আলোচনাঃ
শীততাপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র (এসি) থেকে আমরা পানি বের হতে দেখি। এ পানির উৎস কি তা জানানোর আগে আমি কিছু বিষয় আলোচনা করে নেই যা দৈনন্দিন জীবনে দেখে থাকি।
☞ আমরা যদি বরফ দেয়া ঠান্ডা পানির গ্লাস স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখি তাহলে কিছুক্ষণ পর গ্লাসের গায়ে বিন্দু বিন্দু পানি জমতে দেখি। এ পানি আসলে বাতাসের জলীয়বাষ্প যা গ্লাসের ঠান্ডার সংস্পর্শে এসে ঘনীভবনের ফলে পানিতে পরিণত হয়।
☞ আবার বাইরে ঠান্ডা আবহাওয়া আর ঘরে গরম থাকলে দেখবেন জানালার কাঁচে একই রকম বিন্দু বিন্দু জল যা আসলে ঘরেরই অপেক্ষাকৃত উষ্ণ জলীয়বাষ্প।
(আপনি চাইলে নিজের নামও এভাবে লেখতে পারেন।আমি নিজেও অনেক ফুল,গাছপালা ইত্যাদি আঁকতাম।)??
☞ অনেকটা একই রকম কাজ এসিতে হয়। এসি ইউনিটে আমাদের একটি তরল থাকে যা রেফ্রিজারেন্ট নামে পরিচিত (যা মূলত তরল অবস্থায় খুব শীতল)। রেফ্রিজারেন্ট এসির পাইপগুলিতে প্রবাহিত হয়। তো আপনার এসি যা করে তা হল, এটি আপনার ঘর থেকে উত্তপ্ত বাতাস সংগ্রহ করে এবং এ বাতাসকে সেই পাইপগুলির উপর দিয়ে নিয়ে যায় যেখানে রেফ্রিজারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে। এখন বাতাস থেকে উত্তাপটি রেফ্রিজারেন্ট তরল গ্রহণ করে এবং বায়ু শীতল হয়।
বাতাসে আর্দ্রতা রয়েছে এবং বায়ু শীতল হওয়ার সাথে সাথে এই আর্দ্রতা ঘনীভূত হয়। এখন উপরের গ্লাসের জায়গায় আমরা এসির পাইপকে নিয়ে কল্পনা করি। ঠিক গ্লাসের মতই পাইপের ওপর দিয়ে গরম বাতাসের প্রবাহে জলীয়বাষ্প পানিতে পরিণত হয় আর ঠান্ডা বাতাস(যেটা রেফ্রিজারেন্ট এর সংস্পর্শে এসে ঠান্ডা হয়েছে) আমাদের ঘরে/অফিসে প্রবাহিত হয়। এখানে পাইপগুলিতে ঘনীভূত জলটি ড্রেন টিউব ব্যবহার করে বাইরে পাঠানো হয় এবং এটিই আপনি দেখতে পান।
ছবিঃ পাইপে ঘনীভুত পানি।
➤ এখন কথা হলো এসব পানিতো ঘরেরই বাতাসের পানি যা এসি দিয়ে বেরিয়ে আসছে।কোন নর্দমার পানিতো না যে দূষিত হবে। তাই বিশুদ্ধ বিবেচনা করে খাওয়াই যায় কি বলেন??
কিন্তু এ পানি খাওয়া যাবে না,ভুলেও খাবেন না। কারণ খালি চোখে পরিষ্কার দেখা গেলেও আসলে পানিতে দূষিত পদার্থ থাকে!! কিভাবে?
⇨ আসলে আমাদের ঘরের বাতাসে অনেক সূক্ষ্ম পদার্থ (ধূলো,ময়লা,ব্যাক্টেরিয়া,জীবাণু) থাকে। এসি যখন ঘরের গরম বাতাস পাইপের সংস্পর্শে নিয়ে যায় তখন বাতাসের সাথে থাকা পদার্থও নিয়ে যায়। এ পদার্থ ঘনীভুত পানির সাথে মিশে থাকে। তাই এসব পানি খেলে আপনি জীবাণুও খেয়ে ফেলবেন যা ক্ষতিকর। তাই এই পানি পানযোগ্য বা নিরাপদ নয়।
✔ তবে আপনি চাইলে এ পানি অন্যান্য কাজে পুনরায় ব্যবহার করতে পারেন। যেমনঃ
- বাগানে গাছের গোড়ায়
- ঘরের মেঝে,জানালা পরিষ্কারে
- গাড়ি ধোয়ার জন্য ইত্যাদি।
এসির পানি খাওয়া যাবে কিনা?
এসির পানি খেতে হলে আপনাকে এ পানি প্রথমে ফুটিয়ে নিতে হবে(জীবাণু মুক্ত করা) । তারপর ফিল্টারিং করতে হবে(ধুলো, ময়লা মুক্ত করা) । তারপর খেতে পারবেন। তবে দীর্ঘদিন খাওয়া উচিত বলে মনে করি না।
ধন্যবাদ?
ছবি সূত্রঃ গুগল ৷
4 thoughts on "এসি চালালে পানি বের হয় কেন? এই পানি কি পানযোগ্য বা কতটা নিরাপদ?"