একসময় প্রাইভেসি নিয়ে কারো মাথাব্যাথা না থাকলেও মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি সচেতন। তারাও এখন গুগলের জারিজুরি নিয়ে জ্ঞান রাখে। গত কয়েক বছরে প্রাইভেসি ব্যাপারটা সবখানেই গুরুত্ব পাচ্ছে।
বিশেষ করে এআই মডেলগুলো ট্রেইন করার জন্য ট্রেইনিং ডাটাসেট পারমিশন ছাড়া ব্যবহারের ব্যাপারটা নিয়েও কিছু হাউকাউ হলো। সব কোম্পানিই কোনো না কোনোভাবে ইউজারের ডাটা হাতিয়ে নিতে চায়। যেকোনো ওয়েবসাইটের সার্ভিস ইউজ করতে গেলে দেখবেন অ্যাকাউন্ট খুলতে বলে।
কিছুদিন আগেই পিসিতে রেইনমিটারের একটা স্কিন ডাউনলোড করতে আর্টস্টেশনে গিয়ে দেখি অ্যাকাউন্ট চাচ্ছে। কি জ্বালা!
এই ব্যাপারটা থেকে মুক্তির উপায় কি?
বেশ। একটা উপায় হলঃ আপনি আপনার ইমেইল দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলবেন। তারপর কাজ শেষে অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করে দিবেন। কিন্তু এখানে কিছু ব্যাপার আছে।
প্রথমত, কিছু ওয়েবসাইট সহজে অ্যাকাউন্ট ডিলিট করতে দেয় না। ডিলিট অপশন থাকে না, সাপোর্টে মেইল দিলেও কারন জানতে চায়।
দ্বিতীয়ত, কোনোভাবে ঐ ওয়েবসাইট হ্যাক হলে আপনার মেইল অ্যাড্রেস চলে যাবে ব্ল্যাকমার্কেটে। আমার মেইন জিমেইল এইভাবেই ২টা ওয়েবসাইট থেকে লিক হয়েছে।
আরেকটি উপায় হল টেম্পোরারি ইমেইল। এগুলো burner email নামেও পরিচিত। ট্রিকবিডিতে এই বিষয়ে অনেক পোস্ট আছে, আমি ভালো কয়েকটার লিঙ্ক দিচ্ছি।
temp মেইল ব্যাবহার করুন, এবং মেইল চেঞ্জ করুন যতখুশি ততবার।
Termux দিয়ে কিভাবে ইচ্ছে মতো নাম এবং ডোমেইন দিয়ে Temp-mail Create করবেন।
কিন্তু এখানে সমস্যা হল, কিছু সাইট আরো চালাক হয়ে গেছে। ওরা নামকরা মেইল প্রোভাইডারের অ্যাড্রেস চায়, যেমন জিমেইল, ইয়াহু। টেম্প মেইল দিলে তারা বুঝে ফেলে। আমি টরেন্টবিডিতে অ্যাকাউন্ট খোলার সময় একটা ইনভাইট নস্ট হয়েছিল এভাবে। আরেকটা উদাহরনঃ
তাহলে উপায়?
এখানেই আসে আমাদের temporary gmail address । এসব সত্যিকারের জিমেইল অ্যাকাউন্ট।
তবে মনে রাখতে হবে এগুলো ক্ষণস্থায়ী সমাধান। নতুন নতুন অ্যাড্রেস সবসময় আপডেট হয় তাই লিমিট নিয়ে চিন্তা নেই। যেহেতু এগুলো রিয়েল জিমেইল, তাই কোনো ওয়েবসাইটও সহজে ধরতে পারবে না। আমি নিজেও কোনো ঝামেলা ছাড়া টেম্পোরারী জিমেইল ইউজ করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে।
আজ থাকবে তেমনই কিছু কার্যকরী temporary gmail address ওয়েবসাইট।
#1 emailnator.com – Temporary Disposable Gmail
Temporary gmail address নিয়ে বলতে হলে শুরুতেই নাম আসবে এই সাইটের। ব্যক্তিগতভাবে আমি ওদের সার্ভিসই ব্যবহার করি। এটি সবসময় ইমেইল ডেলিভার করে।
ফিচারসঃ
- ইনবক্স এক্সপোর্ট করার সুবিধা
- এপিআই দিয়ে বাল্ক ইমেইল বানানোর ব্যবস্থা আছে
#2 tmail.io – Temporary Gmail Account Generator
tmail এর আছে একটি পরিচ্ছন্ন ইন্টারফেস, ও সাথে রেজিস্টারড ইউজারদের জন্য আছে পুরাতন মেইলের হিস্টোরি দেখার সুবিধা।
ফিচারসঃ
- Gmail, 10MinuteMail – দুইরকম অ্যাড্রেসই বানানো যায়
- একটা edumail থেকেও মেইল রিসিভের ব্যবস্থা আছে
#3 tempgmail.pro – Free Temporary Gmail Address
এই সার্ভিসটিরও একটি গুছানো ইন্টারফেস আছে। আর কাজ শেষে মুছে ফেলা যায় পুরাতন অ্যাড্রেসটি।
ফিচারসঃ
- কোনো সাইনআপের প্রয়োজন নেই
- সব মেইল ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডিলিট হয়ে যায়
#4 zemail.me – Instant Disposable Gmail
zemail.me আরেকটি ডিসপোজেবল জিমেইল প্রোভাইডার। এই সাইটটি ৪ বছরের বেশি সময় ধরে temporary gmail address ইউজের সুবিধা দিয়ে আসছে। একটা অ্যাড্রেসে মেইল না আসলে চেঞ্জ করে নিবেন।
ফিচারসঃ
- ডার্ক মোড, ও একাধিক ভাষা বাছাই করা যায়
- ইচ্ছামতো নাম দিয়ে টেম্পোরারি জিমেইল অ্যাড্রেস বানানো যায়
#5 mailticking.com – Temporary Gmail Account
mailticking অনলাইনে এসেছে বেশিদিন আগে না, সাইটের বয়স এক বছরও হয়নি। কিন্তু এর মাঝেই এটি top disposable gmail service হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।
ফিচারসঃ
- কোনো অ্যাকাউন্ট ছাড়াই ইমেইল হিস্টোরি দেখার সুবিধা
- iOS, Android প্ল্যাটফর্মের জন্য অ্যাপস আছে
#6 22.do – Protect Privacy with Temporary Email
নামটা ইনটারেস্টিং। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত 22.do সার্ভিস লক্ষাধিক মানুষ ইউজ করে বলে ওদের পেইজে উল্লেখ আছে।
ফিচারসঃ
- হিস্টোরি থেকে আগের বানানো মেইলের ইনবক্স উদ্ধার করার সুবিধা
- ইচ্ছামতো নাম দিয়ে মেইল বানানো যায়, যদিও ওটা জিমেইল ডোমেইনে না
#7 temp-inbox.me – Get a Temporary Gmail Address
আজকের লিস্টে সবশেষে থাকছে temp-inbox.me. এই সার্ভিস প্রায় সব ওয়েবসাইটেই কাজ করে আর ইমেইলের মেয়াদও দীর্ঘক্ষণ থাকে।
ফিচারসঃ
- শেয়ারড অ্যাড্রেসের পরিবর্তে প্রত্যেকবার ইউনিক অ্যাড্রেস পাওয়া যায়
- প্রায় সকল প্রকার ভ্যারিফিকেশন মেইল রিসিভ হয়
বোনাস
tempgmail.pro এর ব্রাউজার এক্সটেনশন আছে। আপনার ঘনঘন ঠিকানার দরকার পড়লে এক্সটেনশন ট্রাই করতে পারেন।
Temp Gmail Extension for Chrome
Temp Gmail Add-ons for FireFox
Temp Gmail Add-ons for Edge
এই ছিল আজকের পোস্ট।
অনেক ওয়েবসাইট অ্যাকাউন্ট খোলা ছাড়া কিছু করতেই দেয় না। আবার মেইন ইমেইল সবখানে বিলিয়ে বেড়ানোও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এসব সমস্যা মোকাবেলার জন্যই মূলত এসব টেম্পোরারি মেইল সার্ভিসের উৎপত্তি।
চটজলদি কোনো কাজ সেরে নিতে আজকের টেম্পোরারি সমাধানগুলো উপকারে আসবে আশা করি। আর পোস্ট কেমন হচ্ছে মতামত জানালে আরো ভালো লিখতে উৎসাহিত বোধ করবো : )
খোদা হাফেজ।