কিছু কিছু ছবি শেষ হলে,তাদের রেশ থেকে যায়।ঠিক সেইরকম একটিই ছবি ‘Soorarai Pottru’।❤️
পরপর বেশকিছু মানহীন মুভি করে সুরিয়া যেন একেবারে ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছিল। সবার মুখে মুখে কেবল সুরিয়ার ব্যর্থতার গল্পঝুড়ি।ঠিক সেই সময়ই তার সেরা অভিনয় দিয়ে নজর কাড়ে সবার।একই সাথে সমালোচকদেরও উওর দেয়।কিন্তু কেউ ফর্মে আসতে চাইলে এরকম মাসটারপিস মুভির কোনো বিকল্প নেই, যা এক্টিং দেখিয়েছে, সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
সুরিয়ার একটি জিনিস আমার বেশ ভালো লেগেছে, সেটি হলো তার চোখ।সুরিয়া তার চোখ দিয়ে অসাধারণ সব অভিনয় সামলে নিতে পারে, যা দেখে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। কষ্টের জন্য আলাদাভাবে কোনো চিৎকার করতে হবে না, শব্দ করে কাউকে দেখাতেও হবে না, শুধু তার লাল-লাল চোখের মৃদুজলের আবছা দেখে যে-কেউ আবেগপ্রবণ হয়ে যাবে।
এই পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের মানুষের বসবাস। সবার পেশা বা পরিচয় আলাদা হতে পারে,কিন্তু সবার উপরে মানুষ সত্য।আমরা মানুষ হলেও, সমাজে প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।বিশেষ করে নিচু স্তরের মানুষদের সেটা বেশি পৌহাতে হয়।কিন্তু, এই মুভিটা আমাকে বলেছে সামাজিক সমতায়নের সেই বিষয়ের কথা যেখানে একজন মানুষ শুধুমাত্র টাকার অভাবে, ভাড়ার অভাবে চড়তে পারছে না বিমানে। চাইলেও যেতে পারছে না একটু দ্রুতগতিতে নিজের গন্তব্যস্থলে। আর আমরা জানি, একজন মানুষের জীবনে সময়ের মূল্য ঠিক কতটুকু। এক মূহুর্ত ব্যবধানে আমরা হারিয়ে ফেলতে পারি প্রিয়জনকে।
মুভিতে সাধারণ গরীব ঘরের মেধাবী বাস্তববাদী এক তরুণকে দেখা যায়, যার নাম নেদুমারান (Suriya)। তার স্বপ্ন শুধু একটাই আর তা হলো স্বল্প ব্যয়ী এয়ারলাইনস তৈরি করা যেখানে সাধারণ মানুষ অল্প টাকার বিনিময়ে সহজে চড়তে পারবে বিমানে। এমন কী এক রুপিতেও পেয়ে যাবে বিমানের টিকেট। এসব শুনে বড় বড় বিনিয়োগকারীরা নিঃসন্দেহে হেসে উড়িয়ে দিবেন, আর এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু তাদের মানিয়ে, বুঝিয়ে সেখান থেকে হাল ধরে এগোতে হবে স্বপ্নের পথে। যার প্রতিটি ধাপ হবে বিভৎস কঠিন। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, ইতিহাসের পাতায় যত গুণীজন নাম লিখিয়ে গেছেন তারা সবাই নানা প্রতিকূলতা পারিয়েই জয়ের দেখা পেয়েছেন। আর তাকে সাপোর্ট করার জন্য যদি থাকে একজন আদর্শবান নারী, তাহলে তো কোনো কথায় নেই। মনীষীদের মতে যে নারীর স্পর্শে সফলতার পথ আরও সুগম হয়ে দাঁড়ায়।
এতটুকুই থাকুক।আর বেশি বলতে চাচ্ছি না।কারন তাহলে এরকম একটি মাস্টারপিস ছবি দেখতে আগ্রহ হারিয়ে যাবে।তাই ছবিটি সবার দেখা উচিত।
মুভির বিশেষ অংশগুলোতে বেশ কড়াভাবে কিছু ইমোশনাল সিন দেখানো হয়েছে যা দেখে আমি স্বয়ং নিজেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।কয়েকটি দৃশ্যে কেঁদে দিসি।বিষেশ করে বলতে বাবার মৃত্যুর আগে ছেলেকে একবারে জন্য দেখার বাবার আকুতি?।
এবার আসি মূল কথায়,দীর্ঘ পরিকল্পনা মাফিক কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসুক, তবু সবাই চাই, এই সেবা যেন জন সাধারণের ঘর-দোয়ার অব্ধি পৌঁছাতে পারে।গরীবদেরও বিমানে উঠার অধিকার রয়েছে। আপনি একজন স্বপ্নসাথী মানুষ হয়ে থাকলে, সকল পারিপার্শ্বিক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে কীভাবে সফলতার দিকে পা বাড়ানো যায় তার জন্য অসাধারণ সব অনুপ্রেরণা পাবেন।
সুরিয়ার ছবিগুলো ভালোই,কিনতু মাঝেমধ্যে খারাপ ইঙিগত’খারাপ কিছু সিন করে ফেলে।অবশ্য ওদের দেশে তা বাস্তবে করে,আমরা তো সামাজিক এজন্যে আমাদের কাছে খারাপ মনে হয়??
One thought on "সমাজে মধ্যবিত্তদের কষ্টের জীবনযাপনের ওপর নির্মিত মুভি Soorarai Pottru এর রিভিউ + লিংক"