আজকে আমরা আলোচনা করব ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ কি এবং এর কারণ সম্পর্কে। ব্লাড ক্যান্সার বা রক্তের ক্যান্সার নিয়ে আমাদের অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে। সময়ের সঙ্গে এ ধরনের রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকটাই পাল্টে গেছে, আর অনেক উন্নত ও হয়েছে।
ব্লাড ক্যান্সার কি?
মূলত লিউকোমিয়া কে আমরা ব্লাড ক্যান্সার বলি এটি হলো রক্তকোষের ক্যান্সার। বিশেষজ্ঞ শ্বেত রক্তকণিকা ক্যান্সার মূলত শ্বেত রক্তকণিকায় বেশি আক্রান্ত হয় কিন্তু ক্রমেই অস্তি মজা আক্রান্ত হওয়ার কারণে রক্তে অন্যান্য কোষেরও অভাব দেখা দেয়।
ব্লাড ক্যান্সার কেন হয়?
ব্লাড ক্যান্সার কেন হয় এর কোনো স্পষ্ট ধারণা এখনো পাওয়া যায়নি। নানা ধরনের নিজেস্ক্রিয়তার প্রভাব, রাসায়নিক বর্জ্য, ধূমপান, কৃত্রিম রং, কীটনাশক, এমনকি ভাইরাস এর জন্য দায়ী। এগুলোর প্রভাবে জিনে নিউট্রেশন ঘটে এবং কোষ বিভাজনে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয় তখন সাধারণত ব্লাড ক্যান্সার হয়ে থাকে।
ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো দেখে নিয়ে চলুন:
আলোচনা করবঝ ব্লাড ক্যান্সারের অন্যতম ১০ টি লক্ষণ সম্পর্কে। ব্লাড ক্যান্সার হলে রোগীর শরীরে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে, এক্ষেত্রে সব লক্ষণ সম্পর্কে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে।
ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো হলো-
১) খাবারের প্রতি খিদে কমে যাওয়া এ সময় রোগীর অনেকাংশেই রুচি কমে যায়। ফলে সে কোন খাবার খেতে চায় না এমনকি এ সময় রোগীর কোন খাবার গিলতেও অসুবিধা হয়।
২) ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রেস দেখা যায়।
৩) এ সময় রোগীর প্রচন্ড পেটে ব্যথা অনুভব হতে পারে যা ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ।
৪) নিয়মিত রক্তপাত হতে পারে তাই আপনাকে সব সময় সচেতন থাকতে হবে, খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৫) শরীরচর্চা ছাড়াই এ সময় রোগীর ওজন অনেকটাই কমে যায়, এটা ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ।
৬) বুকে ঘাড়ে এবং বুকে লালচে রঙের দাগ দেখা দেয় যদি এরকম কোন লক্ষণ প্রকাশ পায়, দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
৭) এ সময় রোগীর বুকে ব্যথা অনুভব করতে পারে। তাই এটিও ব্লাড ক্যান্সারের একটি অন্যতম লক্ষণ।
৮) রোগীর এ সময় প্রচন্ড কাশি হতে পারে। তাই প্রচন্ড কাশি হলেও নিকটস্থ চিকিৎসার পরামর্শ বা চিকিৎসকের কাছে যান। কারণ এটিও ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ।
৯) যেহেতু শ্বেত রক্তকণিকা আক্রান্ত হয় সে ক্ষেত্রে রোগী বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যেমন- জ্বর, সর্দি কাশি। তাই জ্বর সর্দি কাশি অতিরিক্ত পরিমাণ হলে সাধারণ ভাববেন না।
১০) ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ এর মধ্যে আরও রয়েছে- এ সময় রোগীর শ্বাসকষ্ট হতে পারে যদি এ ধরনের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় আপনি দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্লাড ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়গুলো সম্পর্কে:
আমরা সবাই জানি প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম, তাই কোন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই আপনাকে সচেতন থাকতে হবে।
১) যেসব রোগীকে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি একসঙ্গে দেওয়া হয় তাদের মধ্যে ব্লাড ক্যান্সারের প্রবণতা ২০ শতাংশ বেড়ে যায়।
২) সকাল ধরে জ্যেষ্ঠতা পরিহার করতে হবে। অবশ্যই করতে হবে বিষয়গুলো কিন্তু আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।
৩) রাসায়নিক দ্রব্যাদি সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে।
৪) একসারা বিভাগে ও নিউক্লিয়ার বিভাগের কাজ করার সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
৫) ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য থেকে সর্বদা দূরে থাকতে হবে। এটিও কিন্তু ব্লাড ক্যান্সারের একটি অন্যতম লক্ষণ তাই অবশ্যই ধূমপান ও তামাকজাত থেকে সব সময় একশ হাত দূরে থাকা উচিত আমাদের সবাইকেই।
ব্লাড ক্যান্সার প্রতিরোধে যে খাবারগুলো খাবেন:
মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সার মুহূর্তে নিঃশেষ করে মানব জীবনকে তবে পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের দাবি রোগটি প্রকোপ রোধে ভূমিকা রাখে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত ফল ও সবজি। তাই খাবারের তালিকায় রঙিন শাকসবজি রাখার পরামর্শ তাদের।
হলে ক্যান্সার নেই কোন অ্যানসার। প্রচলিত এমন ধারণা নিয়ে বহু যুগ থেকেই মানব জীবনের ভিতির কারণ এই ক্যান্সার। তবে পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্যাভ্যাস কমায় এই রোগের প্রকোপ। খাবারের পাতে আনতে হবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত ফল ও সবজি বলছেন পুষ্টিবিজ্ঞানীরা।
তারা আরো জানান সবুজ ও লাল রংয়ের সবজি-ফল ও শাগ এ আছে ব্লাড ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণ।
গবেষণা বলছে ব্রকলি, গাজর, টমেটো, পেয়ারা, আঙ্গুর, বেদানা, পালংশাক ও সামুদ্রিক মাছ রোধ করে ক্যানসার।
পুষ্টিবিদরা বলছেন- ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রকলি সালফোরাফেন উপাদান কলোন ও ব্লাড ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী।
তালিকায় পিছিয়ে নেই গাজর ও টমেটোর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও তারা বলছেন ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং বিটা ক্যারোটিন রোধ করে ফুসফুস ও রক্তনালির ক্যান্সার।
দিনের শুরুতে এক কাপ গ্রিন টি সতেজতা আনার পাশাপাশি দিচ্ছে ব্লাড ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা ও তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পরিমিত মাত্রায় ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত খাবার রাখার পরামর্শ পুষ্টি বিজ্ঞানীদের।
সর্বশেষ কথা:- আমরা কেউই চাইবো না এই মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ আমাদের মধ্যে দেখা দিক। আমরা সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করব যেন আমাদের এই মরণব্যাধি ক্যান্সার না হয়। আর হ্যাঁ অবশ্যই ক্যান্সারের এই উপসর্গের মধ্যে কোন একটি উপসর্গ আপনার মধ্যে দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। কারন আপনি যদি এটাকে অবহেলা করেন হতে পারে এই ছোট্ট একটা ভুলের কারণে আপনার জীবনটাই এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। তাই সবসময়ই এই সমস্ত ছোট ছোট বিষয়গুলো কেউ গুরুত্ব দেয়া শিখুন।
আজকের মত আমি এখানেই বিদায় নিব দেখা হবে হয়তোবা পরবর্তী কোনো আর্টিকেলে ততক্ষণ পর্যন্ত নিজের খেয়াল রাখুন। আর আজকের এই আর্টিকেলটি যদি পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করে দিন। আজকের মত এখানেই টাটা আল্লাহ হাফেজ।