হ্যালো বন্ধুরা আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আপনাদেরকে আবারো আমাদের সাইটে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক স্বাগতম জানাই। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের সাথে মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এই বিষয় টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তো চলুন দেরি না করে পোস্ট টি শুরু করা যাক।
স্মার্টফোন যে আমাদের জীবনের অত্যাবশ্যক অংশ হয়ে উঠেছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাপস, লাইভ স্ট্রিমিং, গেমসসহ আরও অসংখ্য সুযোগ সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি স্মার্টফোনের এই চক্কর আপনার জন্য একটা কঠিন গোলকধাঁধাও হয়ে উঠতে পারে।
শুধুমাত্র পর্যাপ্ত গবেষণামূলক ডেটা না থাকায় মোবাইল ফোনে আসক্তিকে এখন পর্যন্ত ‘রোগ’ হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে না। ফোন ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকায় আচরণগত, মানসিক ও চিন্তাধারার নানাবিধ সমস্যার কথা এরই মধ্যে অনেক বিশেষজ্ঞই বলেছেন।
ব্যক্তিগত সম্পর্কে ক্ষতির কারণ, ফোন হাতে না পেলে আতঙ্কিত আব শঙ্কিত হয়ে যাওয়া কিংবা দুশ্চিন্তা করা এবং কোনোকিছু গভীরভাবে চিন্তা করার বা সৃজনশীলতায় বাঁধা দেয়ার মত সমস্যার মূলেও মোবাইল ফোন ব্যবহারের ভূমিকা আছে।
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল এসোসিয়েশন এর প্র্যাকটিস ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড কোয়ালিটি শাখার পরিচালক লিন বুফকা বলেন, সম্ভাব্য ক্ষতির ঝুঁকি দেখেও এড়িয়ে যাওয়া কিংবা প্রিয়জনদের কাছ থেকে ফোন ব্যবহারের ব্যাপারে অভিযোগ শুনলেই আমাদের বোঝা উচিত যে আমাদের আচরণে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে।
তবে মোবাইল ফোনে আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়ও আছে। আপনি যদি চান নিজের সুস্থ জীবনযাত্রা বজায় রাখতে এবং ফোনে আসক্তি থেকে দূরে থাকতে, তাহলে প্রাথমিকভাবে নিচের ১০ টি উপায় অনুসরণ করতে পারেন:
অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের যুক্তি খুঁজে দেখুন
আপনার অন্যান্য কাজের চাইতে মোবাইল ফোন নামক ডিভাইসটি হয়তো আপনার কাছে এত বেশি আকর্ষণীয় ও মজার লাগে যে, সেই কারণে আপনি ফোন ব্যবহার কমাতে চান না।
‘ফোনের ব্যবহার কমানোর জন্য যৌক্তিক কারণ খুঁজে বের করা আমাদের নিজেদের ভেতরে সহজাত প্রেরণা সৃষ্টির একটি অংশ’, বলেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিহেভিয়ারাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ডা. স্মিতা দাস।
স্মিতা বলেন, ‘আপনি যদি চিন্তা করতে থাকেন যে কোনটি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন; তখন দেখবেন সাময়িক বিনোদন বা আনন্দের চাইতে সমাজ, স্বাস্থ্য বা মানসিক স্বাস্থ্যকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাতে থাকবে আপনার মস্তিষ্ক।’
ফোন ব্যবহারের সময় পরিমাপ করুন
আপনি সারা দিন-রাতে কতক্ষণ সময় ফোনের পেছনে ব্যয় করছেন, তা পরিমাপ করুন। স্মার্টফোনে স্ক্রিনটাইম ডেটা বা সাধারণ হিসাবেই তা মাপা যাবে বলে জানালেন বুফকা।
বোঝার চেষ্টা করুন যে ঠিক কি কারণে আপনি বারবার মোবাইলে ফিরে যাচ্ছেন; সেটা কি মেসেজ দেয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নাকি নিছক স্ক্রলিং করা। সমস্যার সমাধান করার আগে সমস্যা কোথায় বুঝতে হবে আপনাকে।
নির্দিষ্টসীমা বেঁধে দিন
একবার যখন আপনি নিজের দুর্বলতাগুলো জেনে যাবেন, তখন স্মার্টফোনে একটা টাইমার সেট করে দিন; যাতে এটা আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে আজকের মত ফোন ব্যবহারের সময়সীমা শেষ।
তারপর এই সময়টা আস্তে আস্তে কমিয়ে আনতে হবে আপনাকে। আপনি স্ক্রিন টাইম ট্র্যাকিং অ্যাপ এর সাহায্য নিতে পারেন যা আপনাকে সময়মত জিজ্ঞেস করবে যে, আপনি বর্তমান কাজেই ফোনে ব্যস্ত থাকতে চান নাকি অন্য কাজে ব্যবহার করবেন।
নিজের আচরণের পেছনের কারণ বের করুন
কেন আপনি এত সময় ফোন ব্যবহার করছেন? যেকোনো আচরণ পরিবর্তনের আগে আমাদের বুঝতে হবে যে, অন্য কোনো এক বস্তু এই আচরণকে প্রলুব্ধ করছে।
আপনার অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের প্রবণতা মানসিক একঘেঁয়েমি কিংবা মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে জড়িত কিনা তা বুঝতে পারলে আপনি এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ ওমিক্রন থেকে বাচতে যে বিষয়গুলো মেনে চলা জরুরি
বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয় কাটিয়ে উঠতে হবে
আপনার ফোন আসক্তির কারণ যদি হয় এমনটা মনে করা যে- ফোন কম ব্যবহার করায় আমি কিছু একটা থেকে বাদ পড়ছি না তো? কিংবা সামাজিকভাবে দূরে সরে যাচ্ছি না তো?- তাহলে আপনাকে ভাবতে হবে যে এই উদ্বেগ কতটা যৌক্তিক।
কেউ একজন কি করছে সেই আপডেট না রাখলে কি আপনার কোনো ক্ষতি হচ্ছে? ফেসবুকে না থাকলে কারো জন্মদিন ভুলে যাবেন বলে চিন্তা করছেন?
যেসব মানুষদের সত্যিকার অর্থেই আপনার জীবনে ভূমিকা আছে, তাদের সাথে যুক্ত থাকার মাধ্যমে এসব উদ্বিগ্নতা কাটিয়ে উঠুন। অনলাইনে বেশি সময় থাকা বাদ দিতে চাইলে বা সময়কে ফলপ্রসূ করতে চাইলে, অনলাইনে বন্ধুর তালিকাটা ছোট করতে পারেন; রাখতে পারেন শুধু ব্যক্তিগতভাবে পরিচিতদের।
অধিক স্বাস্থ্যসম্মত কাজ বেছে নিন
অন্য একটা কাজের দ্বারা আগের কাজকে সরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে আচরণগত পরিবর্তন আসে। আপনি যদি অকারণে স্ক্রলিং করতে থাকেন, সেই সময়ে পছন্দের তালিকায় থাকা একটা বই পড়া, শরীরচর্চা করা বা কিছু পরিষ্কার করার কাজ করতে পারেন।
নো-ফোন জোন তৈরি করুন
খাওয়ার সময়গুলোতে বা সন্ধ্যায় যখন আপনি ফোন ব্যবহার করেন না, সেই সময়গুলোতে আপনার স্ক্রিনটাইম কমে। এরকম কিছু ক্ষেত্র তৈরি করতে পারেন, যেমন- পারিবারিক ঘর বা পড়ার ঘরে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফোন নিষিদ্ধ রাখা।
প্রয়োজন মাফিক ঘুম
অধিকাংশ মানুষ অ্যালার্ম এর জন্য ফোনকেই ব্যবহার করে। কিন্তু ঘরে ফোন থাকা মানেই আপনি সহজেই সেদিকে আকৃষ্ট হবেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ক্রল করতে বা অন্য কাজে ঢুকবেন।
তাই এর বদলে আপনি অ্যালার্ম ঘড়িই রাখতে পারেন। নিজের ফোনকে তখন অন্য ঘরে রেখে দিন। ফোন অন্য ঘর থেকে আনতে যাওয়ার অলসতা আপনাকে ফোন ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে পারে।
নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন
খুবই প্রয়োজনীয় বিষয় ছাড়া বাকি সব মাধ্যমের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন। এর ফলে অকারণে ফোন হাতে নেয়া বা স্ক্রিন টাইম কমবে।
ল্যাপটপেই যা ব্যবহার করতে পারবেন, তা ফোন থেকে সরিয়ে দিন
ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে ব্যবহার করা যায় সেসব অ্যাপ ফোন থেকে সরিয়ে ফেলুন। এর ফলে ফোনের দিকে আকর্ষণ কমতে পারে।
এরকম অনলাইন ইনকাম, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি সম্পর্কে নিয়মিত ব্লগ পেতে আমার ওয়েবসাইট টা ঘুরে আসতে পারেন।
তো প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের এই পোস্ট টি ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কিন্তু কমেন্ট করে জানাবেন। এবং আমাদের সাইটে এরকম আরো অনেক হেল্পফুল পোস্ট রয়েছে সেগুলো পড়তে চাইলে আমাদের সাইট টি একবার ভিজিট করুন। আর আজকের মতো এখানেই বিদায়, ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন।