আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।
প্রযুক্তি খাতে নতুন সব সম্ভাবনা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন দশক। নতুন দশককে বলা হচ্ছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের। সংস্করণ হিসেবে ডাকা হচ্ছে ৪.০ নামে। বাংলাদেশের উদ্যোক্তারাও এই সময়টাকে সম্ভাবনাময় হিসেবে দেখছেন। এরইমধ্যে সফটওয়্যার খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। সময়ের সঙ্গে এই গতি আরও বাড়বে বলেই অনুমিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের অনেক অভিনব উদ্যোগ দেশের বাইরেও সমাদৃত ও পুরস্কৃত হয়েছে। দেশের বাইরে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন সফটওয়্যার নির্মাতারা। এক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
শুধু শহরেই নয়, বরং জেলা-উপজেলা সদর ছাড়িয়ে গ্রাম এমনকি প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলেও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দিয়েছে সরকার। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহযোগী হয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।
এই খাতে বাংলাদেশের উন্নতি প্রসঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের (উইটসা) মহাসচিব জেমস পয়জ্যান্টস বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ ভালো করছে এবং যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে বলেই উইটসা ঢাকাকে বেছে নিয়েছে বিশ্ব সম্মেলন করার জন্য। বাংলাদেশের ‘ভিশন:২০২১’ রয়েছে, যার মাধ্যমে আইসিটিতে দেশ এগিয়ে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, যেকোনও দেশের সফলতার মূল বিষয় হলো নেতৃত্ব। বাংলাদেশের তা আছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবিলায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিয়েছে।
এ সম্পর্কে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বর্তমানে দেশের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের আয় ১০০ কোটি ডলার। ২০২১ সাল নাগাদ এ আয় ৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা প্রযুক্তির বিকেন্দ্রীকরণ করছি। এ জন্য দেশব্যাপী ২৮টি হাইটেক পার্ক করা হয়েছে। এখানে আমাদের সবার একটাই ইচ্ছা, তা হলো অর্থনৈতিক-সামাজিক উন্নয়নে প্রযুক্তি ব্যবহার করা
এজন্য যুগোপযোগী দক্ষ কর্মী তৈরি করতে হবে। আমাদের দেশের সফটওয়্যার কর্মীরা সেটাই করছে। জেনেক্স ইনফোসিস, সিনেসিস আইটি, ব্রেইনস্টেশন, ইক্সোরা, বিজেআইটি, প্রাইডসিস, সিসটেক ডিজিটাল, ব্র্যাকআইটি, মাইসফট, মিডিয়াসফট, ইরা ইনফোটেক, নেসেনিয়া, টিকন, পিপপল ’এন টেক, এনআইটিএস, বিভিক্রিয়েটিভস, টেকনোভিস্তা, আমরা টেকনোলজিস, বি-ট্র্যাক টেকনোলজিস, এডিএন টেকনোলজিসের মতো আধুনিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ ধরনের দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করছে।
এ সম্পর্কে মিডিয়াসফট ডেটা সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোপাল দেবনাথ জানান, দেশের সফটওয়্যার খাতে দুই দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন তিনি। খুচরা বিক্রি খাতের ডিজিটাইজেশন বা অটোমেশনে রয়েছে তাঁর প্রতিষ্ঠানের বহুমুখী ভূমিকা।
গোপাল দেবনাথ বলেন, সফটওয়্যার বাজারে দেশি সফটওয়্যারের অনন্য সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা তার একটি ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে কাজ করি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন প্রণোদনার মাধ্যমে সফটওয়্যারের আওতাভুক্ত করা জরুরি। নতুন প্রযুক্তিকে যুক্ত করে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা নতুন প্রযুক্তি ও নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি, বিশেষ করে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০। কারণ, এ খাতে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের স্থানীয় সফটওয়্যার বাজারের উন্নয়নে সচেতনতা বাড়ানোসহ স্থানীয় তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তির যুগোপযোগী শিক্ষার ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেন গোপাল দেবনাথ।
আগামী দশক জুড়ে অনলাইনে ফ্রিল্যান্স কর্মীদের চাহিদা বাড়বে। বেসিসের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দিয়ে ফ্রিল্যান্সারদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। পিপল এন টেক বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিতে কাজ করছে। এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন পর্যায়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে কাজ করে। পিপল এন টেকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আবুবকর হানিপের ভাষ্য, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে সফটওয়্যার ও সেবা পণ্য রফতানি করে ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে স্বপ্ন দেখছে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আমাদেরকে সে ধরনের প্রশিক্ষিত কর্মী বাহিনী তৈরি করে বেশি বেশি সেবা পণ্য রফতানি করতে হবে।
দেশে ব্লকচেইন, আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স সেবা নিয়ে কাজ করছেন প্রাইডসিস আইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার ইকবাল। তিনি বলেন, তাঁর প্রাইডসিস আইটির তৈরি ইআরপি সফটওয়্যার, মাদাগাস্কার, ফিজি, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি থাইল্যান্ডের জন্য এআই, ব্লকচেইনের মতো প্রযুক্তি নিয়েও কাজ করছেন। এ ধরনের প্রযুক্তিই আগামী এক দশক রাজত্ব করবে বলে মনে করেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবা চালুর মধ্যেই সীমিত থাকবে না এ দশক। প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন ও অধিকতর উন্নত প্রযুক্তি আসবে। পুরনো পণ্যসেবাগুলোর জায়গায় হালনাগাদ পণ্যসেবা দ্রুত চালু হবে। এরই ধারাবাহিকতায় স্মার্টফোনের সক্ষমতা, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, ক্লাউড কম্পিউটিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, রিয়েল-টাইম স্পিচ রিকগনিশন, ন্যানো কম্পিউটার, ওয়্যারেবল ডিভাইস ও নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন, সাইবার সিকিউরিটি, স্মার্ট সিটিজ, ইন্টারনেট- এ সব পণ্যসেবা আরও উন্নত হবে।
ক্লাউড কম্পিউটিং এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের বিকাশ এই দশকে বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তির দিগন্ত পুরো পাল্টে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা এখন থ্রিডি প্রিন্টিং ও বায়োমেট্রিক চালুর বিষয়েও জোরালোভাবে কথা বলছেন। অনলাইন কার্যক্রমে এখন যেভাবে নতুন নতুন ডিভাইস, কৌশল ও প্রবণতা ব্যাপক হারে চালু ও বিকশিত হচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের লাইফস্টাইল বা জীবনধারাকে আমূল পাল্টে দেবে বলেই মনে হচ্ছে।
দেশকে ডিজিটাল করে তুলতে হলে প্রশাসন, ব্যবসায়-বাণিজ্য ও শিক্ষাসহ সব খাতেই আরও অধিক হারে স্মার্ট মেশিন ও প্রক্রিয়াগত সুযোগ-সুবিধা অর্থাৎ প্রযুক্তির প্রচলন ও ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন। এর ফলে আমাদের লাইফস্টাইল বা জীবনধারার পাশাপাশি নীতিনির্ধারকদের কাজ-কর্মেও তথ্যপ্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
দেশের প্রযুক্তি খাত নিয়ে বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মোকাবিলায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিয়েছে। বেসিস এ দশকের জন্য প্রস্তুত। দেশের সফটওয়্যার খাতকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে বেসিস। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, ব্র্যান্ডিং, নেটওয়ার্কিংসহ যুগোপযোগী ব্যবস্থা নিয়ে বেসিস তার কার্যক্রম আরও গতিশীল করবে।
তো আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং ট্রিকবিডির সাথে থাকবেন, ধন্যবাদ।
One thought on "২০২১ সালে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ কোথায় যাবে?"