আজকে আমি আপনাদের সকলের মাঝে নিয়ে হাজির হয়েছি আমাদের সকলের ব্যবহৃত এবং পরিচিত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সফটওয়্যার অ্যান্টিভাইরাস এর ব্যাপারে। আপনারা যারা পিসি অথবা ল্যপটপ ইউজাররা রয়েছেন তাদের জন্য খুবই দরকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার এটি। অনেকে আছেন যারা পিসি চালু করার সাথে সাথেই এই সফটওয়্যারটি চালু আছে কি না সেটা চেক করতে ভুল করেন না। তাহলে এই সফটওয়্যার গুলো যদি আপনাদের কাছে এতোটাই প্রিয় একটি সফটওয়্যার হয়ে থাকে, তাহলে আমি এই সফটওয়্যারকে বন্ধ করতে বললাম কেন? সেটা জানার জন্য একটু কষ্ট করে পুরো পোষ্টটি ধিরে ধিরে পড়তে থাকুন।
পোস্টটি পড়ার পর হয়তো আপনি বুঝতে পারবেন কেন আমি আপনাদের সকলের প্রিয় সফটওয়্যার টিকে বন্ধ করে বা ডিলিট করে বা আনইনস্টল করে ফেলতে বললাম।
অ্যান্টিভাইরাস কাকে বলে?
যদিও এই প্রশ্নের উত্তর আপনারা সকল ল্যাপটপ অথবা পিসি ব্যবহারকারিরাই জানেন। তবুও নিয়ম মাফিক সবাইকে টিউন এর সুবিধার্থে আরো একবার জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আপনারা যারা মোবাইল ইউজাররা আছেন তারাও চাইলে আমার পোষ্টটি দেখতে ও পড়তে পারেন। এতে আমি ১০০% শিউর গ্যারান্টি দিচ্ছি যে, আপনারা এখান থেকে খুবই খুবই ভাল একটা জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। অ্যান্টিভাইরাস মূলত একটি সফটওয়্যার যা আমাদের ল্যাপটপ অথবা পিসিকে ভাইরাস এর আক্রমন থেকে রক্ষা করা, এবং আমাদের ল্যাপটপ অথবা পিসিকে নিরাপদ রাখার কাজ করে থাকে।
অ্যান্টিভাইরাস এর উপকারিতা
অ্যান্টিভাইরাস খুবই উপকারি একটি সফটওয়্যার। আমাদের পিসি অথবা ল্যাপটপকে অনেকটাই সুরক্ষিত রাখে। অনেকে তো পিসি অথবা ল্যাপটপে উইন্ডোজ ইন্সটল করার পর পরই সবার আগে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইন্সটল করে থাকেন ইহার উপকারিতার কথা ভেবে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক অ্যান্টিভাইরাস এর উপকারিতাগুলো
- ১. সবসময় আপনার পিসিকে সুরক্ষিত রাখে বা রাখার চেষ্টা করে।
- ২. আপনার পিসিকে ভাইরাস থেকে বাচিয়ে রাখে।
- ৩. হ্যাকারদের খপ্পর থেকে বাচায়।
- ৪. থার্ডপার্টি কোনো সফটওয়্যার বা ম্যালওয়ার ইন্সটল করতে বাধা দেয়।
যেই চারটি টপিক আমি দিলাম, এই সব গুলোই খুবই গুরুত্বপুর্ন টপিক। প্রতেকটি টপিকই আপনার আমার পিসির জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে। এজন্যই অ্যান্টিভাইরাস আমাদের পিসির জন্য এতোটাই গুরুত্বপুর্ন। তবে অ্যান্টিভাইরাস এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে।
অপকারিতাগুলো তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক। যেহেতু অপকারিতার ব্যাপারে টাইটেল এ দেওয়া, সেহেতু অপকারিতা গুলোকে মূল টপিক হিসেবে হেডিং সহ লিখছি।
১.পিসি স্লো হয়ে যায়
আপনি পৃথিবীর যেকোনো অ্যান্টিভাইরাসই ইন্সটল করুন। দেখবেন আপনার পিসি অথবা ল্যাপটপ আগের থেকে কিছুটা স্লো হয়ে গেছে। বিশ্বাস না হলে আপনার পিসি অথবা ল্যাপটপ এর অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারটি আনইনস্টল করেই দেখুন। দেখবেন আপনার কম্পউটার আগের থেকে অনেকটা গতিশীল হয়ে গেছে।
কম্পিউটার এর টাস্ক ম্যনেজার সম্পর্কে হয়তো সকলে জানেন। যেটার মধ্যে কোন সফটওয়্যার কী রকম জায়গা নিয়েছে, কতটুকু রেম ব্যবহার করছে, কতটুকু সিপিউ ব্যবহার করছে সবকিছু বিস্তারিত উল্লেখ করা থাকে। একটি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর টাস্ক ম্যানেজার এর মধ্য সব সময়, যেকোনো সময় দেখতে পাবেন যে একাধিক টাস্ক ওপেন করা থাকে। যার কারনে একটি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর জন্য পিসির রেম, সিপিউ, স্টোরেজ সব কিছুই একটু বেশি বেশি খরচ হয়। এতে করে টাস্ক ম্যানেজার এ সবকিছু বেশি বেশি খরচ হলে আপনার পিসি অথবা ল্যাপটপ অনেকটা স্লো হয়ে যায়।
২. সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখতে পারেনা
৩. নতুন ভাইরাস চিহ্নিত করতে পারেনা
অ্যান্টিভাইরাস এর দিক দিয়ে বলতে গেলে পৃথিবীতে এখন একসাথে দুইটা কাজ হচ্ছে। একদিকে পৃথিবীতে প্রতিনিয়তই হ্যাকাররা নতুন নতুন ভাইরাস তৈরি করে বা করছে। দ্বিতীয় দিকে অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ভাইরাস এর ডেটা তাদের কোম্পানির ডেটাবেসে সংরক্ষন করে রাখছে বা রাখে। ডেটা সংরক্ষন করার পর আমাদের প্রতেকটি পিসিতে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার (যদি আপডেট দেই) প্রতিনিয়তই তাদের ডেটাবেসে থাকা সমস্ত ভাইরাসগুলো চেক করতে থাকে। অ্যান্টিভাইরাস যদি দেখে আপনার পিসিতে থাকা কোনো একটি প্রোগ্রাম এর বৈশিষ্ট তাদের লিস্টে থাকা কোনো ভাইরাস এর বৈশিষ্ট এর সাথে ম্যাচ করছে তখন অ্যান্টিভাইরাসটি সাথে সাথেই সেই প্রোগ্রামকে ভাইরাস বলে সনাক্ত করে এবং রিমুভ করে দেয়।
কিন্তু অ্যান্টিভাইরাস গুলোর এমন সিস্টেমে তারা নতুন ভাইরাস গুলোকে সনাক্ত করতে পারেনা। কারন একটি নতুন ভাইরাস যিনি তৈরি করেন তিনি খুব গোপনিয়তার সাথে ভাইরাসটি বাজারে ছড়িয়ে থাকেন। যেন কোনো কোম্পানী অথবা কোনো ডেভেলপার সেটা সনাক্ত করতে না পারে। কোনো হ্যাকার নতুন কোনো ভাইরাস মার্কেটে ছড়িয়ে দিলে সেটার ব্যবহার এবং বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে দেয়। অর্থাৎ, সেটার কোনো বৈশিষ্ট অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানিগুলোর কোনো ডেটাবেসে দেওয়া থাকেনা।
ফলে সে ভাইরাসটি অ্যান্টিভাইরাস পিসিতে থাাকার পরেও সে আপনাদের পিসির ক্ষতি করতে পারে। তখন আপনার অ্যান্টিভাইরাস সে ভাইরাসকে ভাইরাস বলে সনাক্ত করতে পারে না। বরং, সে ভাইরাসকে পিসিতে থাকার অনুমতি দিয়ে দেয়।
৪. অতিরিক্ত আপডেট আসতে থাকে
একটি অ্যান্টিভাইরাসে আপডেট এর পরিমান এত বেশি থাকে যে, তত স্পিডে সে ভাইরাস সনাক্ত করতে পারে না সে যত স্পিডে আপডেট দিয়ে থাকে। কারন আমি আগেই জানিয়েছি যে, আজকাল বাজারে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ভাইরাস যুক্ত হচ্ছে। তাই অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানী গুলোকে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ভাইরাস তাদের ডেটাবেসে যুক্ত করতে হয়। এবং সেই যুক্ত হওয়া তথ্য গুলো তাদের সফটওয়্যার যেন ব্যবহার করতে পারে এজন্য তথ্য গুলো ব্যবহারের উপোযগী করে তুলতে হয়। তথ্য গুলো সফটওয়্যার এর ব্যবহার এর উপোযোগী করে তোলার জন্য সফটওয়্যার গুলোকে প্রতিনিয়ত আপডেট রাখতে হয়।
আপনারা যারা অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করেন তারা সবসময় আপনার অ্যন্টিভাইরাস সফটওয়্যারকে আপডেট করে রাখবেন। অন্যথায় নতুন নতুন ভাইরাস আপনার পিসি অথবা ল্যাপটপে আক্রমন করবে। এর ফলে আপনি মস্ত বড় বিপদে পড়তে পারেন।
৫. আপডেট দেওয়ার আগেই ক্ষতি হয়ে যায়
তাদের দ্রুত সনাক্ত করতে না পারার কারনে ভাইরাসগুলো পৃথিবীর সমস্ত কম্পিউটার এ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এবং কম্পউটার গুলোর ক্ষতি করতে থাকে। অনেক অনেক কম্পিউটার এর ক্ষতি হবার পর বিভিন্ন ডেভেলপাররা এই কম্পিউটার ক্ষতি হবার কারন খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। কারন খুঁজে বের করতে যেয়ে ডেভেলপার এবং অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানিগুলো নতুন ভাইরাসকে সনাক্ত করতে পারে। তাই বলা যায় যে, একটি অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি যতদিনে একটি নতুন ভাইরাস এর জন্য সফটওয়্যার আপডেট নিয়ে আসে ততদিনে পৃথিবীর অনেক অনেক ডিভাইসের ক্ষতি হয়ে যায়।
শেষ কথা
অ্যান্টিভাইরাস নিয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামত
আমি যদি মতামত প্রকাশ করি, তাহলে বলি যে আপনাদের অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করার কোনোই দরকার নেই। জি, কোনই দরকার নেই। তাহলে আপনার পিসিকে সুরক্ষিত রাখবেন কি করে? এজন্য আমি ছোট্ট দুটি টিপস দিয়ে দিচ্ছি যে দুটি টিপস আপনার কম্পিউটারকে আগের থেকে বেশি সুরক্ষিত রাখবে আমি এর ১০০% গ্যারান্টি দিলাম।
অ্যান্টিভাইরাস ছাড়া কম্পিউটার ব্যবহার এর উপায়
অ্যান্টিভাইরাস ছাড়া একটি কম্পউটার সুরক্ষিত রাখার উপায় নিম্নরূপ
- ১. যেকোনো ওয়েব সাইট এর যেকোনো বড় বড় ছবি যুক্ত লিংক এ ক্লিক করে ডাউলোড করবেন। যত বড় এবং আকর্ষনিয় লিংক এ ক্লিক করবেন তত বেশি স্ক্যাম এর শিকার হবেন। এসব ওয়েব সাইট এ ডাউনলোড লিংক খুবই ছোটো থাকে এবং কিছু কিছু সময় ছোট্ট করে “Click Here” নামে লিংক করা থাকে।
- ২. আপনার কম্পিউটারে আগে থেকেই একটি অ্যান্টভাইরাস রয়েছে। সেটা হচ্ছে আপনার পিসির ডিফল্ট অ্যান্টিভাইরাস উইন্ডোজ ডিফাইন্ডার। এটা উইন্ডোজের ডিফল্ট অ্যান্টিভাইরাস হওয়ায় ইহা পুরাতন ভাইরাস এর পাশাপাশি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন নতুন ভাইরাস ব্যবহার ও বৈশিষ্ট অন্যরকম মনে হলে ইহা নতুন নতুন ভাইরাস গুলোকেও সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
এখানেই শেষ, ধন্যবাদ।
আপনি যা পোস্ট করেছেন, সেইগুলো ঠিক Theoretically. কিন্তু Practically windows defender isn’t enough. যেমন, আমার পুর্ব অবিজ্ঞতা থেকে বলি। কিছু Torjan ভাইরাস আছে যেগুলো Windows Defender ঠিক মতো protect করতে পারে না। আর ভুল করে একবার Off করে ক্রাকড ইন্সটল করে দিলে। যে ভাইরাস ঢুকে যাবে। সেটা Registry এমন ভাবে পরিবর্তন করে দিবে যে Windows Defender ডিটেক্ট করতে পারবে না। আপনার ডাটা লিকড হতে থাকবে। হাজার বার সার্চ করেও ধরতে পারবে না। আমি নিজে ভুক্ত ভোগী। আর ধারনা করি প্রায় সকল ক্রাক user এর ডিভাইস এইভাবে ইনফেকটেড হয়ে আছে। শুধু ডিফেন্ডার না, আমি নামি দামি সব গুলোই ট্রাই করেছি। কেউ ধরতে পারে না। পরে Majorgeeks থেকে Malwarebytes পাই। scan করলে দেখি ৭৪ এর বেশি active torjan বসে আছে। তাই, শুধু Windows Defender যথেষ্ট না। এই প্রমান হাজারটা পাবেন, খুজলেই।