Hello what’s up guys কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভালো আছেন । সবাইকে স্বাগতম আজকের একটি নতুন পোস্টে । টাইটেল আর thumbnail দেখে already বুঝে গেছেন আজকের টপিক কি । তাই বেশি কথা না বলে আজকের পোষ্ট শুরু করা যাক
ইদানীং প্রায়ই শোনা যায় প্রশ্নটা—কোনো কারণে হঠাৎ
কৃষ্ণগহ্বরে পড়ে গেলে কী ঘটবে? প্রশ্নের ধরনটা এমন যেন
কুয়া, গর্ত বা খানাখন্দের মতো কৃষ্ণগহ্বরও আমাদের দৈনন্দিন
জীবনে এখানে-ওখানে ওত পেতে আছে! সে কারণেই হয়তো
সবাই মহাজাগতিক এই বস্তু নিয়ে এত চিন্তিত!
প্রকৃত ঘটনা আসলে তা নয়। ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর
মহাকাশের অতি রহস্যময় এক বস্তু। উদ্ভটও বলা যায়। তাই
তাত্ত্বিক আবিষ্কারের পর থেকেই সেটা পরিণত হয়েছে আগ্রহের
কেন্দ্রবিন্দুতে। আমজনতা থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী, সবার
কাছে তা সমান আকর্ষণীয়। তাত্ত্বিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংও
তাঁর জীবনের সিংহভাগ ব্যয় করেছেন কৃষ্ণগহ্বর গবেষণায়।
সে জন্য এটিকে নিয়ে এমন উদ্ভট ও অবাস্তব প্রশ্ন ওঠে।
অবশ্য এগুলো সম্পর্কে এখনো অনেক কিছুই জানা
বাকি। রহস্যের পর্দা খুলতে কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে তাই প্রতিনিয়ত
চলছে গবেষণা। মহাকাশের এই কালো গর্তের মধ্যে কোনো
আলো বা বস্তু পড়লে কী ঘটে, সেসব জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন
বিজ্ঞানীরা। সেগুলো থেকেও অনেকে বোঝার চেষ্টা করছেন,
কৃষ্ণগহ্বরে মানুষ বা নভোচারী পড়ে গেলে কী কী ঘটতে
পারে? মানুষটা কি মারা যাবে? সাধারণ গর্তের চেয়ে এই
পতনের অনুভূতি কি আলাদা? সেখানে গিয়ে কি মহাবিশ্বের
গভীর-গোপন কোনো রহস্য জানা যাবে? খুলে যাবে কি স্থান
ও কালের রহস্যজট? মাথাটাও কি ঠিকঠাক কাজ করবে?
এসব প্রশ্নের পরীক্ষামূলক কোনো জবাব আমাদের হাতে
নেই। জবাব পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায়, দেখেশুনে
ভালো একটি কৃষ্ণগহ্বরে ঝাঁপ দেওয়া। ব্যস, তাহলেই ল্যাঠা
চুকে যায়। কিন্তু মুশকিল হলো, সেটিও বেশ কঠিন। কারণ,
আমাদের সবচেয়ে কাছের কৃষ্ণগহ্বরটাও পৃথিবী থেকে
কয়েক আলোকবর্ষ দূরে। সেখানে শিগগির পৌঁছানোর মতো
নভোযান এই মুহূর্তে আমাদের নেই। অতএব তাত্ত্বিকভাবে শুধু
বিষয়টি জানার চেষ্টা করা যায়। চলুন, সেটিই করা যাক।
কৃষ্ণগহ্বরের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে প্রথমে চোখে
পড়বে, বস্তুটা আসলেই কৃষ্ণ বা কালো। মহাকাশের একটি
কালো গর্ত। কারণ, সেখান থেকে কোনো আলোর কণা বা
ফোটন বেরিয়ে আসে না। আবার সেখানে কোনো আলো পড়লে
তা-ও আটকে গিয়ে ভেতরে ঘুরপাক খেতে থাকে। কোনো বস্তু থেকে আলো না এলে সেটি আমাদের চোখে কালো হিসেবে ধরা
পড়ে। তাই কৃষ্ণগহ্বর আমাদের চোখে কালো। অবশ্য হকিং
রেডিয়েশনের কথা সত্য হলে, কৃষ্ণগহ্বর থেকেও কিছু আলো
বিকিরিত হওয়ার কথা। সেই বিকিরণও আমাদের সাদা চোখে
অদৃশ্য। কারণ, সেটি দৃশ্যমান আলো নয়। তাই কৃষ্ণগহ্বর
আমাদের কাছে যে কুচকুচে কালো, তাতে সন্দেহ নেই।
আবার আক্ষরিক অর্থেই একে মহাজাগতিক কুয়া বা
গর্ত বলা যায়। এটা স্থানের একটি গোলক। কারণ, সেখানে
যেকোনো কিছু পড়ে গেলে আজীবন সেখানেই থেকে যায়।
কারণ, কৃষ্ণগহ্বরের মহাকর্ষ অতি শক্তিশালী। এর ভেতরে
পদার্থ বা বস্তু খুবই ঘনভাবে ঠাসাঠাসি বা সংকুচিত হয়ে
থাকার কারণেই এগুলোর মহাকর্ষ অতি শক্তিশালী।
সাধারণত বেশি ভরের বস্তু যথেষ্ট পরিমাণে ছড়িয়ে থাকে।
যেমন পৃথিবী। পৃথিবীর সমান ভরের কোনো কৃষ্ণগহ্বরের
প্রশস্ততা হবে মাত্র এক ইঞ্চি। মানে ছোট্ট একটি মার্বেলের সমান।
কেউ যদি পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে পৃথিবীর ব্যাসার্ধের সমান দূরত্বে
থাকে এবং যদি একটি মার্বেল আকৃতির কৃষ্ণগহ্বরের কেন্দ্র
থেকে একই দূরত্বে থাকে, তাহলে দুই ক্ষেত্রেই সমপরিমাণ
মহাকর্ষ অনুভব করবে। কিন্তু এগুলোর যত কাছে যেতে
থাকবে, ঘটনা ঘটতে থাকবে দুই রকম। যেমন পৃথিবীর কেন্দ্রের
কাছে গেলে কোনো মহাকর্ষই অনুভব করবে না। কারণ, গোটা পৃথিবীই তখন চারপাশে থাকবে। তাই সব দিক থেকেই পৃথিবী তাকে সমপরিমাণে টানবে। কিন্তু মার্বেল সাইজের কৃষ্ণগহ্বরটার কাছে গেলে ঘটনা ঘটবে উল্টো। সেখানে বিপুল মহাকর্ষ অনুভূত হবে গোটা পৃথিবীর ভর টানতে থাকবে। এটিই আসলে কৃষ্ণগহ্বরের চরিত্র। এর অতি সংকুচিত ভর তার চারপাশের সবকিছু অতি শক্তিশালী মহাকর্ষ বলে টানে।
খুবই ঘনবদ্ধ ভর তার চারপাশে অতি শক্তিশালী মহাকর্ষ
তৈরির পাশাপাশি এর চারপাশের স্থানও চরমভাবে বিকৃত হয়ে
যায়। তাই সেখান থেকে কোনো আলোও বেরোতে পারে না।
চলে যায় না ফেরার এক দেশে। কৃষ্ণগহ্বরের যে বিন্দুতে আলো
না ফেরার দেশে চলে যায়, তাকে বলা হয় ইভেন্ট হরাইজন।
বাংলায় ‘ঘটনা দিগন্ত’। এই এলাকায় মহাকর্ষ প্রচণ্ড শক্তিশালী।
তাই সেখানকার স্থানকাল এমনভাবে বেঁকে যায়, আলো আর
বেরিয়ে আসতে পারে না। মনে হবে, আলোকে পেছন দিকে
টেনে নামিয়ে নিতে চাইছে ব্ল্যাকহোল। আমরা জানি, কোনো
কিছুই আলোর চেয়ে বেশি বেগে চলতে পারে না। তাই সেখানে
সবকিছুকে পেছন দিকে টেনে নিয়ে যাবে। কোনো কৃষ্ণগহ্বরের
সীমানা কোথা থেকে শুরু হবে, তা ঠিক করে দেয় ওই ঘটনা
দিগন্ত। এটিই কালো গোলকটার সেই ব্যাসার্ধ, যাকে আমরা বলি
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোল।
কৃষ্ণগহ্বরের আকৃতিও বিভিন্ন হতে পারে। সেটি নির্ভর করে
কতটা ভর তার ভেতর ঘনবদ্ধ বা সংকুচিত আছে। পৃথিবীকে যদি
পিষে ফেলে যথেষ্ট সংকুচিত করা সম্ভব হতো, তাহলে আমরা
এমন একটি কৃষ্ণগহ্বর পেতাম, যার আকৃতি হতো মার্বেল
আকারের। মার্বেলটির প্রায় এক সেন্টিমিটার দূরত্বে কোনো আলো
পড়লে সেই আলো আর ফিরে যেতে পারত না। ভর আরও
বাড়িয়ে এই দূরত্ব আরও বাড়ানো সম্ভব। যেমন সূর্যকে যথেষ্ট
সংকুচিত করলে এমন কৃষ্ণগহ্বর পাওয়া যেত, যেটি মাত্র ছয়
কিলোমিটার প্রশস্ত। তখন সেটি স্থানকে আরও বাঁকিয়ে ফেলতে
পারত এবং তার ঘটনা দিগন্ত হতো মাত্র তিন কিলোমিটার।
অর্থাৎকৃষ্ণগহ্বরটার কেন্দ্র থেকে তিন কিলোমিটার দূরত্বে কোনো
আলো পড়লে সেটি চলে যেত না ফেরার দেশে। বোঝা যাচ্ছে,
ভর যত বেশি, কৃষ্ণগহ্বরের আকারও তত বড়।
আসলে কৃষ্ণগহ্বর কত বড় হবে, তার কোনো তাত্ত্বিক
সীমাবদ্ধতা নেই। এখন পর্যন্ত মহাকাশে সবচেয়ে ছোট
যে কৃষ্ণগহ্বর শনাক্ত করা গেছে, তার প্রশস্ততা প্রায় ২০
কিলোমিটার। আর সবচেয়ে বড়টার প্রশস্ততা ১০ বিলিয়ন
কিলোমিটার। সত্যিকারের দানব! কৃষ্ণগহ্বরের দিকে এগিয়ে গেলে দ্বিতীয় যে ব্যাপার চোখে
পড়বে, সেটি হলো অধিকাংশ সময় সেখানে শুধু কৃষ্ণগহ্বর
নয়, আরও কিছু থাকে। এর চারপাশে প্রায় সব সময় বিভিন্ন
বস্তু ঘুরপাক খাচ্ছে। সেগুলো কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর পড়েও যাচ্ছে
চিরতরে। অর্থাৎ কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে একগাদা বস্তু পাক
খায়। এসব বস্তু মিলে যে কাঠামো গড়ে তোলে, তা অ্যাক্রেশন
ডিস্ক বা চাকতি। এটা গ্যাস, ধুলা ও অন্যান্য পদার্থ দিয়ে গঠিত।
এসব পদার্থ হয়তো কোনো কারণে সরাসরি ভেতরে পড়ে
যেতে পারেনি, বরং সেগুলো একটি কক্ষপথ মেনে অনবরত
পাক খাচ্ছে। এগুলো আসলে ভেতরে পড়ে যাওয়ার অপেক্ষায়
থাকে। ছোট কৃষ্ণগহ্বরের এই চাকতি হয়তো আহামরি কিছু
নয়, কিন্তু অতিভারী বা দানবীয় কৃষ্ণগহ্বরের অ্যাক্রেশন ডিস্ক
থেকে চোখ ফেরানো যাবে না। ভয়ংকর সুন্দর সেটা!
এসব গ্যাস, ধুলা আর পদার্থ অতি দ্রুতবেগে ঘুরছে। তাতে
বস্তু ভেঙেচুরে একাকার হয়ে যেতে বাধ্য। ফলে বিপুল শক্তি
নিঃসৃত হচ্ছে। এভাবে তৈরি হতে পারে মহাবিশ্বের সবচেয়ে
শক্তিশালী আলোক উৎস, যেগুলো কোয়াসি স্টার বা কোয়েসার
নামে পরিচিত। এগুলো মাঝেমধ্যে কোনো কোনো গ্যালাক্সির সব
কটি নক্ষত্রের মিলিত আলোর চেয়ে কয়েক হাজার গুণ উজ্জ্বল
হতে পারে। তবে আপনার সৌভাগ্য বলতে হবে, সব কৃষ্ণগহ্বরে
কোয়েসার তৈরি হয় না। কারণ, এ রকম নাটকীয় দৃশ্য তৈরি করার
জন্য বেশির ভাগ সময় অ্যাক্রেশন ডিস্ক পর্যাপ্ত পরিমাণ পদার্থপূর্ণ
বা উপযুক্ত অবস্থায় থাকে না। আপনার সৌভাগ্য এ জন্য যে সে রকম নাটকীয় কিছু ঘটলে কৃষ্ণগহ্বরের কাছে যাওয়ার আগেই
আপনি সম্ভবত মহাশূন্যে উধাও হয়ে যেতেন দুম করে। স্রেফ
বাষ্পীভূত হয়ে যাবেন। কাজেই কৃষ্ণগহ্বরে ঝাঁপ দেওয়ার আগে
তার অ্যাক্রেশন ডিস্কটা তুলনামূলক শান্তশিষ্ট কি না, তা একবার
খোঁজ নেওয়া ভালো। অন্যদিকে স্টিফেন হকিংয়ের পরামর্শ হলো,
ঝাঁপ দেওয়ার জন্য ছোটগুলোর তুলনায় বড় ধরনের কৃষ্ণগহ্বর
বেছে নেওয়া উচিত। কিন্তু কেন?

কৃষ্ণগহ্বরে ঝাঁপ দিলে মানুষ মারা যাবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা
আছে অনেকের। আসলে উঁচু কোনো জায়গা থেকে (যেমন
কোনো বিল্ডিং বা কোনো প্লেন থেকে) পড়ে গেলেই মৃত্যুর ভাবনা
আসা স্বাভাবিক। এসব ক্ষেত্রে শুধু মহাকর্ষকে দোষ দেওয়া ঠিক
হবে না। আসলে শুধু ওপর থেকে পতনের কারণে নয়, পতনের
পরের আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়। তবে কৃষ্ণগহ্বরের ক্ষেত্রে
ব্যাপারটা আলাদা। সেখানে পতনই আপনার মৃত্যুর কারণ হতে
পারে। বিষয়টা একটু খুলে বলা যাক।
কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর মহাকর্ষ শুধু আপনাকে টানেই না,
দেহটাও ছিঁড়ে টুকরা টুকরা করে ফেলতে পারে। মনে রাখতে
হবে, ভরযুক্ত বস্তুর দূরত্বের ওপর মহাকর্ষ নির্ভরশীল। আপনি
যখন পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে থাকেন, তখন আপনার পায়ের ওপর
মাথার চেয়ে বেশি মহাকর্ষ টান থাকে। পার্থক্যটা খুব সামান্য
বলে তা বোঝা যায় না। কিন্তু কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর ব্যাপারটা
বোঝা যায় জোরালোভাবে। সেটা বিপদও ডেকে আনতে পারে।
অতি ভারী কোনো কৃষ্ণগহ্বরে পড়ে গেলে পা ও মাথায়
মহাকর্ষের পার্থক্য বেশ স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। একসময়
তফাতটা এতই বেশি হবে যে সেটা আপনাকে টেনে স্প্যাগেটি
বা সেমাইয়ের মতো লম্বা বানিয়ে ফেলতে পারে। একে বলা হয়
স্প্যাগেটিফিকেশন বা সেমাইকরণ। এ প্রক্রিয়ার শেষে আপনাকে
ছিঁড়ে ছিন্নবিছিন্ন করে ফেলতে পারে। এই বিন্দুকে ধরা যাক,
স্প্যাগেটিফিকেশন পয়েন্ট বা সেমাইকরণ বিন্দু। এখান থেকে
আলোও চলে যায় না ফেরার দেশে। তাই সেখান থেকে আপনার
পক্ষেও আর ফিরে আসা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কৃষ্ণগহ্বরে পতনের কোন পর্যায়ে বা কোন বিন্দুতে আপনি
স্প্যাগেটিফায়েড হবেন, তা নির্ভর করে কৃষ্ণগহ্বরের ভরের
ওপর। সূত্রমতে, কৃষ্ণগহ্বরের ভরের ঘনমূলের সমানুপাতে
স্প্যাগেটিফিকেশন পয়েন্ট পরিবর্তিত হয়। আর কৃষ্ণগহ্বরের
ভরের সঙ্গে সীমানার সম্পর্ক রৈখিক। অর্থাৎ কৃষ্ণগহ্বরটা কম
ভরের হলে তার ঘটনা দিগন্তের চেয়ে স্প্যাগেটিফিকেশন পয়েন্ট
বড় হবে। তখন ওই কৃষ্ণগহ্বরের ওই বিন্দু হবে ঘটনা দিগন্ত
বা সীমানার বাইরে। কিন্তু দানবীয় কৃষ্ণগহ্বরের এই বিন্দু বেশ
ছোট এবং তা সীমানার ভেতরেই থাকে। যেমন সূর্যের চেয়ে ১০
লাখ গুণ বেশি ভরের কোনো কৃষ্ণগহ্বরের ব্যাসার্ধ হবে ৩০
লাখ কিলোমিটার। কিন্তু কৃষ্ণগহ্বরটার কেন্দ্র থেকে ২৪ হাজার
কিলোমিটার দূরত্বে না আসা পর্যন্ত সেটা কাউকে সেমাই বানাতে
পারবে না। কিন্তু ছোট কৃষ্ণগহ্বরের ব্যাসার্ধ যদি ৩০ কিলোমিটার
হয়, তাহলে সেটা কেন্দ্র থেকে মাত্র ৪৪০ কিলোমিটার দূরত্বেই
সেমাইকরণের প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে পারবে। তাই বড় বা
দানবীয় কৃষ্ণগহ্বরের ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যায়। তাই
ঝাঁপ দিতে চাইলে বড় কৃষ্ণগহ্বর বেছে নেওয়ার পরামর্শ
দিয়েছেন পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং।
এবার দেখা যাক, কৃষ্ণগহ্বরটার দিকে আরও এগিয়ে
গেলে কী কী ঘটতে পারে। এ ক্ষেত্রে দুটি মজার ঘটনা ঘটবে।
প্রথমত, ঘটনা দিগন্তের ব্যাসার্ধের প্রায় তিন গুণ এলাকায়
অ্যাক্রেশন ডিস্ক শেষ হয়ে যেতে দেখা যাবে। তারপর
কৃষ্ণগহ্বরের চারদিকের এলাকা প্রায় ফাঁকা। কারণ, কোনো কিছু এই বিন্দু ছাড়িয়ে গেলে সেটা দ্রুত ভেতরে ঢুকে যায়।
এই বিন্দু থেকেই বেশির ভাগ বস্তু আর বেরিয়ে আসতে পারে
না। কৃষ্ণগহ্বরের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে আরেকটা
চমকপ্রদ ব্যাপার চোখে পড়বে। দেখা যাবে, চারপাশের স্থান
বিপুলভাবে বেঁকে গেছে। আপনি তখন এমন এক বিন্দুতে
থাকবেন, যেখানে মহাকর্ষ খুবই শক্তিশালী। তাই আলোর
চলার পথও ব্যাপকভাবে বিকৃত হয়ে যাবে, যা লক্ষ করার
মতো। সেই অনুভূতি হবে লেন্সের ভেতর সাঁতার কাটার মতো।
কৃষ্ণগহ্বরের চারদিকের স্থান ব্যাপকভাবে বেঁকে যায়, তাই
আলোর চলার পথও সেখানে সোজা মনে হবে না।
এরপর আরেকটু এগিয়ে গেলে ঘটতে থাকবে আরও
উদ্ভট সব ঘটনা। কৃষ্ণগহ্বরের ব্যাসার্ধের প্রায় আড়াই গুণ দূরে
পৌঁছালে কালো একটা বৃত্ত দেখতে পাবেন। একে বলা হয়
কৃষ্ণগহ্বরের ছায়া। কৃষ্ণগহ্বর আসলে তার নিজের আকারের
চেয়ে বড় ছায়া ফেলে। কারণ, ঘটনা দিগন্তের ভেতর ঢুকে পড়া
ফোটনগুলো আটকে ফেলার পাশাপাশি চারপাশ দিয়ে ছুটে চলা
ফোটনগুলোর গতিপথেও বাঁকিয়ে ফেলতে পারে কৃষ্ণগহ্বর।
এসব ফোটন একসময় মহাকর্ষীয় এই কূপের ভেতরে ঢুকে
যেতে থাকে। তাই এসব আলোও আমরা দেখতে পাই না। কৃষ্ণগহ্বরের যত ভেতরে
যেতে থাকবেন, এই ছায়াকে তত বড় মনে হতে থাকবে। আরও কাছে এগিয়ে গেলে দেখা যাবে কৃষ্ণগহ্বর আরও আলো আটকে ফেলছে। সেটি না হলে এই আলোই হয়তো আপনার চোখে এসে আঘাত করত। আপনার
দৃষ্টিসীমার প্রায় পুরোটাই দখল করে নিতে শুরু করবে এটি। এই জায়গায় এসে আপনার একটি সেলফি নেওয়ার শখ জাগতে পারে। কারণ, আপনার চারপাশে ঘোর কৃষ্ণবর্ণ দেখা যাবে। মনে হবে, আ… ভেতরে সেলফি তুলেছেন। কিন্তু আপনার আসলে আরও অনেক দূর যাওয়া বাকি। কৃষ্ণগহ্বরের ব্যাসার্ধের প্রায় দেড় গুণ দূরে আরেকটা চমৎকার
জায়গায় উপস্থিত হবেন আপনি। সেখানে আলোর ফোটনগুলো
কৃষ্ণগহ্বরকে কেন্দ্র করে ঘুরতে দেখা যাবে। একেবারে নিখুঁত
বৃত্তে ঘোরে এ ফোটন। আলোর কোনো ভর নেই। তাই বেঁকে
যাওয়া স্থানের ভেতর দিয়ে চিরকাল এভাবেই কৃষ্ণগহ্বরকে
কেন্দ্র করে ঘোরার সম্ভাবনা থাকে। তবে কোনো বিচ্যুতির কারণে
আলোগুলো সর্পিলাকারে কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর চলে যেতে পারে
কিংবা চলে যেতে পারে বাইরের মহাকাশে। আলোর এই নিখুঁত
বৃত্তে একটা কক্ষপথে ঘুরপাক খাওয়ার কারণে দারুণ একটা
সুযোগ পাবেন এখানে। এই জায়গায় এসে স্বচক্ষে নিজের মাথার
পেছনটা দেখার বিরল সুযোগ পাবেন। তাই নিজের মাথার পেছন
দিকটা দেখতে না পেয়ে এতকাল যাঁরা হা-হুতাশ করেছেন, এই
জায়গা নিঃসন্দেহে তাঁদের পছন্দ হবে।
কৃষ্ণগহ্বরের ব্যাসার্ধের প্রায় দেড় গুণ দূরত্ব পেরিয়ে
যাওয়ার পর আপনি এমন একটা বিন্দুতে এসে পৌঁছাবেন,
যেখানে আলোও আর নিরাপদে ঘুরপাক খেতে পারে না। সে-ও
কৃষ্ণগহ্বরে চিরকালের জন্য আটকা পড়ে যায়। এখান থেকে তাই
আপনার আর বেরিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। এখন শুধু
একমুখী চলার পথ। আর পথটা আক্ষরিক অর্থেই কৃষ্ণগহ্বরের কেন্দ্রে গিয়ে মিশেছে। এই জায়গায় এসে মনে হবে, কৃষ্ণগহ্বরের
ছায়া আপনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলছে। মহাবিশ্বের দৃশ্য চোখের
সামনে থেকে সরে যেতে থাকবে। এ সময় যদি পেছন ফিরে
তাকান, তাহলে মহাবিশ্ব সংকুচিত হয়ে ছোট হয়ে যাচ্ছে বলে
মনে হবে। মহাবিশ্বের এই দৃশ্যের উদ্ভট ব্যাপারটা হলো, এতে
মহাবিশ্বের সবকিছুই থাকবে। এমনকি কৃষ্ণগহ্বরের পেছনের
সবকিছুও। এই বিন্দুতে স্থান এতই বেঁকে থাকে যে মহাবিশ্বের সব
প্রান্ত থেকে আসা আলো এখানে অসংখ্যবার ঘূর্ণি তৈরি করবে।
এরপর সেটা আপনার মাথার পেছনে ও পাশে আঘাত করবে।
সেই দৃশ্য দেখাবে অনেকটা মাছের চোখে দেখা বিশ্ব বা আলট্রা
ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্সে দেখা দৃশ্যের মতো। কাজেই মহাবিশ্বের
অসংখ্য সংস্করণ দেখতে পাবেন সেখানে, যা আপনার দৃষ্টিসীমায়
পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে।
কৃষ্ণগহ্বরের আরও কেন্দ্রের দিকে যেতে থাকলে
মহাবিশ্বের এই বাইরের জানালাটা সংকুচিত হতে থাকবে।
তারপর কৃষ্ণগহ্বরের ছবিটাই মুখ্য হয়ে উঠবে। এরপর ঘটনা
দিগন্ত পার হয়ে যাবেন আপনি।
আপনি যখন কৃষ্ণগহ্বরে ঝাঁপ দিলেন, তখন নিশ্চয়ই
কিছু বন্ধু থাকবেন, যাঁরা কাজটাকে ভাবেন স্রেফ পাগলামি।
তাই আপনার পেছনেই থেকে যাবেন তাঁরা। প্রশ্ন উঠতে পারে, ঘটনা দিগন্ত পার হয়ে গেলে ওই বন্ধুরা কী দেখতে পাবেন? জানেন নিশ্চয়ই, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্বমতে, মহাকর্ষ শুধু স্থানই নয়, সময়ও বাঁকিয়ে দেয়। কৃষ্ণগহ্বরের অতি শক্তিশালী
মহাকর্ষও তাই সময়কে চরমভাবে বাঁকিয়ে দেবে। আপেক্ষিকতা তত্ত্ব আরও বলে,
অতি উচ্চগতি সময়কে ধীর
করে দেয়। একইভাবে দানবীয় ভরের কোনো বস্তুও (যেমন
কৃষ্ণগহ্বর) সময়কে ধীরগতির করে দিতে পারে। কাজেই
আপনি কৃষ্ণগহ্বরের অনেক কাছে চলে গেলে আপনার বন্ধুরা
দেখতে পাবেন যে আপনার সময় ধীরে বইছে। তাঁদের মনে
হবে, আপনি খুবই খুবই ধীরগতিতে চলছেন। কৃষ্ণগহ্বরের
যত কাছে যেতে থাকবেন, আপনার বন্ধুরা আপনাকে তত
ধীরগতিতে চলতে দেখবেন। আবার এদিকে কৃষ্ণগহ্বরের যত কাছে যাবেন, বন্ধুদের
কাছে আপনার ঘড়ির সময়ও তত ধীরে চলতে থাকবে। তাঁদের
চোখে, একসময় আপনার ঘড়ির সময় এতই ধীরে বইবে যে
তাঁদের মনে হবে, আপনি বোধ হয় সময়ের ভেতর জমে গেছেন।
আসলে বাইরের বিশ্বের চোখে আপনি চিরকাল ওভাবেই ঝুলে
থাকবেন। বাইরের কেউই আপনাকে কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরে
কখনোই পড়তে দেখতে পাবে না। কারণ, বাইরের চোখে,
আপনার জন্য সময় জমে যাবে এবং আপনার ছবিখানা
কৃষ্ণগহ্বরের পৃষ্ঠতলে ছড়িয়ে পড়বে এবং সেখানেই খোদাই
হয়ে থাকবে চিরকাল। কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর আপনার পুরোপুরি
পড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখার জন্য বাইরের কোনো পর্যবেক্ষককে
অসীম সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে বসে থাকতে হবে।
এই বন্ধুরা নিঃসন্দেহে আপনার বেশ ঘনিষ্ঠ আর সেরা।
কিন্তু তাঁদেরও নিজস্ব জীবন আছে। বাকি জীবনটা তাঁদেরও
বেঁচে থাকতে হবে। আপনার ফিরে আসার আশা বাদ দিয়ে
সেখান থেকে একসময় তাঁরা চলে যাবেন, সেটাই স্বাভাবিক।
যাওয়ার আগে যদি স্মৃতি হিসেবে আপনার শেষ ছবিটা তুলতে চান, তাহলে সেখানে আপনাকে অস্পষ্ট আর লালচে দেখা
যাবে। কারণ, কৃষ্ণগহ্বরের মহাকর্ষ সেখানকার ফোটনের
তরঙ্গদৈর্ঘ্যগুলো প্রসারণের মাধ্যমে রূপান্তরিত করবে
অবলোহিত আলোয়। কাজেই বুঝতেই পারছেন, বন্ধুদের
চমকে দিতে যদি নাটকীয়ভাবে কৃষ্ণগহ্বরে ঝাঁপ দেন, তাহলে
খুব একটা লাভ নেই।
8
ওদিকে কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর আপনার আসলে কী ঘটছে?
বন্ধুদের চোখে আপনি সময়ের ভেতর জমে যাওয়া মানুষ
হলেও বাস্তবে কিন্তু ঘটছে উল্টো ঘটনা। তখন আপনি এগিয়ে
যাচ্ছেন কৃষ্ণগহ্বরের কেন্দ্র বরাবর। যেন চরম বন্য গতির
কোনো রোলার কোস্টারের যাত্রী।
মনে রাখতে হবে, সময় আপনার জন্য তখনো
স্বাভাবিক গতিতে বয়ে যাচ্ছে। কাজেই আপনার দৃষ্টিভঙ্গিতে
কৃষ্ণগহ্বরমুখী যাত্রাটা বেশ স্বাভাবিক গতিতে ঘটছে বলে মনে
হবে। আপনি ক্রমে কেন্দ্রের দিকে এগিয়ে গেলেও বাইরের
মহাবিশ্ব ভাববে, সেটা কখনো ঘটেনি। তাই ঘটনা দিগন্ত
পেরিয়ে গেলে কী ঘটে, পদার্থবিদেরাও এ সম্পর্কে খুব বেশি
জানেন না। তাঁদের বিশ্বাস, খুব বেশি ঘটনা এখানে ঘটে না।
চূড়ান্ত সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর বাইরের মহাবিশ্বের
দৃশ্য সংকুচিত হতে হতে একটি ক্ষুদ্র থেকে আরও ক্ষুদ্র একটি
বিন্দুতে এসে পৌঁছাবে। এরপর পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে যাবে
আপনার চারপাশের সবকিছু। তখন একমাত্র যে আলোর উৎস
দেখা যাবে, সেটি হলো, গোটা মহাবিশ্বের দৃশ্যের ওই অতি
ক্ষুদ্র বিন্দু। অন্তত কিছু একটা তো আছে। তাত্ত্বিকভাবে, ঘটনা
দিগন্তে আসলে কিছুই নেই। সেখানে কোনো বেড়া বা দেয়াল
বা কোনো বলক্ষেত্র বা কোনো মহাজাতিক সিকিউরিটি গার্ডসহ
কোনো গেট—কিছুই নেই। এটা এমন একটি জায়গা, যেখান
থেকে আর ফেরা যায় না। এটাই সেই না ফেরার দেশের শুরু।
কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর স্থান এতই বেঁকে যায় যে সেখান
থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো পথ থাকে না। আপনি যত
জোরেই যাওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, স্থান-কাল সেখানে
একমুখী। কৃষ্ণগহ্বরের বাইরে সময় একমুখী (মানে সামনের
দিকে চলে)। কিন্তু ঘটনা দিগন্তের ভেতরে স্থানও একমুখী (শুধু
ভেতরের দিকে যাওয়া যায়)। কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর সবকিছুই
তার গভীরে টানছে। এই সময় যদি বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার জোর চেষ্টা চালান,
তাহলে সেটা কেন্দ্রে যাওয়াটাকেই আরও ত্বরান্বিত করবে। কাজেই
সে চেষ্টা বাদ দেওয়াই ভালো। তার চেয়ে কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরটা
কেমন, তা চোখ বুলিয়ে দেখে নিতে পারেন। কারণ, বিজ্ঞানীরা
এখনো এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। অবশ্য সে চেষ্টা করেও খুব
বেশি লাভ নেই। কারণ, সেখানে তো আলোর কোনো উৎসও
নেই। দ্বিতীয়ত, কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরটা সম্পর্কে আপনি যদি
মহান কোনো আবিষ্কার করেও ফেলেন, তারপরও সেটা আপনার
স্বজাতিকে কখনো বোধ হয় জানাতে পারবেন না।
কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে চিন্তা করা যায় কি না, সে সম্পর্কেও
নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। কারণ, শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের
জন্য দেহের ভেতর রক্ত, তথ্য এবং রাসায়নিক আয়নগুলোর
সবদিকে চলাচল জরুরি। আপনার দেহের রক্ত আর নিউরন
যদি শুধু কৃষ্ণগহ্বরের কেন্দ্রের দিকে ধাবিত হয়, তাহলে বেঁচে
থাকলেও আপনার চেতনা কি তখনো বহাল থাকবে?
আবার ঘটনা দিগন্তের ভেতরে স্থান আর কালের চেহারাটা
কেমন, তা-ও জানা নেই আমাদের। তাই সেখানে কী ঘটে,
বলা মুশকিল। মহাকর্ষ নিয়ে মানবজাতির সেরা আবিষ্কার
আপেক্ষিকতা তত্ত্ব শুধু কৃষ্ণগহ্বরের বাইরে ভালোভাবে কাজ
করে। কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরে ক্ষুদ্র পরিসরে তা অকার্যকর। কারণ,‌ সেখানে কোয়ান্টাম মেকানিকসকে অগ্রাহ্য
করলে চলবে না। তবে কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর
আপেক্ষিকতা তত্ত্ব আসলেই অকার্যকর কি না
কিংবা কিছুটা সঠিক কি না, তা-ও আমরা নিশ্চিত
জানি না।
আপেক্ষিকতা তত্ত্ব যদি সেখানে সামান্য হলেও
সঠিক হয়, তাহলে এর সমীকরণ থেকে আমরা যেসব
তথ্য পাই, তা মোটেও সুখকর নয়। কারণ, কৃষ্ণগহ্বরের
কেন্দ্রের যত কাছে যাবেন, মহাকর্ষ তত বেশি শক্তিশালী
হতে থাকবে। আপনি দ্রুত থেকে আরও দ্রুত বেগে
কেন্দ্রের দিকে ছুটতে থাকবেন। আমাদের মিল্কিওয়ে
গ্যালাক্সির কেন্দ্রে যে কৃষ্ণগহ্বর আছে, সেখানে পড়ে
গেলে কেন্দ্রে পৌঁছাতে আপনার সময় লাগবে মাত্র ২০
সেকেন্ড। অবশ্য কেন্দ্র পর্যন্ত আপনার পৌঁছানোর কথা
নয়। তার অনেক আগেই স্প্যাগেটিফিকেশন হওয়ার
আশঙ্কা রয়েছে।
এখন কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর যদি আপেক্ষিকতা
একদমই কাজ না করে, তাহলে আপনার ভাগ্যে কী ঘটতে
পারে? এ ক্ষেত্রে আর তত্ত্ব কাজ করে না, তার জায়গা দখল
করে কল্পনা। বিজ্ঞানীসহ বিশেষ করে বিজ্ঞান কল্পকাহিনি
লেখকদের জন্য খুবই প্রিয় একটা বিষয় সেটা। এই দলের
মতে, ঘটনা দিগন্ত পার হওয়ার পর মজার মজার সব ঘটনা
ঘটতে পারে। কিছু পদার্থবিদের অনুমান, কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর
একেবারে আলাদা এক মহাবিশ্ব রয়েছে। কাজেই ঘটনা দিগন্ত
পেরিয়ে নতুন একটা মহাবিশ্বে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে!
কে জানে সত্যি কি না!
আরেক দলের অনুমান, কৃষ্ণগহ্বরের ভেতর কোনো
ওয়ার্মহোলের সংযোগ থাকতে পারে, যেটা মহাবিশ্বের
আরেকটা প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত। তাহলে ওয়ার্মহোলের ওই প্রান্তে
কী আছে? বিজ্ঞানীদের অনুমান, সেখানে হয়তো কোনো
হোয়াইট হোল বা শ্বেতগহ্বর থাকতে পারে। মানে কৃষ্ণগহ্বরের
ঠিক বিপরীত চরিত্রের মহাজাগতিক বস্তু। কৃষ্ণগহ্বর যেমন
সবকিছু নিজের কেন্দ্রে টেনে নেয়, শ্বেতগহ্বর তেমনি সবকিছু
বাইরে ঠেলে পাঠিয়ে দেয়। আর ওই সব বস্তু আসে কৃষ্ণগহ্বর
থেকে। কাজেই ভাগ্য ভালো থাকলে, এমন কোনো শ্বেতগহ্বর
দিয়ে আবারও মহাবিশ্বে বেরিয়ে আসা যাবে হয়তো।
আপনি মারা যান বা বেঁচে থাকুন—
ভাগ্যে যেটাই ঘটুক
না কেন, আপনি যে মহাবিশ্বের অনেক গোপন রহস্য জেনে
যাবেন, তাতে সন্দেহ নেই! সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ও
কোয়ান্টাম মেকানিকসের নতুন দিগন্তও উন্মোচিত হবে আপনার
মহান হাত দিয়েই। কিংবা নতুন কোনো মহাবিশ্বও আবিষ্কৃত
হতে পারে। তাহলে আপনিই হবেন দুঃসাহসিক মহাজাগতিক
কলম্বাস ! কিন্তু দুঃখের ব্যাপারটা হলো, এসব গোপন রহস্য
চিরকাল গোপনই থেকে যাবে। সে কথা কাউকেই বলে যাওয়ার
সৌভাগ্য হয়তো পাবেন না কোনো দিন! জীবনানন্দের ভাষায়,
‘এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।’
লেখক : নির্বাহি সম্পাদক , বিজ্ঞানচিন্তা

তো আজকে এই পর্যন্তই । মানুষ মাত্রই ভুল হয় । তাই ভুল হলে ক্ষমা করে দিয়েন । আশা করি পোস্টটি সবার ভালো লেগেছে । কোনো কিছু না বুঝতে পারলে কমেন্টে জানান । আপনি চাইলে এই লিংক এ ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে join করতে পারেন । আর যেকোনো প্রয়োজনে ফেসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন ।

11 thoughts on "[Hot] জেনে নিন , মহাকাশে কৃষ্ণগহ্বরে পরে গেলে কি হবে ?"

  1. Nayon889 Contributor says:
    Copy paste kora…post er chehara dekhle r porte icca kore na ?
    1. pranta Contributor Post Creator says:
      আপনি প্রমাণ দিন । তাহলে মেনে নিব । ফুদাই পেচাল পারেন কে ?
  2. kabir+khan Contributor says:
    অনেক সুন্দর পোস্ট । অনেক কিছু জানতে পারলাম । ধন্যবাদ । চালিয়ে যান
    1. Prottoy Saha Contributor says:
      ki hea botsho, keyse ho?
  3. Sabbir Ahmed Contributor says:
    Wow very nice post
  4. Aubdulla Al Muhit Contributor says:
    ভাই এত বড় করে লিখলে কারোর পড়তে ইচ্ছেই হবে না । সংক্ষেপে লেখার চেষ্টা করবেন ।
    1. pranta Contributor Post Creator says:
      Ok vai
  5. Levi Author says:
    আপনি নিজের হাতে লিখেছেন?

Leave a Reply