আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে ইন্টারনেটের মৌলিক ধারণা নিয়ে আলোচনা করবো। তো চলুন শুরু করা যাক।
ইন্টারনেট ধারণা
ইন্টারনেট (Internet) হলো পৃথিবীজুড়ে বিস্তৃত অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে এক নেটওয়ার্কে সংযুক্ত কমপিউটারের সাথে ভিন্ন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত কমপিউটারের যোেগায়োে
ব্যবস্থাকে ইন্টারনেটওয়ার্কিং (Intenetworking) বলা হয়। সে অনুযায়ী ইন্টারনেটকে নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক বা
ইন্টারনেটওয়ার্কও বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনেকগুলো নেটওয়ার্কের সমন্বিত ব্যবস্থাই
ইন্টারনেট। ইন্টারনেট বর্তমান বিশ্বের গতিময়তার মাইলফলক। এটি তথ্যের এক বিশাল ভাণ্তার। যোগাযােগ ও তথ্য।
আদান-প্রদানের এটি একটি অন্যতাম মাধ্যম। ইন্টারনেট দিয়ে বিভিন্নভাবে তথ্য সঞ্চালন ও আহরণ করা যায়। নিত্য নতূন
উদ্ভাবনের ফলে দিন দিন ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা এবং তথ্যের সমারোহ বেড়ে চলেছে।
আরপানেট (Arpanet–Advanced Research Projects Administration Network) দিয়ে ইন্টারনেটের যাত্রা শুরু।
১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলস-এর UCLA ল্যাবরেটরিতে আরপানেটের মাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থায়
প্রথম কমপিউটার যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হয়। এরপর ৫ ডিসেম্বর মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ একটি গবেষণা প্রকল্পের
আওতায় লস এঞ্জেল্স, মেনলো পার্ক, সান্তা বারবারা ও উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি কমপিউটারকে নেটওয়ার্কের আওতায়।
এনে আরপানেটের অফিসিয়াল উদ্বোধনী ঘোষণা করে। প্রাথমিক অবস্থায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ
নেটওয়ার্কের ব্যবহার উন্মুক্ত ছিল। ১৯৮২ সালে বিভিন্ন নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগের উপযোগী ইন্টারনেট প্রোটোকল
টিসিপি /আইপি উদ্ভাবনের সাথে ইন্টারনেট শব্দটি চালু হয়।
ইন্টারনেট হতে তথ্য আহরণ এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগের জন্য ব্যবহারকারী করমপিউটারের সাথে সার্ভার
কম্পিউটারের সংযোগ স্থাপন করাকে ইন্টারনেট সংযোগ করা বুঝায়। দুই ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ হতে পারে। যথা-
২, অফলাইন (Ofhine) সংযােগ
ইন্টারনেটের সাথে সার্বক্ষণিক সংযুক্ত থাকার বিষয়কে অন-লাইন সংযোগ বলা হয়। সাধারণত আইএসপিসহ বড় বড়
কোম্পানি এরূপ সংযোগ ব্যবহার করে থাকে। এ প্রক্রিয়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল বিধায় সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্য এটি
সুবিধাজনক ব্যবস্থা নয়। নিকটবতী কোনো আইএসপি ‘র সদস্য হয়ে তাদের সার্ভার ক্মপিউটার শেয়ার করে ইন্টারনেট
ব্যবহার করার বিষয়কে অফ-লাইন সংযোগ বলা হয়। এতে ব্যবহারকারী তার সকল তথ্য আই এসপি-র সার্ভারে সংযোগ
স্থাপন করে প্রেরণ করেন এবং গ্রহণ করেন। সাধারণ ব্যবহারকারীগণ অফ-লাইন ইন্টারনেট এর সযোগ-সুবিধা পেয়ে।
থাকেন। অফ-লাইন ব্যবস্থায় ইন্টারনেট সংযোগের জন্য মডেমসহ একটি পার্সোনাল কমপিউটার, টেলিফোন সংযােগ,
প্রয়ােজনীয় সফটওয়্যার এবং আইএসপি কর্তক প্রদত্ত একটি ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দরকার।
ইন্টারনেটের ব্যবহার
শুরুতে কেবল তথ্যের আদান-প্রদান করার জন্য ইন্টারনেটের জন্ম হলেও যতই দিন যাচ্ছ ইন্টারনেট ব্যবহারের বহুমুখিতা
দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার বিস্তৃত হচ্ছ। বর্তমানে এটি কেবল গবেষণাকর্ম বা
সরকারি কর্মকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষর জন্য ইন্টারনেট এখন উন্মুক্ত। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে
ব্যবহার ইন্টারনেটকে নতুন মাত্রা প্রদান করেছে। যেকোনো ধরনোর ব্যবসায়িক যোগাযোগ কিংবা বিজ্ঞাপনের জন্য
ইন্টারনেটকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যাবে না যা
ইন্টারনেটের সাথে সম্পূক্ত নয়। নিচে ইন্টারনেটের ব্যবহার সংক্ষেপে আলােচনা করা হলো।
তথ্যের আদান-প্রদানঃ বর্তমানে ইন্টারনেট তথ্যের আদান-প্রদানের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।ই-মেইলের মাধ্যমে নিমিষেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ন্যনতম ব্যয়ে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়। ইন্টারনেট
টেলিফোন ও ফ্যাক্সের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে
অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তথ্য আহরণঃ পৃথিবীর যেকোনো বিষয়ের উপর চলতি তথ্যাবলি বর্তমানে ইন্টারনেটে ধারণ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা
যায়। ব্যবহারকারী ব্রাউজিং করে প্রয়ােজনীয় তথ্যাবলি কমপিউটার পর্দায় প্রদর্শন করতে পারেন কিংবা নিজের
করমপিউটারে সংরক্ষণ বা প্রিন্ট করতে পারেন। কোনো বিষয়ের উপর তথ্যাবলি আহরণ করতে চাইলে Search Engine-
শিক্ষার ক্ষেত্রেঃও আজকাল ইন্টারনেট জ্ঞান অর্জনের মহাসমুদ্রে পরিণত হয়েছে । জীবনের যেকোনো প্রয়োজনীয় শিক্ষামূলক তথ্য ইন্টারনেট থেকে আহরণ করে জ্ঞানার্জন করা যায়। অন-লাইনে যেকোনোে লাইব্রেরি থেকে কিংবা অনলাইনে অবস্থিত যেকোনাে পুস্তক অধ্যয়ন করা যায়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পড়ে যেকোনো করসপন্ডেন্স কোর্স করা যায।
অনলাইন মিডিয়াঃ আজকাল পত্রপত্রিকা কাগজে প্রকাশনার পাশাপাশি অনলাইনেও প্রকাশ করা হয়। সম্প্রতি অনলাইন ব্রডকাস্টিংয়ের কথাও শানা যাচ্ছে। অনলাইনে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল দেখারও সুযোেগ রয়েছে।
বিনােদন ও বিনােদনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট গুরুত্বৃপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আজকাল অনেকেই অনলাইনে রেডিও,
টেলিভিশন, সিনেমা, ম্যাগাজিন ইত্যাদি থেকে বিনোেদন গ্রহণ করে থাকেন। ইন্টারনেট রিলে চ্যাট (IRC) দিয়ে জমিয়ে
আডড়া দিয়ে থাকেন । আরাে বিভিন্ন রকম ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে বিনোদনের স্বাদ গ্রহণ করার অবকাশ রয়েছে
বাণিজ্যিকঃব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসারের ক্ষত্রে ইন্টারনেট গুরুত্পূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ইন্টারনেট এক দিকে যেমন
ব্যবসায়িক যোগাযোেগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, অন্যদিকে পণ্যের বিপণন ও বিজ্ঞাপনের জন্য বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে।
ওয়েব পেইজে একটি বিজ্ঞাপন নিমিষেই সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়া যায়।
তো প্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকের আর্টিকেল এই পর্যন্তই ছিল। সবাই ভালো থাকবেন দেখা হবে আগামী পর্বে। ধন্যবাদ।
8 thoughts on "ইন্টারনেটের মৌলিক বিষয়াবলি। (part 1)"