মনোবিদ ফিল জনসি দলের সঙ্গে
কলকাতাতেই যোগ দিয়েছেন।
খেলোয়াড়দের সঙ্গে সেখানে ব্যক্তিগত
পর্যায়ে টুকটাক কথাও নাকি হয়েছে। তবে
বাংলাদেশ দলের অস্ট্রেলিয়ান এই
মনোবিদ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁর
এক সপ্তাহের ‘অ্যাসাইনমেন্টে’ মূল কাজটা
পেলেন বেঙ্গালুরুতে গিয়ে। সোয়া দুই
ঘণ্টার ফ্লাইটে কলকাতা থেকে কাল
বেলা তিনটায় ‘গার্ডেন সিটি’তে
পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল। হোটেলে
গিয়েই জনসি ভাগে ভাগে বসেছেন
খেলোয়াড়দের সঙ্গে।
ধর্মশালা থেকে মাশরাফি বিন মুর্তজার
দল উত্তুঙ্গ আত্মবিশ্বাস নিয়ে কলকাতা
গিয়েছিল। কিন্তু ইডেন গার্ডেনে
পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা
বাংলাদেশের বোলারদের যে রকম
পেটালেন, তাতে আত্মবিশ্বাসে চিড়
ধরাটাই স্বাভাবিক। জনসি হয়তো সেই
চিড়ই জোড়া লাগাতে চেষ্টা করছেন।
তবে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়-
কোচরা পরশুর দিনটাকে নিচ্ছেন একটা
খারাপ দিন হিসেবেই, যে রকম দিন আগেও
এসেছে অনেক। ক্রিকেটে এমন দিন
যেকোনো দলেরই আসতে পারে এবং
যেকোনো দলের জন্যই সেই দিনে
হারাটা স্বাভাবিক। টি-টোয়েন্টি
ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ দুই শ রান করে
হয়ে যায়! পরশু ম্যাচ শেষে ইডেন
গার্ডেনের ড্রেসিংরুমে এসব বলেই
খেলোয়াড়দের চাঙা রাখার চেষ্টা
হয়েছে।
খেলা শেষ হওয়ার পর থেকেই বেঙ্গালুরু
যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিতে হয়েছিল।
পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে তাই আর
খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলাদা করে বসা
হয়নি। তবে হারের ময়নাতদন্ত করেছে
কোচিং স্টাফ। তাতেও সেই একই ফল—২০০
করেই পাকিস্তান চলে গেছে ধরাছোঁয়ার
বাইরে। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর
শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক থাকার
পরিকল্পনা ছিল তাদের এবং সেটিতে
দারুণভাবে সফল পাকিস্তান। ইডেনের
ব্যাটিং উইকেট আর বাংলাদেশের
বোলারদের লাইন-লেংথহীন বোলিংয়ের
সাহায্যও তারা পেয়েছে।
তবে বেঙ্গালুরুতে গিয়ে আর পেছন ফিরে
তাকাতে চায় না মাশরাফি বিন মুর্তজার
দল। সব চিন্তা আপাতত ২১ মার্চের
অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ ঘিরে। আর পাকিস্তান
ম্যাচের মতো এই ম্যাচের আগেও
বাংলাদেশ শিবিরে সেই প্রশ্নটা ঘুরছে—
এবার পাওয়া যাবে তো মুস্তাফিজুর
রহমানকে? দলের সঙ্গে থাকা ক্রিকেট
পরিচালনা-প্রধান আকরাম খান আশাবাদী।
মেয়েদের দলের খেলা দেখতে গিয়ে কাল
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম থেকে
মুঠোফোনে বলছিলেন, ‘পাকিস্তানের
বিপক্ষে মুস্তাফিজের খেলার কথা ছিল।
কিন্তু এক শ ভাগ ফিট না থাকাতেই শেষ
করছি, পরের ম্যাচে খেলবে।’
যত দূর জানা গেছে, পাকিস্তান ম্যাচে
যেকোনো মূল্যে মুস্তাফিজকে দলে
চেয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। কিন্তু
কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সতর্ক
অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
পুরোপুরি ফিট না হলে মুস্তাফিজকে
খেলানোর ঝুঁকি নিতে রাজি নন কোচ। এ
অবস্থায় খেলে মুস্তাফিজ যদি আবারও
চোট পান, পরে যদি আর কোনো ম্যাচই
খেলতে না পারেন! এই ছিল হাথুরুসিংহের
ভয়। কিন্তু মাশরাফির মত ছিল, জেতার
চিন্তা করলে শুরুর ম্যাচ থেকেই করতে
হবে। একাদশে পূর্ণ শক্তি রাখতে হবে শুরু
থেকেই। এখন হেরে গেলে পরে আর
জিতেও কি লাভ হবে?
আকরামের আশা সত্যি হলে মুস্তাফিজের
জন্য অপেক্ষা শেষ হতে পারে
বেঙ্গালুরুতেই। মুস্তাফিজ-চমকে আবারও
ঝলমলে হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশ
দলের চেহারা।