তোমরা স্কাউট দেখেছ??
ওই যে স্কুলের স্কাউট দল।
তোমাদের স্কুলের স্কাউট দলকে একটু খেয়াল করলেই দেখবে স্কাউট কমান্ডার এর নির্দেশ ছাড়া কোন স্কাউট সদস্য এক পাও নড়া চড়া করে না।
যখন কমান্ডার বলে “ডানে দেখবে…………ডানে দেখ”। তখন সকল স্কাউট সদস্য ডানে ঘোরে।
আবার যখন বলে “সামনে চলবে সামনে…..চল” তখন সামনে চলতে থাকে।
এবার একটা কথা বলি……………………………………. এই কমান্ড দেয়াটাই হল প্রোগ্রামিং।
বিশ্বাস হচ্ছে না আমার কথা ?? তাহলে চলো বিস্তারিত জানি।
আসলে কম্পিউটার কিছুই জানে না তাই একে আগে থেকে কিছু কথা বলে দেয়া থাকে। ধরো, কম্পিউটার কে আগে থেকে বলা আছে,“যখন কেউ কী-বোর্ডের ‘A’ বাটন চাপবে তখন স্ক্রিনে ‘A’ লেখা দেখাবে” ।
তাহলে, যখন তুমি কী-বোর্ডের ‘A’ বাটন ক্লিক করবে তাহলে কম্পিউটার কিন্তু শুধু ‘A’ ই দেখাবে অন্য কিছু দেখাবে না।
এই যে আগে থেকে বলে রাখলে এই বলে রাখার কাজটাই হল প্রোগ্রামিং। আর ওই যে সিস্টেম যে ‘A’ চাপলে ‘A’ লেখা দেখাবে ওটাকে বলে প্রোগ্রাম।
আর যে ব্যক্তি বলে রাখবে আগে থেকে কথাটা, সে হল প্রোগ্রামার।
এখানে যেহেতু তুমি আগে থেকে কম্পিউটার কে বলে রেখেছ এই কথাটা, তাই তুমি প্রোগ্রামার। দারুণ না বিষয়টা??
এবার কথা হল কম্পিউটার কে ওই কথাটা বলতে হলে তো কম্পিউটার এর সাথে কথা বলতে হবে তাই না??
কিন্তু, কম্পিউটার তো কথা বলতে পারে না, তাহলে?? আমরা তাই একে লিখে বোঝাবো কারণ, কম্পিউটার লেখা খুব ভালোমতো বোঝে।
তবে, একটা প্রশ্ন। মনে করো, তুমি একজন জাপানিজ লোকের সাথে কথা বলবে তাহলে তুমি কি করবে?? তুমি কি তার সাথে বাংলায় কথা বলবে??
কি মনে হয় বাংলায় বললে বুঝবে?? কখনোই বুঝবে না। তাহলে আমরা কি করব??
এমন একটা ভাষাতে কথা বলব যেটা সে ও বোঝে আমিও বুঝি সেটা হতে পারে ইংরেজি বা অন্য ল্যাংগুয়েজ।
যে ল্যাংগুয়েজ ই হোক সেটা যেন আমরা দুজনেই বুঝি সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
তেমনি, কম্পিউটার এর সাথেও কথা বলতে গেলে এমন একটা ভাষায় বলতে হবে যেটা কম্পিউটার ও বোঝে আবার আমিও বুঝি।
হ্যাঁ!! ঠিক ধরেছ সেই ভাষাটাই হচ্ছে প্রোগ্রামিং ভাষা বা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ।
পৃথিবীতে অসংখ্য প্রোগ্রামিং ভাষা আছে যেমন ধরো পাইথন, সি, জাভা, পার্ল, জাভাস্ক্রিপ্ট, কটলিন, গো, সুইফট ইত্যাদি ইত্যাদি।।
তবে তুমি কোনটা প্রথমে শিখবে বলো তো??
নিশ্চয় এমন একটা শিখবে যেটা সহজ, অনেক মজার, যেটা শিখে কম্পিউটার দিয়ে গেম বানানো যায়, যেটা দিয়ে রোবট এর সাথে কথা বলা যায় এরকম কোন ল্যাংগুয়েজ নিশ্চয়। আর সেই ল্যাংগুয়েজ টা কি জানো “”পাইথন””।
এবার তাহলে, যদি বুঝে থাকো প্রোগ্রামিং কি তাহলে চলো কম্পিউটার এর সাথে কথা বলার জন্য তৈরি হই!!!!
একটা কথা বলো তো। এই পৃথিবীতে বর্তমানের সবথেকে বড় আবিষ্কার কি??
ঠিক ধরেছ কম্পিউটার। কিন্তু, তুমি কি জানো কম্পিউটার এর কাজ কি??
হয়ত বলবে এটা দিয়ে গান শোনা যায়, ভিডিও দেখা যায়। আর সবথেকে মজার হল গেম খেলা যায়।
তোমরা কখনো ভেবেছো গেম কিভাবে তৈরি হলো ?? এটা তো আর কোন ফল না যে গাছে ফলবে।
আবার ইশ্বর প্রদত্ত কোন জিনিস ও না। তাহলে?? হুম আমার মনে হয় তুমি ধরতে পেরেছ এটা তৈরি করা হয় কম্পিউটার দিয়ে।
কখনো চেষ্টা করেছ কম্পিউটার দিয়ে গেম বানাতে??
তুমি কি ভাইস সিটি গেম দেখেছ বা আই.জি.আই । তোমার ফোন এর গেম তো দেখেছ নাকি??
সেখানে কত্ত মজা না?? একবার খেলতে লাগলে আর উঠতে মন চাই না।
এরকম মজার সব গেম বানাতে কিন্তু কম্পিউটার লাগে আবার ফোন দিয়েও করতে পারো।
হ্যাঁ সেজন্যই তো আছে অনেক প্রোগ্রামিং ভাষা।
সেগুলো শেখা অনেক অনেক সহজ একদম ক্যালকুলেটর চালানোর মত।
তবে, সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর। আর যারা এই প্রোগ্রামিং করে তারাই হচ্ছে প্রোগ্রামার।
আচ্ছা প্রোগ্রামিং তো বুঝলাম কিন্তু কথা হল প্রোগ্রামিং করে কি হবে??
সুন্দর প্রশ্ন করেছ।
তুমি যদি প্রোগ্রামিং শেখো তাহলে তুমি গেম বানাতে পারবে, গান শোনার প্লেয়ার বানাতে পারবে, সব ধরনের সফটওয়্যার বানাতে পারবে।
তুমি কি জানো পৃথিবীর সেরা ১০ জন ধনীর মধ্যে ৭ জনই প্রোগ্রামার। যারা প্রোগ্রামিং করে তারাই প্রোগ্রামার। তাহলে, বুঝলে প্রোগ্রামিং কেন করবে??
আরো কি জানো তুমি যদি সবথেকে মেধাবী ছাত্র বা ছাত্রী হতে চাও তাহলে কিন্তু প্রোগ্রামিং লাগবে। কারণ, প্রোগ্রামিং করলে তোমার ব্রেন অসম্ভবরকম ফাস্ট হয়ে যায়। গনিতে হয়ে উঠবে পটু।
তুমি কি কখনো স্বপ্ন দেখেছ তুমি অনেক বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছ। তাহলে কিন্তু আগে ভাগেই শিখে নেয়া দরকার প্রোগ্রামিং।
কেন বলতো?? তুমি যেটাই হতে চাও না কেন আগামী ১০ বছর পরে সব কিছুতেই প্রোগ্রামিং লাগে।
এমনকি এখনই লাগে তাহলে ১০ বছর পরে কি হবে ভাবো??
আরো একটা ব্যাপার, তুমি নিশ্চয় শীতের দিনে সকাল সকাল আরামের ঘুম ছেড়ে অফিসে গিয়ে কাজ করতে চাইবে না।
হ্যাঁ, যদি প্রোগ্রামিং শিখতে পারো তাহলে তুমি কোন অফিসে না করেই টাকা আয় করতে পারবে।
মানে, তুমি শুধু তোমার কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ নিয়ে বসবে আর ইন্টারনেট এ ঢুকে কাজ শুরু করবে। অফিসের কাজটাই হবে কিন্তু অফিসে না গিয়ে, আর টাকাও আসবে বেশি।
তোমার যখন খুশি তখনই কাজটা করতে পারো। হয়ত তুমি কারো বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছ তাহলেও কাজ করতে পারবে শুধু মোবাইল দিয়েও।
আরো বলব যে কেন প্রোগ্রামিং শিখবে??
বলি তাহলে তুমি যদি ভবিষ্যতে রোবটের চাকর না হয়ে থাকতে চাও তাহলে প্রোগ্রামিং শেখো।
কখনো রোবটের মুভি দেখেছ?? ওখানে রোবট মানুষকে কেমন জিম্মি করে রাখে।
তুমি যদি প্রোগ্রামিং শেখ তাহলে রোবট শুনবে তোমার আদেশ নিষেধ আর না শিখলে তোমাকে শুনতে হবে রোবটের কথা।
আমার কথা গুলো বিশ্বাস হয় না?? তুমি তোমার বড় কোন ভাইকে জিজ্ঞাসা করো ।।
তাহলে, কি ঠিক করলে প্রোগ্রামিং কি শেখা যায়??
যদি কেউ তোমায় বলে যে প্রোগ্রামিং শেখা কঠিন তাহলে ভাববে সে পারে নি শিখতে। তাই তুমি নিশ্চিন্তে থাকো প্রোগামিং খুব সহজ।
আজই শুরু করে দাও।
কি দিয়ে শুরু করবে?? কি করবে?? তোমার কি আগ্রহ জন্মেছে প্রোগ্রামিং?? এ তাহলে বলব তোমার দ্বারা সম্ভব কারণ, তুমি নতুন কিছু শিখতে আগ্রহী!!
চলো তোমাকে একটু সাহায্য করি।
প্রশ্ন-১ ঃ- প্রোগ্রামিং কী?? কেন শিখব??
উত্তর-১ ঃ- উপরের লেখাগুলো পড়ো।
প্রশ্ন-২ ঃ- কোন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখবো??
উত্তর-২ ঃ- সেটা নির্ভর করে, তুমি কি করতে চাও প্রোগ্রামিং করে সেটার উপর।
সেক্টর-১ঃ- তুমি যদি এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন ডেভেলপ করতে চাও তাহলে শিখে ফেলো কটলিন অথবা জাভা। তবে, কটলিন শেখা সহজ এবং মজার। জাভা কঠিন তবে শক্তিশালী।
সেক্টর-২ঃ- আবার, তুমি যদি ডেস্কটপ এপ্লিকেশন ডেভেলপ করতে চাও তাহলে তোমার শেখা উচিৎ হবে C# অথবা Visual Basic । C# অনেক শক্তিশালী শিখতে পারলে খুব ভালো হয়। তবে, Visual Basic অনেক মজার আর সুন্দর। বেশি কোড না লিখেই লজিক বুঝলেই হয়।
সেক্টর-৩ঃ- আর যদি IOS এপ্লিকেশন ডেভেলপ করতে চাও তাহলে শিখে ফেলো Swift এটা IOS থেকে অফিশিয়াল রেকোমেন্ড।
সেক্টর-৪ঃ- যদি কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামার হতে চাও মানে প্রোগ্রামিং কম্পিটিশন করে বিশ্বে নাম লেখাতে চাও তাহলে শিখে ফেলো প্রথমে C এবং তারপর C++
সেক্টর-৫ঃ- যদি, আগামী ২০ বছর বিশ্ব নেতৃত্ব দিতে চাও তাহলে তোমার উচিৎ হবে ডাটা সায়েন্স এবং বা মেশিন লার্নিং বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স তাহলে বেস্ট চয়েস হচ্ছে Python অথবা R.
তবে, Python আমার রেকোমেন্ড প্লাস আমার লাভ। কারণ, যেমন এটা শেখা সহজ সব ল্যাংগুয়েজ থেকে তেমনি এটা শক্তিশালী।
জানো ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম, ফেসবুকের বেশ কিছু ফিচার, গুগল এরা সবাই ব্যবহার করে পাইথন। গুগল তো নিজেরা কোর্স ও করায় পাইথনের। যায় হোক ইচ্ছা মত শিখে নাও।
যে ল্যাংগুয়েজ সহজ এবং ট্রেন্ডিং
- Python
- Kotlin
- R
- Visual Basics
- Swift
- C#
- C
- C++
- Java
এগুলো আমার অভিজ্ঞতা। আমি এগুলা সব পারি এমন না। তবে, সবগুলোই শেখার চেষ্টা করেছি এবং সুবগুলোরই ব্যাসিক আছে।
কোন ল্যাংগুয়েজ সবথেকে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে ২০১৮ সালে এবং বর্তমানে
এটা বললে বেশি হয়ে যাবে। শুধু গুগলে সার্চ করেন “Best Programming Language of 2018” যেটা ফার্স্ট হবে সেটা প্লিজ কমেন্টে জানান।
এখন কোনটা শিখবেন জানিয়ে দিন কমেন্টে আমি ইনশাল্লাহ আপনাকে হেল্প করব।
তবে, যদি শিখতে চান পাইথন। তাহলে এই পোস্ট টা দেখে নিন।
Direct link :- https://www.trickbd.com/python-programming/564007
Freebasics link :- https://www.0.freebasics.com/https/trickbd.com/python-programming/564007
হয়ত অনেক ভুল হয়ে গেছে তাহলে ক্ষমা করবেন।
একটা টিপস দেবো??
আমি আমার ১০ জন ক্লাসমেট এর উপর গবেষনা করেছি। সেটাই একটু জানাতে চাই।
ওরা দিনে ২ ঘন্টা করে ফেসবুক চালাই। এটা গড়ে। আপনি বেশি কিংবা কম চালাইতেই পারেন।
ওদের থেকে ১ সপ্তাহ সময় নিয়ে ফেসবুক চালানো বন্ধ করেছিলাম।সারা দিনে একটু সময় ও ফেসবুক চালাবে না। ১ সপ্তাহ পরে রেজাল্ট কি জানেন??
ওরা নিজেরাই এখন আর সেরকম ফেসবুক চালাইনা কারণ, গত ১ সপ্তাহ আগেও যারা বলতো লেখাপড়া করার সময় পায় না তারা ১ সপ্তাহ তে ৪ টা সায়েন্স ফিকশন পড়েছে।
পাইথন এর OOP এবং রেগুলার এক্সপ্রেশন বেশ জটিল কিন্তু, খুব প্রয়োজনীয় ওরা এই দুইটা টপিক ১ সপ্তাহ তে শেষ করেছে।
আপনি হয়ত ভাবছেন এ আর এমন কী?? আসলে গত ৩ মাস ধরে ওরা এগুলা করতে পারছিল না সময় নাই বলে কিন্তু ১ সপ্তাহ তে ওরা পেড়েছে।
আমরা কেন ফেসবুকে সময় নষ্ট করব যেখানে মার্ক জুকারবার্গ ই বলেছেন উনার প্রিয় কাজ বই পড়া। ১ সপ্তাহ ফেসবুক বাদ দেন কিছু বই পড়েন দেখবেন ১ সপ্তাহ পরে কতটা পরিবর্তন।
নিজেই রেজাল্ট পাবেন। কি বই পড়বেন?? উপন্যাস পড়েন, গল্প পড়েন, কবিতা পড়েন।
আর যদি এসবে ইন্টারেস্ট না থাকে তাহলে ঝংকার মাহবুব ভাই এর বই পড়েন অনেক কিছু শিখতে পারবেন সাথে মজাটা ফ্রি।
রকমারি থেকে কিনে বিকাশে প্রেমেন্ট করলে আরো একটা কেক ফ্রি।
মাঝখান থেকে শিপিং চার্জ এবং ২৫% ছাড় সহ পাবেন ১০% ক্যাশব্যাক।
আর তাতেও ভালো না লাগলে ভাই পিডিএফ পরেন কোন বই এর নাম লিখে সার্চ করেন হয়ত পেতেও পারেন। মনে রাখবেন “বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয় না”।
আমি রকমারির এড করছি না।
আশা করি একজন হলেও কাজ গুলো করবেন।
ধন্যবাদ!! আসসালামু আলাইকুম মনে রাখবেন নামাজ প্রত্যেকদিন ৫ ওয়াক্ত করে শুধু শুক্রবারে দুপুরে না!! 🙂 🙂
আরো ভালো আর্টিকেল পেতে চলে যান এই লিংক এ www.thebanglatech.xyz
পড়তে পড়তে মনে হল যেন নিয়নবাতির কোন একটা পর্ব পড়ছি…..