সারা বিশ্বজুড়ে বর্তমান সময়টা খুবই খারাপ যাচ্ছে যা আমাদের সবারই দেখা। বিশেষ করে জ্বালানি সংকটের কারণে পুরো বিশ্বে এখন হাহাকার অবস্থা। এই খারাপ অবস্থায় আমাদের সবার প্রিয় জন্মভূমি বা মাতৃভূমি বাংলাদেশও পড়েছে। আমরা কেউই সঠিকভাবে জানিনা এই খারাপ অবস্থা কবে কাটিয়ে উঠতে পারবো। বিশ্বের এই খারাপ অবস্থা তার উপর আমাদের দেশের রাজনৈতিক অবস্থা দুটো মিলে আমরা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরা আছি খুবই বিপদে। যতকিছুই হোক না কেন রাজনীতিবিদদের কিছুই হবে না যত বিপদে পড়ব আমরা সাধারণ মানুষ। তাই এখন পূর্বের মতো নিজের প্রিয় দেশ এবং নিজেকে বাঁচাতে হলে আমাদের নিজেদেরই কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যা নিয়েই মূলত আমার আজকের এই টপিক।

সারা বিশ্বে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর থেকে আমরা একের পর এক বেশকিছু খাতে বিপদে পড়েছি এবং এখনো পড়তেছি। জানিনা সামনে আরো কত ধরনের বিপদ মুখী পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়। এতোদিন নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের মূল বৃদ্ধির বিপদে ছিলাম। তারপর বিদ্যুতের লোডশেডিং এর বিপদের সম্মুখীন হয়েছি। এখন শেষমেষ জ্বালানীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতের মূল্য বৃদ্ধির বিপদে। যা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জীবনে তৈরি করেছে এক দুর্ভিসহ অবস্থা। এখন এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেতে আমরা যদি একটু মিত্যব্যায়ী হই তাহলে হয়তো দেশের জন্য এবং নিজের জন্য ভালো একটা কিছু করতে পারবো। অর্থাৎ বর্তমান এই খারাপ পরিস্থিতিতে যদি সকলকিছু ব্যবহারে আমরা একটু সচেতন হই তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও সংকট মোকাবিলা করতে পারবো। তা এই খরচের বিষয় হ্রাস করতে আমরা নিচে কিছু পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করব।

মিত্যব্যায়ী হওয়ার জন্য কিছু পদক্ষেপঃ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে জিনিষগুলির বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে সেগুলোর ব্যবহারের দিকে একটু নজর দিতে হবে। যাতে প্রয়োজনের তুলনায় অতিমাত্রায় কোনোকিছুই খরচ করব না। এতে করে কিছুই হলেও সংকট মোকাবিলা করতে পারবো। তাই কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করব এবং সেগুলি নিজ দায়িত্বে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব।

পানি অপচয় রোধঃ

বর্তমান সময়ের বৈশ্বিক অর্থনীতির সংকট থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সর্বপ্রথম পানির অপচয় রোধ করতে হবে। বিশেষ করে যারা শহরে বসবাস করেন বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে ব্যবহার করে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলবো প্রয়োজনের বেশি পানি খরচ করবেন না। কারণ অতিরিক্ত পানি অপচয়ের ফলে বারবার বিদ্যুৎ খরচ করে আপনাকে পানি উত্তোলন করতে হচ্ছে। আর যারা গ্রামগঞ্জে থাকেন তারা চেষ্টা করবেন একেবারে পাম্পের ব্যবহার না করতে। যেহেতু গ্রামগঞ্জে পুকুর ও টিউবওয়েলের ব্যবস্থা আছে।

গ্যাসের অপব্যবহার রোধঃ

বিশেষ করে শহরে বসবাসকারীরা গ্যাসের বেশি অপচয় করে থাকেন। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলব আর কত? এইবার একটু সচেতন হউন। দেশের এই কান্তিলগ্নে নিজেকে একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলুন। প্রয়োজনের তুলনায় গ্যাস অতিরিক্ত খরচ করবেন না। এতে নিজেও বিপদে পড়বেন সাথে দেশের অন্যান্য মানুষদের কেও বিপদে ফেলবেন। আর যারা গ্রামগঞ্জে থাকেন তারা চেষ্টা করবেন যে গ্যাসের চুলার ব্যবহার না করতে লাকড়ি জ্বালিত চুলা ব্যবহার করতে।

জ্বালানী (⛽) তেল ব্যবহারে সাবধানঃ

বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জ্বালানী তেল। আর বিশ্ব এখন সম্পূর্ণ শিল্প কলকারখানার উপর নির্ভরশীল আর শিল্পকারখানা মূলত নির্ভরশীল জ্বালানি তেলের উপর। যদিও এগুলো খুবই প্রয়োজনীয় চাইলে আমরা এগুলোর খরচ বা ব্যবহার কমাতে পারবো না। তারপরও চেষ্টা করব যে যাতে করে জ্বালানীর কোনোরকম অপচয় না হয়। তবে বিশেষ করে এখন লক্ষণীয় হচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়ি। আমাদের দেশের মানুষ এখন এতো সৌখিনতায় পৌছেছে যে সকলের ঘরে ঘরে এখন ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে এর মধ্যে প্রাইভেটকার ও বাইক অন্যতম। এইগুলো এখন ব্যবহারে আমাদের একটু সচেতন হতে হবে। অপ্রয়োজনে আমরা ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার করব না। বিশেষ করে তরুণ সমাজকে উল্লেখ করে বলতে চাই এই দুঃসময়ে আপনারা অপ্রয়োজনে বাইক ব্যবহার করবেন না। এতে করে কিছুটা হলেও জ্বালানি তেলের উপর চাপ কমবে।

বিদ্যুৎ অপচয় রোধঃ

ইতিমধ্যে পানির অপচয়ের অংশে বিদ্যুৎ অপচয়ের বিষয়ে আলোচনা করেছি। এরপরও আমাদের দৈনন্দিন বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল অনেক ধরনের ব্যবহার রয়েছে সেগুলি ব্যবহারেও আমাদের সচেতন হতে হবে। এসি, ফ্যান, বাতি, লিফট, টিভি, কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহারে সচেতন হই অযথা এগুলি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকি। শহরের মধ্যে বিশেষ করে লিফট ও এসির ব্যবহার হয়ে থাকে এগুলোর ব্যবহার আমাদের সীমিত করতে হবে। তাহলেই বিদ্যুৎ এর মধ্যে একটি ভারসাম্য তৈরি হবে। মোটামুটি সবাই কমবেশী বিদ্যুৎ এর ব্যবহার করতে পারবো। কারণ বর্তমান সময়ে সবকিছু বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। সকল পরিবার বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল।

অহেতুক কেনাকাটা থেকে বিরত থাকুনঃ

বর্তমানে আমরা অহেতুক অনেক ধরনের জিনিসপত্র কেনাকাটা করে থাকি। যেগুলো আসলে আমাদের তেমন দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজন পড়ে না। বাহিরের দেশ থেকে আমদানিকৃত অনেক কিছু ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা বিলাসিতা করে থাকি। যেগুলো না হলেও আমাদের জীবনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। তাই আমরা চেষ্টা করব এইসব আমদানিকৃত জিনিসপত্রের উপর থেকে নিজেদের নির্ভরশীলতা কমাতে। এতে করে আমাদের রিজার্ভ ফান্ডের উপর চাপ কমাবে।

আর এইভাবে আমরা পারি নিজেদের বাঁচাতে এবং নিজেদের প্রিয় জন্মভূমি বা মাতৃভূমিকে বাঁচাতে। সংকটময় সময় আপনারা যদি দেশের পাশে না দাঁড়াতে পারেন তাহলে এর থেকে এর খারাপ কী হতে পারে বলেন। এছাড়াও আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জানা উচিৎ যে ইসলাম অপচয় করাকে নিরুৎসাহিত করেছেন। অতএব মানবতা এবং ধর্মের দিকে তাকিয়ে আমরা অপ্রয়োজনীয় খরচ থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করব।

উল্লেখ্য উক্ত বিষয়ের উপর প্রথমে মুসলিম ডে অ্যাপে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে সচেতনতা মূলক একটি নিবন্ধন প্রকাশ করা হয়েছে। আর তা থেকে আমি আইডিয়া নিয়ে নিজের মতো করে সাজিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি যাতে করে আপনাদের সচেতন করতে পারি। এখন আপনারা যদি সচেতন হন তাহলেই আমার আজকের এই টপিকের স্বার্থকতা অন্যথায় কোনো লাভ হবে না। আশা করি সচেতন হবেন নিজের উপকার করবেন, দশের উপকার করবেন এবং দেশের উপকার করবেন।

আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।

সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।

5 thoughts on "জ্বালানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি অপচয় রোধ করার কিছু টিপস দেশকে বাঁচাই নিজেও বাঁচি।"

    1. Mahbub Pathan Author Post Creator says:
      Thanks
    1. Mahbub Pathan Author Post Creator says:
      Thanks
    2. Levi Author says:
      Welcome.

Leave a Reply