বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলক মোবাইল সিমকার্ড নিবন্ধনের সময় যে ছোটখাটো ত্রুটিগুলো হয়েছিল, তা দূর করা হয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করা হবে।
আঙ্গুলের ছাপ বা বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে মোবাইল সিমকার্ড নিবন্ধন শুরুর আগে প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রোববার (১৩ ডিসেম্বর) প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বাংলানিউজকে বলেন, কিছু ‘মিস ম্যাচিং’ ছিল- সেগুলো আমরা দেখেছি। জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য ভাণ্ডারের (এনআইডি) নম্বরের সঙ্গে চারবার গ্রাহকের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে ছোটখাটো সমস্যাগুলো সমাধান করা হয়েছে।
“জাতীয় এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে ১৬ ডিসেম্বর থেকে গ্রাহকের আঙ্গুলের ছাপ গ্রহণ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশব্যাপী মোবাইল সংযোগ নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে।”
তিনি বলেন, নতুন সংযোগ কেনার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোন অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে অথবা বিক্রয় কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।
পুরাতন বা ব্যবহৃত সংযোগ সঠিকভাবে নিবন্ধন করতে চাইলে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মোবাইল ফোন অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে অথবা বিক্রয় কেন্দ্রে এসে আঙ্গুলের ছাপ পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে হবে।
‘কিছু বিষয় আছে যেগুলো ধারণার অতীত ছিলো। ফিঙ্গার প্রিন্ট নেই, আঙ্গুলের রেখা ছিলো না। এই সমস্যাগুলো সমাধান করেছি। এনআইডিতে সমস্যাগুলো স্পেসেফিক্যালি নিয়ে অল্টারনেটিভ ওয়েতে ম্যাচ করেছি।’
গত ২১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় নিজের নামে একটি সিমের নিবন্ধনের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির উদ্বোধন করেন। এরপর পহেলা নভেম্বর থেকে মোবাইল অপারেটরগুলো সার্ভিস সেন্টার ও কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে এই কার্যক্রম শুরু করে।
পরীক্ষামূলকভাবে নিবন্ধন শুরুর পর এনআইডি’র তথ্যের সঙ্গে সিমকার্ডের গ্রাহকের তথ্যের মিল পাওয়া যাচ্ছিলো না বলে অপারেটর এবং গ্রাহকেরা জানিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরুর আগে এজন্য নভেম্বর থেকে ট্রায়াল শুরু হয়, যাতে বুঝতে পারি কী ধরনের সমস্যা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আঙ্গুলের ছাপ দিতে গিয়ে অনেক সময় এরোর (ভুল) আসছিলো, কী কারণে ম্যাচ করছিলো না, এনআইডি কর্তৃপক্ষকে রিকুয়েস্ট করলাম, কী কারণে, এই ভুলগুলো? কেন ম্যাচ করছে না?
‘তখন বুঝতে পারলাম, অনেক ক্ষেত্রে এনআইডি নম্বর ভুল দেওয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ এনআইডি নম্বর এন্ট্রি করার ক্ষেত্রে ভুল করছে।’
এই সংখ্যাগত সমস্যা সমাধানে গ্রাহকের আঙ্গুলের ছাপ চার বার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেটি মিলে গেলে এবং তারা যখন ফিডব্যাক দেবেন, যে কী কারণে ম্যাচ করছে না, নম্বরের কারণে না ফিঙ্গার প্রিন্টের কারণে- তাহলে সেটা কমপ্লিট করা যাবে।
এভাবে পরীক্ষা করে দেখা এই প্রক্রিয়ায় সাফল্য এসেছে, দাবি করেন তিনি।
বিজয় দিবসে সকাল ১০টায় বিটিআরসি ভবনে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে সিমকার্ড নিবন্ধনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
ভুয়া তথ্য দিয়ে সিম কিনে অপরাধ সংঘঠিত করা থেকে বিরত রাখতে দায়িত্ব নেওয়ার পর সিম পুনর্নিবন্ধনের উদ্যোগ নেন প্রতিমন্ত্রী। ১৫ নভেম্বর নিজেই বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি পরিদর্শনে যান তারানা হালিম।
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রহে মোবাইল অপারেটরগুলো এজন্য এনআইডি’র সঙ্গে চুক্তিও করেছে। এতে তথ্য যাচাইয়ে আর বাধা নেই।
নতুন সিম কেনার ক্ষেত্রেও গ্রাহকদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে বিক্রি করছে অপারেটরগুলো। ১৮ বছরের নিচে কারও কাছে সিম বিক্রি করা যাবে না, সিম থাকলেও নিবন্ধন করা যাবে না। এক্ষেত্রে অভিভাবকের (মা-বাবা) নামে সিম নিবন্ধন করতে হবে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সঠিকভাবে সিম নিবন্ধন না করা হলে ওই সিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে গ্রাহক উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে পারলে বন্ধ সিম চালু করার বিষয়ে বিবেচনা করার কথা জানায় টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
বিটিআরসি’র হিসাবে অক্টোবর মাসে দেশে ছয়টি মোবাইল অপারেটরের মোট গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৯৬ হাজার।
২০১৬ সালের মে মাস থেকে অনিবন্ধিত সিমের জন্য অপারেটরদের সিমপ্রতি ৫০ ডলার জরিমানার বিধান কার্যকর করা হবে বলে এর আগে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
সংগ্রহিত পত্রিকা থেকে
6 thoughts on "ত্রুটি দূর, সিম নিবন্ধন শুরু ১৬ ডিসেম্বর"