পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর মধ্যে কানাডা অন্যতম। স্থায়ী বসবাস ও নাগরিকত্বের জন্য এটি সবসময়ই অভিবাসীদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন ক্রমশ কঠিন হওয়ায় অনেকেই কানাডার দিকে ঝুঁকছেন। অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে কানাডার অর্জন অন্য দেশের কাছে ঈর্ষণীয়।

উন্নত জীবনযাপন ব্যবস্থা এবং আধুনিক নাগরিক জীবনের সব সুবিধা থাকায় প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ নায়াগ্রা জলপ্রপাতের এই দেশে পাড়ি জমায়। জাতিগত বৈচিত্র্য ধরে রাখার লক্ষ্যে সরকারও এই অভিবাসীদের সাদরে বরণ করে নেয়।

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও কানাডা বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলোর একটি। অনেক উন্নত দেশেই শিক্ষাজীবন শেষে চাকরি কিংবা নাগরিক সুবিধা পাওয়া কঠিন। এ ক্ষেত্রে কানাডা শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণীয়। কারণ এখানে শিক্ষাজীবন শেষে পছন্দের পেশায় যোগদান ও নাগরিক সুবিধা পাওয়া সহজ।

ইমিগ্রেশন বলতে বোঝায় এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া, সেখানে কিছুদিন থাকা, অথবা সেই দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করার প্রক্রিয়া। কানাডা প্রতি বছর ৩ লাখেরও বেশি মানুষকে ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে গ্রহণ করে। কারণ, অর্থনীতি ভালোভাবে চালানোর জন্য তাদের দরকার বিভিন্ন দেশের দক্ষ ও কর্মঠ মানুষ।

২০-৩০ বছর আগে কানাডায় ইমিগ্রেশন করা অনেক সহজ ছিল। কিন্তু এখন প্রক্রিয়াটা অনেক জটিল হয়ে গেছে। কারণ, ইমিগ্রেশনের জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। তাই কানাডা সরকার এখন খুব সাবধানে ইমিগ্র্যান্ট নির্বাচন করে। আপনি যদি কানাডায় যেতে চান তাহলে আপনাকে জানতে হবে সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়

চলুন জেনে নেওয়া যাক কানাডা ইমিগ্রেশন সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

কানাডা ইমিগ্রেশনের ধরন

  • ফেডারেল স্কিলড ওয়ার্কার্স প্রোগ্রাম: দক্ষ শ্রমিকদের জন্য
  • ফেডারেল স্কিলড ট্রেডস প্রোগ্রাম: দক্ষ ট্রেডসপারসনের জন্য
  • কানাডা এক্সপ্রেস এন্ট্রি: দ্রুত অভিবাসনের জন্য পয়েন্ট-ভিত্তিক ব্যবস্থা
  • প্রাদেশিক অভিবাসী প্রোগ্রাম: নির্দিষ্ট প্রদেশের জন্য
  • ব্যবসায়ী অভিবাসী প্রোগ্রাম: ব্যবসায়ীদের জন্য
  • ফ্যামিলি স্পন্সরশিপ: পরিবারের সদস্যদের জন্য

কানাডায় ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • পাসপোর্ট
  • জন্মনিবন্ধন সনদ
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
  • কর্ম অভিজ্ঞতার সনদ
  • ভাষা পরীক্ষার সনদ (ইংরেজি/ফরাসি)
  • চিকিৎসা পরীক্ষার রিপোর্ট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ
  • আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ

কানাডায় ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় খরচ

  • আবেদন ফি
  • ভাষা পরীক্ষার ফি
  • চিকিৎসা পরীক্ষার ফি
  • ভ্রমণ খরচ

কানাডার নাগরিকত্বের প্রয়োজনীয়তা

কানাডার স্থায়ী বাসিন্দাদের ৮০% এরও বেশি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করে থাকে। এ থেকেই বোঝা যায় কানাডার নাগরিকত্বের প্রতি তাদের আকর্ষণ কতটা।

নিশ্চয়তা

কানাডার নাগরিকত্ব অর্জনের পর তা ধরে রাখা সহজ। ট্রুডো সরকারের ২০১৭ সালের সংস্কারের ফলে এটি আরও সহজ হয়েছে। নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য পেশাদার সহায়তাও পাওয়া যায়।

ভ্রমণ সুবিধা

কানাডিয়ান নাগরিকরা বিনা ভিসায় বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে ভ্রমণ করতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, শেনজেন দেশগুলি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশিরভাগ দেশ। বিশ্বে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় কানাডার অবস্থান নবম।

শিশুদের জন্য সুবিধা

কানাডার নাগরিক তাদের বংশধরদের কাছে নাগরিকত্ব স্থানান্তর করতে পারেন। কানাডায় জন্মগ্রহণকারী যে কোনো ব্যক্তির কানাডার নাগরিকত্ব থাকে। নাগরিকরা কানাডার বাইরে জন্ম নেওয়া বাচ্চাদের কাছেও তাদের নাগরিকত্ব স্থানান্তর করতে পারেন।

কাজের সুযোগ

কিছু চাকরিতে, বিশেষত সরকার বা সুরক্ষার ক্ষেত্রে কানাডার নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

রাজনৈতিক অংশগ্রহণ

কানাডার সংবিধান অনুসারে শুধুমাত্র কানাডিয়ান নাগরিকরাই ফেডারেল পার্লামেন্টে ভোট দিতে পারেন। কানাডার গণতান্ত্রিক জীবনে পুরোপুরি অংশ নিতে নাগরিকত্বের প্রয়োজন।

দ্বৈত নাগরিকত্ব

কানাডা দ্বৈত নাগরিকত্বের অনুমতি দেয়। একজন ব্যক্তি অন্য নাগরিকত্ব বজায় রেখে কানাডার নাগরিক হতে পারেন।

প্রতীক

অনেকের কাছে নাগরিক হওয়া হলো ‘কানাডিয়ান পরিবার’-এ যোগদানের চূড়ান্ত উপায়।

উপসংহার

কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা থাকলে আপনি সরকারিভাবে খুব সহজে স্বপ্নের এই দেশে পাড়ি জমাতে পারবেন।কানাডা যাওয়ার বিভিন্ন ধরনের ভিসা প্রোগ্রাম রয়েছে। যদি চাকরি করতে চান তাহলে অবশ্যই কানাডা জব ভিসা প্রয়োজন হবে। উদ্দেশ্য অনুযায়ী কানাডা ভিসা নির্বাচন করতে হবে। এরপর ভিসার জন্য আবেদ করতে হবে। অবশ্যই দালাল চক্র এবং এজেন্সি থেকে সাবধান থাকবেন।

2 thoughts on "কানাডায় নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়"

Leave a Reply