আসসালামুয়ালাইকুম
ফ্রীল্যান্সিং যারা আভিধানিক বা অর্থগত মানে হচ্ছে মুক্তপেশা। শুধুমাত্র মুক্তপেশা এই শব্দটি দ্বারা ফ্রীল্যান্সিংকে সংজ্ঞায়িত করা যায়না।
মূলত ফ্রীল্যান্সিং হচ্ছে একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ স্বইচ্ছায় এবং নিজ উদ্দ্যোগে এক বা একাধিক কাজের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত(একজন একক ব্যক্তি হলে) বা সম্মিলিত(গ্রুপ/প্রতিষ্ঠান হলে) দক্ষতা বা অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো ধরণের দীর্ঘমেয়াদি দায়বদ্ধতা বা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হয়ে যদি কোনো বা যেকোনো ধরণের কাজ (অর্থনৈতিক মাপকাঠিতে পরিমাপ যোগ্য অথবা পরিমাপ যোগ্য নয়) সম্পন্ন করে তাহলে তাকে মুক্তপেশা বা ফ্রীল্যান্সিং বলে।
উদাহরণঃ- ধরেন আমার একটি খুব ভালো মানের DSLR ক্যামেরা আছে এবং আমি ছবি তোলা বা ভিডিও করাতে মোটামুটি দক্ষ। এখন আমি নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এবং কোনো সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, টিভি-মিডিয়া, প্রোডাক্ট/মডেলের হয়ে ফটোগ্রাফি করিনা। আমার টাইম মেইনটেইন করে অফিসে যেতে আসতে অথবা কাউকে জবাবদিহি করতে হয়না। আমি মনের আনন্দে সারাদিন এদিকে-সেদিকে এবং বনে-জঙ্গলে মঙ্গল কইরা বেড়াই। এমন মঙ্গোল করতে করতে কখনো আমি বন-জঙ্গলের ফুল-ফল, লতা-পাতা বা গরু-ছাগল, কাকতালীয় ভাবে সমাজে বিভিন্ন সময়ে ভিবিন্ন বিড়ম্বনার ছবি তুলি। মাঝে মাঝে সম্পূর্ণ অপরিচিত বা পরিচিত ভাই ব্রাদারের মডেলিং স্টাইলে ফটো তুইলা দেই। এমন হাজারো ছবির মাজে ২/১-টা মার্কেট ভ্যালু আছে এমন ছবিও আমি তুলি।
ধরেন সুন্দরবনে ঘুরতে যেয়ে একটা ছবি তুললাম যেখানে হয়তো দেখা যাচ্ছে যে –> চোরাকারবারিরা সুন্দরী গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে, অথবা রাস্তায় ঘুরতে গেছি হটাৎ দেখলাম কেউ একটা শিশু বাচ্চাকে হয়রানি করছে অথবা যে কোনো ধরণের দৈনন্দিন বিড়ম্বনা যেমনঃ- ইভ-টিজিং, কেউ ঘুষ খাচ্ছে (কোনো ফুলিশ) বা কোনো হোটেলে খাইতে যেয়ে মরা মুরগীর সাপ্লাইয়ের সময় হাতে নাতে ধইরা ফালাইলাম এবং যেহেতু আমার হাতে ক্যামেরা আছে আমিও তু খিচ মেরে ফটো স্টাইলে ২/৪-খান ফটো নিলাম বা ভিডিও করলাম।
যাইহোক আমার এইসব চাহিদা সম্পন্ন ছবির মধ্যে কিছু কিছু ছবি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, পত্রিকা, ম্যাগাজিন, টিভি-মিডিয়া কিনে নেয় বা আমি তাদেরকে সরবরাহ করি অথবা বলতে পারেন আমি বিক্রি করি। এই ক্ষেত্রে
[ আমার নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি হচ্ছে ফটোগ্রাফি জাস্ট এইটুকুই আর কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই যেমনঃ- অমুক বা তমুকের কাছে বিক্রি করবো বা করতে হবে অথবা তারাই আমার কাছ থেকেই কিবে বা কিনতেই হবে। শুধু তাইনা আমায় রিয়েল লাইফে ফ্রীল্যান্সিং না করে ভার্চুয়ালেও করতে পারি একটা ওয়েবসাইট খুললাম আমার তোলা ছবিগুলা বিভিন্ন প্রাইস দিয়ে সাজিয়ে দিলাম ভিজিটররা ওয়েবসাইটে আসে যদি কোনো ছবি ভালো লাগে তাহলে তারা সেই নির্দিষ্ট ছবি তাদের নির্দিষ্ট প্রয়োজনের জন্য আমার কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনে নিতে পারে।
এই ক্ষেত্রে আমি যদি সব ফটোগ্রাফির সব সেকশনে (প্রোডাক্ট/মডেল/নেচার/হিস্টোরিক্যাল প্লেস/ওয়াইল্ড-লাইফ) কাজ করি তাহলে আমার পরিচয়টা হতে পারে এমেচার ফ্রীল্যান্সার। যদি নির্দিষ্ট একটি বিষয় নিয়েই আমি কাজ করি যেমন শুধু বন-জঙ্গলের ফুল-ফল, লতা-পাতা বা গরু-ছাগলের ছবিই আমি তুলি তাহলে আমার পরিচয় হবে এমেচার ওয়াইল্ড-লাইফ ফ্রীল্যান্স ফটো জার্নালিস্ট/ফটোগ্রাফার।
আর যদি উপরোক্ত কার্যাবলী আমি একটি নির্দিষ্ট নিয়ম (উপরে বর্ণিত সংজ্ঞা) অনুযায়ী এবং প্রফেশনালী করি তাহলে আমার পরিচয়টা হবে যদি সব সেকশন নিয়ে কাজ করি তাহলে প্রফেশোনাল ফ্রীল্যান্স ফটো-জার্নালিস্ট/ফটোগ্রাফার আর যদি ফটোগ্রাফির নির্দিষ্ট কোনো সেকশনে কাজ করি যেমনঃ- প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি তাহলে উক্ত ক্যাটাগরি অনুযায়ী আমার পরিচয়টা হবে প্রফেশনাল ফ্রীল্যান্স প্রোডাক্ট-ফটোগ্রাফার।
2 thoughts on "[ফ্রীল্যান্সিং কি, কেন,কাদের জন্য, সফলতা, বিফলতা, কেন কাজ পাননা , ফ্রি সোর্স এবং জেনারেল প্রশ্ন উত্তর পর্ব ইত্যাদি ইত্যাদি পর্ব-০১]"