AI তান্ডব ( Bad AI tools ) (পর্বঃ১)

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ভালো দিক নিয়ে অনেক লেখালেখি করেছি , খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই সিরিজে আমরা আলোচনা করবো AI কিভাবে আমাদের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে? এর থেকে বাঁচার উপায় কি?

বলা হয় ” প্রয়োজনীয়তাই উদ্ভাবনের চাবিকাঠি ” ।

কিন্তু কি প্রয়োজন পড়লো সহস্রাধিক মানব মস্তিষ্কের ক্ষমতা সম্পন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বানানোর !

 

মানব জাতির কল্যাণ ! আজ সকলের দেখার বিষয় প্রযুক্তি কতটুকু কল্যান এবং অকল্যান যুক্ত করেছে আমাদের জীবনে ।

 

কল্যানের থেকে অকল্যান বেশি নয় তো ! জীবন সহজ করতে গিয়ে আমরা কি আমাদের সমাজের বাসযোগ্যতাকে নষ্ট করে ফেলছি ?

 

হ্যাঁ ইতিমধ্যেই আমরা অনেকটাই ব্যক্তি নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা তুলে দিয়েছি প্রযুক্তির হাতে । আর এখন তো….

আমি – আপনি কি এক মুহূর্তও নিরাপদ সাইবার অ্যাটাক থেকে ! আমাদের সাথে কত খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে তার ধারণাটুকুও যদি না থাকে তাহলে প্রতিরোধ প্রতিকারের কি হবে !

 

একসময় কম্পিউটারের আবিস্কার গোটা বিশ্বকে পরিবর্তন করেছিল । তারপর ইন্টারনেট আলোড়ন সৃষ্টিকারী পরিবর্তন আনে । আর এখন ! এখন AI নতুন মাত্রা নিয়ে যুক্ত হয়েছে । আমরা কি এই পরিবর্তন মানিয়ে নিতে প্রস্তুত!

If You Can’t Adapt the changes!

চার্লস ডারউইনের তত্ত্ব কি কেবল প্রজাতির টিকে থাকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় ! এটা মানুষের মধ্যে মানুষের টিকে থাকার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য । ঠিক যেমন পরিবেশের পরিবর্তন মানিয়ে নিতে না পারায় অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে । একদিন সেসব মানুষের অস্তিত্বও বিলুপ্ত হয়ে যাবে এই বৈশ্বিক গ্রামে । শুধুমাত্র পরিবর্তনের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে না পারায় ।

জনসংখ্যা বাড়ছে , প্রযুক্তিগত বিবর্তন ঘটেছে , প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে । আপনি প্রস্তুত তো টিকে থাকার লড়াইয়ে বিজয়ী হতে ! নাকি প্রযুক্তির আক্রমনে হার মেনে নিতে ।

 

হ্যাঁ প্রযুক্তির আক্রমণ ! তবে প্রযুক্তি কি আপনার বন্ধু নয় !

প্রযুক্তি অবশ্যই ভালো একটা বন্ধু। কিন্তু কেবলমাত্র ভালো বন্ধুই পারে সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রু হতে ।

এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে চলেছে Artificial Intelligence !

AI ব্যবহার করে ভালো কাজ যেমন দ্রুত এবং খুব সহজেই করা সম্ভব, তেমনি যে কেউ খুব সহজেই যে কাউকে ক্ষতি করে ফেলতে পারে ।

 

কোনো একটা সিস্টেমকে হ্যাক করতে যেখানে কোনো একটা হ্যাকারের কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে । সেখানে AI জটিল থেকে জটিলতর সিস্টেম কয়েক সেকেন্ডেই হ্যাক করে ফেলবে ! তাহলে আপনার আমার নিরাপত্তা!

কি পারেনা AI ! আপনার ভয়েসে কথা বলা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর খুবই সাধারণ একটা কাজ । যে কেউই আপনার ভয়েস নকল করতে পারবে মাত্র এক ক্লিকেই ! আপনার ভয়েস নকল করে আপনাকে কিভাবে কোনো মামলায় ফাঁসাতে পারে বুঝতেই পারছেন। তাহলে আপনার আমার নিরাপত্তা!

 

অন্য কোনো ভিডিওতে যেখানে আপনি নেই সেখানে যদি আপনাকে দেখেন । তাহলে কি অবাক হবেন !

ডিপ ফেক ভিডিও তৈরি করা AI এর আরো একটি ক্ষমতা । আগে ডিপ ফেক তৈরি করতে ভালো কম্পিউটার , ভালো সফটওয়্যার এবং দক্ষ মানুষের কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত লেগে যেত । আর এখন ! কয়েক সেকেন্ডেই, মাত্র এক ক্লিকেই যেকোনো মানুষের নাগালের মধ্যে এনে দিয়েছে Powerful AI tools গুলো । তাহলে আমার আপনার নিরাপত্তা !

শুধু মাত্র এই ভয়েস কপি টেকনোলজি দিয়েই আপনাকে যেকোনো ভয়াবহ মামলায় কিংবা বিপদে ফেলতে পারে । আপনার আশেপাশের লোকজনকে ঠকাতে পারে ।

” ভাই আমার এখনি ইমার্জেন্সি টাকা লাগবে ” আপনার কন্ঠে যদি এটা আপনার পরিচিত কাউকে বলা হয় তাহলে বেশির ভাগই দিতে বাধ্য হবে না?

 

আপনার হয়ে টাকা চেয়ে , আপনার বন্ধু, পরিবারের সদস্যদের অর্থ লুট করে নেওয়া কি এমন ব্যাপার !

 

এমন ডিপ ফেক ভিডিও কিংবা ভয়েস আপনার, আপনার পরিবারের জন্য কতটা ক্ষতিকর একবার ভাবুন । মিথ্যা প্রমাণ করা কত সোজা । যে কাজ বা অপরাধ আপনি করেননি সে কাজের জন্য আপনাকে মিথ্যা প্রমাণ সহ দোষারোপ করা যাবে !

 

এর জন্য যেনো কারো জীবন না যায় । তা্য জন্য আপনাকে সচেতন হতে হবে । আপনার আশেপাশে যদি কারো সাথে এধরনের ঘটনা ঘটে তাহলে আপনাকে হাত বাড়িয়ে দিতে হবে । তাহলেই আপনি যদি এর স্বীকার হন অন্যকে পাশে পাবেন । AI এর থেকে বাঁচার এই একটা মাত্র উপায় । এসব এখনো অনেকের ধারণার বাইরে । তাদের সবাইকে এই এসব ধারণা গুলো দিতে হবে, এর বিকল্প নেই ।

 

সব মিলিয়ে আমার আপনার ব্লাকমেইল করা , ঠকানো , মানহানি করা কত সহজ হয়েছে তাইনা !

AI হুবহু আপনার মত উত্তর দিতে সক্ষম । আপনাকে কপি করতে সক্ষম । আপনি আমি জীবিত না থাকলেও এআই এর সাথে ভার্সুয়াল রিয়েলিটির সংমিশ্রণে আমরা কারো সামনে আসতে পারবো , কথা বলতে পারবো , স্পর্শ করতে করবো ! অসম্ভব শোনাচ্ছে না ! যা ইতিমধ্যেই সম্ভব হয়েছে ….

 

Leave a Reply