ওয়েব ডিজাইন শিখুন, ক্যারিয়ার গড়ুন পর্ব ০২ |
গত পর্বে আমি যতটুকু জানি ততটুকু বুঝিয়েছিলাম । আপনাদের অনেক সারা পেয়েছিলাম । তাই আজকে আবার দ্বিতীয় পর্ব লিখতে বসেছি । যে একটা জিনিশ আমাকে হতাশ করেছে সেটা হলো “সবাই কাজ শেখার আগেই আর্ণ করতে চায়!”
ভাই আপনি জানেন না কোনটা কি ভাবে কাজ করে । কোনটা ইউজ করলে কি হবে। কোন ডিজাইনটা ভাল কোনটা খারাপ । কি করলে সাইট স্পিড আপ হবে । আর কি করলে ডাউন । আপনাকে আগে প্রোপারলি জানতে হবে প্রচুর সময় দিয়ে নিজেকে সেই পর্যায়ে নিয়ে জেতে হবে, যাতে করে ক্লায়েন্ট আপনাকে প্রশ্ন করে হারাতে না পারে। বুঝেছেন আমি কি বলতে চেয়েছি?
ধরুণ, ক্লায়েন্ট আপনাকে একটা ডেমো সাইট দিয়ে বললো, আমার এইরকম সাইট তৈরি করে দিতে হবে । আপনি দিলেন তার ভিন্ন ভাবে! এতে করে কি হবে? ক্লায়েন্ট তো কাজ নেবেই না বরং আপনার এবং আপনার ক্লায়েন্টের দুজনেরই সময় অ্যান্ড শ্রম বৃথা যাবে আর মনের মধ্যে তৈরি হবে নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা ।
যাইহোক অনেক বকর বকর করেছি এবার কাজে চলে আসি।
আপনার কাছে ইন্টারনেট আছে সব আছে আপনি কেন বসে বসে ফেসবুকিং করে সময় নষ্ট করছেন?
আপনার কি উচিৎ হচ্ছে ডাল হয়ে বসে বসে ফেসবুক পড়া আর অন্যের কিছু দেখে হিংসায় জ্বলা? ঠিক হচ্ছে না ভাই। তাই সময় থাকতে লুঙ্গী কাছা মেরে নেমে পড়ুন । তাহলেই আপনাকে ধরার লোক নেই।
জানা দরকার ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর ভবিষ্যত এবং ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার সম্পর্কে
আবারো বলি। ওয়েব ডিজাইন এর জন্য আপনাকে শিখতে হবে এইচটিএমএল, সিএসএস এবং মোটামুটি জাভাস্ক্রিপ্ট (বিশেষ করে কোন ফ্রেমওয়ার্ক যেমন জেকোয়েরি)। ফটোশপের মোটামুটি আইডিয়া থাকতে হবে। যেমন পিএসডি থেকে এক্সএইচটিএমএল করতে যতকিছু লাগে ততটুকু। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট তথা প্রোগ্রামিং জগতে ঢোকার প্রথম দরজা হল ওয়েব ডিজাইন। ভাল ডিজাইনার না হলে ভাল প্রোগ্রামার হতে পারবেন না। প্রোগ্রামিং এ যদি ক্যারিয়ার নাও করেন শুধু ওয়েব ডিজাইনের চাহিদাও কম নয়। বুঝেন নাই? এখন তো লুঙ্গী ড্যান্স মারবেন । মারেন তবে সাবধানে। লুঙ্গী খুলে গেলেই ঝামেলা।
মনে রাখবেন এইগুলা শেখা সহজ, আপনি ঠিক মত সময় দিলে আপনার শিখতে ৬-৮ মাস লাগতে পারে যদি প্রতিদিন ৪/৫ ঘন্টা পরিশ্রম করেন। চিন্তায় ফেলা দিলাম আবারো তাইনা? চিন্তা করলেও লাভ আছে । আপনার মেধার উপর ভিত্তি করে এর থেকে সময় কমবেশি লাগতে পারে।
অনলাইনের প্রচুর টিউটোরিয়াল আছে সেখান থেকে শিখতে পারেন।
ব্রাউজার কম্প্যাটিবিলিটি তথা আপনার ডিজাইন করা পেজ যেন সব ব্রাউজারে একই রকম দেখায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে।
বর্তমানে রেসপনসিভ ডিজাইনের যুগ। এজন্য রেসপনসিভ ডিজাইন করতে পারতে হবে। বিশেষ করে এটার জন্য ব্যবহৃত ফ্রেমওয়ার্কের কাজ ভাল জানতে হবে। যেমন টুইটার বুটস্ট্রাপ। মোবাইল সহ যেকোন ডিভাইসে আপনার ডিজাইন করা পেজ যেন একই রকম দেখায়, আড়াআড়িভাবে স্ক্রলিং করতে না হয়। প্রয়োজনীয় টুলস যেমন বিভিন্ন IDE, IE tester, IE তে ব্রাউজার মোড বদলানো, ফায়ারবাগ ইত্যাদি ।
এখন জেনে নিন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা প্রোগ্রামিং করতে কি কি জানা লাগবেঃ
আপনাকে প্রোগ্রামিং শিখতে হবে। এটাই মুল জিনিস ডেভেলপমেন্টে এর। মূলত ওয়েব প্রোগ্রামিং যেমন ASP.NET, PHP, Java বা অন্য কোন ল্যাংগুয়েজ। তবে পিএইচপির কাজ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি। ওয়েব ডেভেলপমেন্টে প্রোগ্রামিং শেখার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট প্রচুর জিনিস শিখতে হবে। তা নাহলে বেশি উপরে উঠতে পারবেন না। ঘাবরাবেন না। কারণ আপনাকে আপনার স্কিল দিয়ে বিচার করা হবে । তাই জদু মদু কদু শিখলে কাজে আসবে না। যেগুলা ভাল ভাবে শেখা দরকার সেগুলা হলোঃ
১. যেকোন একটা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখুন, আমি সাজেস্ট করবো পিএইচপি শেখার জন্য।
২. ডেটাবেস ডিজাইন এর জন্য আপনি শিখতে পারেন। মাইসিক্যুয়েল দিয়ে কমপক্ষে মধ্যম পর্যায়ের একটা পূর্নাঙ্গ রিলেশনাল ডেটাবেস বানাতে পারতে হবে। ভায় পেলে চলবে না ভাই কাজ আপনাকেই শিখতে হবে কেউ হাতে ধরে শিখিয়ে দেবে না।
৩. খুব ভাল কোয়েরি শিখতে হবে। SQL দিয়ে জটিল কোয়েরি করতে পারতে হবে। প্রাক্টিস করলেই সম্ভব । প্রত্যহ প্রাক্টিস করুন তাহলেই পারবেন । না হলে তো গুগোল মামু আছেই চিন্তা কিসের?
৪. ফেইসবুক/গুগল/টুইটার/অ্যামাজন ইত্যাদি বিখ্যাত সাইটের ওয়েব সার্ভিস/ API ব্যবহার করা জানা উচিৎ (এক্সএমএল) । একটু বলি, অনেকেই এপিআই এর পূর্ণ রুপ জানে না । এপিআই এর পূর্ণ রুপ হলো “এপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস”
৫. আমি মনে করি হোস্টিং সমন্ধে স্বচ্ছ ধারনা থাকা আবশ্যক । বিশেষ করে সার্ভার ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে ধারনা থাকা উচিৎ।
৬. সোর্স কন্ট্রোল যেমন git, tortoise svn ইত্যাদি দিয়ে কিভাবে একই প্রজেক্টে একাধিক ডেভেলপার কাজ করা যায় এসব জানতে হবে।
৭. এজাক্স, জেকোয়েরি এবং ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন টুলস সম্পর্কে প্রচুর জানতে হবে। যেমন নেটবিনস (কোড লেখার IDE), HeidiSQL, MySQL WorkBench (ডেটাবেস ডিজাইন টুল) এসব জানতে হবে। মূল কথা আপনাকে প্রোফেশনাল হতেই হবে যে কোনো ভাবেই । তাহলে আপনার আর পেছনে তাকাতে হবে না ।
মূল বক্তব্য হইলো গিয়া ওয়েব ডিজাইনের কাজে সেই লেভেল এর এক্সপার্ট হতে হবে। মানে হলো এইচটিএমএল, সিএসএস এবং জেকোয়েরি এসবের কাজ তুরি মেরেই উড়িয়ে দিতে হবে। একজন ভাল প্রোগ্রামার হতে হলে আগে ভাল ডিজাইনার (বরং সুপার এক্সপার্ট) হতে হবে।
আপনি যে কাজই করতে চান না কেন আগে সেটাতে দক্ষতা অর্জন করুন এরপর ফ্রিল্যান্সিং এ যান। কাজ না জেনে আপনি টাকা কামাতে চান কোন মুখে? কিছু জেনেছেন কিংবা হাল্কা পাতলা ধারনা নিয়ে আপওয়ার্ক বা যেকোন মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খোলা হতাশা ছাড়া কিছু দিতে পারবেনা। সেই জন্য বার বার বলছি নিজেকে সেই মাপে নিয়ে যান । যেখানে হতাশার কোনো চিহ্ন নেই।
আপনার শেখার জন্য কিছু কিছু বইয়ের নাম এবং লিঙ্ক দিয়ে দিলাম যাতে করে আপনার সময় অপচয় না হয়।
মাস্টারিং ওয়েব ডেভলপমেন্ট ১ম খণ্ড (সিডিসহ) (পেপারব্যাক)
মাস্টারিং ওয়েব ডেভলপমেন্ট (সিডি সহ ২য় খন্ড) (পেপারব্যাক)
আশা করি বই গুলা খুব কাজে দেবে । যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে পারেন ।
আজকের মত আসি। দেখা হবে আগামীতে । ভাল থাকুন । আল্লাহ্ হাফিজ ।
১. বর্তমানে পাইথন সবথেকে ট্রেন্ডিং ল্যাঙ্গুয়েজ।
২. PHP থেকে সহজ।
৩. অনেক সহজ এবং এডভান্স ফ্রেমওয়ার্ক আছে।
৪. ভালো কমিউনিটি সাপোর্ট আছে।।
আরো, অনেক ফিচার আছে গুগল করলেই পাওয়া যাবে।
গুগল, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, নেটফ্লিক্স সবাই পাইথন এ সুইচ করছে।। ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, আর ইনস্টাগ্রাম এখন সম্পূর্ণ পাইথন নির্ভর।
তাই, আমাদের নতুন হিসেবে শিখতে গেলে পাইথন শেখায় উচিৎ।।
আমি আপনার বিপক্ষে বলছি না, পাইথন আরো ভালো সেটাই বলছি।।
পোস্ট দারুণ হয়েছে!!?