একটি ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত কন্টেন্ট পাবলিশ করার পাশাপাশি আরও কিছু কাজ করা যায়। ফলে, ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট, স্ট্রাকচার ইত্যাদি পরিবর্তন হওয়ার কারণে নতুন নতুন ইস্যু তৈরি হয়ে থাকে। এসব ইস্যু খুঁজে বের করাই হচ্ছে ওয়েবসাইট অডিট বা এসইও অডিট।
তো চলুন, এসইও অডিট কি এবং কেনো ওয়েবসাইট অডিট করতে হয় এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
এসইও অডিট কি?
এসইও অডিট হলো একটি ওয়েবসাইটের সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO) যাচাই করার একটি পদ্ধতি। অডিট করার মাধ্যমে উক্ত ওয়েবসাইটের SEO-এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এবং কী কী কাজ করলে ওয়েবসাইটটির র্যাঙ্কিং এবং ট্র্যাফিক আরও বৃদ্ধি করা যাবে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
একটি ওয়েবসাইট অডিট করার জন্য খুবই অল্প সময় লাগে। ম্যানুয়ালি এবং বিভিন্ন ফ্রি এসইও অডিট করার টুলস দিয়ে একটি ওয়েবসাইট অডিট করা যায় এবং বিভিন্ন এসইও ইস্যু খুঁজে বের করা যায়।
কেনো ওয়েবসাইট অডিট করতে হয়
একজন মানুষ অসুস্থ হলে যেমন কোনো কাজ সঠিকভাবে করতে পারে না। ঠিক তেমনি একটি ওয়েবসাইটও অসুস্থ হতে পারে। আর ওয়েবসাইট অসুস্থ হলে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করতে পারেনা। মানুষ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিতে হয়, ডাক্তার পুরো শরীর চেকআপ করে। ঠিক তেমনি একটি ওয়েবসাইট অসুস্থ হয়েছে কিনা যাচাই করার জন্য এসইও অডিট করতে হয়।
একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার পর মূল উদ্দেশ্য থাকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করা এবং ওয়েবসাইটে ভিজিটর বৃদ্ধি করা। কিন্তু, ওয়েবসাইটে যদি বিভিন্ন এসইও ইস্যু থাকে, তাহলে ওয়েবসাইটটি র্যাঙ্ক করতে পারেনা বা র্যাঙ্ক করলেও র্যাঙ্কিং হারিয়ে ফেলে। ঠিক একারণেই প্রতিটি ওয়েবসাইট এসইও অডিট করতে হবে।
আপনার যদি কোনো ওয়েবসাইট থাকে এবং সেটি রাঙ্কিং করতে চান ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে এর অডিট করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি কোনো প্রফেশনাল থেকে অডিট করে নিতে পারেন। বাংলাদেশে অনেকই এই সার্ভিস দিলেও Lutfor Rahman ( বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এসইও স্পেশালিস্ট) থেকে ফ্রী এসইও অডিট করিয়ে নিতে পারেন।
ওয়েবসাইট অডিট করার জন্য দুইটি পদ্ধতি রয়েছে যা আমি ইতোমধ্যে উল্লেখ করে দিয়েছি। একটি হচ্ছে ম্যানুয়ালি এসইও অডিট চেকলিস্ট ফলো করে অডিট করা এবং অপরটি হচ্ছে যেকোনো এসইও টুল ব্যবহার করে অডিট করা। একটি ওয়েবসাইট অডিট করার জন্য আমরা কী কী টুলস ব্যবহার করতে পারি তা নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি। চলুন, দেখে নেয়া যাক।
ওয়েবসাইট অডিট করতে যেসব টুলস লাগবে
একটি ওয়েবসাইট এসইও অডিট করতে হলে কয়েকটি টুলস ব্যবহার করতে হবে। এসব টুলস দিয়ে সহজেই যেকোনো ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ইস্যু খুঁজে বের করতে পারবেন। এসইও অডিট করতে যেসব টুলস লাগবে সেগুলো হচ্ছে –
- Google Search Console
- Google PageSpeed Insights
- Ahrefs/Semrush/Ubersuggest
- Screaming frog
উপরোক্ত টুলসগুলো ব্যবহার করে অনেক সহজেই যেকোনো ওয়েবসাইটের SEO Audit করতে পারবেন। ওয়েবসাইট এসইও অডিট করার জন্য আমরা কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে পারি। নিচে এগুলো নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন।
Google Search Console
গুগল সার্চ কনসোল একটি ফ্রি টুঁল। যা দিয়ে আমরা অনেক সহজেই ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ইস্যু খুঁজে বের করতে পারি। সার্চ কনসোল দিয়ে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন এসইও ইরোর খুঁজে বের করার জন্য ওয়েবসাইটের সার্চ কনসোল ওপেন করে নিন। এরপর, বাম দিক থেকে Indexing , Experience, Enhancements, Security & Manual Actions ইত্যাদি ট্যাবে থাকা অপশনগুলো ব্যবহার করে সাইটের বিভিন্ন ইস্যু খুঁজে বের করতে পারবেন।
Google PageSpeed Insights
একটি ওয়েবসাইটের পেজস্পিড চেক করার জন্য গুগলের ফ্রি একটি টুল এটি। Google PageSpeed Insights ব্যবহার করার জন্য ভিজিট করুন https://pagespeed.web.dev । এরপর, আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন নাম লিখে চেক করুন। পুরো সাইট অ্যানালাইজ করার জন্য কিছু সময় লাগবে। এরপর, ওয়েবসাইটের পেজস্পিড, অ্যাক্সেসিবিলিটি, বেস্ট প্রাকটিস এবং এসইও এর বিভিন্ন স্কোর দেখতে পারবেন।
ওয়েবসাইটের পেজস্পিড হচ্ছে উক্ত ওয়েবসাইট লোড হতে কত সময় নেয়। কী কী ইস্যুর কারণে লোড নিতে সময় নিচ্ছে সহ আরও কিছু বিষয় যা আপনার ওয়েবসাইটের এসইও এর ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে তা জানতে পারবেন। ওয়েবসাইটের স্পিড চেক করার জন্য এটি বেস্ট এবং ফ্রি একটি টুল।
Ahrefs/Semrush/Ubersuggest
Ahrefs/Semrush/Ubersuggest এগুলো প্রতিটি হচ্ছে এসইও টুল। এই টুলগুলো ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ইস্যু খুঁজে বের করতে পারবেন অনেক সহজেই। তবে, টুলসগুলো ফ্রি নয়। ওয়েবসাইট অডিট সহ আরও অনেক সুবিধা পাওয়া যায় এগুলো ব্যবহার করে। তাই, চাইলে সাবস্ক্রিপশন কিনে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন এসইও ইস্যু খুঁজে বের করতে পারবেন।
Screaming frog
টেকনিক্যাল এসইও অডিট করার জন্য সবথেকে সেরা টুলস হচ্ছে Screaming frog । এই টুলসটি ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন টেকনিক্যাল এসইও সম্পর্কিত ইরোর খুঁজে বের করতে পারবেন। টেকনিক্যাল এসইও ভালো না হলে একটি ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং ধরে রাখা সম্ভব নয়। তাই, চাইলে পেইড এই টুলসটি ক্রয় করে আপনার ওয়েবসাইটে কী কী টেকনিক্যাল এসইও ইরোর আছে তা খুঁজে বের করতে পারবেন।
উপরোক্ত এই টুলসগুলো এবং পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে যেকোনো ওয়েবসাইটের সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন ইরোরগুলো খুঁজে বের করতে পারবেন। এছাড়াও, টুলসগুলো ব্যবহার করে খুঁজে পাওয়া ইরোরগুলো কীভাবে ফিক্স করতে হবে সেগুলোও জানতে পারবেন সেসব টুলস থেকেই। না পারলে গুগল তো আছেই।
শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে এসইও অডিট কী, কেনো ওয়েবসাইট অডিট করতে হয় এবং এসইও অডিট এর গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে SEO Audit সম্পর্কে ধারণা পাবেন বলেই আশা করছি।