আপনার সাথে যে ঘটনাটি ঘটলো সেটিকে প্রযুক্তির ভাষায় বলে Deep Fake। আপনি হয়তো দেখেছেন সাধারণত ফটোশপ সফটওয়্যার ব্যবহার করে মাস্কিং, ব্লেন্ডিং করার মাধ্যমে একজনের চেহারা কেটে হুবহু আরেকজনের চেহারা বসিয়ে দেয়া যায়। এটা হচ্ছে ছবির ক্ষেত্রে। তবে ভিডিওর ক্ষেত্রে ব্যাপারটি এতোটাও সহজ ছিলো না আজ থেকে ৫,৬ বছর আগে।
কিন্তু বর্তমানের প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়নে যে কোনোকিছুই অসম্ভব না তা আমরা নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছি। মেশিন লার্নিং সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সবাই কমবেশি জানি। এই মেশিন লার্নিং টেকনলোজি ব্যবহার করেই মুলতঃ ডিপ ফেক তৈরি করা হয়।
এখন আপনাদের মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে যে এটি কিভাবে কাজ করে? তার আগে বলে রাখি যে ডিপফেক বলতে যে শুধু মাত্র নকল অডিও ভিডিওকে বুঝায় তা কিন্তু না। ডিপফেক নামটির মধ্যেই এর আসল অর্থ লুকায়িত আছে।
ডিপ মানে হচ্ছে গভীর এবং ফেক মানে নকল। অর্থাৎ ডিপফেক বলতে এমন কিছুকে বুঝানো হচ্ছে যা খুবই গভীর এবং নিখুঁতভাবে নকল করা হয়েছে।
তো মেশিন লার্নিং হলো ডিপফেক ভিডিও বানানোর মূল হাতিয়ার। কিন্তু এই মেশিন লার্নিংটা কি তাই তো অনেকে জানি না। আপনারা নিশ্চয়ই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর নাম শুনেছেন! রোবট জাতির ক্রাশ রোবট সোফিয়াকে তো অন্তত সবাই চিনেন। সে সম্পুর্নই একটা যন্ত্র। কিন্তু সে যে মানুষের মতো কথা বলে, কোন প্রশ্নের উত্তরে কেমন মুখের ইমপ্রেশন করতে হবে এসব কিভাবে করে? প্রোগ্রামাররা প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে তার কম্পিউটার সিস্টেমে এমন একটা অ্যালগরিদম করে দিয়েছে যাতে সে নিজেই পরিবেশ এবং অতীতের ঘটনা থেকে শিখতে পারে। এটাই হলো মেশিন লার্নিং!
মেশিন লার্নিং এর অপর একটি মেথোড এর নাম হলো ” জেনারেল অ্যাডভারসেরিয়াল নেটওয়ার্ক”। এর মাধ্যমে প্রথমে একজন ব্যক্তির বিভিন্ন অভিব্যক্তির হাজারখানেক ছবি সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই ছবিগুলো মেশিন লার্নিং এর মাধ্যমে প্রসেসিং করে তার মুখের সব ধরনের সিমুলেশন তৈরি করা হয় এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিও বানানো হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নের ফলে কারো গলার আওয়াজ ও হুবহু নকল করা সম্ভব।
আমাদের দৃষ্টির পর্যায়কাল ০.১ সেকেন্ড। অর্থাৎ ১০০ মিলি সেকেন্ডের কম সময়ে ঘটে যাওয়া কোনো দৃশ্য আমাদের চোখে ধরা পড়বে না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা ভিডিওগুলোতে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটানো যায় এর থেকেও কম সময়ে যাতে করে কোনোভাবেই চোখে না পড়ে যে ভিডিওটা নকল। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো হাই কোয়ালিটির সফটওয়্যার ও তৈরি হয়নি যা এই ধরনের নকল ভিডিও ধরতে পারে।
বর্তমানে নগ্ন ভিডিও ভাইরাল হওয়া নিয়ে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয় অনলাইনে। কিছু অসৎ লোকজন, হ্যাকাররা শত্রুতামী করে এসব ভিডিও ছড়িয়ে দেয়। আর ডিটেকশন সফটওয়্যার এর অভাবের কারণে এক কলঙ্কের দাগ নিয়ে সারাজীবন কাটাতে হয়। তাই কোনোকিছু দেখলেই সত্যি মিথ্যা যাচাই না করে কাউকে অপমান করা থেকে বিরত থাকুন। আজ এ পর্যন্তই। আবারো দেখা হবে কোনো এক নতুন পোস্ট নিয়ে।
আল্লাহ হাফেজ।
[h3]আসসালামু আলাইকুম![\h3]
Eta heavy dangerous technology.