আপনার মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার থেকে অনলাইনে বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করা এখন খুব সহজ। আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর ভাতা সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে পাওয়া যাবে। তাই এখন ঘরে বসেই পাচ্ছেন বয়স্ক ভাতা। অনলাইনে অর্থপ্রদানের আবেদন গ্রহণ ও G2P সিস্টেমের মাধ্যমে যাচাইয়ের পর বাংলাদেশ সরকার বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি সুবিধাভোগীর অ্যাকাউন্টে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে। তাই আর দেরি কেন, চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে কি করতে হবে।

কারা কারা আবেদন করতে পারবেন এবং কিভাবে পারবেন?

  • (১) সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে:- এটার মানে হচ্ছে যে ব্যক্তি আবেদন করবে সে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং যেই এলাকা বা ইউনিয়নে আবেদন করবেন সেই ইউনিয়নের বাসিন্দা হতে হবে।

 

  • (২) জন্ম নিবন্ধন/জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে:- আর এর মানে হল অবশ্যই আপনার একটি জন্ম নিবন্ধন অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে এবং সেটি থাকলে সেটি দিয়ে আপনি আবেদন করতে পারবেন।

 

  • (৩) পুরুষের বয়স ৬৫ এবং মহিলাদের বয়স ৬২ বা তার বেশি হতে হবে:- অর্থাৎ পুরুষের বয়স ৬৫ কিংবা তার বেশি বছর বয়স হলে আবেদন করতে পারবেন এবং মহিলাদের ৬২ বছর বা তার বেশি হলে আবেদন করতে পারবেন।

 

  • (৪) প্রার্থীর বার্ষিক গড় আয় ১০ হাজার টাকা বা তার কম থাকতে হবে:- তাই আবেদন করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যার নামে আবেদন করছেন তার বার্ষিক গড় আয় কত।

 

  • (৫) বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হতে হবে:- অর্থাৎ আপনি যখন আবেদন করবেন তারপর আপনার যে আবেদন ফরমটি আছে , সেই ফর্মটি আপনার ইউনিয়ন সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফর্মটা তাদেরকে দিতে হবে। এবং তারা যদি আপনাকে নির্বাচিত করেন তাহলে আপনি বয়স্ক ভাতার টাকা পাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবেন।

 

কিভাবে আবেদন করবেন ? চলুন দেখি নিই।

 

  1. আবেদন করা খুবই সহজ আপনাকে প্রথমে https://mis.bhata.gov.bd/onlineApplication এই লিংকে ক্লিক করে বয়স্ক ভাতার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।

 

  1. এবার আপনি এই ওয়েবসাইট থেকে *নির্বাচন করুন* নামে একটি অপশন পাবেন ওইটার ওপরে ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনি বয়স্ক ভাতা নিবেন নাকি অন্যান্য সেটি সিলেক্ট করতে হবে, আমরা যেহেতু বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করব তাই আমরা *বয়স্ক ভাতা * টি সিলেক্ট করে নিবো।

 

  1. এবার আপনাকে আরেকটি ইন্টারফেস এ নিয়ে যাবে সেখানে আপনাকে আপনার কিছু ইনফরমেশন দিতে হবে যেমন- ১.আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার ২. আপনার জন্ম সাল কিংবা জন্মতারিখ। এবার আপনাকে যাচাই করুন অপশনে ক্লিক করতে হবে।

এবার নাম এবং ছবি সহ আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ৮০ পার্সেন্ট তথ্য আপনার সামনে শো করবে। আপনাকে বাড়তি যে সমস্ত ইনফরমেশন দিতে হবে সেগুলো হলো-

  • ১. আপনার মায়ের নাম (ইংরেজিতে)
  • ২. আপনার বাবার নাম (ইংরেজিতে)
  • ৩. প্রয়োজনের ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রীর নাম
  • ৪. আপনার ধর্মের নাম দিবেন।
  • ৫. আপনি বিবাহিত নাকি অবিবাহিত সেটি সিলেক্ট করবেন।
  • ৬. শিক্ষাগত যোগ্যতা দিবেন।
  • ৭.পরিবারের সদস্যার সংখ্যা দিবেন।
  • ৮.আপনার পেশা নির্বাচন করবেন।
  • ৯. আপনার বার্ষিক আয় নির্বাচন করতে হবে।
  • ১০. স্বাস্থ্যগত কর্মক্ষমতার তথ্য দিবেন
  • ১১. সরকারি বেসরকারি সুবিধাপত্রের বিবরণ দিবেন।
  • ১২. আপনার বাসস্থান নির্বাচন করবেন।
  • ১৩. ভূমির মালিকানা দিবেন অর্থাৎ আপনার জমি জায়গা আছে নাকি সেটা সিলেক্ট করবেন।

 

মোটামুটি আপনার কাজ ৯০% শেষ এবার যেটি করতে হবে আপনি নিচে স্কলিং করুন এবং তারপর আরো কিছু ইনফরমেশন আপনাকে এড করতে হবে যেমন-

  • আপনার বিভাগের নাম
  • আপনার জেলার নাম
  • আপনার ইউনিয়ন পরিষদের নাম
  • আপনার উপজেলার নাম
  • আপনার ওয়ার্ড নাম্বার
  • আপনার এরিয়ার পোস্ট কোড
  • এবার আপনার পুরো ঠিকানাটি দিয়ে দিবেন

সবশেষ আপনার মোবাইল নাম্বারটি দিবেন মোবাইল নাম্বারটা অবশ্যই আপনার নিজের দিবেন এবং বারবার চেক করে দেখবেন সঠিক কিনা।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি এবার আপনি নিচের সংরক্ষণ বাঁটনে ক্লিক করে দিবেন।

মোটামুটি আপনার কাজ শেষ এবার আপনি চাইলেই আপনার তথ্যগুলো প্রিন্ট বাটনে ক্লিক করে প্রিন্ট করে রাখতে পারেন।

আপনি প্রিন্ট এপিড ওপিট করে রাখতে পারেন সে ক্ষেত্রে পরবর্তীতে আপনার প্রয়োজন হতে পারে। এখন আপনার আর কিছুই করার প্রয়োজন নেই! যদি আরো কোন তথ্য আপনার প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই সমাজ সেবক অফিসে যোগাযোগ করবেন তাহলে পেয়ে যাবেন।

এখন আপনার করণীয় কি?

আপনি যেহেতু আবেদনটি সম্পন্ন করে ফেলেছেন তাই এখন আপনাকে আর কিছুই করতে হবে না। নির্দিষ্ট সময় পর আপনার সমাজ সেবক অধিদপ্তর থেকে লিস্ট দেওয়া হবে ইউনিয়নে ইউনিয়নে, তখন আপনার ইউনিয়ন থেকে আপনাকে যাচাই-বাছাই করে আপনি যদি ভাতা পাওয়ার যোগ্য হন, তাহলে আপনাকে ভাতা প্রদান করা হবে।

 

শেষ কথা

সম্মানিত পাঠক: আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই জানতে পেরেছেন কিভাবে আপনার মোবাইল কিংবা কম্পিউটার দিয়ে বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে হয়। এরপরও যদি বুঝতে কোথাও অসুবিধে মনে হয় তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করে জানাতে পারেন, আমরা চেষ্টা করব আপনার সমস্যাটি সমাধান করে দেওয়ার।

 

আজকের পোস্টটি যদি কাজের মনে হয় তাহলে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে দিতে পারেন, আর আপনি যদি এমনই আনকমন এবং ইন্টারেস্টিং পোস্ট পড়তে পছন্দ করেন তাহলে আমাদের সঙ্গেই থাকুন ধন্যবাদ।

8 thoughts on "বয়স্ক ভাতা আবেদন করার উপায়"

  1. MD Shimul Mondol Contributor says:
    ভালো। প্রতিবন্ধী ও বিধবা ভাতার প্রসেস চাই।
    1. Md Naimul Hossain Contributor says:
      বয়স্ক ভাতা https://youtu.be/viyYQP-y2Kw
  2. mdmamunrahman Contributor says:
    A to Z post hoyece amazing.
    Thanks
  3. Md Naimul Hossain Contributor says:
    ভিডিওর মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে https://youtu.be/8e7cWYiBnv8
  4. Md Naimul Hossain Contributor says:
    অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করুন নিজের মোবাইল থেকে
    https://youtu.be/viyYQP-y2Kw

Leave a Reply