আমাদের দেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। তবুও
আমাদের এখনও রয়েছে দক্ষ জনশক্তির অনেক
অভাব। এর এই জন্যই মূলত যারা ফ্রীল্যান্সিং
এ আগ্রহী তারা প্রথমেই বেছে নেন এসইও।
কারন এটি সহজ, শিখতে কম সময় লাগে, আর এর
রয়েছে অনেক সেক্টর- যেখান থেকে আপনি
সহজেই যে কোন একটি সেক্টরে বা একাধিক
সেক্টরে কাজ করতে পারেন। আর সবচেয়ে বড়
কথা হল, এটি শিখতে বা করতে আপনার হাই
কনফিগারেশনের কম্পিউটারও প্রয়োজন হয়
না। আবার, দরকার হয় না কোন কোডিং
নলেজের। আর এই সকল কারনেই
ফ্রীল্যান্সিং এ আগ্রহীদের প্রথম পছন্দ
এসইও।
কোন নতুন ব্যাক্তি যখন ইন্টারনেট থেকে একটু
আধটু জানতে শুরু করেন এসইও সম্পর্কে তখনই
তার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে নানা
প্রশ্ন। আবার এর মধ্যে তো লোকের কান-
পরামর্শ আছেই। আর তাই নতুন অবস্থায় আমরা
আপনাদের কাছ থেকে এসইও রিলেটেড যে
প্রশ্ন গুলো সবচেয়ে বেশি পেয়ে থাকি
সেই গুলো নিয়েই সাজিয়েছি আমরা
আজকের পর্ব।
তাহলে চলুন এক নজরে দেখে নিন প্রশ্ন
গুলো এবং এর উত্তরঃ
প্রশ্ন ১. আমি তো কম্পিউটার বিভাগের
ছাত্র না, আমি শিখতে পারব তো?
উত্তরঃ আমাদের দেশের লোকদের মাঝে
অনেক বিভ্রান্ত আছে যে, কম্পিটার
বিভাগের ছাত্র না হলে বুঝি
ফ্রীল্যান্সিং বা কম্পিউটার সংক্রান্ত
কাজ করা যাবে না। এই ধারনাটা
একেবারেই মিথ্যা। কম্পিউটারে কাজ
করার জন্য বা এসইও শিখার জন্য কম্পিউটার
বিভাগের ছাত্র হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশে যারা এসইও বা
আউটসোর্সিং এর কাজ করছে তাদের মধ্যে
বেশিরভাগই কম্পিউটার বিভাগের ছাত্র
নয়।
শেখার সদিচ্ছা এবং সঠিক গাইডলাইন
পেলে যে কেউই এসইও তে নিজের দক্ষতার
পরিচয় দিতে পারেন। এক্ষেত্রে কম্পিউটার,
বা বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র বা আইটি
ব্যাকগ্রাউন্ডের হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
প্রশ্ন ২. অনেকেই তো বলছে শুনছি, এসইও এর
চাহিদা নাকি দিন দিন কমে যাচ্ছে?
কথাটা কতটুক সত্য?
উত্তরঃ এক কথায় বলতে গেলে কথাটা
একেবারেই মিথ্যা, এবং যারা এই ধরনের
কথা বলে তাদের অজ্ঞতা এবং মূর্খতার
পরিচয়।
এখন তাহলে চলুন একটু জানি এসইও কেন করা
হয়?
এক লাইনে বললে- আপনার প্রতিষ্ঠা করা
কোম্পানিটা যাতে সবাই গুগলে বা
ইন্টারনেটে খুব সহজে খুজে পায় এর জন্যই মূলত
এসইও করা হয়।
ইন্টারনেটে খুজে পাওয়া গেলে তাতে
কোম্পানির কি লাভ?
প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ অনলাইনে

বিভিন্ন সার্ভিস বা পণ্য খুজে বেরায়।
সেইখানে যদি আপনার প্রদান করা
সেবাটি বা আপনার পণ্যটি সহজে খুজে
পাওয়া যায়, তাহলে ভাবতেই পারছেন-
আপনার পণ্যের বিক্রি কি পরিমান বেড়ে
যাবে এবং আপনার পণ্যের কি পরিমাণ
মার্কেটিং হবে? হ্যাঁ, মূলত এই জন্যই করা হয়
এসইও।
আসুন একটা উদাহরণ দেয়া যাক-
সফট ড্রিঙ্কস এর জগতে কোকাকোলা এবং
পেপসি অতি পরিচিত নাম। ছোট বাচ্চা
থেকে বুড়ো পর্যন্ত সবাই ই জানে এই ড্রিঙ্কস
গুলোর নাম। কিন্তু তাহলে কেন- প্রতিবছর
কোম্পানি গুলো কোটি কোটি টাকা খরচ
করছে তাদের ব্যবসা প্রচারের জন্য? কেন
করছে তারা এই প্রচার?
হ্যাঁ, ঠিক একই রকম, অনলাইনে প্রচারের
সর্বাধিক জনপ্রিয় সিস্টেম হচ্ছে এসইও।
যেহেতু কোম্পানি যত দিন আছে, তার
প্রচার ততদিন থাকবে, আর তাই এসইও ও
থাকবে। কারন এসইও হচ্ছে কোম্পানির
ব্যাবসা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান মাধ্যম। তাই,
এসইও এর ডিমান্ড কখনোই কমবে না, বরং এটি
প্রতি বছর তুমুল হারে বেড়েই চলেছে। এসইও
না থাকলে বিশ্বের বেশিরভাগ
কোম্পানির ই হাত হারিকেন নিয়ে
রাস্তায় নামতে হবে। তখন হয়তবা,
হারিকেনের দাম বেড়ে যেতে পারে!
আর তাই যেই সব লোকেরা এই ধরনের কথা
বলে, তাদের দিকে মোটেও কান দিবেন
না, নিজেই নিজের জ্ঞান দিয়ে চিন্তা
করুন এবং সিদ্ধান্ত নিন। মনে রাখবেন- এসইও
শেষ তো ইন্টারনেটের ৯৯% সেবাই মূল্যহীন।
প্রশ্ন ৩. এসইও শিখতে কত দিন লাগবে?
উত্তরঃ এটাও এক কথায় বলতে গেলে-
সারাজীবন। হ্যাঁ, শুনে আশ্চর্য হলেও এটাই
সত্যি। সারাজীবন ধরে এসইও শিখলেও শেষ
হবে না। তবে আমার এই রকম উত্তরে নতুনদের
হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। এসইও এর মেইন বিষয়
গুলো আপনি খুব দ্রুতই শিখে ফেলতে পারেন।
আর একবার মেইন টার্ম গুলো শেখা হয়ে
গেলে আপনি কাজ করার উপযোগি হয়ে
উঠবেন। এর পর কাজও করবেন আর এর
পাশাপাশি এসইও এর নতুন নতুন আপডেট গুলো
সম্পর্কেও ধারনা নিবেন। তাহলেই চলবে।
এই ক্ষেত্রে আপনার এসইও শিখতে ১ মাস এর
মত সময় লাগতে পারে। ১ মাস শেখা এবং
আরও ১ মাস প্র্যাক্টিস করার পর আপনি
নিজেকে কাজ করার জন্য উপযোগি করে
তুলতে পারেন। তবে, অবশ্যই সব সময় চেস্টা
করতে হবে নিজেকে আপডেটেড রাখার।
তাহলেই কেবল আপনি নিজেকে সফল করে
গড়ে তুলতে পারবেন।
প্রশ্ন ৪. দৈনিক কত ঘন্টা করে কাজ করতে
হবে?
উত্তরঃ এর কোন লিমিটেশন নেই। কাজের
চাহিদা এবং চাপের উপর নির্ভর করবে
আপনি দৈনিক কত ঘণ্টা কাজ করবেন।
অনেকেই আছেন যারা পার্ট টাইম হিসেবে
দৈনিক ২-৩ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন কাজ করতে।
আবার অনেকেই আছে ফুল টাইম ওয়ার্কার-
যারা দিনে ৮-১২ ঘণ্টাও কাজ করে থাকেন।
এখানে আপনি আপনার সুবিধামত কাজ করতে
পারবেন।
আসলে এটা নির্ভর করে, আপনার হাতে কেমন
সময় আছে, এবং কাজ কেমন আছে সেটার উপর।
প্রশ্ন ৫. এসইও দিয়ে কি পরিমান আয় করা
যেতে পারে?
উত্তরঃ এর উত্তরে বলা যায়- ১ হাজার
টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা। কারন- একটি
কোম্পানির মোট সেলস এর অনেক বড় অংশ
আসে এসইও এর মাধ্যমে। একজন এসইও ওয়ার্কার
এর উপরেই নির্ভর করে কোম্পানির সেলস।
আর এই জন্যই যে কোন কোম্পানিতে এসইও
ওয়ার্কার এর চাহিদা খুব বেশি। কাজেই
বুঝতেই পারছেন, এসইও অপ্টিমাইজার এর গুরুত্ব
কতখানি?
আর এইক্ষেত্রে আপনি যত বেশি দক্ষ হবেন
আপনার আয়ও তত বাড়বে।
মনে রাখবেন- এই পৃথিবীতে জ্ঞানের মূল্য
সবচেয়ে বেশি। আপনি যত বেশি জ্ঞান
অর্জন করতে পারবেন এবং যত বেশি দক্ষতার
প্রমাণ রাখতে পারবেন আপনার কাজের
রেটও তত বাড়তে থাকবে। ফ্রীল্যান্স
মার্কেট গুলোতে এমন অনেকে ওয়ার্কার
আছেন যারা- ১৩-১০০ ডলার প্রতি ঘণ্টা
রেটেও এসইও কাজ করছেন।
এখন একজন ওয়ার্কার যদি ১০০ ডলার প্রতি
ঘণ্টা রেটে কাজ করে থাকেন, এবং দৈনিক
৫ ঘণ্টা কাজ করেন তাহলে তার আয় কত হতে
পারে সেটা সহজেই অনুমেয়।
তবে একটা কথা- আইটি বাড়ি নিজে স্বপ্ন
দেখতে ভালবাসে এবং ভালবাসে
আপনাদের স্বপ্ন দেখাতে। কিন্তু তাই বলে
আমরা আপনাদের এমন কোন তথ্য দেই না,
যেটা কিনা হয়ে যায় দিবাস্বপ্ন। ১০০ ডলার
প্রতি ঘণ্টা বলেছি বলে এটা কখনই ভাববেন
না যে- শুরুতেই আপনি ১০০ ডলার রেট পেয়ে
যাবেন, এই পর্যায়ে পৌঁছতে হলে আপনাকে
ও সেইরকম লেভেলের এক্সপার্ট হতে হবে।
আর এর জন্য প্রয়োজন কঠোর সাধনা।
তবে, যদি কষ্ট করে ধরে থাকতে পারেন
তাহলে ১০০ ডলার রেটেও আপনিও কাজ
করতে পারেন। এর জন্য কঠিন পরিশ্রম এর
বিকল্প নেই।
কাজেই কথা একটাই দাড়াল- এসইও এর
চাহিদা মোটেও কমে নি এবং কমবেও না।
ইন্টারনেট যতদিন, এসইও ততদিন। আর তাই
আপনি কারো কথায় কান না দিয়ে আজ
থেকেই শুরু করতে পারেন এসইও শেখা।
তাহলে কি সিদ্ধান্ত নিলেন?
আসলে অনলাইন টা হচ্ছে দক্ষতার জায়গা।
যার দক্ষতা যত বেশি তার চাহিদাও তত
বেশি। তবে এই দক্ষতা অর্জন করতে প্রয়োজন
সঠিক গাইডলাইন।
★★Like my page http://facebook.com/dailyitnewsbd

Leave a Reply