বেসরকারি দুই মোবাইল ফোন অপারেটর রবি ও এয়ারটেলকে একীভূত হতে গুণতে হবে দুইশ’ ৩৮ কোটি টাকা। মার্জার কোম্পানিকে মার্জার ফি এবং স্পেকট্রামের খরচ বাবদ এই অর্থ সরকারকে দিতে হবে।
এর মধ্যে মার্জার ফি ১০০ কোটি টাকা এবং ১৩৮ কোটি টাকা স্পেকট্রামের জন্য দিতে হবে।
বুধবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের বৈঠকে এ অর্থ নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই বৈঠকে বিটিআরসি, অর্থ মন্ত্রণালয় ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মার্জার সংক্রান্ত একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছে।
একীভূত করা নিয়ে এর আগে ৭শ’ কোটি টাকার ফি নিয়ে টানাপড়েন চলে সরকার ও রবি’র মধ্যে।
মার্জার ফি কমানোর বিষয়টি নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ‘মার্জার ফি কমছে। এই ফি দুইশ’ কোটি টাকার একটু বেশি হবে’।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে এবং আদালতের কাছে সময় আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দায়িত্বে থাকায় এ সিদ্ধান্তের সার-সংক্ষেপ তার কাছে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে তা আদালতে পাঠানো হবে।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, মার্জারের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আদালতেই।
রবি-এয়ারটেল মার্জার বা একীভূত করা নিয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রমনার কার্যালয়ে গণশুনানি করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
দুই কোম্পানি একীভূত করতে গত ২৮ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর রবি আজিয়াটা লিমিটেড জানিয়েছে, একীভূত কোম্পানি রবি নামেই বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করবে।
একীভূত করতে গণশুনানি ছাড়াও অপর চার অপারেটরের মতামত নেয় বিটিআরসি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি চার অপারেটর ইতিবাচক মত দেয়। রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হওয়ার প্রভাব বিশ্লেষণে বাজার সমীক্ষারও উদ্যোগ নেয় বিটিআরসি।
এক হওয়া নিয়ে রবি-এয়ারটেল চুক্তি সম্পাদনের ফলে শেয়ার মূলধনের পুনর্বিন্যাস করা হবে। এতে আজিয়াটা ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ ও ভারতি ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করবে। বাকি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বর্তমানের অপর শেয়ারহোল্ডার জাপানের এনটিটি ডকোমোর কাছে থাকবে।
জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে চুক্তির পর চুক্তির কার্যকারিতা বিটিআরসি, সরকার এবং আদালতের অনুমোদন পাওয়ার ওপর নির্ভরশীল বলে উল্লেখ করে যৌথ ঘোষণায় দুই অপারেটর জানায়, এ প্রক্রিয়া আগামী দুই মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
দুই কোম্পানি এক হলে তাদের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়াবে ৩ কোটি ৮০ লাখ, যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক-চতুর্থাংশ। বর্তমানে পৌনে ৬ কোটি গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোন সবার শীর্ষে রয়েছে।
বিটিআরসি’র হিসাবে সর্বশেষ মে মাস নাগাদ বাংলাদেশে মোট মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ২৬ লাখ ৪৯ হাজার। এ সময়ে অপারেটর রবির গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৭৭ লাখ ৩ হাজার এবং এয়ারটেলের ১ কোটি ১ লাখ ২৫ হাজার।
বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম একীভূত করার সম্ভাবনার বিষয়ে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেয় দুই কোম্পানি। রবির মালিকানা মালয়েশিয়াভিত্তিক আজিয়াটা গ্রুপের। অন্যদিকে এয়ারটেলের মালিক ভারতের ভারতি এয়ারটেল। এর আগে তারা ওয়ারিদের ব্যবসা বাংলাদেশে কিনে নিয়েছিল।
এশিয়ার বড় টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিয়াটা অন্যতম। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পাশাপাশি কম্বোডিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুরেও তাদের ব্যবসা রয়েছে।
My site: TipsAdd.Com
3 thoughts on "Robi-Airtel মার্জার ফি 238 কোটি টাকা?"