৃদয় ঠান্ডা করে থাকে,

তবে আপনি কি এটা জানেন? প্রতিনিয়ত এই পেপসি কোম্পানি বিভিন্ন হিরো হিরোইন কে দেখি আপনার চোখকে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে?‌ জানতে চাচ্ছেন কিভাবে?

পেপসি এটা ভালো করেই জানে কিভাবে তাদের প্রোডাক্ট কে ভালো করে উপস্থাপন করে কাস্টমারকে আকৃষ্ট করতে হয়, তাইতো মেসি রোনালদোর মত তারকাকে পেপসি পান করতে দেখে আপনার গলা শুকিয়ে যাই? আর পেপসি ও তো এটিই চাই।
কারন আমরা সবাই ইতিমধ্যে জানি, প্রত্যেকটা মানুষ।

. TRUSTWORTHINESS
. ভ্যালিডেশন
. সোশ্যাল প্রুফ

এই তিনটা জিনিস কেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়, আর এই তিনটা জিনিসেই টিভি এড এ কোন অচেনা মানুষের পরিবর্তে আপনার পরিচিত এবং পছন্দের অভিনেতার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলে, সেখানে নিশ্চিত চান্স থাকে আপনি সহজেই ঐ পণ্যের উপর আকৃষ্ট হবেন।
তাছাড়া আমরা যখন আমাদের এসব পছন্দের তারকাদেরকে পেপসি পান করতে দেখি, তখন অবচেতন মনে আমরা এটা বিশ্বাস করে থাকি যে পেপসি পান করলে শরীরের কোন ক্ষতি হয় না। আর এভাবেই ড্রিংসের ক্ষতিকারক দিকগুলো জানা সত্ত্বেও আমরা এগুলোকে আমাদের পছন্দের শীর্ষে ই রাখি।

পেপসি যে আজ পৃথিবীর কত বড় ফুড এবং উচ্চমানের কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি তার অন্যতম কারণই হচ্ছে এটি। এই ড্রিংকস প্রতিদিন ২০০ টি দেশে শত শত কোটি মানুষের পিপাসা মিটিয়ে থাকে।

হয়তো বড় বড় তারকাদের কে দিয়ে এডভেটাইমসমেন্ট না করালে মানুষকে পেপসি কেই চিনতো না।


আইফোন


আইফোনের যে হ্যাকসের কথা আর্টিকেল এর শুরুতে বলেছি আসুন সেটা সলভ করা যাক।

আপনি কোন ফোন কিনতে চান এটা তারা কোন যাদুবিদ্যায় বলে দিতে পারেনা, বরং এর পিছনে রয়েছে কিছু গেম প্ল্যানিং।

যাকে বলা হয় .দ্য সেন্টার স্টেজ ইফেক্ট এটা আসলে কি সেটা জেনে নেয়া যাক।
.স্টেপ ১
আপনি যে প্রোডাক্ট টাকে বিক্রি করতে চান সেটিকে আগে বাছাই করুন
.স্টেপ ২
সেই প্রোডাক্ট এর সুবিধা এবং প্রাইজ ডিটেইল নোট করা
. স্টেপ ৩
সেই প্রোডাক্ট এর সাথে দুটো আলাদা কম্পিয়ার করে প্রোডাক্ট রাখা একটা যেটা হবে সস্তা এবং লো কোয়ালিটি ফুল আর দুই নাম্বারটা হবে অনেক দামি।
এখন কাস্টমার না সস্তা ফোনটা চুজ করবে? না বেশি দামি টা? সে চুজ করবে এর মাঝামাঝি টা। কি অবাক হয়ে গেলেন?

আইফোনের মতোই আরো বড় বড় মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো ,দ্য সেন্টার স্টেজ ইফেক্ট, এর সাহায্যে আমাদের চোখকে ধোঁকা দিয়ে থাকে।

শুধু তাই নয় এমন অনেক ব্র্যান্ড আছে যারা আপনাকে তিনটি অপশন দেখাবে মাঝামাঝি নয়, বরং হায়েস্ট প্রাইসের জিনিসটা বিক্রি করার জন্য। আর আমরা প্রতিনিয়ত এই গেম প্লানিং এর খপ্পরে পড়ে থাকি।


NIKE


চলুন প্রথমের নায়কির এই বিজ্ঞাপন গুলো দেখে নেয়া যাক।


এই সমস্ত নায়কির বিজ্ঞাপনে একটাতেও কি নায়কি তার প্রোডাক্ট এর কথা উল্লেখ করেছে? আর এরা সেটা কখনো করেও না।

আজকের দুনিয়ায় সবচাইতে বড় অ্যাথলেট এপিয়ারের কোম্পানি গুলোর মধ্যে Nike company একটি, যারা মার্কেটিং দুনিয়ার সবচাইতে বড় রুলস গুলো শিখে নিয়েছে, যাকে বলা হয় ,কনজিউমার সাইকোলজি, অর্থাৎ নিজেদের পণ্যের লম্বা বিবরণ কাস্টমারকে সোনালেই কাস্টমার আকৃষ্ট হবে না।

যখন আপনি কাস্টমারকে মনের খোরাক জোগাতে পারবেন কাস্টমার তখনই আকৃষ্ট হবে, আর এই কাজটি Nike company তার এড গুলোতে করে থাকে।

যেখানে তারা-


. Just do it.
. Dream Crazier
. Find your greatness

এই ধরনের স্লোগান দিয়ে তাদের প্রোডাক্টস এর ব্যাপারে কিছু না বলেই উল্টো সবাইকে এই মেসেজ দিচ্ছে যে ইম্পসিবল কে পসিবল করা সম্ভব।

আর এই ইমোশনটুকুই Nike company এর সবচেয়ে বড় হাতিয়ার কাস্টমার আকৃষ্ট করার ফলাফল Nike আজ পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত একটি কোম্পানি।


GUCCI


নিচে স্ক্রিনশটের দেখানো ব্যাগ গুলোর মধ্যে আপনি কোনটাকে চুস করবেন?

ডান পাশেরটা নাকি বাম পাশেরটা ডিসিশন নেয়া কিন্তু খুবই কঠিন?

একটু সহজ করা যাক এই ডান পাশেরটার প্রাইস ১৭৫০০ এবং বাম পাশেরটা মাত্র ১১৬০ টাকা।

দুটি ব্যাগই দেখতে কিন্তু অলমোস্ট সেম কিন্তু ১৫০ গুন দাম বেশি নেওয়ার কারণ কি তাহলে? এক মিনিট একটু খেয়াল করে ব্যাগগুলোর ব্রান্ড দেখা যাক।

এবার হয়তো আপনি ব্যাপারটা একটু হলেও বুঝতে পারবেন, এখন হয়তো আপনারা এটা ভাবছেন না এই ব্যাগগুলোর সাইজ এবং ফাংশন তো একই বরং জাজ করছেন এই ব্যাগগুলো ব্রান্ডের নামের বেচ্ছিসে তাই না?

আর এইখানটাতেই ১৩.২ বিলিয়ন ডলারের *ZARA* ১৮.১ বিলিয়ন ডলারের *Gucci* এর কাছে হেরে যাবে বুঝতে পারছেন ব্রান্ড ভ্যালু বর্তমান মার্কেটে কতটা ভ্যালু রাখে।

আর তাইতো ব্যালান্সিয়া ইয়ার রিং সহজেই মার্কেটে সাড়া ফেলে দেয়, আর জারার এই নিচের দেয়া ফাটা শার্ট টি কিনতে মানুষজন একবারও ভেবে দেখিনি।


শুধু জামাই নয় আমাদের কাছে জুতারও উদাহরণ রয়েছে নিচের এই ফাটা জুতা শুধুমাত্র ব্যালেন্সশিয়া ব্র্যান্ডের জোরেই এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকায় বিক্রি করা সম্ভব।


পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন আর আপনি যদি রহস্য-রোমাঞ্চ আর্টিকেল পছন্দ করে থাকেন তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ব্রাউজারে সেভ করে রাখুন ধন্যবাদ।

৭ দিনের জন্য আনলিমিটেড ফ্রি কথা বলার অ্যাকাউন্ট নিন মাত্র ১০০ টাকায় | ১০০% একাউন্ট ব্লক হবে না। অ্যাকাউন্ট ব্লক হলে আবার অ্যাকাউন্ট দেওয়া হবে একাউন্টটি নিতে https://www.facebook.com/Anamika016 এই আইডিতে যোগাযোগ করুন।

One thought on "বড় বড় কোম্পানি যেভাবে আমাদেরকে বোকা বানায়?"

Leave a Reply