পনি ফেসবুকে অনেক ধরনের এড দেখেছেন হয়তো যেগুলোর বেশিরভাগই হচ্ছে চাকরির নিয়োগ সংক্রান্ত। আমাদের দেশের শিক্ষিত জনগনের শতকরা ৭০ ভাগই বেকার। জনসংখ্যার দিক বিবেচনায় চাকুরি পাওয়া সোনার হরিন হাতে পাওয়ার মতো ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে কর্মসংস্থান খুবই কম, উচ্চশিক্ষা লাভের পরেও মিলছেনা চাকরি। অন্যদিকে ফেসবুক থেকে পাওয়া চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে অভিজ্ঞতা ছাড়াই ভালো বেতনের চাকরি মিলে যাচ্ছে কপালে।

চাকরির ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিঃ
ফেসবুকে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে অনেকে লোভে পড়ে যান। যেমন ধরুনঃ অষ্টম শ্রেণি পাশ_ম্যানেজার পদ_১৮০০০ টাকা বেতন। এস এস সি পাস_জি.এম. পদ_বেতন ২২০০০ , স্বভাবতই যে কেও এটা দেখে বিশ্বাস করে ফেলবে যে এটা সত্য। কারণ এখন পড়ালেখা শেষ করে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেও কপালে চাকরি জুটেনা। যদিও ভাগ্য জোটে কেও পায়_সেটাও ৮-১০ হাজার টাকা বেতনের। এই টাকা দিয়ে পরিবার তো দূর,নিজে চলতেও কষ্ট হয়ে যাবে। তারা আপনাকে নাম্বার সহ দিয়ে দিবে, ইমু/হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে বলবে। চাকরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখার পরে আপনি অবশ্যই তাকে নক করবেন বা কোনো ম্যাসেজ পাঠাবেন। তারা আপনাকে আপনার বায়োডাটা সহ সমস্ত ইনফরমেশন দিতে বলবে, যদি আপনি তা দেন_তাহলে ফেঁসে যাবেন। একটা সময় তারা আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করবে এবং টাকা চাইবে,এই টাকা আপনি দিতে বাধ্য হবেন। বাঁচার কোনো রাস্তা তখন থাকবেনা। তাই সতর্ক থাকুন সবসময়, এসব লোভনীয় অফার দেখে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিবেন না।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিয়ে ধোকা খাওয়াঃ
ফ্রিল্যান্সিং ওয়ার্কশপ গুলো ফেসবুকে ইদানিং অনেক বেশি বেশি প্রচার হচ্ছে। এখানে এতো বেশি এড/প্রচার করা হচ্ছে যে ভালো খারাপ আলাদা করা প্রায় মুশকিল। এই ফাঁকে একদল প্রতারক চক্র ওইসব প্রতিষ্ঠানের নামে নকল পেজ খুলে লোকেদের থেকে টাকা নিচ্ছে। একসময় ক্লাস শুরুর সময়টা উল্লেখ করে হঠাৎই পেজ সহ টাকা নিয়ে তারা উধাও হয়ে যায়। এতে করে লোকেদের অনেক টাকা লস হয়ে যায়,কারন একটা কোর্সে এডমিশন নিতে গেলে ৭৫০০-১২০০ টাকার মতো লাগে। এই ঘটনাটা বাস্তব এবং প্রতিদিনই কারো না কারো সঙ্গে এমনটা হচ্ছে। একটা প্রতিষ্ঠানের নামে ফেসবুকে ৫-১০ টা পেজ থাকে। এখানে মূলত ১ টা আসল বাকিগুলো সব নকল। এভাবে একদিকে প্রতিষ্ঠানের বদনাম হচ্ছে অন্যদিকে কষ্টের টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয় অনেক তরুন-তরুনী।

ওয়েবসাইটে ইনভেস্ট করে ইনকাম করাঃ

আমি জানি এখানে অনেকে আছে যারা অনলাইনে টাকা ইনভেস্ট করে ধোকা খেয়েছেন। এদের ফাঁদটা এতটাই কার্যকর যে কেও চোখ ফেরাতে পারেনা। সবাই কোনো না কোনো ভাবে লোবে পড়ে যায়। তারা ১ মাসের জন্য ডোমেইন নিয়ে ওয়েবসাইট তৈরী করে। তাতে কয়েক ধরণের প্যাকেজ চালু করে, যেমনঃ ২০০০ টাকা ইনভেস্ট করে মাস শেষে ৪০০০, ৫০০০ দিয়ে ১০,০০০ আবার ২০০০০ করে ৪০,০০০ ….। এভাবে ১ লক্ষ এমনকি ৫ লক্ষ টাকার প্যাকেজও আমি দেখেছি। প্রথম অবস্হায় ৭-৮ দিন সবাইকে ডেইলি ইনকম’টা তাদের একাউন্টে এড করে দেয়। তাদের সাইটে একসময় লোকেরা এতো বেশি ইনভেস্ট করে যে এটা ৪০,৫০,৮০ লাখ এমনকি কোটির ওপরে হয়ে যায়। ঠিক এই সময়টাতেই তারা তাদের ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়ে টাকা নিয়ে সটকে পড়ে। কেও কিছু টেরও পায়না। আজকাল তো তারা জুম অ্যাপে মিটিং করে মেম্বার কালেক্ট করছে, এমনকি তারা অনলাইন থেকে ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স বানিয়ে লোকেদের দেখাচ্ছে। এই ঘটনা আমার সাথেও ঘটেছে,তাই সকলে সাবধান হয়ে যান। আপনাদের সুবিধার্তে আমি কিছু নাম দিয়ে দিচ্ছিঃ ১. Seilaze(২.৫ কোটি গ্রাহক) ২. Digital-marketing-bd(১৪ হাজার + গ্রাহক) ৩. Delta1airlines( ৭০ হাজার + গ্রাহক) ৪. Rulai-ai.vip( ৪৬ হাজার + গ্রাহক) ৫. hotelplus (১ লক্ষ + গ্রাহক)

রোবট কিনে ডলার ইনকামঃ
বেশ কিছুদিন আগে থেকে প্রচলন হয়েছে রোবট দ্বারা ইনকামের সাইট। এসকল সাইটে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। রেজিষ্ট্রেশন বোনাস হিসেবে ১০-৩০ ডলার দিয়ে দেবে। এটাই তাদের কার্যকরি ফাঁদ। ধরুন আপনি ৩০ ডলার বোনাস পেলেন, এবার ইনকাম শুরু করতে হলে ৫০ ডলারের একটা রোবট কিনতে হবে। তখন আর ২০ ডলার আপনি নিশ্চিন্তে সাইটে ডিপোজিট করে রোবট কিনবেন। এখানে যত দামি রোবট কিনবেন,দিনে তত ডলার ইনকাম করতে পারবেন। এমনকি ১ দিনে ২০-৫০ ডলারও আর্ণ হয়ে যাবে। তোহ মিনিমাম উইথড্র অপশন থাকবে ৩০০/৫০০ ডলার। এই উইথড্র অপশন চালু করতে গেলেও আপনাকে আরো ১০-২০ (১২০০-২১০০ ৳) ডলার খরচ করতে হবে। মাস শেষে যার যত ইনকাম হবে তা উইথড্র দিতে যাবে। ঠিক তখন দেখা যাবে সাইটটি আর নেই,স্ক্যাম করে চলে গেছে। তাদের টেলিগ্রাম সাপোর্ট গ্রুপের সদস্য সংখ্যা হিসেব করলে পরিষ্কার বোঝা যাবে যে ৫০-৭০ লক্ষ টাকা তারা মেরে দিয়েছে।

ভিউয়ার্স, আপনারা আজকে এখানে যেসব বিষয়ে জানলেন_সেগুলোই এখন প্রচলিত আছে। বিশেষ করে যারা টেলিগ্রাম ব্যবহার করেন তারা অনায়াসে এসকল সাইটের তথ্য সহ ইনভাইটেশন পেয়ে যাবেন। তবে এসব ইগনোর করাই ভালো, নাহয় আপনিও নিঃস্ব হয়ে যাবেন। যে যত বেশি লোভ করবে_সে তত তাড়াতাড়ি নিঃস্ব হবে। আপনাদেরকে সতর্ক করা আমার দায়িত্ব ছিলো। তো আজকে এই পর্যন্তই, আগামীতে আবারও দেখা হবে। সবাই ভালো থাকবেন, বিদায়_আল্লাহ হাফেজ..।

3 thoughts on "কেন তারা লক্ষ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে? কোন কায়দায় তারা এসব প্রতারণা করছে? আপনার সাথেও এমনটা ঘটতে পারে তাই সাবধান হয়ে যান !"

  1. Asif5 Contributor says:
    Nice post. Visit my post trickbd.com
  2. mithu8099 Author Post Creator says:
    Thanks..?
  3. Rakib Hasan Contributor says:
    আমি ৩ লক্ষ টাকা ধরা খাইছি ২২ সালে।
    OTOFPR

Leave a Reply