বিনিয়োগ করার মাধ্যমে প্রতি বছর অনেক মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক হচ্ছে। আবার এই বিনিয়োগের মাধ্যমেই অনেক মানুষ কোটিপতি থেকে মুহূর্তের মধ্যেই ফকির হয়ে যাচ্ছে। আপনি যদি সঠিকভাবে এবং সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ না করেন সে ক্ষেত্রে আপনার অনেক টাকা লস হতে পারে।
আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানবো বিনিয়োগ করার আগে যেসব বিষয়গুলো অবশ্যই জেনে রাখা উচিত। চলুন কথা না বাড়িয়ে আজকের পোস্ট শুরু করি…
১. আর্থিক অবস্থা যাচাই-বাছাই: আপনি কোন জায়গায় বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই আপনার লাইফ স্টাইল বা আর্থিক বিষয়টি খেয়াল রাখবেন। কোথাও বিনিয়োগ করতে গেলে অবশ্যই আপনার লাইফস্টাইলে অল্প হলেও চেঞ্জ আসবে। যদি সামান্য হয় তাহলে অসুবিধা নেই, কিন্তু এই চেঞ্জ যদি অস্বাভাবিক হয় সেক্ষেত্রে মনে করবেন এই বিনিয়োগটি আপনার জন্য সুবিধা হবে না। আপনার লাইফস্টাইল যদি বিনিয়োগ করতে গিয়ে বেশি খারাপের দিকে চলে যায় সে ক্ষেত্রে ওই বিনিয়োগে না যাওয়াই উত্তম।
২. নিরাপদ ঝুঁকি গ্রহণ করা: কোথাও বিনিয়োগ করলে অবশ্যই সেটাতে ঝুঁকি থাকে। কিন্তু আপনি কতটা ঝুঁকি নিতে পারবেন সেটা আপনার উপরে নির্ভর করবে। কোন একটি বিনিয়োগে যদি অস্বাভাবিক হারে যুক্ত থাকে সেক্ষেত্রে সে বিনিয়োগে না যাওয়াই উত্তম। অযথা বেশি ঝুঁকি বোকামির কাজ। এমন জায়গায় বিনিয়োগ করবেন যেখানে তুলনামূলক ঝুঁকি কম থাকে। এমন জায়গায় বিনিয়োগ করবেন না যেখানে বিনিয়োগ করার পরে আপনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবে। তবে আপনি চাইলে সরকারি বিভিন্ন সেকশনে বিনিয়োগ করতে পারেন, এগুলোতে ঝুঁকি অনেকটাই কম থাকে।
৩. উদ্দেশ্য ঠিক করা: কোন একটি জায়গায় বিনিয়োগের আগে অবশ্যই সেটার উদ্দেশ্য ঠিক করা খুবই জরুরী। আপনার উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করবে আপনি কোথায় বিনিয়োগ করবেন। ধরুন আপনি যদি আপনার সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিনিয়োগ করতে চান তখন সেটা হবে লাইফ ইনভেস্টমেন্ট বা দীর্ঘ সাময়িক বিনিয়োগ। আবার অন্যদিকে বিভিন্ন প্রয়োজনে কম সময়ে লাভ পাওয়ার জন্য বিনিয়োগকে শর্ট টাইম ইনভেস্টমেন্ট বা কম সময়ে বিনিয়োগ বলা হয়। তাই বলা যায় বিনিয়োগের উদ্দেশ্য ঠিক করে আপনি কি পরিমান বিনিয়োগ করবেন এবং কোথায় বিনিয়োগ করবেন।
৪. বিনিয়োগ বিন্যাস: আপনার সারা জীবনের কষ্টের অর্জিত টাকা কখনো এক জায়গায় বিনিয়োগ করতে যাবেন না। আপনার টাকাগুলো বিভিন্ন জায়গায় অল্প অল্প করে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করবেন। কারণ বেশি টাকা এক জায়গায় বিনিয়োগ করা ঝুঁকিপূর্ণ। কোন কারনে যদি আপনি যেখানে বিনিয়োগ করেছেন সেটার সমস্যা হয় তাহলে আপনি অন্য জায়গার টাকা ব্যবহার করতে পারবেন।
৫. রিভিউ বা মতামত: আপনি যেখানে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন অবশ্যই সেটার সম্পর্কে লোকজনের থেকে মতামত গ্রহণ করবেন। আপনি যেখানে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন সেটার রিভিউ যদি পজিটিভ হয় তাহলে আপনি সামনে এগিয়ে যাবেন। কিন্তু যদি সেটার রিভিউ খারাপ হয় সে ক্ষেত্রে সেখানে না যাওয়াই উত্তম।
৬. মিচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ: প্রতিটি মিউচুয়াল ফ্রেন্ড প্রফেশনালি হ্যান্ডেল করা হয়। তবে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই সে মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। কারণ অনেক মিচুয়াল ফান্ড মানুষের টাকা মেরে দিয়ে চলে গেছে। তাই মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই সেটা সম্পর্কে লোকজন থেকে বিভিন্ন ধরনের মতামত বা সেই মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জেনে নিতে পারেন। অবশ্যই সেই তথ্যগুলো বিভিন্ন থার্ড পার্টি লোকজন থেকে জানার চেষ্টা করবেন। কারণ কোন কোম্পানির লোকজন কখনোই আপনাকে তাদের মূল উদ্দেশ্য বা সত্য বলতে চাইবে না। বিশ্বস্ত লোকজন থেকে জানার চেষ্টা করবেন।
৭. ঝামেলা মুক্ত বিনিয়োগ: বিভিন্ন ঋণ বা ধার করে কখনো বিনিয়োগ করবেন না। কারণ যদি কোন কারনে আপনার বিনিয়োগের টাকার সমস্যা হয়, তাহলে আপনি যার থেকে ধার নিয়েছেন তার টাকাও পরিশোধ করতে হবে। এটি একটি বাড়তি ঝামেলার সৃষ্টি হবে।
৮. নিজের ব্যবসায় বিনিয়োগ: আপনি যদি আপনার টাকা দিয়ে নিজের একটি ব্যবসা খুলতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি যেই পণ্য নিয়ে ব্যবসা করতে চান, সেই পণ্যের চাহিদা আপনার এলাকায় কেমন বা আপনি যেখানে বিক্রি করবেন সেখানে কেমন চাহিদা সেটা আগে জেনে নেবেন। আপনি যে এলাকায় পণ্য বিক্রি করবেন সেই এলাকার চাহিদা অনুসারে পণ্য নির্বাচন করে ব্যবসা করতে পারেন। অযথা চলনশীল নয় এমন পণ্য নিয়ে কখনো ব্যবসাতে জড়াবেন না। তাহলে আপনার টাকা সম্পূর্ণ চলে যাবে।
বন্ধুরা আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে বিনিয়োগের আগে বিভিন্ন বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুঝাতে পেরেছি। আপনাদের যদি কোন সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে আমার ফেসবুক প্রোফাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়া আপনারা আমার ফেসবুক পেজটি ফলো করে রাখতে পারেন, সেখানে আমি বিভিন্ন টেকনোলজি রিলেটেড পোস্ট এবং টিপস শেয়ার করে থাকি।
9 thoughts on "বিনিয়োগ করার আগে যেসব বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন"