বাংলা সনের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নিয়ে থাকেন। সে হিসেবে এটি বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবে বিবেচিত।

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ই এপ্রিল অথবা ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। এ অনুযায়ী প্রাচীন কাল থেকেই বাংলা বারো মাসের হিসেব রাখা হত। ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতে হত। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন।

সম্রাটের আদেশমতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণ (৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে “বঙ্গাব্দ” বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়। আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপন শুরু হয়।

বর্তমান সময়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের অন্যতম প্রধান আয়োজন হচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মবার্ষিকীতে প্রথম এই আনন্দযাত্রা শুরু হয়। আবহমান বাংলার ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, গ্রামীণ সংস্কৃতি, গর্বগুলো বৃহৎ আকারে তৈরি করে উপস্থাপন করা এবং অমঙ্গল দূর করে মঙ্গলের জয়গান গাওয়া ছিল এই মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্দেশ্য।

শুরু থেকেই এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পায় এবং নববর্ষের অবিচ্ছেদ্য সার্বজনীন উৎসব হিসেবে জায়গা করে নেয়। দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যগুলোকে তুলে ধরে আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে পুরানো বছরের জঞ্জালগুলোকে ধুয়েমুছে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতেই এই আনন্দ শোভাযাত্রা। ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে নভেম্বর নতুন বছরকে বরণ করে নেবার আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ইউনেস্কো। এ অর্জন বাংলাদেশের, সকল বাঙ্গালীর।

পহেলা বৈশাখের এই আনন্দময় মুহুর্তে পুরোনো জঞ্জালকে পেছনে ফেলে আমরা নতুন দিনের নতুন অর্জনে এগিয়ে যাওয়ার আশা রাখি। নতুন বছরটি আপনার জন্য নিরাপদ কাটুক, নতুন কিছু অর্জনে মুছে যাক ব্যর্থতা আর না পাওয়ার আক্ষেপ। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

সূত্র : wowbox

ধন্যবাদ

8 thoughts on "পহেলা বৈশাখের ইতিহাস"

  1. আল-আমিন® Author says:
    এটা মুসলমানের জন্য নয়।
    1. @ishan Subscriber says:
      এডমিন তো চারাল দেইখেইতো এসব কথা লেখছে।আজকাল ট্রিকবিডিতে অনেক চারাল ট্রিউনার নেয়া হয়েছে
    2. DH SAJIB Contributor says:
      R8

      এটা হিন্দু সংস্কৃতির অন্তর্ভক্ত

    3. jubaer hasan Subscriber says:
      কোন মুসলমান পহেলা বৈশাখ পালন করবেন না,, এটা মুসলমানের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত করছে,,, এইসব হিন্দু পোস্ট আর করবেন না,,,,,,, ইসলাম সর্ব শান্তির পথ
  2. Gaffar Contributor says:
    ধন্যবাদ।
  3. Md Khalid Author says:
    shob e thik ache kintu ektukhani vul ache………. chinta korun ektu .. jekhan theke suru houk na keno, ta hishabe 500 ba 600 year er upore jacchena, tahole 1424 keno? vebe dekhechenn ki?………. jader kotha bollen tara kintu 1424 er nayear ager na…. er arek kahinii achcee ja amder vuliye dewar try kora hocchee even oneke vuleu geche……. hoyto
  4. TOMAL AHAMED0 Subscriber says:
    what a post man…gooooood
    1. Md Khalid Author says:
      comment na dekha thik na, dekha uchit

Leave a Reply