আজকে আমি হাজির হলাম আমাদের ব্যাবহার করা সেরা কয়েকটি ক্লাউড স্টোরেজ নিয়ে। আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আপনার জন্যে সেরা ক্লাউড স্টোরেজ কোনটি হবে এবং কোন ক্লাউড স্টোরেজ এর কি রকম কার্যকারিতা এবং সিকিউরিটি রয়েছে। তার আগে যারা ক্লাউড স্টোরেজ সম্পর্কে জানেন না তারা এক নজরে জেনেনিন।
ক্লাউড স্টোরেজ কি?
ক্লাউড স্টোরেজ হচ্ছে এক কথায় বলতে গেলে এক ধরনের ভার্চুয়াল মেমোরি কার্ড অথবা ভার্চুয়াল পেনড্রাইভ অথবা ভার্চুয়াল কোনো ডাটা সংরক্ষণের জায়গা। একটি মেমোরি কার্ডে যেমন আমরা আমাদের পছন্দের ও প্রয়োজনীয় গান, ছবি, ভিডিও, অডিও, পিডিএফ, ফাইল, ফোল্ডার, অ্যাপস ইত্যাদি তথ্য সামগ্রী সংরক্ষণ করতে পারি এবং এক জায়গা থেকে অন্য এক যায়গায় নিয়ে যেতে পারি। তেমনি ক্লাউড স্টোরেজ এর মাধ্যমেও আমরা সব ধরনেরগান, ছবি, ভিডিও, অডিও, পিডিএফ, ফাইল, ফোল্ডার, সংরক্ষণ করতে পারি। এক ডিভাইস অন্য ডিভাইস এ ইন্টারনেট এর মাধ্যমে পাঠাতে পারি। এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে আমাদের ডিভাইস নষ্ট হয়ে গেলেও আমাদের ক্লাউড স্টোরেজ এর আইডি ও পাসওয়ার্ড মনে থাকলেই আমরা অন্য কোনো ডিভাইস এ আমাদের সেই আগের ফোনের হারিয়ে যাওয়া ডেটা গুলো ব্যাবহার করতে পারবো।
Google Drive
Google Drive এর পরিচয় দিতে হয়না। আমার দেখা আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যাবহারকারি দেখেছি Google Drive এর। ১৫ জিবি ফ্রি স্পেস সহ গুগলের সিকিউরিটি পাওয়া যায়। তবে গুগলের সিকিউরিটি পাওয়া গেলেও এইখানে কিছুটা কমতি আছে। যেটা হচ্ছে Google Drive এ Encryption নেই অর্থাৎ কোনো ফাইল বা ফোল্ডার কে পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড করা যায়না।
তাই আমি বলি যে আপনার কোনো সাধারন ডকুমেন্ট যেগুলো আপনার পরিবার ও প্রতিবেশী দেখলে সমস্যা নেই বা কিছু বুঝবেনা এমন রাখতে পারেন। তবে যেগুলো খুবই প্রাইভেট এবং পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড করতে করতে হয় এমন কোনো তথ্য না রাখতে বলি। তাছারা হ্যাকাররা হ্যাক করার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিমাণে টার্গেট করে গুগল কে বা গুগলের কোনো সিস্টেম কে। সেই দিক দিয়ে এই Google Drive অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ বলা যায়।
One Drive
এটা Google Drive এর থেকে এক দিক দিয়ে ভালো। আবার এক দিক দিয়ে খারাপ। Google Drive এ যেখানে ১৫জিবি সেখানে One Drive ফ্রি স্পেস দেয় মাত্রই 5 জিবি। আসল কথা তো বলতেই ভুলে গেছি। প্রত্যেকটি ক্লাউড স্টোরেজ এর কিছু লিমিট করা ফ্রি স্পেস থাকলেও আপনি টাকা দিয়ে স্পেস কিনে বাড়াতে পারবেন।
One Drive এ স্পেস কম হলেও এতে রয়েছে একটি অসাধারন ফিচার যার নাম হচ্ছে Secret World. এটা কিছুটা এমন যে এতে আপনি ফাইল অথবা ফোল্ডার রাখতে পারেন। রেখে সেগুলোকে পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড করতে পারেন। কিছু কিছু ফাইল বা ফোল্ডার কে আবার ডাবল Encryption দিয়ে রাখতে পারেন।
তাছারা যারা উইন্ডোজ ইউজার তাদের জন্যে সেরা স্পীডি ক্লাউড স্টোরেজ হচ্ছে One Drive. দরকার পড়লে ডেক্সটপ বা ল্যাপটপ এ Google Drive এবং One Drive ইন্সটল দিয়ে দেখেন কোনটা বেশি স্পীডি।
Mega
এবার আসা যাক ফ্রীতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ক্লাউড স্টোরেজ Provide করা ক্লাউড স্টোরেজ Mega সম্পর্কে। একদম বেসিক ভাবে পাওয়া যায় ২০ জিবি। কিছু ছোটো খাটো সেটআপ করলে যেমন:- Mobile Number ভেরিফাই করলে পাওয়া যায় আরো 5 জিবি। আবার অন্যান্য কিছু কাজে আরো নেওয়া যায়। সর্বমোট কত জিবি নিতে পারেন সেটা আমার নিজের ও জানা নেই আপনারা জানলে আমাকে টিউমেন্টে জানাবেন।
স্পেস এর কথা এখন বাদ দিলাম। পাশাপাশি আরও রয়েছে Encryption ব্যাবস্থাও। লগিন এর জন্যে সিকিউরিটি key এর ব্যাবস্থাও রয়েছে। যা আবার আপনি কোথাও সেভ করেও রাখতে পারেন। তার পরেও এর ইউজার সংখ্যা এতো কম হবার কারণ জানুন পরবর্তি প্যারা তে।
এর একটা বড়ো অসুবিধা হলো ইহাকে নিয়মিত ব্যাবহার করতে থাকতে হয়। অর্থাৎ আপনি কোনো বড় একটি মুভি বা গেম রেখে ইহাকে আর নজর না রাখেন তাহলে কয়েক মাস পরে আপনার স্পেস স্টোরেজ কমে যেতে পারে। ফলে আমার সেই মুভি বা গেম টিও গায়েব হয়ে যেতে পারে। তাই বলি যে, পার্সোনাল বা জরুরি কোনো তথ্য রাখার জন্য এটা মোটেই ব্যবহারযোগ্য নয়। আপনার কোনো জরুরি ফাইল যেটা যেকোনো সময়ে জরুরি কাজে লাগতে পারে সেটার জন্য One Drive ই যথেষ্ট কারণ সেটার স্পীড ভালো।
Media Fire
৫০ জিবি ফ্রী স্পেস দিয়ে থাকে এই Media Fire. প্রথমে ১০জিবি তারপর কিছু সেটআপ করলে মোট ৫০জিবি। মিডিয়া ফায়ার কেও আমি কোনো পারসোনাল ডেটা রাখার জন্যে Recommend করি না। কারন Media Fire এ আপনি কোনো কপিরাইট মেটারিয়াল রাখলে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান্ড করে দিবে। এখন আপনিই চিন্তা করেন, আপনার ব্যাক্তিগত ড্রাইভে কপিরাইট মেটারীয়াল রয়েছে সেটা কোম্পানি বুঝলো কিভাবে?
জি, ঠিকই ভাবছেন। কোম্পানি আপনার পারসোনাল ড্রাইভ সবসময় চেক করে। তাহলে বুঝেই নিন এই ড্রাইভে পারসোনাল ডেটা কতটা নিরাপদ বা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে ফাইল শেয়ার করার জন্য ইহা খুবই ভালো। ভালো স্পিড ও পাওয়া যায়।
Dropbox
Dropbox কে আমি সবচেয়ে সুরক্ষিত ক্লাউড স্টোরেজ মনেকরি। ড্রপবক্স আগে অনেক বেশি ব্যাবহার হতো। এখন বেশি একটা ব্যাবহার হয়না। কারন হচ্ছে এতে স্টোরেজ খুব কম। মাত্র দুই জিবি।
আমিও আগে Dropbox ব্যাবহার করতাম। এখন Google Drive ব্যাবহার করি। স্টোরেজ কম থাকার কারণে। Dropbox এ সিকিউরিটি এর ব্যাবস্থা খুবই ভালো। বড় হ্যাকারদের জন্যেও ইহাকে হ্যাক করা খুবই জটিল ব্যাপার।
I Cloud
আপনাদের আজকের সর্বশেষ টপিক টি হচ্ছে অ্যাপল কোম্পানীর প্রোভাইড করা ক্লাউড সার্ভিস I Cloud. আপনি কি একজন আইফোন ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে সবচেয়ে সেরা ক্লাউড স্টোরেজ হচ্ছে I Cloud. এর থেকে বেশি সুবিধা আপনাকে কোনো ক্লাউড স্টোরেজ দিতেই পারবেনা। এর সুযোগ সুবিধা সঠিক ভাবে বুঝানোর জন্য আমি নিচের প্যারাতে একটি উদহারন দিচ্ছি।
মনে করেন আপনি আইফোন দিয়ে একটি ছবি তুললেন। তার ঠিক পরবর্তি সেকেন্ডেই ফোন টি ভেঙে ডেথ হয়ে গেলো। কোনো চিন্তা নেই। মার্কেট থেকে নতুন একটি আইফোন কিনে অ্যাপল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করুন। এরপর ইন্টারনেট চালু করে পাচ মিনিট অপেক্ষা করুন।
দেখবেন যে, আগের ফোনের সবকিছু, প্রত্যেকটি সেটিং, রিংটোন, ওয়ালপেপার এবং আপনার তোলা সর্বশেষ ছবিটি ও ফিরে এসেছে। আপনার কাছে ঠিক এমনটা মনে হবে যে, আগের ফোন টাই আবার ফিরে এসেছে। যেটা এখনও হয়তো অন্য কোনো ক্লাউড স্টোরেজ দিতে পারেনি।
তবে এর একটা খারাপ দিক হচ্ছে, অনেক লোকেরাই অ্যাপল এর নামে রিপোর্ট করেছে যে, তাদের ডেটা নাকি হ্যাকার দের হাতে পড়ে গেছে। ক্লাউড এর ডেটা গুলো নাকি চুরি হয়ে গেছে। এটা হতে পারে কোম্পানীর কোনো ভুল। আবার এমন ও হতে পারে, অ্যাপল এর সিকিউরিটি একদম ঠিকই আছে। ইউজার রা কোনো বোকামি করে ডেটা গুলো হ্যাকার দের কে দিয়ে ফেলেছে।
আজকের পোস্ট টা এখানেই শেষ। অ্যাপেল এর সিকিউরিটি নিয়ে আমার কোনো সন্ধেহ নেই। আর আমার পোস্ট টি যদি আপনার একটুও ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই অবশ্যই আমার আমার ওয়েবসাইট টি ভিজিট করতে ভুলবেন না।
ওয়েবসাইট: https://10itbd.blogspot.com/?m=1
টুইটারেও চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন আমি ফেসবুক এর চেয়ে বেশি এক্টিভ থাকি টুইটারে।
টুইটার: 1215maruf
Amni apnar post Quality valo ase