আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন।আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর রহমতে আমিও খুবই ভালো আছি,বরাবরের মত আবারো নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম, আশা করি আপনাদের একটু হলেও উপকারে আসবে। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে চলে যায় মূল পোস্টে।

এডোবি ফটোশপ (Adobe Photoshop) এমন একটি সফটওয়্যার যেটা রাস্টার ইমেজ এডিটিং টুল, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এবং ডিজিটাল আর্ট তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। ডিজিটাল ক্যামেরা বা মোবাইল ও বিভিন্ন গ্যাজেট থেকে নেওয়া ফটো, ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা বা স্ক্যান করা যেকোনো ছবি এডিট করতে পারবেন। এই সফটওয়্যারটির দুই ভাই (Thomas-John knoll) মিলে ১৯৮৭ সালে ডেভলপ করেন। ১৯৮৯ সালে jhon এই সফটওয়্যারটিকে অ্যাডোবি সিস্টেমকে বিক্রি করে দেয়। তারপর থেকে এর নতুন নাম হয় ফটোশপ। যখন কোন ছবিকে এডিট করা বা তার মধ্যে ফিল্টার এপ্লাই, ইফেক্ট এপ্লাই, মডিফাই করা, রিটাচ করা, কনভার্ট করা আর নানান কাজ করার দরকার পড়ে, তখন ফটোশপ এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা হয়। main কথা হচ্ছে ইমেজ এডিটিং এর সমস্ত কাজ ও যেকোনো raster আর্ট ফটোশপ থেকে করতে পারবেন। একজন গ্রাফিক ডিজাইনার এর জন্য সবচেয়ে পাওয়ারফুল টুল বা সফটওয়্যার বলতে পারেন এই এডোবি ফটোশপ।

আমি আগেই উল্লেখ করেছি, ফটোশপ একটি raster (রাস্টার) বিশিষ্ট সফটওয়্যার। এবার আপনি রাস্টার কি সেটা না জানলে আমি নিচে ছোট্ট সংজ্ঞা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছি- Raster (রাস্টার) কি- সাধারণত ছবি দুই ধরনের হয় রাস্টার এবং ভেক্টর (raster and vector) রাস্টার এমন অবজেক্ট যা পিক্সেল দিয়ে তৈরি হয়। একটি পিক্সেল কালারের (color) কোন ইনফরমেশন নিজের মধ্যে ধারণ করে রাখে। এইরকম হাজার হাজার কোটি কোটি পিক্সেল এক জায়গায় এসে আলাদা আলাদা ইনফরমেশন নিজেদের মধ্যে শেয়ার করে, আর তখনই কোনো ইমেজ ফুটে আসে আর সেটা আমরা ছবিরূপে দেখতে পাই। রাস্টার ইমেজ ওই গুলোকে হয় যে পিক্সেল এর উপর ভিত্তি করে তৈরী হয়।

বর্তমানে এই সফটওয়্যার এর CC 2020 সংস্করণ মুক্তি পেয়েছে। আমাদের বাংলাদেশে সাধারণত ফটোশপ 7.0 খুব বেশি জনপ্রিয়। আমি ছোটবেলায় 7.0 এই ভার্সনের ফটোশপ টি দিয়ে পরিচিতি হয়েছিলাম।

ফটোশপ টুলস পরিচিতি অ্যাডোবি ফটোশপ cc 2018 আপনি যখন প্রথমবার এডোবি ফটোশপ ওপেন করবেন হয়তো এর ইন্টারফেস দেখে কনফিউজ হয়ে যেতে পারেন। এতে কোনো দ্বিধা নেই যে এটা একটি খুবই ক্ষমতাসম্পন্ন ডিজাইন সফটওয়্যার এবং এর মধ্যে অনেক কিছুই আপনি করতে পারবেন, এই সফটওয়ারটি শুধু প্রফেশনালদের জন্যই তাই নয়, আপনি এই সফটওয়্যার এর বেসিক জিনিস গুলো শিখে নিলে, নিজে থেকে খুব সুন্দর এই সফটওয়্যার মাধ্যমে গ্রাফিক্স বা আর্ট তৈরী করতে পারবেন।

তাই, আপনারা যারা এই সফটওয়্যার শিখতে আগ্রহী তাদের জন্য আমি 11 টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফটোশপের টুলস নিয়ে নিচে এক্সপ্লেইন করব সেগুলো সম্পর্কে কিছু বেসিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। আর আপনি যদি ফটোশপের টিউটরিয়াল দেখতে চান তাহলে নিচে ইউটউব এর ভিডিও থেকে গোড়া থেকে এটি শিখে নিতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক-

এডোবি ফটোশপ বাংলা টুলস টিউটোরিয়াল | এডোবি প্রিমিয়ার প্রো ও এডোবি মাস্টার কালেকশন

নিচে আমরা 11 টি গুরুত্বপূর্ণ টুল সম্পর্কে জানব।
Layer Tool (লেয়ার টুল) Color & Swatches Tool (কালার এবং স্বচেস টুল) Custom Fonts and Text Tool (কাস্টম ফন্টস এন্ড টেক্সট টুল) Custom Brushes and Brush Tool (কাস্টম ব্রুশেষ এন্ড ব্রাশ টুল) Select Tool (সিলেক্ট টুল) Move Tool (মুভ টুল) Zoom Tool (জুম্ টুল) Eraser Tool (ইরাসের টুল) Crop Tool (ক্রপ টুল) Fill Tool (ফিল টুল) Eyedropper Tool (আইড্রপার টুল)

1- Layer Tool (লেয়ার টুল) ফটোশপ লেয়ার কি – লেয়ার টুল ব্যবহার করা হয় ইমেজ, টেক্সট, ব্যাকগ্রাউন্ড কালার, ফিল্টার এর মধ্যে। এই টুল টি ব্যবহার করা হয় যখন কোন ছবিকে ধাপে ধাপে বা আলাদা আলাদা বিভিন্ন অংশে একত্রিত হয়ে একটা ফাইনাল ছবির বা ডিসাইন বা আর্ট এর রূপ নেই। তখন ওই বিভিন্ন অংশের মধ্যে আপনি যে মডিফাই বা কাজ করেন সেগুলোকে সেই অংশ গুলোকে লেয়ার বলে। লেয়ার হচ্ছে ফটোশপের মধ্যে মোস্ট ইম্পর্টেন্ট এলিমেন্ট। এটি এমন এলিমেন্ট যেটা আপনার প্রথম প্রথম বুঝতে এবং শিখতে একটু সময় লাগতে পারে, কিন্তু যখন আপনি এই এলিমেন্ট ব্যবহার বা কাজ শিখে নিবেন তখন যেকোন ডিজাইনের উপর কাজ করা আপনার পক্ষে অনেক সহজ হয়ে যাবে।

2- Color & Swatches Tool (কালার এবং স্বচেস টুল) কালার এবং স্বচেস টুল এর সাহায্যে আপনি কালার কে মডিফাই করা, কপি করা বা কাস্টম ভাবে নিজের পছন্দের যেকোনো কালার লাগাতে পারবেন। যেকোন ডিজাইনের উপর। এটা পাওয়ারফুল ফিচারস এর ভিজুয়াল আপনার ডিজাইন বা কন্টেনের রুপ দেই।

3- Custom Fonts and Text Tool (কাস্টম ফন্টস এন্ড টেক্সট টুল) এই টুল এর নাম থেকেই বুঝতে পারছেন যে আপনি যেকোন টেক্সট ফাইল এবং অসংখ্য ফন্ট স্টাইল এর সাহায্যে কাস্টম ভাবে আপনার কনটেন্টের বা ডিজাইনের উপর যে কোন স্টাইলে লিখতে পারেন।

এডোবি ফটোশপ বাংলা টিউটোরিয়াল | এডোবি প্রিমিয়ার প্রো-এডোবি মাস্টার কালেকশন

4- Custom Brushes and Brush Tool (কাস্টম ব্রুশেষ এন্ড ব্রাশ টুল) ব্রাশ টুলটি সাধারণত ব্যবহার করা হয় কোন ডিজাই, আর্ট বা কনটেন্ট কে কালার দেওয়ার জন্য। এখানে বিভিন্ন ধরনের ব্রাশ সেটিং এর মাধ্যমে আপনি ডিজাইনের উপর কালার করতে পারবেন। আরও শুদ্ধ ভাবে বলতে গেলে আপনি যে ভিজুয়াল ইফেক্ট অর্জন করতে চাইছেন সেটা এই ব্রাশ টুলের সাহায্যে করা সম্ভব। এছাড়া আপনি নিজের রয়ালটি ফ্রী কাস্টম ব্রাশ অ্যাড করতে পারেন।

5- Select Tool (সিলেক্ট টুল) সিলেক্ট টুল এই এলিমেন্ট এর সাহায্যে আপনি আপনার গ্রাফিক্স এর মধ্যে পৃথক পৃথক এলিমেন্ট কে কপি করতে, cut করতে বা পেস্ট করতে পারবেন। আরো বিস্তারিত ভাবে বলতে গেলে এই টুলের সাহায্যে আপনি কোন কিছু এলিমেন্ট কে সিলেক্ট করে তার মধ্যে কালার করতে পারেন cut করতে পারেন কপি পেস্ট করতে পারেন।

6- Move Tool (মুভ টুল) এই টুলের সাহায্যে আপনি লেয়ারের মধ্যে আপনার ডিজাইন বা আর্ট কে মুভ করতে পারবেন, আপনার ছবির বিভিন্ন অংশকে লেয়ারে মধ্যে মুভ করতে এই টুল কে ব্যবহার করা হয়।

7- Zoom Tool (জুম্ টুল) এই টুলের নাম শুনেই এর কাজ বুঝতে পারছেন, zoom করে আপনি আরো চাক্ষুষ পরিদর্শন করে কাজ করতে পারবেন, বা নিজের কাজের মধ্যে ভুল ধরতে বা নিখুঁত কাজ করতে এর দরকার পরে এবং জুম আউট করে পুরো ছবিকে কে পরীক্ষা করতে পারবেন।

8- Eraser Tool (ইরাসের টুল) ইরাসের টুলের বেসিক ফাংশন ঠিক ব্রাশ টুলের মতো, এই টুলের মাধ্যমে আপনি যেকোন ভিজ্যুয়ালি কালার ডিফারেন্স নিয়ে আসতে পারবেন। আপনার ডিজাইন বা কাজের উপর ব্যাকগ্রাউন্ড এর যেকোনো অনাবশ্যক এরিয়া যেগুলো আপনার ছবি কে ভিজ্যুয়ালি দেখতে খারাপ লাগছে যেগুলো এডিট করার প্রয়োজন আছে, আপনি এই টুলের মাধ্যমে সেগুলোকে এডিট বা মুছে ফেলতে পারেন।

9- Crop Tool (ক্রপ টুল) Crop tool এর কাজ কি– এটা একটা সিম্পল টুল, আপনি ছবি বা ডিজাইনের বা আর্ট এর যে এরিয়া টা কেটে বাদ দিতে চাইছেন সেটা আপনি টুলের সাহায্যে কেটে বাদ দিতে পারবেন। সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট size এর ছবি বানানোর সময় ছবি ক্রপ করার প্রয়োজন পরে।

10- Fill Tool (ফিল টুল) সাধারণত এটা একটা পেইন্ট টুল। এটির সাহায্যে কোন বড় জায়গা কে পেইন্ট করতে ব্যবহার করা হয়। কোনো বড়ো জায়গা বা ব্যাকগ্রাউন্ড কে পালটাতে সেখানে ব্রাশ টুল কে ব্যবহার নাকরে এই টুলের সাহায্যে আপনি সেই এরিয়া কলার ফিল বা পূরণ করতে পারবেন।

11- Eyedropper Tool (আইড্রপার টুল) এই টুলের সাহায্যে গ্রাফিস বা যেকোনো ছবির কালার কে রিসিভ করতে ব্যবহার করা হয়। আমরা যখন কোনো ছবির কালার কে match করতে smae কালার কে use করি তখন এই টুলের সাহায্যে সেই কালার কে কপি করে ব্যবহার করি। আমাদের শেষ কথা, আশাকরি, অ্যাডোবি ফটোশপ কি, কিভাবে কাজকরে সেটা আপনারা জানতে পেরেছেন। এবং ফটোশপের টুলবক্স পরিচিতি একটা বেসিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সাধারণত Adobe Photoshop একটি পেইড সফটওয়ার, তবে অনেকেই এর creak ভার্সন ব্যবহার করে থাকে।

আজ আর নয়। আমার লেখাতে কোন ভুল থাকলে ক্ষমা করে দিবেন। পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই একটি লাইক দিবেন,পজিটিভ কমেন্ট করে author দের উৎসাহিত করবেন,পোস্টে কিছু না বুঝতে পারলে কমেন্ট করে জানাবেন , আমি চেষ্টা করবো সাথে সাথেই সমাধান দিতে,আর একটি কথা আজেবাজে কমেন্ট করে author দের পোস্ট করার মানসিকতা নষ্ট করে দিবেন না কারন একটি পোস্ট লিখতে কতটা কষ্ট হয় সেটা একজন পোস্ট রাইটার ই ভালো করে বোঝেন। মনোযোগ দিয়ে পোস্ট পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।,খোদা হাফেজ

3 thoughts on "গাইডলাইন ৫. একজন প্রফেশনাল ফটোশপ ফ্রিলান্সার যে সফটওয়ার ব্যবহার করে ও তার ১১ টি টুলস সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।"

  1. Imran Mridha Contributor says:
    gd post♥♥
    ভাইয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের ওয়্যারলেস অপারেটরেক কাজ কি তা নিয়ে একটা বিস্তারিত পোষ্ট চাইছিলাম,,, এই চাকরিতে মর্যাদা কেমন,, প্রমোশন কি ভাবে হয় ইত্যাদি,,, প্লিজ প্লিজ ভাইয়া
  2. Imran Mridha Contributor says:
    ওয়ারলেস অপারেটরেক কাজ কি তা নিয়ে একটা বিস্তারিত পোষ্ট চাইছিলাম,,, এই চাকরিতে মর্যাদা কেমন,, প্রমোশন কি ভাবে হয় ইত্যাদি,,, প্লিজ প্লিজ ভা

Leave a Reply