যে বিষয়গুলো কানে ঢোকা মাত্র প্রকাশ্যে লোকজন ঘৃণা প্রকাশ করেন তাদের একটি হল পর্ন, বিশেষ করে ইনটারনেট পর্ন। আদতে বিষয়টি যথেষ্টই জনপ্রিয়, অন্তত জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলোর তালিকা তাই বলে! বিশ্বের প্রায় সব দেশেই প্রকাশ্যে ‘ট্যাবু’ হিসেবে চিহ্নিত এই বিষয়ের ভালো দিকও আছে!  টাইমস অফ ইন্ডিয়া বিস্তর গবেষণা করে আমাদের জানাচ্ছে অনলাইন পর্নের সাতটি প্রযুক্তিবান্ধব দিক। একটি দেশের বিশাল জনগোষ্ঠিকে নতুন কোনো প্রযুক্তিতে আগ্রহী করে তোলা সহজ কোনো কাজ নয়। এক্ষেত্রে ইন্টারনেটকে জনপ্রিয় করে তোলায় বিশাল ভূমিকা পালন করেছে অনলাইন পর্নোগ্রাফি। ৯০-এর দশকে, যখন ইন্টারনেটের ব্যবহার মূলধারায় আসেনি, তখনও মানুষ শুধু ইমেইল বা কোনো বিশেষ ওয়েবসাইট বা প্রধানত পর্ন দেখার জন্যই অনলাইনে আসতেন। পত্রিকাটি আরও জানায়, ভারতে প্রথম দিকে সাধারণ মানুষদের কাছে ‘ইন্টারনেট’ শব্দটি ‘পর্ন’-এর একটি প্রতিশব্দ হিসাবে বিবেচিত হত। অনলাইনে ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে এখন প্রায় সবার কাছেই পরিচিত নাম ‘ইউ টিউব’। কিন্তু ইউ টিউব নয়, বরং ওয়েব ব্রাউজারে ভিডিও সম্প্রচার সর্বপ্রথম পর্নোগ্রিাফিই ছিল। ভিডিও যে ভবিষ্যতে একটি বিশাল সম্ভাবনাময় খাত হবে- এই ধারণাটি ইন্টারনেট জায়ান্টদের বোঝাতে প্রথম যারা অবদান রেখেছে তাদের মধ্যে পর্ন খাত একটি। ফ্লপি ডিস্ক থেকে শুরু করে সিডি, ডিভিডি আর ফ্ল্যাশ ড্রাইভস, স্টোরেজ ব্যবস্থার বাজারে সব সময়ই পর্নের অবদান পাওয়া যায়। আর বর্তমান যুগের ক্লাউড স্টোরেজেও এমনটা হচ্ছে। এক সময় ইন্টারনেটের গতি অনেক ধীর ছিল, তখন কনটেন্ট ডাউনলোড করে দেখতেই লোকে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করত। পাড়ার সিডি-ডিভিডি ভাড়া দেওয়ার দোকানগুলোতেও যে পর্নোগ্রাফির সিডি ডিভিডির রমরমা ব্যবসা থাকত, তা এখনও ভোলার নয়, এমনটাই মন্তব্য সংবাদমাধ্যমটির। ‘রিচ হাই রেজুলিউশন’-এর কনটেন্ট দেখতে উন্নত মানের ইন্টারনেট সংযোগ নিতে পর্ন মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি করে। কেউ উন্নত রেজুলিউশনে পর্ন দেখতে চাইলে তাকে ভালো মানের ইন্টারনেট সংযোগ নিতেই হবে। ২০ বছর আগেও অনলাইন লেনদেনের বিষয়টি মানুষের কাছে ‘হাস্যকর’ ছিল। ভার্চুয়ালি কাউকে অর্থ পরিশোধ করার বিষয়টিতে মানুষ মোটেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন না। কিন্তু নিজেদের পছন্দের পর্ন কনটেন্ট পেতে সাইটগুলোতে সাবস্ক্রাইব করে ডিজিটাল অর্থ পরিশোধ করে মানুষ এতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। ভারতে মোবাইল ইন্টারনেট ডেটা প্যাক বিক্রির ক্ষেত্রে পর্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে জানিয়েছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া। পর্ন কনটেন্ট অ্যাকসেস করার মাধ্যম যখন স্মার্টফোনে চলে এল আর এতে ভিডিও দেখার মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি ডেটা খরচ হয়। এখন অনলাইনে যাওয়ার জন্য মোবাইল ইন্টারনেট সবচেয়ে পছন্দের মাধ্যমগুলোর একটি হয়ে উঠেছে। সংবাদমাধ্যমটির মতে, আগের প্রযুক্তির রীতিতে এই ‘বড়দের বিনোদন’ খাতের প্রভাব এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। আর সামনে আসছে ভার্চুয়াল রিয়ালিটির যুগ। শিগগিরই হয়তো এতেও পর্নের অবদান আসা শুরু করবে। কোনো একটি পর্ন ওয়েবসাইট ভিআর ব্যবহার গ্রহণ শুরু করলেই তা ভিআর প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুখবর বয়ে আনবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। অন্যদিকে, ভিআর প্রযুক্তি পর্ন তৈরির জন্য ঝামেলা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন পর্ন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি কানাডাভিত্তিক পর্ণ ওয়েবসাইট পর্নহাব-এর কর্মী ‘করেয়’ বলেন, “আমি শুনেছি পুরুষদের ক্ষেত্রে এসব ভারি আনুষাঙ্গিক যন্ত্র বুকে নিয়ে কাজ করতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়।” তিনি আরও বলেন, “এমনকি প্রায়ই দৃশ্যগুলো বার বার ধারণ করতে হয়।” টাইমস অফ ইন্ডিয়া ভারতের বাস্তবতা বিবেচনা করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। প্রতিবেশী বাংলাদেশেও কি আলোচিত বিষয়গুলো একইরকম ভূমিকা রেখেছে বা রাখছে? পাঠক, আপনার কি মনে হয়?

One thought on "পর্ন-এর সাত গুণ: ভারত বাস্তবতায়"

  1. jamalbe Contributor says:
    হুম

Leave a Reply