ব্লু হোয়েল (Blue whale) এর বাংলা অর্থ নীল তিমি। আক্ষিরিক অর্থে নীল তিমি হলেও বর্তমান বিশ্বে এটি প্রবল আতংকিত একটি নাম। সাম্প্রতি ডার্ক ওয়েবে ভাইরাল হওয়া একটি মর্মান্তিক চ্যালেঞ্জিং গেম হলো ব্লু হোয়েল। এটি একটি অনলাইন ভিত্তিক সুইসাইড গেম। গেমটি খেললে যে কারও মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু কিভাবে একটি গেম একজন মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে?আসলে যতদিন যাচ্ছে এটি মানুষের কাছে ক্রমেই রহস্যময় হয়ে উঠছে। অনেকেই বুঝতে পারছে না যে এর পিছনের রহস্যটি আসলে কি? আবার অনেকেই মনে করছে যে এটি আসলে একটি মিথ্যা ঘটনা যার কোন বাস্তবতা নেই। ব্লু হোয়েল এর বিস্তারিত বলতে গেলে প্রথমে বলতে হয় হলিউডের “স” মুভির কথা। মুভিটির সাথে এই গেমের অনেকাংশেই মিল রয়েছে। যারা “স” মুভিটি দেখেছেন তারা হয়ত জানেন যে একজন সিরিয়াল কিলারের ফাঁদে পরে কাহিনির মেইন চরিত্র”ড. ল্যারির” কি অবস্থা হয়েছিল। তার স্ত্রী, কন্যাকে কিডনাপ করে এবং তার পার্সনাল ইনফরমেশন হাতিয়ে নিয়ে; ব্লাক মেইল করে তাকে পরিত্যাক্ত বাথরুমে বন্দি অবস্থায় বাধ্য করা হয়েছিল একটি মর্মান্তিক গেম খেলার। তাকে বলা হয়েছিল, সে যদি তার স্ত্রী সন্তান ও বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই গেমের সবগুলো স্টেপ সঠিক ভাবে সম্পুর্ন করতে হবে। যারা “স” মুভিটি দেখেন নি তারা এখান ক্লিক করে মুভিটির রিভিও দেখতে পারেন। ব্লু হোয়েল গেমটিও “স” মুভির মতই ভিক্টিমকে বাধ্য করে গেমটির সবগুলো স্টেপ খেলতে। এটি একটি চ্যালেঞ্জিং গেম, এবং গেমটির ৫০ টি লেভেল বা স্তর রয়েছে। গেমটি প্রথম তৈরি হয়েছিল ২০১৩ সালে। “F57” নামের একটি রাশিয়ান হ্যাকার টিম (অনেক জায়গায় এরা “ডেথ গ্রুপ” নামেও পরিচিত) এই গেমেটি তৈরি করে। গেমটির মাস্টার মাইন্ডে ছিল “ফিলিপ বুদেকিন” নামের একজন রাশিয়ান যুবক।সে রাশিয়ার একটি ভার্সিটিতে “সাইকোলজি” বিভাগে অধ্যায়নরত ছিল। ভার্সিটি থেকে বহিস্কৃত হওয়ার পর, সে এই গেমটি তৈরিতে মনোনিবেশ করে বলে জানা যায়। সম্প্রতি রাশিয়ার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনি তাকে গ্রেফতার করে এবং তাদেরকে দেওয়া জবানবন্দিতে ফিলিপ জানায় যে, তরুন বয়সি ছেলেমেয়ে, সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা মানুষ এবং মানুষিক ভাবে বিকারগ্রস্থ রোগীদের টার্গেট করেই এই গেমটি সে তৈরি করেছে। সে আরও বলে যে, যারা এই সমাজের হতাশাগ্রস্থ মানুষ এবং যারা মানুষিক ভাবে বিকারগ্রস্থ তারা এই সমাজের বোঝা, সমাজে তাদের কোন প্রয়োজন নেই, মৃত্যুই তাদের কাম্য তাই এই গেমটির মাধ্যমে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে মানুষিক চাপ প্রোয়োগ করে, তাদেরকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়। আর টিনএজরা এমনিতেই চ্যালেঞ্জ প্রিয় হয়ে থাকে এবং তাদের এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই তাদেরকে গেমটি খেলতে বাধ্য করা হয়। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ব্লু হোয়েল গেমটির কারনে এখন পর্যন্ত ১৩০ জন রাশিয়ান টিনএজ এর মৃত্যু হয়েছে। এবং রাশিয়ার বাইরে অন্যান্য দেশে ৫০ জনেরও বেশি ছেলেমেয়ে মারা গেছে। ব্লু হোয়েলের শিকার গ্রীসের ১৪ বছরের একজন মেয়ে কমিউটর ট্রেনের লাইনে মাথা রেখে মারা যায় এবং সাইবেরিয়ায় ১৫ বছরের এক মেয়ে ৫ তলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে। “জুলিয়া কন্সটাটিন ওভা” এবং “ভেরনিকা ভল্ক ওভা” নামের দুইবোন সর্বোপ্রথমএই গেমের শিকার হয়। গেমটির শেষ পর্যায়ে তারা ১৪ তলা বিশিষ্ট অ্যাপার্ট্মেন্ট থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। প্রথম অবস্থায় তাদের মৃত্যুর কারণ কিছুই জানা যায় নি। মৃত্যুর আগে জুলিয়া তার ইন্সটাগ্রাম পেজে একটি “নীল তিমি” (Blue Whale)র ছবি দিয়েছিলো এবং তাতে লিখা ছিলো “the end”. এবং তার বোন ভেরনিকা লিখেছিল “sence is lost”. তাদের দুই বোনের সুইসাইড ভিডিওটি দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন। তবে যাদের হার্ট দুর্বল তাদেরকে এই ভিডিওটি না দেখার পরামর্শ রইল। শুরুতে ব্লু হোয়েল গেমটি মুলত একটি একক গেম হিসেবে রিলিজ হলেও পরে এটি আর একটি কিলার গেম “হিউম্যান এম্ব্রেডরি” এর সাথে যুক্ত হয়ে আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করে এবং অ্যামেরিকার বেশ কিছু রাষ্ট্রে যেমন, কানাডা, মেক্সিকো ও আর্জেন্টিনার মত দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৩ সালে “ব্লু হোয়েল” রিলিজ হলেও ২০১৫ সালের আগে এটি জনসম্মুখে একেবারেই অপরিচিত ছিলো এবং ২০১৬ এর আগে এর সঠিক কোন তথ্য পাওয়া জায়নি। এর আগে যারাই এ গেমটি খেলেছে তাদের মধ্যে ৯০% প্লেয়ারই সুইসাইড করেছে এবং যারা নিত্বান্তই ভাগ্যের জোরে বেঁচে ফিরেছে তাদের বেশির ভাগই মানুষিক ভাবে প্রিয় পাঠক, আপনারা হয়ত অনেকেই এর ডাউনলোড লিঙ্ক পাওয়ার জন্য গুগল, ইয়াহু অথবা অন্যান্য ওয়েব পোর্টালে সার্চ করেছেন। কিন্তু কোনভাবেই এর লিংক খুজে পাচ্ছেন না, তাই না? আসলে সত্যি কথা বলতে ইন্টারনেটে এই গেমের কোন অস্তিত্বই নেই। হয়ত বলতে পারেন যে, ইন্টারনেটে না থাকলে, যারা এই গেমটি খেলেছে তারা এটিকে কোথা থেকে পেল ! “dark web” সম্পুর্নরূপে একটি অন্ধকার জগত এবং বিভিন্ন ক্ষতিকর, অবৈধ ও খারাপ কাজের জন্যই এটি বিখ্যাত। এর ওয়েব সাইট গুলো সাধারণত খারাপ কাজের উদ্দ্বেশ্যেই তৈরি হয়ে থাকে। ইন্টারনেট জগতের ৮০-৮৫% অবৈধ ও বিভিন্ন ধরনের অপরাধমুলক কাজ মুলত “dark web” এয় সংঘতিত হয়। সাধারণত goole chrome, firefox কিংবা opera দিয়ে এই ওয়েবে প্রবেশ করা যায় না। ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করতে একটি বিশেষ ব্রাউজারের প্রয়োজন হয়। তো যাই হোক, ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে আর বেশি কিছু আলোচনা করছি না। যারা ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে জানেন না তারা এই লিংকে ক্লিক করে এর বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন। ব্লু হোয়েল ডার্ক ওয়েবেই তৈরি হওয়া একটি গেম এবং ডার্ক ওয়েব থেকে ডাউনলোড করে facebook, twitter, instagram কিমবা vk.com এ এর লিংক গুলো শেয়ার করা হয়েছিল। যারাই এই লিংকগুলো থেকে এই গেমটি ডাউনলোড করেছিল তাদের সবাইকেই বিভিন্ন মজা ও সার্প্রাইজের কথা বলে গেমটি ইন্সটল করানো হয়েছিল। তবে গেমটি এমন এক বিশেষ সিস্টেমে তৈরি করা হয়েছে যে, আপনি যে ডিভাইসেই এটি ইন্সটল দেন না কেন পরবর্তীতে আর কখনোই এটিকে আনইন্সটল করতে পারবেন না। আর এটি একবার ইন্সটল হয়ে গেলেই এর মাধ্যমে এই গেমের টিম আপনার ip location সহ সকল প্রকার পার্সনাল ইনফরমেশন ট্রাক করতে শুরু করবে এবং আপনাকে বাধ্য করবে গেমটি খেলতে। সুতরাং, বুঝতেইপারছেন যে এই গেমটি কতখানি ভয়ংকর। আমি এতক্ষন আপনাদের ব্লু হোয়েলের বাইরের অংশ অর্থাৎ, বিভিন্ন দেশের জনসমাজে এর কতখানি ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করেছে, সে সম্পর্কে আলোচনা করলাম। আশাকরি কিছুটা হলেও গেমটির সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন এবং এটি আসলেই যে একটি কিলার গেম সেটাও বিশ্বাস করতে পেরেছেন। তাহলে আসুন এখন জানি গেমটির ভিতরের অংশ অর্থাৎ কি এমন আছে এই গেমের ভিতরে যা কিনা সকলকেই এর প্রতি আকৃষ্ট করছে ! এর সম্পর্কে বলার আগে আমি আপনাদেরকে একটি উদাহরণ দিতে চায়, আপনারা অনেকেই হয়তব “কলসি গাছের” নাম শুনেছেন। এই গাছটির বিশেষ্যত্ব হলো, এটি পোকা-মাকড় খায়। পোকা-মাকড় ধরার জন্য গাছটি কলসির মতো দেখতে একটি বিশেষ ফাঁদ তৈরি করে এবং এই কলসির ভিতর থেকে এক ধরনের চকচকে আঠালো জাতীয় রস নিঃসৃত্ব করে। যখন কোন কীট-পত্বঙ্গ এই গাছের আশেপাশে যায়, এর চকচকে অংশ দেখে প্রথমেই আপনাদেরকে বলেছি যে, এটি একটি চ্যালেঞ্জিং গেম এবং এর ৫০ টি চ্যালেঞ্জ লেভেল বা স্তর রয়েছে। এটি মুলত একটি অনলাইন গেম অর্থাৎ ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়া এই গেমটি খেলা যাবে না। গেমটির প্রতিটি লেভেল পুরনের আগে ও পরে গেমের টিম মেম্বাররা প্লেয়ারদের সাথে যোগাযোগ করে এবং পূর্ববর্তী লেভেল সঠিকভাবে সম্পুর্ন করতে পারলেই তাকে পরবর্তী লেভেল খেলার সুযোগ দেওয়া হয়। যেহেতু ব্লু হোয়েল টিনএজ অর্থাৎ ১৪-১৮ বছরের ছেলেমেদের উদ্দেশে তৈরি করা হয়েছে সেহেতু তাদেরকে ইম্প্রেস করার জন্য অনেক কিছুই রয়েছে এই গেমের ভিতর। আর এই বয়সি ছেলেমেয়েরা এমনিতেই প্রতিযোগিতা প্রবন বা চ্যলেঞ্জপ্রিয় হয়ে থাকে। এরা অপরিচিত মানুষদের বেশি বিশ্বাস করে এবং বাস্তব জগতের চাইতে অবাস্তবকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। এরা যেকোন চ্যালেঞ্জ গ্রহনের জন্য প্রস্তুত থাকে। যেমন ধরুন তিন বন্ধু, তাদের নাম যথাক্রমে A,B,ও C. এবং তাদের উভয়ের বয়সই ১৪-১৫ এর মাঝামাঝি। তারা তাদের স্কুলের মাঠে খেলা করছিল। মাঠের পাশে একটি বিশাল গাছের কাছে এসে B ও C এর মাথায় একটি নতুন বুদ্ধি উদয় হয়। A ছিলো B ও C র চাইতে কিছুটা ছোট। B এবং C লম্বায় A থেকে খানিকটা বড় হওয়ায় তাকে অনেকটা ভেংচি কেটে বলে উঠলো যে, দেখ A. তোর মতো একটি পুচকে ছেলে এই গাছটিতে কখনোই উঠতে পারবে না। A তখন টাকার জন্যই হোক অথবা নিজের পার্সনালিটি রক্ষার জন্যই হোক সে গাছটিতে উঠতে আরম্ভ করে। সে ভাবে না যে, এত বড় একটি গাছ বেয়ে উঠা তার পক্ষে আসলেই সম্ভব কিনা! কিংবা এই বিশাল গাছেটি থেকে পড়ে গেলে হাত-পা ভেঙ্গে গেলে কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, তাতেও তার কিছু যায় আসে না। তার কাছে এই গাছে উঠাটাই সবথেকে বড় কথা, কারন তারা তার পার্সনালিটিতে আঘাত হেনেছে। বেশির ভাগ টিনএজারা মুলত A, B ও C এর মতই অত্যাধিক চ্যালেঞ্জ প্রবল হয়ে থাকে। আবার অনেকেই আছে যারা সবার সাথে মিশতে পছন্দ করে না অথবা স্কুলে কিছু নির্দিষ্ট ফ্রেন্ড ছাড়া ক্লাসে আর কারও সাথেই মিশে না। যদি কোন দিন তার নির্দিষ্ট ফ্রেন্ড স্কুলে অনুপস্তিত থাকে, তাহলে তাদের আর কিছুই ভাল লাগে না। তখন বাধ্য হয়ে ক্লাস না করেই বাসায় ফিরে আসে। আবার বাসায় ফিরে এসেও একি অবস্থা হয়ে দাঁড়ায়। নিজের ঘরে বসে থেকে চ্যালেঞ্জিং এর আরও একটি মুল মাধ্যমে হচ্ছে টেলিভিশন। টেলিভিশনে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রায়সই বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জিং অনুষ্ঠান প্রচার হয়ে থাকে। যেমন, কোন অনুষ্ঠানে দেখানো হয় একটি কালো কাপড় দিয়ে প্রতিটি প্রতিযোগিদের চোখ বেঁধে বেধে দেওয়া হয় এবং হাতে কিছু সংখ্যক বল দিয়ে তাদের ৮-১০ ফুট সামনে থাকা ছোট ঝুড়িতে বলগুলো ফেলতে বলা হয়, আবার অনেকসময় ঝুড়িতে অনেকগুলো বিভিন্ন রঙের বল রেখে দেওয়া হয় আর প্রতিযোগিদের বলা হয় যে, ৩০ অথবা ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে ব্লু হোয়েল গেমটি যখন কেও ওপেন করে তখন তাকে প্রথম চ্যালেঞ্জ আনলক করার জন্য রিকোয়েষ্ট করতে হয়। এরপর গেম এর টিম মেম্বাররা তার সাথে যোগাযোগ করে আর সে যদি টিনএজ হয় তাহলে তো কোন কথায় নেই। তখন তাকে বলা হবে যে, সে চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে আগ্রহী কি না? যদি আগ্রহী হয় তাহলে তাকে একটি ওয়ার্নিং দেওয়া হয় যে, এ গেমটির সবগুলো চ্যালেঞ্জ কমপ্লিট করতে গিয়ে তোমার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে, যদি রাজি থাকো তাহলে Accept কর অন্যথায় এটিকে আর এভাবেই unlock করে দেওয়া হয় গেমটির প্রথম চ্যালেঞ্জ। আমি প্রথমেই বলেছি এই গেমটির প্রথম ১০ টি লেভেল খুবই সহজ, আকর্ষনীয় ও চমকপ্রদ। সাধারণত বলা হয়ে থাকে যে, যার আকর্ষন করার ক্ষমতা যত বেশি মানুষ তাকে ততোবেশি ভালোবাসে ও বিশ্বাস করে। গেমটিও একই কৌশল অবলম্বন করেছে। এটি শুরুতে খুবই মনভোলানো কথাবার্তা, মজার টিপস এবং ছোট ছোট চ্যালেঞ্জ দিয়ে যে কাওকেই আপন করে নেয়। তবে এর আকর্ষন করার ক্ষমতা এতটাই প্রবল যে, প্রথম ১০টি চ্যালেঞ্জ কম্পিলিট হওয়ার পর গেমারকে পরবর্তী ১০ লেভেল খেলার জন্য প্রিপেয়ার করানো হয়। যেহুতু টিনএজরা কল্পনা প্রবল হয়ে থাকে সেহেতু এই লেভেল গুলোতে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে প্রচুর কল্পনা করানো হয়। আর এই পর্বেও চলতে থাকে ছলেবলে কৌশলে তাদের পার্সনাল ইনফরমেশন হাতিয়ে নেওয়ার কাজ। আর একজন প্লেয়ার নিজের অজান্তেই তাদেরকে সব তথ্য দিতে থাকে। প্রথম ২০টি চ্যালেঞ্জ কম্পিলিট হওয়ার পর পরবর্তী ২১-৩০ নং লেভেলে গেমার টিম তাদের কৌশল পাল্টে ফেলে। কারণ ইতিমধ্যেই তারা একজন গেমারের ছোট-খাটো সকল তথ্য ও পার্সনাল ইনফরমেশন নিয়ে নেয়। এবং এর পরই তারা গেমারকে বেশ কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই পর্বের চ্যালেঞ্জগুলোর অনেকটা “হিপন্সিস” এর মাধ্যমে ঘটানো হয়। হিপ্নসিস হলো মানুষের মস্তিস্ক নিয়ন্ত্রন করার একটি প্রক্রিয়া। আর এই প্রক্রিয়াকে নিখুত ভাবে কাজে লাগিয়ে গেমারকে পরবর্তী চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত করা হয়। যেমন, ঠান্ডার রাতে একটা হালকা ড্রেস পরে সারারাত জেগে হাকা এবং সারাদিন না খয়ে থাকা, পরিবারের সাথে ঝগড়া করা এবং বাড়ি থেকে টাকা চুড়ি করা, ঘনিষ্ট বন্ধু-বান্ধবের একান্তই কিছু ব্যক্তিগত জিনিশ চুরি করা এবং প্রমান হিসেবে সেগুলোর একটি করে ফটো আপলোড দেওয়া ইত্যাদি। ২৫ লেভেলের পর গেমারকে বিভিন্ন ড্রাগ নিতে অভ্যাস্ত করা হয় এবং খুব সুক্ষভাবে হিপ্নসিসের মাত্রা বৃদ্ধি করে লেভেল ৩০ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ৩০ টি চ্যালেঞ্জ সম্পুর্ন হলে ব্লু হোয়েল টিম আরও বেশি কৌশলী হয়ে উঠে এবং তারা পরবর্তি লেভেল গুলো একেবারেই আনলক করতে চাই না। আর এদিকে ৩০ টি লেভেল কম্পিলিট করে একজন গেমারের অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, সে পরবর্তী চ্যালেঞ্জ পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে এর জন্য সে যেকোন কিছু করতে করতে প্রস্তুত থাকে। আর তারা এটাকেই সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে তারা গেমের ৩১ নং চ্যালেঞ্জ আনলক করে দেয় আর তাতে বলা হয় যে, তুমি নগ্ন পোজে বেশকিছু ফটো তুলে আমাদের কাছে আপলোড করো। ৪০ টি চ্যালেঞ্জ কম্পিলিট হওয়ার পর গেমার এতটাই মানুষিক ভাবে বিকার গ্রস্থ ও ভীত হয়ে পরে যে, সে বার বার ব্লু হোয়েল টিমকে রিকোয়েষ্ট করতে থাকে, সে আর এই গেমটি খেলতে চায় না, সে আর চাপ নিতে পারছে না, তাকে ছেড়ে দেওয়া হোক। কিন্তু ব্লু হোয়েল টিম তাকে আরও বেশি চাপ প্রয়োগ করতে তাকে ব্লাক মেইল করতে শুরু করে। বলে যে, তুমি যদি পরবর্তি চ্যালেঞ্জ গ্রহন না কর। তাহলে তোমার নগ্ন ফটো গুলো তোমার ফেসবুকে টিউন করে দেওয়া হবে, তোমার ড্রাগ নেওয়ার সকল প্রমান পুলিশকে দিয়ে দেওয়া হবে, তোমার সেক্স করার ফটোগুলো তোমার বাবা-মায়ের কাছে প্রকাশ করে দেওয়া হবে, ফ্রেন্ডদের ব্যক্তিগত জিনিশ ও বাড়িতে টাকা চুড়ির ঘটনাগুলোও প্রকাশ করে দেওয়া হবে। তাদের এই ধরণের কথা শুনে গেমার আরও বেশি আতংকিত হয়ে পরে এবং অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাধ্য হয় পরবর্তি চ্যালেঞ্জ accept করতে। সুতরাং আবার তাক বাধ্য করা হয় শরীরে ব্লেড কিংবা ছুরি চালাতে এবং ভারি মাত্রার ড্রাগ নিতে। গেমার যখন আর এ সব চাপ নিতে পারে না তখন সে আপন মনেই আত্নহনের পথ বেছে নেয়। গেমটির ৫০ নম্বর চ্যালেঞ্জে বলা হয়, নির্দেশনা পাওয়ার সাথে সাথেই গেমার ড্রাগটি সংগ্রহ করে ফেলে এবং সেটি নিয়ে একটি ১৫ তলা আপার্ট্মেন্টের একবারে কিনারায় দাঁড়িয়ে সেটিকে নিজের শরীরে পুশ করে দেয়। পুশ করার একটি সেলফি তুলে সেটি ব্লু হোয়েলে আপলোড করে এবং এর টিম মেম্বাররা এটি নিশ্চিত হয়ে তাকে কংগ্রাচুলেশন্স জানায়। বলে তুমি এই গেমের সকল লেভেল সম্পুর্ন করেছ এবং তোমাকে আমাদের আর দরকার নেই, তাই আজ থেকে তুমি মুক্ত। নিচে তাকিয়ে দেখ তোমার গন্ত্যব্য তোমাকে ডাকছে, সূতরাং, ব্লু হোয়েলের আরও আকর্ষনীয় বিষয় হলো এর simple graphical interface. এবং প্রতিটি চ্যালেঞ্জের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে থাকা এর বেশ কিছু ব্রেইন ওয়াশ background music. গেমটির গ্রাফিক্স খুব সিম্পল হলেও এর পুরো ইন্টারফেস সকলেরই পছন্দ হবে। আর একজন মানুষকে মেডিটেট করার জন্য মিউজিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মানুষকে হিপ্নসিস করার ক্ষেত্রে কিছু মিউজিক বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ব্লু হোয়েলে এই বিষইটিকে খুব সুন্দর ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। অনেকেই হয়তো ভাবছেন যে, একটি মিউজিক কিভাবে মানুষের ধ্যান-জ্ঞানকে এক করে ফেলতে পারে।কিন্তু আসলে এটিও সম্ভব। মধ্যযুগে ইরানের কিছু দস্যুরা দস্যুবৃত্তির জন্য এক বিশেষ কৌশল অবলম্বন করেছিল। নির্জন মরুভূমিতে যখন কোন কাফেলা যেত, তারা তার আশেপাশে সন্তুর (ইরানি বাদ্যযন্ত্র) এর এমন এক রাগ সৃষ্টি করত যে, কাফেলার সকল লোকজন সে সুরে বিমহিত হয়ে পরত আর মাতাল হয়ে স্থির দাঁড়িয়ে থাকত। এই সুযোগে দস্যুরা তাদের সমস্ত অস্ত্রসস্ত্র, ধনসম্পদ ও মালামাল লুট করত। ব্লু হোয়েলের টিমও একই কৌশল কাজে লাগিয়েছে। গেমারকে ভারি কোন চ্যলেঞ্জ দেওয়ার আগে তাকে ড্রাগ এবং গেমটিতে কিছু ব্রেইন ওয়াস মিউজিক চালিয়ে দেওয়া হতো। হিপ্নসিস করার পূর্বে তারা এই মিউজিক গুলোকে প্রধান হাতিয়ার গেমটিতে বেশকিছু ব্রেইন ওয়াশ মিউজিক রয়েছে। তবে “all I want” নামের মিউজিকটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়।এটি ইন্টারনেটে avalable আছে। গেমের মতই এটিও সমান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরকম আরও একটি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এই গেমে রয়েছে। মিউজিকটির টাইটেল হলো “Runway”.তবে ইন্টারনেটে এর কোন avility নেই। আমি অনেক খুজেও এর কোন হদিস বার করতে পারি নি। তবে “All I want” মিউজিকটি আপনি ইচ্ছা করলেই শুনতে পারবেন। ব্লু হোয়েল গেমটি বিদেশে বেশ আতংক ছড়িয়ে রাখলেও আমাদের দেশে এর কনো প্রভাব নেই। রাশিয়াসহ বাইরের বেশকিছু রাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই গেমটি নির্মূল করার ব্যপারে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেই সব দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ডার্ক ওয়েবের বিভিন্ন সাইট access করছে এবং বিভিন্ন জাইগায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই গেমের লিংক গুলোকে জব্দ করছে। বাংলাদেশে এর কোন প্রভাব না থাকলেও এর জন্য গনসচেনতা জাগিয়ে তুলা খুবই জরুরি। কেননা কেও জানে না কে কখন এই গেমের শিকার হয়ে পরবে। তাই এখনই সচেতন হোন এবং অপরকে সচেতন করুন। নিজের ছেলেমেয়েদের প্রতি খেয়াল রাখুন, তারা ফোনে অথবা পিসিতে কি করছে, কোন সাইটে আমার লাইফে এ পর্যন্ত কোন দামি ফোন ইউজ করার সুযোগ হয়নি। অথচ আজকাল কার বাচ্চাদের দেখা যায়, তারা লেটেস্ট আইফোন নিয়ে ঘুরাঘুরি করছে। এটা ঠিক না। স্মার্টফোনে ব্লু হোয়েলই যে একমাত্র আতংক তা কিন্তু নয় একজন বাচ্চার কাছে একটি স্মার্টফোন থাকলে তার কি পরিমান ক্ষতি হতে পারে তা নিশ্চয় আপনাদেরকে বুঝাতে হবে না। তাই আবারও বলছি তাদেরকে স্মার্টফোন দেওয়া থেকে বিরত রাখুন। তাদের প্রতি যত্নবান হন, কাজের চাপে তাদের কখনই দূরে সরিয়ে দিবেন না। প্রতিদিন রাতে অন্তত পক্ষে এক ঘন্টা করে হলেও তাদেরকে সময় দিন এবং তাদের ভালোমন্দের প্রতি খেয়াল রাখুন। শাষন করতে হলে মেরে শাসন করবেন না, শেষ করার আগে আর একটি কথা, অনেকেই মনে করছেন যে, যেহুতু ব্লু হোয়েলের নির্মতাকে অ্যারেষ্ট করা হয়েছে সেহুতু এটি আর কোন আতঙ্কের বিষয় না। এটা একেবারেই ভুল। এর নির্মাতাকে গ্রেফতার করা হলেও এর টিম মেম্বাররা বিভিন্ন দেশে থেকে গেমটিকে সক্রিয় রেখেছে। আর যেহেতু এর ভয়াবহতা সবাই জেনে ফেলেছে সেহুতু এটি নতুন কোন কৌশলে আবার হাজির হতে পারে। তাই সাবধান হোন। কোন আজেবাজে লিংকে ঢুকবেন না কিংবা কোন আকর্ষনীয় অ্যাপ বা গেম দেখা মাত্রই ইন্সটল করে ফেলবেন না। কোন অ্যাপ বা গেম ইন্সটল করার আগে অন্তত্বঃপক্ষে একবাবের জন্য হোলেও ভেবে নিন যে, আসলেই এটি আপনার প্রয়োজন আছে কিনা। যদি না থাকে তাহলে তাকে এড়িয়ে চলায় ভালো। আপনার বন্ধু-বান্ধব কিংবা আশেপাশের কোন পরিচিত মানুষকে, ফেসবুক, টুইটার অথবা ইন্সটাগ্রামে #IaminWhale লিখে কোন টিউন করতে দেখেন তাহলে বুঝে নিবেন, সে ব্লু হোয়েলের শিকার হয়েছে। কেননা এই গেমের কোন এক চ্যালেঞ্জে প্লেয়ারকে সবশেষে আমি আপনাদের দুইটি ভিডিও দিচ্ছি। যাদের ব্লু হোয়েল সম্পর্কে এখনো কৌতুহল মিটে নি, তার প্রথম ভিডিওতে দেখতে পাবেন, গেমটি ইন্সটল করার পর এতে ০১ থেক ৫০ লেভেল পর্যন্ত কি কি চ্যালেঞ্জ থাকে এবং দ্বিতীয় লিংকে দেখতে পাবেন এই গেমটির শিকার হয়ে একজন চাইনিজ তরুনি কিভাবে মৃত্যর পথ বেছে নিচ্ছে। দুটো লিংকই নিচে দেওয়া রইলো। যাদের ইচ্ছা হবে, দেখে নিবেন। ধন্যবাদ সবাইকে। blue whale all challenges: view this link blue whale chinese documentary: view this link বিঃদ্রঃ পোষ্টটি সংগ্রহীত
২০১৫ সালে সর্বপ্রথম সোসিয়াল মিডিয়া “VKontakte(vk.com)” এ এর লিঙ্ক শেয়ারের মাধ্যমে এটি তুমুল ভাইরাল হয়ে পরে এবং অনেকেই গেমটি ডাউনলোড করতে শুরু করে।
সম্প্রিতি ভারতের মুম্বায়ে এই গেমটি খেলতে গিয়ে একজন তরুন আত্মহত্যা করে এবং ভারতের মিডিয়ায় এটি খুব চাঞ্চল্যকর তথ্য হয়ে দাঁড়ায়। সে দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও সোসিয়াল মিডিয়ার মাধ্যমে সবাইকে এই গেম থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। সাধারণত মধ্যম আয়ের দেশের ছেলেমেয়েরাই এই গেমে বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে তবে কিছু কিছু অধিক উন্নত রাষ্ট্রেও এটি ছড়িয়ে পরছে, এদের মধ্য যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও চীন উল্লেখযোগ্য।
“হিউম্যান এম্ব্রেডরি” এটি একটি কিলার গেম হলেও এর ধরণ “ব্লু হোয়েল” থেকে সম্পুর্ন আলাদা। তবে এটির সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য এখনও পাওয়া যায় নি। এর তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে, সঠিক তথ্য পাওয়া গেলে এটির সম্পর্কেও বিস্তারি আলোচনা করা হবে।
বিকারগ্রস্থ অথবা ভয়ে তাদের অবস্থা এতটাই শচনীয় হয়েছে যে, তারা কোন ভাবেই এর সম্পর্কে মুখ খুলার সাহস পাইনি। ২০১৫ এর মাঝামাঝি সময়ে আর্জেন্টিনার এক তরুন গেমটির প্রথম ২০ লেভেল কম্পিলিট করে এর সম্পর্কে পুলিশের কাছে ক্লেম দিলেও সেখানকার পুলিশ খুব একটা গুরুত্ব দেয় নি।
২০১৬ সালে “নোভায়া গেজেটা” নামক একটি রাশিয়ান ম্যাগাজিন সর্বপ্রথম এর সম্পর্কে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করে। তাদের জরিপ অনুযায়ী এই গেমটি খেলে রাশিয়ায় ১৩০ জন তরুন-তরুনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয় এবং গেমটির বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করা হয়। উক্ত খবর প্রকাশের পর রাশিয়ায় গেমটিকে তদন্তাধীন রাখা হয় এবং সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনি গেমটির মাস্টার মাইন্ডদের কে গ্রেফতারের জন্য তৎপর হয়।
আমি আপনাদের প্রথমেই বলেছি যে, এটি ডার্ক ওয়েবের একটি গেম। আমরা যে ইন্টারনেট পোর্টাল ইউজ করি সেটির নাম “world wide web” এবং গুগল, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি এসবই কিন্তু “world wide web” এরই একটি অংশ। আর আমাদের এই ইন্টারনেট জগতের বাইরে আরও একটি বিশাল জগত রয়েছে যার নাম “dark web”.
এটি “world wide web” থেকে একেবারেই আলাদা এবং সম্পুর্ন বিপরীত একটি ইন্টারনেট জগত।
আকৃষ্ট হয়ে কলসির ভিতেরে প্রবেশ করে আর প্রবেশের সাথে সাথেই পোকাটি আঠায় আঁটকে যায়। এই সুযোগে গাছটি তার কলসির মুখ বন্ধ করে এবং পোকাটিকে খেয়ে ফেলে। খাওয়ার পর কলসির মুখ খুলে যায় এবং রস নিঃসরণ করে আবার চলতে থাকে নতুন শিকারের আয়োজন।
আবার অনেকেই দেখে থাকবেন যে, মাকড়াসার জালে আঁটকে পরা মাছি কিংবা কোন পোকার কি অবস্থা হয়। আঁটকানো অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এরা যতই ছুটাছুটি করে ততবেশি তারা জালে আঁটকে পড়ে।
ব্লু হোয়েল গেমটিও কলসি গাছ কিংবা মাকড়াসার জালের মতই পাতা একটি ফাঁদ। যে কেও এর ভিতরে প্রবেশ করলে এর থেকে বেরিয়ে আসার আর কোন সুযোগ থাকে না।
গেমটির প্রথম ১০ লেভেল একেবারেই সোজা এবং যে কেওই এটি পুরন করতে পারবে। যেমন, বলা হবে সকাল ০৪:২০ এ উঠতে হবে, একটি হরর মুভি দেখতে হবে, আপনার প্রিয় খাবার খেতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু এর লেভেল যতই বাড়তে থাকে ততো বেশি এটি ভংকর রূপ ধারণ করতে থাকে। এবং এর ৫০ নং লেভেলে প্লেয়ার কে সুইসাইড করার চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়। আর খুব কম মানুষই আছে যারা এর থেকে বেঁচে ফিরেছে।
তখন খুব স্বাভাবিক ভাবেই A এর মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। তার মতো একটি বড় ছেলেকে পুচকে বলছে, আবার বলছে যে এই গাছটিতে সে উঠতে পারবে না। এটা কিছুটা হলেও তার পার্সনালিটিতে আঘাত করেছে। সুতরাং, সে নিজের অজান্তেই বলে বসে, কে বলেছে তোদের যে, আমি ওটাতে উঠতে পারব না, দেখতে চাস? তখন B আর C একসাথে বলে বসে, আমরা ৫০ টাকা করে বাজি ধরে বলতে পারি যে, তুই এটাতে উঠতে পারবি না।
অথবা টিভি দেখে দেখে তারা টায়ার্ড ও বোরড হয়ে যায়। তখন তাদেরকে একাকিত্ব ঘিরে ফেলে। শহরের বেশির ভাগ ছেলেমেদেরই একই অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, কিংবা ইন্সটাগ্রাম চালিয়েও তারা Bored হয়ে পরছে এবং একাকিত্ব তাদের গ্রাস করে ফেলছে। এই একাকিত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তাদের নতুন কিছু চাই আর এর জন্যই তারা ইন্টারনেটে বিভিন্ন আজেবাজে বিষয় সার্চ করতে থাকে এবং বিভিন্ন লিংকে ক্লিক করতে থাকে,
কিছু নির্দিষ্ট রঙের বল আলাদা করতে বলা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে সবথেকে বেশি বল আলাদা করতে পারে তাকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়। আর প্রতিটি অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের আকর্ষনীয় সব পুরুস্কার দেওয়া হয়। এসব ছোট ছোট চ্যালেঞ্জের বাইরেও অনেক বড় বড় হার্ড চ্যালেঞ্জিং অনুষ্ঠানও প্রচার হয়ে থাকে যেমন, বিভিন্ন সাইন্স চ্যানেলে প্রচারিত “wild life chalenging program” যেখানে এক বা একাধিক মানুষকে পৃথিবীর এমন সব বিপদজনক স্থানে রেখে আসা হয় যেখানে
পদে পদে রয়েছে মৃত্যুর আশংকা। আধুনিক কোন সরঞ্জাম ছাড়া সম্পুর্ন বন্য উপায়ে জীবন-যাপন করতে হয় এবং মৃত্যুর মুখে নিজের জীবনটাকে টিকিয়ে রাখাটাই সবচাইতে বড় চ্যলেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেই আছেন যারা এই ধরনের চ্যলেঞ্জ গ্রহণ করে থাকেন। এদের মধ্য “বিয়ার গ্রিলস” কে তো আমরা সবাই চিনি।
Reject করে দাও। তখন একজন টিনএজার ভাবে যে আমি তো গেমটি আমার ঘরে বসে খেলব তাই তারা আমার কি এমন ক্ষতি করতে পারবে, so, আমি এটা accept করেই দেই। এর একটি নমুনা হলো –
victim – I want to play the game.
blue W. team – R u sure? There’s no way to go back.
– Yes. What does that mean? No way back?
– You can’t leave the game once u begin.
– am ready.
– carry out each task diligently and no one must know about it.
when u finish a task u send us a photo. at the end of the game,
u die. R u ready?
– And if I wanna get out?
– We have all your information. They will come after u.
bt don’t worry. The first chalenge has unlock for u.
যারায় এই গেমটি খেলেছে, তাদের সবাই এর প্রথম ১০ লেভেল খেলার পর এটিকে তাদের নিজের জীবনের একটি অংশ বানিয়ে ফেলেছিল। গেমটিতে তাদেরকে যে তথ্য দেওয়া হতো তারা যাচাই বাছাই না করেই তা বিশ্বাস করে ফেলত এবং সে অনুযায়ী কাজ করত। কারণ তারা জানত, যাকে জীবনের একটা অংশ বানিয়েছি সে নিশ্চই আমাদের সাথে কোন বেইমানি করবে না। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই তাদের ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম এর পাসওয়ার্ড সহ বিভিন্ন পারসনাল ইনফরমেশন
হাতিয়ে নিতে শুরু করা হয়।
এই পর্বে ১৫ লেভেলের পর গেমারকে একটি নীল তিমির একটি ছবি আঁকতে শেখানো হয় এবং পরবর্তী কোন এক লেভেলে ব্লেড দিয়ে হাত কেটে উক্ত ছবিটি আঁকতে বলা হয়। বলা হয় যে, ব্লেড অথবা সুচ দিয়ে তোমার হাতে একটি ব্লু হোয়েলের (নীল তিমির) ছবি আঁক, কিন্তু সাবধান এর ক্ষত যেন বেশি গভীর না হয়। আর এভাবেই শেষ হয় আরও দশটি লেভেল।
গেমার তখন ড্রাগের কারণে হোক অথবা হিপন্সিস জনিত কারনেই হোক সে গেমটার প্রতি এতটাই অ্যাফেক্টেড হয়ে পরে যে সে নিজের নগ্ন ফটো আপলোড দিতেও দ্বিধাবোধ করে না। আর এ ভাবেই গেমটি তাকে পরবর্তী লেভেল গুলোতে বাধ্য করে অতি ভারিমাত্রার ড্রাগ নিতে, কারও সাথে সেক্স করে তার ফটো আপলোড দিতে আর গেমটির ৪০ নং চ্যালেঞ্জে বলা হয় যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অন্তত পক্ষে ২৫ থেকে ৩০ টা সুচ প্রবেশ করিয়ে তার একটি ফটো আমাদের কাছে সেন্ড করো।
এটি সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ, এর পর আমরা তোমাকে আর কোন ভাবে বিরক্ত করব না। এই চ্যালেঞ্জে তোমাকে আমাদের দেখানো নির্দেশনা অনুযায়ী শেষবারের মত একটি ড্রাগ সংগ্রহ করতে হবে। এটি নিয়ে কোন একটি উচু বিল্ডিং এর ছাদে উঠতে হবে এবং একেবারে কিণারায় দাড়িয়ে এটি তোমার শরীরে পুশ করতে হবে এবং প্রমান সরুপ এর একটি সেলফি তুলে আমাদেরকে দিতে হবে, যাতে করে আমরা বুঝতে পারি যে, তুমি সকল নির্দশনা গুলো সঠিক ভাবে পুরণ করেছ আর এরপরই তোমাকে সকল পার্সনাল ইনফরমেশন ফিরিয়ে দেওয়া হবে, তুমি গেমটিকে আনইন্সটল করতে পারবে এবং তুমি সেফ থাকবে।
বেশি দেরি করো না, এক্ষনি ঝাঁপ দাও। আর গেমার তখন ড্রাগ অ্যাফেক্টেড থাকার কারনে সম্পুর্ন হীতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং বুঝতে পারে না যে, তাকে কি করতে হবে। প্রচন্ড ঘু্মের চাপে তার চোখ বন্ধ হয়ে আসে, সে চারদিকে ঝাপসা দেখতে শুরু করে। নিজের অজান্তেই সে সত্যি সত্যিই ঝাঁপ দিয়ে বসে এবং নিজের মুক্তির পথ খুজে নেয়। আর ব্লু হোয়েলও খুজতে থাকে তার পরবর্তী শিকারকে।
হিসেবে ব্যবহার করত। এর ফলসরুপ গেমারের ধ্যান, মন ও জ্ঞান একটি বিন্দুতে পরিনত হত আর তাকে বাধ্য করা হত সামনের চ্যলেঞ্জগুলোকে accept করতে।
ব্লু হোয়েলের তৈরি করা একটি ভিডিওসহ মিউজিকটি এই লিংকে দেওয়া আছে। আপনারা যারা শুনতে চান তারা এই লিংকে ক্লিক করে শুনতে পারেন। ভিডিও সহ পুরো মিউজিকটিই এখানে দেওয়া আছে। কেউ যদি ভাবেন যে এটি আমার কতখানি ব্রেইন ওয়াস করতে পারবে? তাহলে আমি বলব রাত 02:00 am এর পর অন্ধকার একটি ঘরে রিলাক্স হয়ে বসে অথবা শুয়ে মিউজিকটি শুনুন, আশা করছি নিজেই এর উত্তরটি পেয়ে যাবেন। এটি প্রথাগত ধারার বাইরের একটি মিউজিক। এটি শুনার পর কিছুটা হলেও আপনি নতুনত্বের স্বাদ পাবেন।
ঢুকছে, কোথায় যাচ্ছে, কাদের সাথে মিশছে, এসব বিষের প্রতি যত্নবান হোন। আর বাবা-মায়দের আমি অনুরোধ করে বলছি, প্লিজ আপনারা কেউ আপনাদের ১৪-১৫ বছরের সন্তানদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিবেন না। তারা যতই বায়না করুক না কেন। ছেলেমেয়ে বায়না করবেই, কিন্তু তাদের সব বায়না পুরণ করে দেওয়া মানে তাদেরকে ধংশের মুখে ঠেলে দেওয়া। সুতরাং, সাবধান হন। তাদেরকে কোন মতেই স্মার্টফোন কিনে দিবেন না। যদি বাসা থেকে স্কুল খুব দূরে হয় এবং স্কুলে থাকা অবস্থায় ছেলেমেয়ের সাথে যোগাযোগ করার প্রয়োজন হয় কিংবা একান্তই কোন প্রয়োজনে তাদেরকে যদি ফোন দিতেই হয়, তাহলে একটি নরমাল কথা বলা ফোন দিন। এতে করে আপনার যেমন উদ্দেশ্য পুরন হবে
অন্যদিকে আপনার সন্তানও সেফ থাকবে।
তাদেরকে বুঝিয়ে বলুন অথবা হালকা ভাবে শাসন করুন। কোন ভুল করলে নিজ দায়িত্বে তাদের ভুলগুলোকে শুধরিয়ে দিন এবং তাদের ভিতর সামাজিক ও ধর্মীয় মুল্যবোধ জাগিয়ে তুলুন। তাহলে দেখবেন তারা কখনো আর ভুল পথে যাবে না এবং আপনারাও তাদের কাছে আজিবন শ্রেষ্ঠ বাবা-মা হয়েই থাকবেন। আর এভাবেই সন্তানদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে বলে আশা করছি।
বলা হয়, সোসিয়াল মিডিয়ায় #IaminWhale লিখে হ্যাস ট্যাগ দিতে। এরকম কোন টিউন দেখলে তাকে অবশ্যই গেমটির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্ক বলুন এবং গেমটি খেলতে নিষধ করুন, তার ফ্যামিলিতে ব্যাপারটি জানান আর তাকে মৃত্যর হাত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করুন।পূর্বে প্রকাশিতঃ 24WorldTips.Ml এই সাইট এ
Share:
29 thoughts on "ব্লু হোয়েলের ভয়াল থাবা"