তৃণমূল থেকে এবার কলকাতার বড়জোড়া
আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন
টালিউডের সুপারস্টার সোহম
চক্রবর্তী। তবে তিনি এ নির্বাচনে
জয়ের দেখা পাননি।
সোহম তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী
সিপিএম প্রার্থী সুজিত চক্রবর্তীর
কাছে ৬১৬ ভোটে পরাজিত
হয়েছেন।
এদিকে এবারের নির্বাচনে সোহম
জয়ী হবেন, এমনটাই আশা
করেছিলেন অনেকে। সে লক্ষ্যে
দিনরাত খেটেছিলেনও সোহম।
এরপরও তাকে অল্পকিছু ভোটের
ব্যবধানে হেরে যেতে হয়। এনিয়ে
তৃণমূল নেতৃবৃন্দসহ অবাক হয়েছেন
সাধারণও।
জানা গেছে, এই নির্বাচনে
অভিনেত্রী দেবশ্রী রায় ও
অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী জয়ী
হয়েছেন। তবে এরা জয়ী হবেন
তেমনটা আশা কেউ করেননি। অথচ
জয়ের সম্ভাবনা শতভাগ ছিল সোহম
চক্রবর্তীর। কিন্তু তিনিই পরাজিত
হয়েছেন। নিজ দলীয় কোন্দলের
ফলে এমন পরাজয় বলে মনে করছেন
অনেকে।
এদিকে এবারের নির্বাচনে দলের
প্রার্থীতালিকায় নতুন করে আর টলিউড
তারকাদের ভিড় বাড়াননি তৃণমূলনেত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শিকে ছেঁড়ার আশায় অনেকে
থাকলেও, শেষপর্যন্ত একমাত্র
সোহমই টিকিট পেয়েছিলেন।
ঘটনাচক্রে, টলিউডের এই তারকার
জন্মদিনেই তাকে বাঁকুড়া জেলার
বড়জোড়া কেন্দ্রের প্রার্থী
ঘোষণা করেছিলেন মমতা।
তবে এত কিছুর পরেও সোহম জয়ের
হাসি হাসতে পারলেন না।
সোহমের হারে বৃহস্পতিবার তৃণমূল
শিবিরের অনেকেই হতবাক। যেমন
দেবশ্রীর জয়ে তারা বিস্মিত।
দেবশ্রী যে এবার রায়দিঘিতে
জিতবেন, তা অতি বড় তৃণমূল সমর্থকও
হয়তো ভাবেননি। সম্ভবত সে জন্যই
১,২২৯টি ভোটে সিপিএমের ওজনদার
প্রার্থী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে
হারানোর পরে ডায়মন্ড হারবার মহিলা
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণনাকেন্দ্রে
আনন্দাশ্রু ধরে রাখতে পারেননি
দেবশ্রী।

আবার বারাসতে চিরঞ্জিতকে দ্বিতীয়বার
প্রার্থী করা নিয়েও দলে আপত্তি ছিল।
বারাসতে প্রার্থী করা না হলে দাঁড়াবেনই
না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত চিরঞ্জিৎ প্রার্থী
হয়েছেন এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়কে প্রায় ২৫
হাজার ভোটে হারিয়েছেন।
নিজ দলীয় কোন্দলের কাঁটা পেরিয়ে
যেখানে দুই টলিউড-তারকা জিতলেন,
সেখানে সেই কাঁটাতেই সোহম
আটকে পড়েছেন। প্রচারে কার্পণ্য
করেননি সোহম। রাত ১২টার সময়েও
ভোটারের দরজায় পৌঁছে গিয়েছেন।

এরপরও প্রার্থী হেরে যাওয়ার জন্য
দলীয় কোন্দলকে দায়ী
করেছেন স্থানীয় তৃণমূল
নেতৃত্বের একাংশ।
জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি শিবাজী
বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বড় ভাল
ছেলে। খুব খেটেছিল। হেরে
যাওয়ায় খারাপ লাগছে।’ সিপিএম
নেতৃত্বের একাংশের মতে, স্থানীয়
স্তরে দুর্নীতি-সহ নানা কারণে
বড়জোড়া আসনটি প্রথম থেকেই
তাদের অনুকূলে ছিল। সোহম প্রার্থী
হওয়ার পরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের
পরিস্থিতি তৈরি হয়।
সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, তারা মানুষকে
এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে,
প্রয়োজনে তারকা-প্রার্থীকে পাশে
পাওয়া যাবে না। এতেই সাফল্য
মিলেছে।
পরাজয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে এদিন
যোগাযোগ করা হলেও সোহম
ফোন ধরেননি। টেক্সট
মেসেজেরও জবাব আসেনি।

Leave a Reply