আসসালামু আলাইকুম পাঠক বন্ধুরা। আশা করছি আল্লাহর রহমতে আপনারা ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের’কে জানাবো, AI(artificial intelligence) এর ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কি রকম প্রভাব ফেলছে। প্রযুক্তির অপব্যবহার আমাদের জীবনে কত বেশি ক্ষতি করে যাচ্ছে!
প্রথমত আসুন উনবিংশ শতাব্দী‘তে চলে যাই, তখন ছিলোনা ভালো ইন্টারনেট,ছিলোনা কাজের গতি,ছিলোনা ভালো কোনো প্রযুক্তি। অথচ তখনকার দিনগুলো ছিলো অনেক মধুর। পড়ার সময় পড়া আর বাকি সময় শুধু খেলাধুলা করা। রাতে চাঁদের আলোতে রাস্তায় হাটতাম,হাওয়া খেতাম,রাতে আকাশের তারা গুনতাম। লোকেরা সহজ-সরল জীবন-যাপন করতো, ছিলোনা কোনো দন্দ, ছিলোনা কোনো ভেদাভেদ। গতিশীল ইন্টারনেট ছিলোনা, এখনকার মতো এতো বেশি বাহন ছিলোনা। মোট কথা হচ্ছে তখনকার দিনগুলো ছিলো সোনালী দিন,সোনালী সময়।
এখন আমরা বিংশ শতাব্দীর কথা বলবো,যে যুগে প্রযুক্তির মেলা বসেছে। যোগাযোগ সহজ করা হয়েছে,দূর দূরান্তে চলাফেরা করা সহজ করা হয়েছে। কাজের অগ্রগতি হয়েছে বহুদূর, এমনকি সমস্ত রকম কাজ সহজ থেকে সহজতর হয়ে গিয়েছে।
এখন আমরা দেখবো, প্রযুক্তির উন্নয়নে আমাদের কি কি সুবিধা হয়েছে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে আরো সহজ করতে আমরা নতুন নতুন গ্যাজেট ব্যবহার করছি। কিছুদিন পর পর নতুন গ্যাজেট উদ্ভাবন করে আসছে বিজ্ঞানিরা। আমরা যদি তৈজসপত্রের দিকে তাকাই,তখন দেখবো আগে ছিলো মাটির পাত্র। আর এখন সবকিছুই এ্যালুমিনিয়াম,সিলভার এর তৈরী পাত্র। আরো রয়েছে ব্ল্যান্ডার মেশিন, যদিও আগের দিন মানুষেরা শিলের ওপরে বেঁটে মিক্স করতো। সাধারণত ভাত রান্না হয় পাতিলে, এখন রীতিমতো রাইসকুকারে রান্না করা হচ্ছে। আগে যেখানে আমরা সাইকেল ব্যবহার করে কয়েক মাইল রাস্তা পাড়ি দিতাম। এখন অটো দিক্সা, বাইক,মোটর গাড়ি দিয়ে সহজে ও কম সময়ে সেই রাস্তা পাড়ি দেওয়া যায়।
বিমান তখন ব্যপকভাবে চলাচল করেনি,অথচ এখন প্রতি মিনিটে মিনিটে বিমানে করে যাত্রী পার করছে এক দেশ থেকে অন্য দেশে। কারণ বিমানের ইঞ্জিনকে আরো আধুনিক ও শক্তিশালী করা হয়েছে। এখন জেড-ইন্জিন নামক এমন এক ইন্জিন আবিষ্কার করেছে, যার শক্তি তুুলনা করা যায়না।
কলকারখানায় যেখানে শ্রমিকরা নিজেরা হাত দিয়ে বিপজ্জনক কাজ করতো,আজ সেখানে রোবটিক মেশিন এসে ঝুঁকির কাজগুলো করে দিচ্ছে। প্রযুক্তিতে সবচেয়ে বেশি বিপ্লব ঘটিয়েছে এই “রোবট“,, । রোবট অনেক ধরনের হতে পারে,আলাদা আলাদা কাজের জন্য আলাদা আলাদা রোবট বানানো হয়। রোবট দিয়ে বিভিন্ন ফ্যাক্টরীতে ঝুঁকির কাজগুলো করানো হয়। এই রোবট একটানা কাজ করে যেতে পারে। একসঙ্গে কয়েকটি কাজ সে করে ফেলতে পারে,যেখানে মানুষ একসঙ্গে একটির বেশি কাজ করতে পারেনা।
Artificial Intelligence প্রযুক্তি উদ্ভাবের পর থেকে এক বিপ্লব ঘটে গেছে। দিন দিন আপডেট করে এটাকে আরো বেশি শক্তিশালী বানিয়েছে। এখন রোবটরা শুধু কারখানায় কাজ করেনা,তারা মানুষের সাথে কথা বলে,হাটাহাটি করে, যুদ্ধক্ষেত্রেও রোবটের ব্যবহার দেখা গিয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে যৌনসঙ্গী হিসেবে এদেরকে রাখা হচ্ছে। রোবটকে মানুষের মস্তিষ্কের সাথে তুলনা করা উচিত নয়। তবে এত বেশি উন্নতি ফলে এই রোবটেরা মানুষের ওপরেই আক্রমণ চালাবে। তাদের বুদ্ধিমত্তা মানুষের থেকেও তীক্ষ্ণ এবং দ্রূত। তারা একসময় পৃথিবী দখল করবে এবং মানুষদের ওপর আপ্রমন করবে। তাই আমাদেরকে সাবধান হতে হবে।
প্রযুক্তির উন্নয়নে স্মার্টফোনের মাধ্যমে, এখন আমরা ইন্টারনেটের অনেক গভীরের প্রবেশ করতে পারছি। যার ফলে আমরা ইনৃটারনেটে অনেক কিছু খুঁজে বেড়াচ্ছি। উল্টোদিকে আমরা আমাদের সকল তথ্য হারাচ্ছি। অনেকেই হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে আবার অনেক’কেই ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে।
যখন রোবটদের অবাধ বিচরণ শুরু হবে,যখন রোবটেরা নিজেদের জীবনব্যবস্হা নিজেরাই তৈরী করে নেবে। তখন সম্ভবত আমাদের মানুষদের অস্তিত্ব্যই থাকবেনা পৃথিবীতে। প্রযুক্তির যেমন ভালো দিক রয়েছে তেমন খারাপ দিকও রয়েছে। আমরা প্রযুক্তির ভালো দিকটিই বেচে নেবো,খারাপ কাজে ব্যবহার করবোনা। তাহলে আমরাও আমাদের অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে টিকিয়ে রাখতে পারবো।
আজকে আর লিখবোনা,সংক্ষিপ্ত কিছু কথা আপনাদের কাছে তুলে ধরেছি। এসকল বিষয় ব্যতিত আরো অনেক অনেক কারন আছে,যেগুলো বর্ণনা করতে গেলে বয়স শেষ হয়ে যাবে। তাই আজকে এখানেই সমাপ্ত করছি। আবার দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন,সবার সুস্থতা কামনা করে আমি বিদায় নিচ্ছি, আল্লাহ হাফেজ..।