মানব নয় বিপদজনক যায়গায় ডুবুরি হবে রোবট । প্রায় ৫ ফুট লম্বা রোবটটির গঠন অনেকটা মানুষের মতো। এটি বেশ ভালো দেখতে পায় এবং হাত-পা নাড়াতে পারে। এর শরীরের নিচের অংশে রয়েছে কম্পিউটারের ‘মস্তিষ্ক’, ব্যাটারি এবং বহুমুখী আটটি সচল ‘হাতের’ বিন্যাস। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল কম্পিউটার প্রকৌশলী এই রোবট তৈরি করেছেন।

নৌকায় বসে একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী রোবটটিকে নির্দেশনা দেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে ওশেনওয়ান সেগুলো পালন করে। সংবেদী প্রতিক্রিয়া এবং যন্ত্রকৌশলের সহায়তায় রোবটটি পানির নিচে নানা রকমের সূক্ষ্ম কাজ করতে পারে। যেমন এটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে কোনো ভঙ্গুর নিদর্শন উদ্ধার করে সেটিকে বাক্সে ভরে ওপরে নিয়ে আসে।

মহাসমুদ্র অভিযানে দূরনিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন যান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু ওশেনওয়ানের নির্মাতারা চেয়েছিলেন, তাঁদের তৈরি রোবটটির নতুন কিছু সামর্থ্য থাকবে। হয়েছেও তাই। এই যন্ত্রটি ডুবুরির দায়িত্ব পালন করে সাগরতলের এমন কিছু জায়গায় যাতায়াত করে, যেটা মানুষের জন্য খুবই দুর্গম। কিন্তু ওশেনওয়ান স্বচ্ছন্দে সেখানে গিয়ে কাজ করতে পারে। আর যিনি দূর থেকে রোবটটি নিয়ন্ত্রণ করেন, তাঁর অভিজ্ঞতাটা হয় ডুবুরির মতোই। রোবটটি যা কিছু স্পর্শ করে এবং তুলে আনে, তিনি সেগুলো ঠিক ঠিক ‘অনুভব’ করতে পারেন।

ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের অধ্যাপক উসামা খাতিব ওই রোবটটি চালনা করেছেন। তিনি ওই অভিজ্ঞতার বর্ণনায় বলেছেন, সত্যি সত্যি ডুবুরি হওয়ার অনুভূতি হয়েছে তাঁর। রোবটটি যা যা করছিল, সবই তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার মতো মনে হয়েছে।

ওশেনওয়ান কোনো পরিবেশে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি বুঝে নিজে নিজেই প্রয়োজনীয় সাড়া দিতে পারে। নির্মাতারা লোহিত সাগরের প্রবালপ্রাচীর নিয়ে গবেষণায় একে কাজে লাগাতে চাইছেন। কারণ, ওই গভীরতায় মানব ডুবুরির পক্ষে কাজ করা অনেক কঠিন ও বিপজ্জনক।
আমাদের ব্লগ থেকে প্রকাশিত । এবং আপনিও আমন্ত্রিত ।

Leave a Reply